Ajker Patrika

কারাগারে আটকে আছে কে?

অর্ণব সান্যাল
আপডেট : ১৯ আগস্ট ২০২২, ২৩: ১৭
কারাগারে আটকে আছে কে?

শুরুটা বেশ নাটকীয়, তবে শান্ত। বড় জল্লাদের ভরাট কণ্ঠে খুনের হিসাবের পাশাপাশি পাওয়া যায় লটকানো ফাঁসির দড়িও। সেই দড়ি ভাঁজ করতে করতেই আঁচ করা যায় মানুষের জীবনে স্থান পূরণের অমোঘ প্রতিযোগিতা। তা হোক সে জল্লাদ, বা প্রতিশোধ। আর শুরুর শেষে জল্লাদ জানিয়ে দেন, তুফান আসছে!

পুরো সিরিজ দেখার নিখুঁত আহ্বান বলা চলে। তাতে সাড়া দিতে গিয়েই প্রায় তিনটি ঘণ্টা চলে গেল। একেবারে জলে কি গেল সময়? না। হোঁচট খেতে খেতেও পপাত ধরণিতল না হয়ে দাঁড়িয়ে যেতে পারলে যেমন বোধ হয়, ঠিক তেমনটাই অনুভূতি এখন। সেই সঙ্গে আছে ‘পার্ট টু’ দেখার উদগ্র আগ্রহ। ‘কামিং সুন’ শব্দদুটো যত দ্রুত উঠে গিয়ে ‘এসে গেছে’ হয়, ততই যেন স্বস্তি! অজানা প্রশ্নের উত্তর পেতে কার না ভালো লাগে, বলুন?

বাংলাদেশে ওয়েব সিরিজের জগতে ধীরে ধীরে পরিবর্তন আসছে বেশ। পরিবর্তন সব সময় ধীরে-সুস্থেই আসে। তবে হাওয়াটা টের পাওয়া যায়। বোঝা যায় পরিণত হওয়ার রেশ। সৈয়দ আহমেদ শাওকীর ‘কারাগার’ ওয়েব সিরিজটিতে সেই পরিবর্তিত হাওয়ার গন্ধ মেলে। ঠিক যেমনটা পাওয়া গিয়েছিল ‘সাবরিনা’ বা ‘কাইজার’-এও।

সৈয়দ আহমেদ শাওকীর তৈরি নতুন ওয়েব সিরিজ ‘কারাগার’। ১৯ আগস্ট ওটিটি প্ল্যাটফর্ম হইচই-তে মুক্তি পেয়েছে এই সিরিজের পার্ট ওয়ান। সাতটি পর্বে সাজানো এই প্রথম অধ্যায়। এর আগে ‘তাকদীর’ দিয়ে দর্শকদের কাছে জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন পরিচালক শাওকী। সুতরাং এবারের সিরিজ নিয়ে কিছুটা আগ্রহ আগে থেকেই মনে পোষা ছিল।

‘কারাগার’-এর গল্পটা নিয়ে হইচই লিখেছে, ‘আকাশনগর সেন্ট্রাল জেলের সেল নাম্বার ১৪৫ গত পাঁচ দশক ধরে বন্ধ। অথচ সেই সেলেই উদয় হয়েছে এক অচেনা, অজানা, রহস্যময় কয়েদির। কে এই আগন্তুক আর সে এখানে কি করে পৌঁছাল?’

রহস্যের এই শুরুতে আসতে বেশি দেরি করেনি ‘কারাগার’। প্রথম পর্বেই আবির্ভাব ঘটে আগন্তুকের। এর পর থেকেই সেই রহস্যের জাল আরও জটিল হয়েছে ধীরে ধীরে। কখনো তাতে নবাব সিরাজ উদ দৌলার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা মীরজাফর এসেছে, কখনো এসেছে আন্দামানের সেই বিখ্যাত কারাগারের কথা। আবার কখনো আগন্তুকের আধিভৌতিক আচরণ ও অজানা জানার আধ্যাত্মিক ক্ষমতা দর্শকের কৌতূহল বাড়িয়ে দিয়েছে। তুলেছে অনেকগুলো প্রশ্ন, যার উত্তর পেতেই আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে পার্ট টু-এর জন্য।

রহস্যকে অবলম্বন করে যত ওয়েব সিরিজ হয়, তাতে এই রহস্যাবৃত আবহকে টিকিয়ে রাখাই একটা বড় চ্যালেঞ্জ। ওটিটির দুনিয়ায় এই চ্যালেঞ্জ আরও বড় হয়ে দেখা দেয়। অন্তত কারাগার-এর মুক্তি পাওয়া প্রথম অধ্যায়ের সাত নম্বর পর্বটি দেখার পর বলাই যায় যে, সেই চ্যালেঞ্জে পরিচালক উতরে গেছেন ভালোভাবেই। হ্যাঁ, চার নম্বর পর্ব থেকে মনে হতেই পারে, ‘এত আজগুবি বিষয়-আশয় টেনে আনা হচ্ছে কেন?’ কিন্তু পার্ট ওয়ানের শেষটায় এসে ঠিকই আগের সব ঘটনার কার্যকারণ স্পষ্ট রূপ পেতে শুরু করে। আর এখানটাতেই গল্প-চিত্রনাট্যকার ও পরিচালক অকুণ্ঠ বাহবা পাওয়ার যোগ্য।

সাধারণভাবেই ওটিটির দুনিয়ায় ওয়েব সিরিজের এক সিজনে দুটি অধ্যায়ের সূচনা করা কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ, দর্শককে আটকে রাখতে হয় লম্বা সময় ধরে। শুধু গল্পে চমক আর অগণিত প্রশ্নের উদ্রেক করেই সেই কৌতূহল টিকিয়ে রাখা সম্ভব। সেটা এতটাই ঠাস-বুনটে করতে হয়, যাতে করে দর্শককুল ‘পার্ট টু, কামিং সুন’ দেখে উত্তর পাওয়ার বিষয়ে মানসিকভাবে আশ্বস্ত হতে পারেন এবং অপেক্ষার প্রহর গুনতে গররাজি হওয়ার সুযোগ না পান। এই কাজটি ‘কারাগার’ বেশ ভালোভাবেই করতে পেরেছে, তবে আপাতত। পার্ট টু-ই হয়তো সেই ‘আপাতত’-কে উড়িয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। কারণ তাতেই বোঝা যাবে, চকচক করা বস্তুটি আসলেই সোনা কিনা!

সৈয়দ আহমেদ শাওকীর তৈরি নতুন ওয়েব সিরিজ ‘কারাগার’। ছবি: ফেসবুকের সৌজন্যে‘কারাগার’-এ অভিনয় করেছেন দক্ষ শিল্পীরা। পারিবারিক সমস্যার অস্থিরতায় আক্রান্ত জেলখানার হর্তাকর্তার ভূমিকায় ইন্তেখাব দিনার দুর্দান্ত। প্রথম থেকে সপ্তম পর্ব পর্যন্ত একজন রহস্যে ঘেরা জল্লাদের ভূমিকায় অবতীর্ণ আফজাল হোসেনের অভিনয় বলে দেয়, আসছে পর্বে তাঁর ভূমিকা হবে গল্পের মোড় ঘোরানো। জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় কি সত্যিই বিড়ালকে দুধ খাওয়ানো ‘নির্ভেজাল’ কয়েদি হয়ে থাকবেন? মন মানে না! আর চঞ্চল চৌধুরী যেন প্রতি আয়োজনেই পর্দায় নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার ব্রত নিয়েছেন। হাওয়া থেকে কারাগারের শতবর্ষী সেলে আবির্ভূত হওয়া আগন্তুকের চরিত্রে তিনি ছিলেন বিশ্বাসযোগ্য। বধির ও বোবার চরিত্রেও অবিশ্বাসী হওয়ার সুযোগ দেননি। ঠিক যে সময়টায় গল্পের স্টিয়ারিং হাতে নিয়ে আমাদের চমকে দিলেন, তা এতটাই পেলব কিন্তু প্রভাববিস্তারী ছিল যে, মনেই হয়নি এর অন্যথাও হতে পারত!

তবে রহস্যের জাল নিশ্ছিদ্র করতে গিয়ে অন্যদিকে কিছু তালগোল পাকিয়েছে। জেলার আর তার ডিবি কর্মকর্তা বন্ধুটির বয়স বা সার্বিক পরিস্থিতি কি মিলেছে বাস্তবতা অনুযায়ী? শুধু পাকা চুলেই কি বয়স নির্ধারিত হয় সব সময়? আর সেটি হলে কতটা হয়? ইন্তেখাব দিনার বা বিজরী বরকতউল্লাহর সঙ্গে এফ এস নাঈম এবং তৎসংশ্লিষ্ট তাসনিয়া ফারিণের চরিত্রটি কি বয়সের মাপকাঠিতে বিশ্বাসযোগ্যতা পেয়েছে? খটকা কিন্তু থেকেই যায়। আরও খটকা লাগে একজন জেলারের ছেলেকে পুলিশের ইনফরমার হওয়ার দরুন প্রাণ বাঁচাতে বন্দীজীবন বেছে নেওয়ার কাহিনিতে। বাংলা ভাষাভাষী অঞ্চলের (তা সীমান্তের এপার হোক বা ওপার) বাস্তবতা অনুযায়ী এমন কাহিনিতে আস্থা রাখতে একটু কষ্টই হয় বটে। আবার সিরিজটির কিছু কিছু দৃশ্যে বুঝতে কষ্ট হয় ডায়লগও। হয়তো দৃশ্যের প্রয়োজনেই তেমনটা করা হয়েছে, কিন্তু দর্শকের কান পর্যন্ত না পৌঁছালে লাভটা কী?

ক্যামেরার চোখে ‘কারাগার’ সুন্দর। পর্দায় দেখানো এক রহস্যময় নারীর একজোড়া চোখও আকর্ষণীয়। কালো বোরকা পরিহিত সেই নারীর দু চোখেই পাওয়া যায় আরও রহস্যের আভাস। দুই চোখের চরিত্রে অভিনয় করা শিল্পীর নাম চোখ পড়ে বলাই যায়। কিন্তু থাক না কিছু না বলা। পাঠক, বরং নিজেই দেখে নিতে পারেন। পুরো ওয়েব সিরিজ দেখতে সময় নেবে কয়েক ঘণ্টাই তো। ‘সময়টা নষ্ট হলো’—এই কথাটা ভাবার অবকাশ পাবেন না, সেটি আশ্বস্ত করতে পারি।

প্রথম সিজনের পার্ট টু দেখার আকাঙ্ক্ষা তৈরিতে ‘কারাগার’ সফল। সার্থকতার মাপকাঠিতে এই সৃষ্টিকর্মটি কত নম্বর পাবে, সেটি ঠিক করতে অপেক্ষা করা ছাড়া গত্যন্তর নেই। কারণ, মূল পরীক্ষা যে হবে পার্ট টু-তে। বরং আস্থা রাখ যাক ‘কামিং সুন’ বলা ঘোষণাটিতেই!

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সাক্ষাৎকার

দর্শক চায় বাস্তবজীবনেও আমাদের জুটি হোক

তাবাসসুম ছোঁয়া।

শত পর্বের মাইলফলক স্পর্শ করেছে ধারাবাহিক নাটক ‘দেনা পাওনা’। গত বছর নভেম্বরে সিনেমাওয়ালা ইউটিউব চ্যানেলে প্রচার শুরু হয়েছিল ধারাবাহিকটির। কে এম সোহাগ রানা পরিচালিত এ নাটকে নিপা চরিত্রে অভিনয় করে পরিচিতি পেয়েছেন তাবাসসুম ছোঁয়া। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন শিহাব আহমেদ

শিহাব আহমেদ

ধারাবাহিকটি যে এত লম্বা সময় ধরে চলবে, শুরুতে সেটা আঁচ করতে পেরেছিলেন?

শুরুতে ৮ পর্বের লক্ষ্য নিয়ে এগোনো হচ্ছিল। কিন্তু প্রচারের শুরুতেই আমরা দর্শকের ব্যাপক সাড়া পাই। তখন নির্মাতা সিদ্ধান্ত নিলেন, দর্শক যেহেতু এত ভালোবাসা দিচ্ছে, আমাদের উচিত এটা চালিয়ে যাওয়া।

এক বছরের বেশি সময় ধরে শুটিং করছেন, এই জার্নির অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?

অনেক কিছু শিখেছি। দেনা পাওনা আমার জীবনে স্মরণীয় হয়ে থেকে যাবে। আগে কয়েকটা কাজ করলেও আমার অভিনয়ের হাতেখড়িটা এই নাটকের সেটেই হয়েছে। অভিনয়ে যতটা উন্নতি করেছি, তার কৃতিত্ব দেনা পাওনা নাটকের টিমের। সহশিল্পী, নির্মাতা থেকে শুরু করে ইউনিটের সবাই খুব সাপোর্ট করেছে। এ ছাড়া দর্শকের ভালোবাসা তো পেয়েছি। নিপা চরিত্রে পরিচিতি পেয়েছি, এখন মানুষ আমাকে চিনতে পারছে। সব মিলিয়ে পুরো অভিজ্ঞতাটা খুব সুন্দর।

এই চরিত্র আপনার ব্যক্তিজীবনে কোনো প্রভাব ফেলেছে কি না?

বাস্তবজীবনেও আমি অনেকটা নিপার মতো হয়ে গেছি। এখন আমি মানুষকে বোঝার চেষ্টা করি। নরম করে কথা বলি, যেমনটা নিপা করে।

অনেকে বলে, এ নাটকে খায়রুল চরিত্রে অভিনয় করা অ্যালেন শুভ্রর সঙ্গে আপনি সম্পর্কে আছেন। আসলেই কি তাই?

দেনা পাওনা নাটকে আমাদের জুটির ওপর সবাই ক্রাশ খেয়েছে। ফেসবুকে রীতিমতো হুমকি দিয়ে আমাকে মন্তব্য করা হয়, নিপা, তুমি যদি খায়রুলকে বিয়ে না করো, তাহলে তোমাকে দেখে নেব। স্ক্রিনের মতো বাস্তবেও নাকি আমাদের খুব সুন্দর লাগে। দর্শক চায় বাস্তবজীবনেও আমাদের জুটি হোক। বিষয়টা আমি খুব উপভোগ করি।

এ রকম হওয়ার কোনো সম্ভাবনা আছে?

অ্যালেন শুভ্র একজন জেন্টেলম্যান, নাইস পারসন। অ্যালেন ভাই সত্যিই খায়রুলের মতোই। তাঁর মধ্যে শিশুসুলভ ব্যাপার আছে। পর্দায় দেখে দর্শক যেমন তাঁর মায়ায় পড়ে, তেমনি অভিনয় করতে গিয়ে আমারও তাঁর প্রতি মায়া কাজ করে। মায়াটা হয়তো দুজনের মধ্যেই কাজ করে। এই কারণেই হয়তো পর্দায় এত ভালো লাগে। আমাদের মধ্যে সুন্দর একটা সম্পর্ক আছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত এমন কিছু হয়নি, যেমনটা মানুষ ভাবছে।

কনটেন্ট ক্রিয়েশন থেকে অভিনয়ে আসা। আপনার এই জার্নিটা নিয়ে জানতে চাই...

ক্যামেরার সঙ্গে আমার অনেক আগে থেকে খাতির ছিল। ফটোগ্রাফি, ভিডিওগ্রাফি শিখতে চেয়েছিলাম। কিছুদিন গিটার শিখেছি। এরপর কনটেন্ট ক্রিয়েশন শুরুর পর বিভিন্ন শুটের প্রস্তাব আসে। শখের বশে করছিলাম। প্রথম অভিনয় ওটিটিতে। ইমরাউল রাফাতের ‘ওপেন কিচেন’ সিরিজে। সেখানে একটি ছোট চরিত্র করি। সেটা করতে গিয়েই মনে হয়, এ মাধ্যমেই নিয়মিত কাজ করব। আমি মনে করি, একজন প্রপার অভিনেত্রী হতে গেলে বেসিক লার্নিং দরকার। সে জন্য কন্টিনিউয়াস প্রসেসের মধ্য দিয়ে চর্চা করে যেতে হবে। সেটাই করার চেষ্টা করছি। আমার জার্নিটা মাত্র শুরু, আশা করছি অনেক দূর যাবে।

অভিনয়কে কি পেশা হিসেবে নেওয়া যায়?

পেশা হিসেবেই নিয়েছি। হ্যাঁ, একটু ঝুঁকি তো থাকেই। আমার মনে হয়, শুধু অভিনয়ের ওপর নির্ভর না করে থাকলে ভালো। শুধু অভিনয় করব তা নয়, পাশাপাশি অনেক কিছু আছে। আমি কিন্তু কনটেন্ট ক্রিয়েশন আর অভিনয় দুটোই করছি। এমন কাজ করতে চাই, যেটাতে আমার অনীহা লাগবে না। যে কাজের প্রতি প্রেম থাকবে, সেটাই করতে চাই। আমার প্রেমটা অভিনয়ের সঙ্গে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শাকিবভক্তদের রোষানলে প্রযোজক সুমি

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
শাকিব খান ও প্রযোজক শাহরিন আক্তার সুমি। ছবি: সংগৃহীত
শাকিব খান ও প্রযোজক শাহরিন আক্তার সুমি। ছবি: সংগৃহীত

গত রোজার ঈদে শাকিব খানকে নিয়ে রিয়েল এনার্জি প্রোডাকশন হাউস থেকে নির্মিত হয় ‘বরবাদ’। বেশ আলোচিত হয় শাহরিন আক্তার সুমি প্রযোজিত সিনেমাটি। আগামী বছরের ঈদের জন্য আরেকটি সিনেমা প্রযোজনা করছেন সুমি। তাঁর নতুন সিনেমা ‘রাক্ষস’-এর নায়ক সিয়াম আহমেদ। সম্প্রতি সিনেমার সংবাদ সম্মেলনে প্রযোজক সুমি মন্তব্য করেন, শাকিব খান থাকলেই সিনেমা ব্লকবাস্টার হবে এটা ভেবে তিনি বরবাদ বানাননি। এমন মন্তব্যের পর সোশ্যাল মিডিয়ায় শাকিবভক্তদের রোষানলে পড়েছেন এই প্রযোজক।

বরবাদ সাফল্যের পর সুমি জানিয়েছিলেন, তাঁর পরবর্তী সিনেমায়ও থাকবেন শাকিব খান। শেষ পর্যন্ত তাঁকে ছাড়াই দ্বিতীয় সিনেমা শুরু করলেন তিনি। রাক্ষসের সংবাদ সম্মেলনে সুমির কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, এবার তাঁর সিনেমায় শাকিব খান নেই কেন? জবাবের একপর্যায়ে সুমি বলেন, ‘শাকিব খান থাকলে বরবাদ ব্লকবাস্টার হবে আর না থাকলে হবে না, এটা ভেবে আমি সিনেমা করিনি। তাঁর সব সিনেমাই যে ব্লকবাস্টার ছিল, এমনটা কিন্তু না।’

সুমির এমন কথা ভালোভাবে নেয়নি শাকিব খানের ভক্তরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমতো তুলাধোনা করছেন সুমিকে। সমালোচনার জবাবে সংবাদমাধ্যমে সুমি জানান, শাকিব খানকে নিচু করে তিনি কোনো কথা বলেননি।

শাহরিন আক্তার সুমি বলেন, ‘আমি বলেছিলাম, বরবাদে শাকিব খানকে এ জন্য নিইনি যে আমার সিনেমা হিট হতে হবে। বরবাদের গল্পে তাঁকে ছাড়া অন্য কেউ হলে সেটা মানাত না। এ কারণেই তাঁকে নেওয়া, সিনেমা হিট করানোর জন্য না। আর রাক্ষসের গল্পে সিয়ামকে মানাবে বলেই তাঁকে নেওয়া হয়েছে। হয়তো আমি বিষয়টি ঠিকমতো বোঝাতে পারিনি। এটা আমার ব্যর্থতা। আমি শাকিব ভাইকে নিচু করে কোনো কথা বলিনি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নির্ধারিত সময়ের দুই দিন পর শুরু হচ্ছে নবীন প্রবীণ নাট্যমেলা

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
বাতিঘরের ‘প্যারাবোলা’ নাটকের দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত
বাতিঘরের ‘প্যারাবোলা’ নাটকের দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত

১৯ ডিসেম্বর রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে শুরু হওয়ার কথা ছিল নাট্যতীর্থ আয়োজিত ‘নবীন প্রবীণ নাট্যমেলা’ শীর্ষক আট দিনব্যাপী নাট্যোৎসব। তবে শিল্পকলা একাডেমির অনুষ্ঠান ও প্রদর্শনী অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত হওয়ার কারণে শুরু হয়নি নবীন প্রবীণ নাট্যমেলা। অবশেষে আজ থেকে শুরু হচ্ছে এই নাট্যোৎসব।

‘রাষ্ট্রীয় শোক দিবস ও অনিবার্য কারণবশত’ ১৯ ডিসেম্বর থেকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত সব অনুষ্ঠান ও প্রদর্শনী স্থগিতের ঘোষণা দেয় শিল্পকলা একাডেমি। এমন ঘোষণা নিয়ে তৈরি হয় ধোঁয়াশা। অনেকেই মনে করেন, দীর্ঘ সময়ের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে শিল্পকলা একাডেমি। তবে সব শঙ্কা দূর করে গতকাল শিল্পকলা একাডেমির ফেসবুক পেজে জানানো হয়, ২১ ডিসেম্বর থেকে আবার শুরু হবে অনুষ্ঠান ও প্রদর্শনী।

শিল্পকলা একাডেমির ঘোষণা অনুযায়ী, ১৯ ও ২০ ডিসেম্বর বন্ধ ছিল সব আয়োজন। যে কারণে স্থগিত করা হয় নবীন প্রবীণ নাট্যমেলা। তবে বেশি দিন অপেক্ষায় থাকতে হলো না নাট্যপ্রেমীদের। শিল্পকলা একাডেমির অনুষ্ঠান ও প্রদর্শনী চালুর সিদ্ধান্তের পরই নাট্যতীর্থ থেকে জানানো হয়েছে, আজ ২১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে নবীন প্রবীণ নাট্যমেলা। আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নাট্যতীর্থ দলের প্রধান ও নাট্যমেলার আহ্বায়ক তপন হাফিজ।

সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সহযোগিতায় আয়োজিত এই উৎসবে প্রদর্শিত হবে আট দলের আটটি নাটক। প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টায় দেখা যাবে নাটকগুলো। উৎসবে ছয়জন নাট্যব্যক্তিত্বকে দেওয়া হবে নাট্যবন্ধু সম্মাননা। এ ছাড়া অনুষ্ঠিত হবে সেমিনার।

উৎসবের প্রথম দিন প্রদর্শিত হবে তীরন্দাজ রেপার্টরির প্রযোজনা দীপক সুমন নির্দেশিত ‘কণ্ঠনালীতে সূর্য’। দ্বিতীয় দিন মঞ্চস্থ হবে আরণ্যক নাট্যদলের ‘রাঢ়াঙ’। রচনা ও নির্দেশনায় মামুনুর রশীদ। এ ছাড়া এ উৎসবে দেখা যাবে বাতিঘরের ‘প্যারাবোলা’, নাট্যতীর্থের ‘জুলিয়াস সিজার’, ঢাকা থিয়েটার মঞ্চের ‘ঘরজামাই’, পদাতিক নাট্য সংসদের (টিএসসি) ‘আলিবাবা এবং চল্লিশ চোর’ এবং থিয়েটার নাট্যদলের ‘মেরাজ ফকিরের মা’।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মাধুরীর কাছে ক্যারিয়ারের চেয়ে পরিবার বেশি জরুরি

বিনোদন ডেস্ক
মাধুরী দীক্ষিত। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
মাধুরী দীক্ষিত। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

আশির দশকের শেষ দিকে এবং নব্বইয়ের দশকের শুরুর দিকে বলিউডের অন্যতম ব্যস্ত অভিনেত্রী ছিলেন মাধুরী দীক্ষিত। ওই সময় প্রতিবছর ১০টির বেশি সিনেমা মুক্তি পেত তাঁর। তবে সাফল্যের তুঙ্গে থাকা অবস্থায়ই বড় একটি সিদ্ধান্ত নেন মাধুরী। তারকাখ্যাতি পাশ কাটিয়ে ব্যক্তিজীবনকে বেশি গুরুত্ব দেন। ১৯৯৯ সালে ডা. শ্রীরাম নেনেকে বিয়ে করে চলে যান যুক্তরাষ্ট্রে। ফেলে যান সফল ক্যারিয়ার। তবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া নাকি মোটেই কঠিন ছিল না মাধুরীর জন্য।

সম্প্রতি মিড-ডেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ওই সময় নিয়ে মুখ খুলেছেন মাধুরী দীক্ষিত। ক্যারিয়ারের সাফল্য নয়, পরিবার-সন্তান-সংসারই নাকি ছিল তাঁর স্বপ্ন। অভিনেত্রী বলেন, ‘আমি সব সময় ভাবতাম, আমার বিয়ে হবে, একটি সংসার হবে, সন্তান হবে। যখন সেটা ঘটল, মনে হয়েছিল, এত দিনে স্বপ্ন সত্যি হলো। বিয়ের সিদ্ধান্ত নিতে দুবার ভাবিনি। বিয়ে করে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যাই।’

প্রায় এক যুগ মাধুরী কাটিয়েছেন কলোরাডো অঙ্গরাজ্যের ডেনভারে। সেখানে প্রকৃতির নির্জনতায় সহজ-সাধারণ পারিবারিক জীবনেই নিজের সবটুকু মনোযোগ ঢেলে দিয়েছিলেন অভিনেত্রী। যুক্তরাষ্ট্রে আগে থেকে তাঁর ভাইবোনেরা থাকতেন। তাঁদের সঙ্গেও মাধুরীর নিয়মিত দেখা হতো। তাই সময়টা মন্দ কাটত না। অভিনেত্রী বলেন, ‘জীবনের প্রায়োরিটি আসলে কী, সেটা আগে থেকে জানতাম। সেখানে নিজের কাজ নিজেকে করতে হতো। তাতেও কোনো কষ্ট লাগত না। আফসোস হতো না।’

ক্যারিয়ারের জাঁকজমকের চেয়ে বরং পারিবারিক জীবন, সন্তান-সংসার—এসবই মাধুরীর ভালো লাগত বেশি। অভিনেত্রী বলেন, ‘বাচ্চাদের নিয়ে নিজের মতো থাকতাম। তাদের পার্কে নিয়ে যেতাম। ওদের সঙ্গে খেলতাম, মজা করতাম। কেউ আমাকে চিনত না। সময়টা ভীষণ উপভোগ করেছি।’

পাঁচ বছর শোবিজ থেকে দূরে ছিলেন মাধুরী। ২০০৭ সালে ‘আজা নাচলে’ দিয়ে আবার বড় পর্দায় ফেরেন। সিনেমাটি বক্স অফিসে অত সাড়া না পেলেও তাঁর অভিনয় প্রশংসিত হয়। এরপর আবারও বিরতি। ২০১৩ সালে ‘বোম্বে টকিজ’ ও ‘ইয়ে জওয়ানি হ্যায় দিওয়ানি’ সিনেমার গানে পারফর্ম করে সাড়া ফেলেন। আবারও মাধুরীকে নিয়ে চর্চা শুরু হয় বলিউডে।

এরপর সিনেমায় সেই অর্থে আর নিয়মিত হননি মাধুরী দীক্ষিত। অল্পস্বল্প কাজ করেছেন। রিয়েলিটি শোতে বিচারক হয়েছেন। ওয়েব কনটেন্টেও দেখা দিয়েছেন। সম্প্রতি জিওহটস্টারের ‘মিসেস দেশপান্ডে’ সিরিজ দিয়ে আবারও আলোচনায় তিনি। ১৯ ডিসেম্বর মুক্তি পাওয়া সিরিজটি তৈরি হয়েছে ফরাসি থ্রিলার ‘লা ম্যান্টে’র অনুপ্রেরণায়। এতে মাধুরী অভিনয় করেছেন একজন সিরিয়াল কিলারের চরিত্রে।

মাধুরী সব সময় চেয়েছেন ক্যারিয়ার আর পরিবার—দুটির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে। শোবিজের তারকাখ্যাতি তাঁর পারিবারিক জীবনকে যেন প্রভাবিত করতে না পারে। হলিউড রিপোর্টার ইন্ডিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী বলেন, ‘যখন আমি বাড়িতে ঢুকি, তারকাখ্যাতিকে বাইরে রেখে যাই। সেখানে আমি একেবারেই সাধারণ—একজন স্ত্রী, একজন মা। আর দশটা মানুষের মতোই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত