জলাশয় ভরাট করে বিএডিসির ল্যাব নির্মাণ বন্ধের দাবিতে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ২১: ০৬
আপডেট : ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ২১: ৫৪

রাজধানীর মিরপুরে জলাশয় ভরাট করে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) টিস্যু কালচার ল্যাব নির্মাণকাজ বন্ধের দাবি জানিয়েছেন বিশিষ্ট নাগরিক সমাজ। ওই জলাশয় সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধারে গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ চেয়ে নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে চিঠিও পাঠানো হয়েছে। 

মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামানসহ আটজন বিশিষ্ট নাগরিক ওই চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন। আজ শুক্রবার টিআইবি থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। 

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) আওতাধীন মিরপুরের গৈদারটেক এলাকায় বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনায় (ড্যাপ) চিহ্নিত জলাশয় ভরাট করে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) কর্তৃক টিস্যু কালচার ল্যাব নির্মাণকাজ বন্ধে এবং জলাশয় সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনায় একটি পত্র প্রেরণ করা হয়েছে। প্রেরিত পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) গবেষণা অনুযায়ী ১৯৯৫ সালে ঢাকায় জলাধার ও জলাভূমির পরিমাণ ছিল ২০.৫৮ শতাংশ, যা ২০২৩ সালে কমে হয়েছে ২.৯১ শতাংশ। একটি আদর্শ শহরে ১০ শতাংশ থেকে ১২ শতাংশ জলাশয় থাকার কথা, এর বিপরীতে রাজধানীতে রয়েছে মাত্র ২.৯১ শতাংশ, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। জলাশয়সমূহ ভরাটের প্রত্যক্ষ প্রভাব; সামান্য বৃষ্টিতে ঢাকা মহানগরে প্রচণ্ড ও দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতাকে চিহ্নিত করেছেন নাগরিক সমাজ। 

এ পত্রের মাধ্যমে ‘উন্নয়নের নামে জলাশয় ভরাট করা যাবে না’—মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এমন অনুশাসন এবং ঢাকার আশপাশের নদী ও খাল উদ্ধারের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। 

প্রধানমন্ত্রী বরাবর পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে বিএডিসি আধুনিক পদ্ধতিতে বীজ আলু উৎপাদনের লক্ষ্যে গৃহীত প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ড্যাপের (২০২২-২০৩৫) জলাশয় হিসেবে চিহ্নিত এবং মিরপুরের গৈদারটেক এলাকায় আরএস ৫০১০, ৫০১৩, ৫০১৬,৫০১৭ ও সংলগ্ন দাগ এবং মহানগর ৩০০১, ৪০০৭ ও সংলগ্ন দাগসমূহের ১২ একর জলাশয় ভরাট করেছে। জলাশয়টি ডিএনসিসির ওয়াটার রিটেনশন পন্ডের সীমানার মধ্যে অবস্থিত। জলাবদ্ধতার চরম সংকটে থাকা এ নগরীর মিরপুর এলাকার পানি নিষ্কাশনের গুরুত্বপূর্ণ আধার এ জলাশয়। পত্রে আরও উল্লেখ করা হয়, জনগুরুত্বপূর্ণ এ জলাশয় রক্ষায় মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগে দায়েরকৃত একটি জনস্বার্থমূলক মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ১৩ আগস্ট ২০২৩ মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগ উল্লিখিত জলাশয়ে পুনরায় মাটি ভরাট এবং যেকোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণ থেকে বিরত থাকতে বিএডিসিকে নির্দেশ প্রদান করেছেন এবং আপিল বিভাগ হাইকোর্ট বিভাগের অন্তর্বর্তীকালীন এ আদেশ স্থগিত করে হাইকোর্ট বিভাগে মামলাটি শুনানির আদেশ দিলে, বর্তমানে তা শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। 

প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো চিঠিতে আরও স্বাক্ষর করেছেন বেসরকারি সংস্থা ‘নিজেরা করি’র সমন্বয়কারী খুশী কবির, অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি) নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, আইন ও শালিস কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক ফারুখ ফয়সল, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) আইন উপদেষ্টা এস এম রেজাউল করিম, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির ও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সভাপতি পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত