Ajker Patrika

থাইল্যান্ডের এই অরণ্যে বাঘের সংখ্যা যেভাবে ৩ গুণ হলো

আপডেট : ২৯ জুলাই ২০২৪, ১৫: ১৭
থাইল্যান্ডের এই অরণ্যে বাঘের সংখ্যা যেভাবে ৩ গুণ হলো

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে বাঘের অবস্থা খুব একটা সুবিধার নয়। ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া থেকে বন্য পরিবেশে বিচরণ করা বাঘ হারিয়েই গেছে। সেখানে থাইল্যান্ডের একটি অরণ্য অঞ্চল একেবারেই ব্যতিক্রম। ওয়েস্টার্ন ফরেস্ট কমপ্লেক্স (ওয়েফকম) নামের ১৮ হাজার বর্গকিলোমিটারের এই এলাকায় ১৬ বছরে বাঘের সংখ্যা তিন গুণ হয়ে গেছে। ২০০৭ সালে যেখানে ছিল ৪১টি, ২০২৩ সালের জরিপে তা বেড়ে হয়েছে ১৪৩।

ওয়েফকমের মধ্যে আছে ১১টি জাতীয় উদ্যান ও ছয়টি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য। এই অঞ্চলে বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধির অসাধারণ এই তথ্য জানা যায়, থাইল্যান্ডের ডিপার্টমেন্ট অব ন্যাশনাল পার্কস (ডিএনপি) এবং ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন সোসাইটির (ডব্লিউসিএস) মিলিত এক সমীক্ষায়। বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল গ্লোবাল ইকোলজি ও জার্নালে প্রকাশিত হয় সমীক্ষা নিয়ে প্রতিবেদনটি।

বাঘের সংখ্যা নির্ণয়ের পাশাপাশি প্রকাশিত অন্য একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, এলাকাটির অন্তর্ভুক্ত প্রধান তিনটি সংরক্ষিত এলাকার একটি হুয়াই খা খায়েং বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে হরিণসহ বিভিন্ন খুরযুক্ত স্তন্যপায়ী প্রাণীর সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। অপর দুটি সংরক্ষিত এলাকা হলো থাং ইয়াই ইস্ট এবং থাং ইয়াই ওয়েস্ট।

ডব্লিউসিএস, থাইল্যান্ডের পরিচালক ও বন্যপ্রাণীবিষয়ক জীববিদ পর্নকমল জর্নবুরম বলেন, এই সংখ্যা বৃদ্ধি বনের আরও কার্যকর ব্যবস্থাপনাকে প্রতিফলিত করছে। এটি এক দশকেরও বেশি সংরক্ষণ প্রচেষ্টার ফলাফল।

‘এই অরণ্য এলাকা অনেক বিপন্ন প্রজাতির প্রাণীর বাসস্থান’ বলেন তিনি। জর্নবুরম আশা করেন, ওয়েফকম সংরক্ষণ এবং বন্যপ্রাণীর সংখ্যা পুনরুদ্ধারে একটি অনুকরণীয় মডেল হতে পারে।

ওয়েফকমের সংরক্ষণ প্রকল্পে ২০০৫ সাল থেকে কাজ করা এই নারী জানান, এই অরণ্যের ভূপ্রকৃতিতে নাটকীয় পরিবর্তন দেখেছেন তিনি।

অঞ্চলটির বন্যপ্রাণীর জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি চোরা শিকার। বন রক্ষায় কাজ করা রেঞ্জারদের টহল ও নজরদারির মাধ্যমে পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। ২০০৫ সালে এমন টহল সংখ্যায় সীমিত এবং সুবিন্যস্ত ছিল না বলে জানান জর্নবুরম। 

তিনি বলেন, ‘যখন আমরা বাঘ সংরক্ষণ করব, এটি আরও নানা প্রজাতি সংরক্ষণে সাহায্য করে। শুধু তাদের শিকার নয়, আবাসস্থলও এর মধ্যে পড়ে।’

ডব্লিওসিএসের দেওয়া তথ্য বলছে, ওয়েফকম শুধু থাইল্যান্ড নয়, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মূলভূমির সবচেয়ে বড় অরণ্যাঞ্চল। এটি কেবল বাঘের বসবাসের এলাকা নয়। বুনো হাতি, ধনেশ, বান্টেংসহ (এক ধরনের বন গরু) ১৫০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ৪৯০ প্রজাতির পাখি এবং ৯০ প্রজাতির সরীসৃপের বাস এখানে। 

এসব তথ্য জানা যায়, মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদনে।

ক্যামেরা ট্র্যাপে বন্দী বাঘ এদের সংখ্যা নির্ণয়ে সাহায্য করেছে। ছবি: ডিএনপি এবং ডব্লিউসিএস বেশির ভাগ বাঘ সংরক্ষণ প্রচেষ্টায় ছোট, বিচ্ছিন্ন এলাকাগুলো রক্ষা করায় দৃষ্টি দেওয়া হয়। কিন্তু ওয়েফকম বিস্তৃত এলাকাজুড়ে বন করিডরের মাধ্যমে বিভিন্ন জাতীয় উদ্যান এবং সংরক্ষিত এলাকাকে সংযুক্ত করেছে। বাঘের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ একটি বাঘের বিচরণের এলাকা ৩০০ বর্গকিলোমিটার বা ১১৫ বর্গমাইল পর্যন্ত হতে পারে।

নতুন গবেষণায় ২০১৩ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ৬৭টি বাঘ শাবকের ছবির সন্ধান মিলেছে। এটি প্রমাণ করে এখানকার বাঘেরা বংশবিস্তার করছে এবং সংখ্যায় বাড়ছে।

জর্নবুরম জানান, ডিএনপি ডব্লিউসিএসের সঙ্গে এলাকাভিত্তিক সংরক্ষণব্যবস্থা গড়তে ও শক্তিশালী করতে কাজ করছে। 

টহল দলগুলো বিভিন্ন জায়গার অবস্থান সুনির্দিষ্টভাবে শনাক্ত করতে জিপিএস ব্যবহার করা শুরু হয়। তথ্য সংগ্রহের সুনির্দিষ্ট নিয়ম অনুসরণ করায় টহল পথ, বন্যপ্রাণী বিচরণ এবং অবৈধ কার্যকলাপের স্থানগুলো শনাক্ত করা সহজ হয়।

২০০৭ সালে গবেষকেরা ক্যামেরা ট্র্যাপ বসানো শুরু করেন অরণ্য এলাকায়। এতে পাওয়া ফলাফল একটি তথ্যের ভান্ডার হিসেবে কাজ করছে এবং বর্তমান গবেষণায় তিনটি প্রধান সংরক্ষিত এলাকায় বাঘের সংখ্যা যাচাইয়ে ব্যবহার করা হয়েছে। 

এখানে বলে রাখা ভালো, আঙুলের ছাপের মাধ্যমে যেমন মানুষ শনাক্ত করা সম্ভব, তেমনি প্রতিটি বাঘকে তাদের অনন্য ডোরা দাগ দিয়ে চিহ্নিত করা যায়।

থাইল্যান্ডের এই সাফল্য আশা জাগালেও গোটা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি মোটেই আশাব্যাঞ্জক নয়। একসময় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিস্তৃত এলাকাজুড়ে বাঘের বিচরণ থাকলেও বিশ শতকে সিঙ্গাপুর, জাভা ও বালি থেকে হারিয়ে গেছে বাঘ। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বুনো বাঘ হারিয়ে গেছে ভিয়েতনাম, লাওস ও কম্বোডিয়ার অরণ্য থেকে।

ফলে এখন বিচ্ছিন্নভাবে বাঘের ছোট ছোট বসতি আছে মিয়ানমার, ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা ও মালয়েশিয়ায়। এর মধ্যে সম্প্রতি কয়েকটি বাঘের মৃত্যু মালয়েশিয়ার বাঘেদের নিয়ে নতুন করে দুশ্চিন্তার জন্ম দিয়েছে।

ডিএনপির সবচেয়ে সাম্প্রতিক জরিপে দেখা গেছে, থাইল্যান্ডে বুনো বাঘের বর্তমান সংখ্যা ১৭৯ থেকে ২২৩। ২০২২ সালে এই সংখ্যা ছিল ১৪৮ থেকে ১৮৯।

জর্নবুরম আশাবাদী যে টহল ও তহবিলের পরিমাণ বাড়ানো সম্ভব হলে ওয়েফকম এলাকার বাঘের জনসংখ্যা আরও বাড়ানো সম্ভব হবে। পাশাপাশি অন্যান্য জাতীয় উদ্যানেও তাদের বাঘের সংখ্যা বাঁচাতে মডেলটি গ্রহণ করবে।

‘আমি মনে করি, এটি অন্যান্য সংরক্ষিত এলাকার জন্য একটি অনুপ্রেরণামূলক মডেল। শুধু থাইল্যান্ডে নয়, আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোও এটি কাজে লাগাতে পারে।’ বলেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজ ঢাকার আবহাওয়া কেমন থাকবে জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

রাজধানী ঢাকায় আজ শুক্রবার সকালে তাপমাত্রা ছিল ১৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দুপুর পর্যন্ত আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে।

আজ সকাল ৭টায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার পূর্বাভাসে এ কথা বলা হয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ সকাল ৬টায় ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৮৬ শতাংশ।

পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় দুপুর পর্যন্ত আবহাওয়া থাকতে পারে শুষ্ক। তবে আকাশ আংশিক মেঘলা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময় উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়েছে, আজ সূর্যাস্ত ৫টা ১৫ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ৬টা ৩৬ মিনিটে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন: দক্ষিণ এশিয়ায় বায়ুদূষণে বছরে প্রাণ হারাচ্ছে ১০ লাখ মানুষ

  • ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলের মধ্যে আছে বাংলাদেশও
  • অস্বাস্থ্যকর বায়ুতে শ্বাস নিচ্ছে কোটি কোটি মানুষ
  • ক্ষতি হচ্ছে জিডিপির ১০ শতাংশের সমপরিমাণ
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

দক্ষিণ এশিয়ার গাঙ্গেয় সমভূমি ও হিমালয়ের পাদদেশ (আইজিপি-এইচএফ) অঞ্চলের প্রায় ১০০ কোটি মানুষ নিয়মিত অস্বাস্থ্যকর বায়ুতে শ্বাস নিচ্ছে। এতে বছরে এই অঞ্চলের প্রায় ১০ লাখ মানুষ অকালে প্রাণ হারাচ্ছে। বায়ুদূষণের ফলে অঞ্চলটির অর্থনীতিতে বছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ১০ শতাংশের সমপরিমাণ ক্ষতি হচ্ছে। এই দূষণের ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশও।

বিশ্বব্যাংকের ‘এ ব্রেথ অব চেঞ্জ: সলিউশনস ফর ক্লিনার এয়ার ইন দ্য ইন্দো-গেঞ্জেটিক প্লেইনস অ্যান্ড হিমালয়ান ফুটহিলস’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। সংস্থাটির ঢাকা অফিস থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।

বিশ্বব্যাংকের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আইজিপি-এইচএফ অঞ্চলে বায়ুদূষণ এখনো অন্যতম বড় উন্নয়ন চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে। সমন্বিত ও বাস্তবভিত্তিক কিছু পদক্ষেপ নিলে দূষণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব। এতে একই সঙ্গে জনস্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দুটোরই উন্নতি হবে।

গাঙ্গেয় সমভূমি ও হিমালয়ের পাদদেশ অঞ্চলের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, পাকিস্তান ও ভুটানের অংশবিশেষ। প্রতিবেদনে বলা হয়, এ অঞ্চলের বায়ুদূষণের প্রধান পাঁচটি উৎস রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে রান্না ও ঘর গরম করার কাজে লাকড়িজাতীয় কঠিন বস্তু ব্যবহার, শিল্পকারখানায় জীবাশ্ম জ্বালানি (তেল, গ্যাস, কয়লা) ও বায়োম্যাসের ফিল্টার ছাড়া অদক্ষ ব্যবহার, অনুন্নত প্রযুক্তির ইঞ্জিনের যানবাহন চালানো, কৃষকদের খেতের ফসলের অবশিষ্টাংশ পোড়ানো এবং রাসায়নিক সার ও গোবরের অদক্ষ ব্যবস্থাপনা এবং গৃহস্থালি ও কারখানার বর্জ্য পোড়ানো।

দূষণ কমাতে কয়েকটি তুলনামূলকভাবে সহজে বাস্তবায়নযোগ্য কৌশলের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে। এগুলো হলো–বৈদ্যুতিক চুলায় রান্না, শিল্পকারখানার বয়লার, ফার্নেস ও ইটভাটার আধুনিকায়ন, নন-মোটরাইজড ও বৈদ্যুতিক পরিবহনব্যবস্থার প্রসার, কৃষিবর্জ্য ও পশুবর্জ্যের উন্নত ব্যবস্থাপনা এবং বর্জ্য পৃথক্‌করণ ও পুনর্ব্যবহারের ওপর জোর দেওয়া।

প্রতিবেদনে নির্মল বায়ু নিশ্চিত করার কৌশলকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। ১. দূষণের উৎসেই নির্গমন কমানোর ব্যবস্থা। ২. স্বাস্থ্য ও শিক্ষাব্যবস্থা শক্তিশালী করে শিশু ও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দেওয়া। ৩. কার্যকর আইন, বাজারভিত্তিক প্রণোদনা ও আঞ্চলিক সহযোগিতার মাধ্যমে শক্তিশালী প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো গড়ে তোলা।

বিশ্বব্যাংকের জ্যেষ্ঠ পরিবেশ অর্থনীতিবিদ মার্টিন হেগার বলেন, ‘নির্মল বায়ু নিশ্চিত করার সমাধানগুলো বাস্তবসম্মত ও কার্যকর। নীতিনির্ধারকদের জন্য এটি একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ দেয়। একই সঙ্গে দক্ষিণ এশিয়ার পরিবার, কৃষক ও উদ্যোক্তাদের জন্য পরিচ্ছন্ন প্রযুক্তি ব্যবহারে আর্থিক ও অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক সুযোগ তৈরি করে।’

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নির্মল বায়ু নিশ্চিত করতে ‘চারটি আই’ (ইংরেজি আদ্যক্ষর)—তথ্য, প্রণোদনা, প্রতিষ্ঠান এবং অবকাঠামোর ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। নির্ভরযোগ্য তথ্যভিত্তিক পরিকল্পনা, পরিচ্ছন্ন বিকল্পে বিনিয়োগে প্রণোদনা, কার্যকর প্রতিষ্ঠান এবং পরিচ্ছন্ন জ্বালানি ও পরিবহন অবকাঠামো গড়ে তোলাই এই রূপান্তরের মূল চাবিকাঠি।

বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের পরিবেশবিষয়ক প্র্যাকটিস ম্যানেজার অ্যান জিনেট গ্লাউবার বলেন, স্থানীয় থেকে আঞ্চলিক পর্যায় পর্যন্ত সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া নির্মল বায়ু অর্জন সম্ভব নয়। সরকারগুলো একসঙ্গে কাজ করলেই কেবল দূষণ কমানো, লাখো মানুষের জীবন রক্ষা এবং সবার জন্য নিরাপদ বায়ু নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঢাকার বাতাস সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর, আজও দূষণে শীর্ষে দিল্লি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ০২
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

বেশ কিছুদিন ধরে দিল্লির বাতাসের অবস্থা দুর্যোগপূর্ণ। আজ বৃহস্পতিবার দূষিত শহরের তালিকার শীর্ষে রয়েছে শহরটি। অন্যদিকে ঢাকার বায়ুমান আজ সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর।

সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, আজ বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে সপ্তম স্থানে রয়েছে ঢাকা।

আইকিউএয়ারের সকাল ৮টা ৩০ মিনিটের রেকর্ড অনুযায়ী, ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স স্কোর ১৯০। যা নির্দেশ করে ঢাকার বাতাসের অবস্থা সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর।

ঢাকার বেশ কিছু স্থানের বাতাসের অবস্থা সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর থেকে খুব অস্বাস্থ্যকর। এর মধ্যে রয়েছে— কল্যাণপুর (২৬০), দক্ষিণ পল্লবী (২৫৬), বেজ এজওয়াটার আউটডোর (১৯৬), গোড়ান (১৯৬) ও বেচারাম দেউরি (১৯০)।

অন্যদিকে দীর্ঘদিন ধরেই দূষিত বায়ুর শহরের তালিকায় শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে দিল্লি। শহরটির একিউআই স্কোর ৩১০। যা এই শহরের বাতাসকে ‘দুর্যোগপূর্ণ’ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করেছে।

তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর (২৭০, খুব অস্বাস্থ্যকর), তৃতীয় স্থানে বসনিয়া-হার্জেগোভিনার সারাজেভ (২২৭, খুব অস্বাস্থ্যকর), চতুর্থ স্থানে রয়েছে পাকিস্তানের করাচি (২০১, খুব অস্বাস্থ্যকর) এবং পঞ্চম স্থানে রয়েছে মিসরের কায়রো (১৯৪, সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর)।

বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশিমাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্‌রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

বাতাসের মূল ক্ষতিকারক উপাদান হলো ক্ষুদ্র বস্তুকণা বা পিএম ২.৫। এটি এতই সূক্ষ্ম যে তা ফুসফুসে এমনকি রক্তপ্রবাহেও প্রবেশ করতে পারে।

বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।

বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতিবছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।

এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।

দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।

পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বেড়েছে ঢাকার তাপমাত্রা, জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

পৌষ মাসের তৃতীয় দিন আজ। শীতের মৌসুম চলে এলেও রাজধানী ঢাকায় বাড়ছে তাপমাত্রা। আজ বৃহস্পতিবার সকালের আবহাওয়া বুলেটিনে দেখা যায়, গতকালের তুলনায় আজ সকালে তাপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ সকাল ৬টায় ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গতকাল মঙ্গলবার ছিল ১৬ দশমিক ৬। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৮৯ শতাংশ।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের সকাল ৭টায় পরবর্তী ছয় ঘণ্টার জন্য ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় দুপুর পর্যন্ত আবহাওয়া থাকতে পারে শুষ্ক। তবে আকাশ আংশিক মেঘলা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময় উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়েছে, আজ সূর্যাস্ত ৫টা ১৫ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ৬টা ৩৬ মিনিটে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত