সংগ্রামী ছিন্নমূল ‘ইন্দুবালা’ হয়ে ফিরছেন শুভশ্রী

বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশ : ২৯ জানুয়ারি ২০২৩, ২১: ৩৭

মাথাভরা পাকা চুল, চোখে মোটা ফ্রেমের চশমা, চেহারায় বার্ধক্যের ছাপ। প্রস্থেটিক মেকআপে এভাবেই ধরা দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের অভিনেত্রী শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়। দেবালয় ভট্টাচার্য পরিচালিত ‘ইন্দুবালা ভাতের হোটেল’ সিরিজের ফার্স্ট লুকে ‘ইন্দুবালা’ হয়ে ফিরছেন তিনি। 

আজ রোববার দুপুরে প্রকাশ পেয়েছে সিরিজটির টিজার। এতে শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়ের লুক প্রশংসা কুড়াচ্ছে। 

কল্লোল লাহিড়ীর ‘ইন্দুবালা ভাতের হোটেল’ উপন্যাসের গল্পকে ওয়েব সিরিজের রূপ দিয়েছেন পরিচালক দেবালয় ভট্টাচার্য। আগামী মার্চ থেকে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম হইচইয়ে দেখা যাবে এই সিরিজ। 

২ মিনিট ৯ সেকেন্ডের টিজারটিতে ইন্দুবালার হাতে রান্নার জাদুর পাশাপাশি অতীতের কোণে বিচ্ছেদের গল্পের আভাস দিয়েছেন পরিচালক। যাতে দেখানো হয়েছে দেশভাগের ইতিহাস, স্বজন হারানোর যন্ত্রণা। সেখানে বাঙালির রসনাতৃপ্তির নানা কাহিনিও দেখা যাবে। টিজারটিতে জুড়ে দেওয়া ক্যাপশন অন্তত এমনই ইঙ্গিত। যেখানে জানানো হয়, এই ইতিহাস দেশ ভাগের ইতিহাস—এই ইতিহাস স্বজন হারানোর ইতিহাস—এই ইতিহাস স্বাদের ইতিহাস। 

কল্লোল লাহিড়ীর লেখা ‘ইন্দুবালা ভাতের হোটেল’ উপন্যাসে দেখা যায়, খুলনার মেয়ে ইন্দুবালাকে তাঁর বাবা কলকাতার ছেনু মিত্তির লেনের এক মাতাল ছেলের সঙ্গে বিয়ে দেন। বিয়ের কয়েক বছরের মধ্যেই তিন সন্তানকে রেখে ইন্দুবালার স্বামী মাস্টার রতনলাল মল্লিক মারা যান। এরপর থেকে ইন্দুবালা সন্তানদের লালন পালনের জন্য ছেনু মিত্তির লেনের সেই পুরোনো দোতলা বাড়িতে খোলেন ‘ইন্দুবালা ভাতের হোটেল’। যেখানে তাঁর সঙ্গী অজপাড়াগাঁ থেকে আসা ধনঞ্জয় ও মাছওয়ালি লছমি। কুমড়া ফুলের বড়া, কুমড়ার ছক্কা, বিউলির ডাল, ছ্যাঁচড়া, মুড়িঘণ্ট, আম তেল, মালপোয়া, কুঁচো চিংড়ির ঝোল, চিংড়ির হলুদ গালা ঝোল, চন্দ্রপুলি, কচু বাটা, সেমাইয়ের পায়েসসহ নানা পদের খাবার পাওয়া যায় ইন্দুবালার ভাতের হোটেলে। 

ইন্দুবালা হয়ে আসছেন শুভশ্রীসন্তানেরা বড় হয়ে গেলে তাদের আলাদা করে দেন ইন্দুবালা। তিনি পড়ে থাকেন তাঁর ভাতের হোটেল নিয়ে। নিঃসঙ্গ ছেনু মিত্তির লেনের ভাতের হোটেলে রান্না করার সময় ইন্দুবালা ভাবতে থাকেন তাঁর খুলনার সেই গ্রামের কথা। তাঁর পরিবারের সঙ্গে কাটানো সময়গুলোর কথা। জীবনের প্রথম প্রেম মনিরুলের কথা, মনিরুলকে না বলতে পারা ভালোবাসার কথা। মুক্তিযুদ্ধের সময় মনিরুলের মৃত্যুর কথা। খুলনা থেকে কলকাতায় আসার কথা, দেশভাগের কারণে খুলনায় না যেতে পারার আক্ষেপ, স্বামীর মৃত্যুর পর জীবনসংগ্রামের কথা, হোটেলে গভীর রাতে খেতে আসা মানুষগুলোর কথা। 

ইন্দুবালার জীবনসংসার গড়ে ওঠে এই ভাতের হোটেলকে কেন্দ্র করে। তাঁর কাছে সবাইকে ঠিকমতো খাওয়ানোই যেন একমাত্র দায়িত্ব! ইন্দুবালার জীবনের কত কত অপূর্ণতার মাঝেও পূর্ণতা ‘ইন্দুবালা ভাতের হোটেল’। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত