বাঁধনের মুশকান জুবেরী হয়ে ওঠা

মীর রাকিব হাসান
প্রকাশ : ১৩ আগস্ট ২০২১, ১১: ১৯

ওপার বাংলার জনপ্রিয় নির্মাতা সৃজিতের সঙ্গে কোনো রকম যোগাযোগ ছিল না বাঁধনের। সৃজিতই খুঁজে বের করেছেন তাঁকে। বাঁধন বলেন, ‘সৃজিতের সঙ্গে কথা বলে জানলাম আমার আগের অনেক কাজই তাঁর দেখা। শুনেছি সৃজিতের কাছে অনেকেই অনেকের নাম প্রস্তাব করেছেন, কিন্তু তিনি প্রথম থেকে আমাকেই পছন্দ করে রেখেছেন।’

বাদ পড়েছিলেন বাঁধন
গল্পটি এদেশের প্রেক্ষাপটে তৈরি বলেই সিরিজটির শুটিং করতে চেয়েছিলেন সৃজিত। করোনার কারণে সেটা আর হয়ে উঠল না। কলকাতায় শুটিংয়ের নতুন পরিকল্পনা হলো। বাদ গেলেন বাংলাদেশের কলাকুশলীরা। বাঁধনও পড়েছেন বাদ। খবর রটেছে, কলকাতা থেকেই নেওয়া হচ্ছে মুশকান জুবেরী ও অন্যদের। বাঁধনের পরিবর্তে মুশকান চরিত্রের জন্য নেওয়া হলো পাওলি দামকে। শেষ পর্যন্ত পাওলির ডেট মিলল না। আবার বাঁধনকে নিয়ে ভাবতে শুরু করলেন সৃজিত। হাই কমিশনের সহযোগিতায় বিশেষ ব্যবস্থায় ভারতের যাওয়ার ব্যবস্থা হলো বাঁধনের।

কলকাতায় শুটিং
২০২০–এর ১১ ডিসেম্বর কলকাতায় পৌঁছান বাঁধন। ১২ ডিসেম্বর হয় লুক সেট। দুপুর ১২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলে ছবি তোলা, কস্টিউম ট্রায়াল। ওই দিনই বাঁধন জানলেন কো–আর্টিস্ট হিসেবে রাহুল বোস ও অঞ্জন দত্তও আছেন। ১৬ ডিসেম্বর শুটিং শুরু হয়।’ ১৬ ডিসেম্বর শুটিং শুরু হয় বর্ধমানের দশঘোরায়। বাঁধনের চরিত্রের ৬০ শতাংশ কাজ ওখানেই হয়। একটা রাজবাড়িতে শুটিং। সেখানে সত্যজিত রায়ের ‘ঘরে বাইরে’র শুটিংও হয়েছে। রাজবাড়িটাকে মুশকান জুবেরির বাড়ি দেখানো হয়েছে। রাহুল বোসের সঙ্গে প্রথম দেখা এই সেটে। বাঁধন বলেন, ‘রাহুল বোস সেটে এসেছেন পুরোপুরি নিরুপম হয়ে। মুশকান ওই ক্যারেক্টারকে ডমিনেট করে। ওনার সঙ্গে প্রথম শটেই হাততালি পেয়েছি।’

শুটিংয়ের আপদ
শুটিংয়ের জন্য প্রায় এক মাস পশ্চিমবঙ্গে ছিলেন বাঁধন। প্রায় পুরোটা সময়ই নানা আপদ আর কষ্টকর অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। উদাহরণ টানলেন বাঁধন, ‘বর্ধমানে টানা আট রাত শুটিং হয়েছে। ভোরবেলায় আমাদের শুটিং শেষ হতো। তখন ওখানকার তাপমাত্রা ৬-৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। প্রচণ্ড ঠান্ডা। আউটডোর শুটিং। ওখানে একটা গোসলের দৃশ্য আছে। সবাই দুই–তিনটা জ্যাকেট পরে আছে আর আমি ওয়াশরুমে ভেজা শরীরে গানের শুটিং করেছি।’ সিকিমে গিয়ে হলো আরেক বিপদ। প্রথম দিন নাকি শুটিংই প্যাকআপ হয়ে গেল। কারণ ওখানে গিয়ে সবাই অসুস্থ হয়ে পড়লেন অক্সিজেন-স্বল্পতার কারণে। সবার শ্বাসের সমস্যা হচ্ছিল। 

নিজেকে কেমন দেখলেন
কিছুদিন আগে ডাবিং করে এসেছেন। সেই সুবাদে পুরো সিরজটাই দেখেছেন বাঁধন। কেমন লাগল বাঁধনের? বাঁধন বলেন, ‘মুশকানকে মুশকানের মতোই লাগছিল। নিজেকে চিনতে পারিনি। ভয়েস, ঢং, আদল—সবটাই মুশকানের মতো লেগেছে। মনে হয়নি আমি আছি। আমাকেই আমি চিনিনি।’

গল্পটা যেমন
গল্পটা কেমন? জানতে চাইলে বাঁধন বলেন, ‘অনেক দিন আগে আমেরিকায় একটি প্লেন দুর্ঘটনা ঘটেছিল। ১০২ জন যাত্রীর মধ্যে বেঁচে যান ভাগ্যবান ১৮ যাত্রী। প্লেন ক্র্যাশে নিহত মানুষের মাংস খেয়ে প্রায় ৮০ দিন বেঁচে ছিলেন তাঁরা। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই উপন্যাসটি লিখেছেন মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন। সেই উপন্যাস থেকে তৈরি হয়েছে এই ওয়েব সিরিজের চিত্রনাট্য। সিরিজে আমি মূলত একজন বাংলাদেশি নারী।’

পশ্চিমবঙ্গে শুটিং হলেও গল্পের প্রেক্ষাপট বাংলদেশের। চিত্রনাট্য আর নাটকীয়তার প্রয়োজনে চরিত্রে কিছু রদবদল হয়েছে। কিছু চরিত্র যেমন বাদ পড়েছে, তেমনি নতুন কিছু চরিত্র তৈরিও হয়েছে। পরিচিত কয়েকটি চরিত্রের নামেও পরিবর্তন এসেছে বলে জানিয়েছেন বাঁধন।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত