তলিয়ে যাচ্ছে সড়ক, শঙ্কায় কাটছে দিন

নাজমুল হাসান সাগর, সুনামগঞ্জ থেকে
Thumbnail image

মেঘালয় পাহাড়ের ঢল আর ভারী বর্ষণের ফলে সুনামগঞ্জের হাওর ও নদীসংলগ্ন এলাকাগুলোয় পানি ঢুকছে। তলিয়ে যাচ্ছে গ্রামীণ সড়ক। ঢল আর বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে পানি ঢুকবে বসতবাড়িতে। এতে আতঙ্কে দিন কাটছে সুনামগঞ্জের এসব এলাকার মানুষের। যদিও বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্র থেকে বলা হচ্ছে, সিলেট-সুনামগঞ্জ এলাকায় আপাতত বড় বন্যার শঙ্কা নেই। হাওর ও নদীসংলগ্ন এলাকাগুলোয় স্বল্পমেয়াদি বন্যা হতে পারে।

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার ইসলামপুর ও গুয়ারচুরা গ্রামে গতকাল গিয়ে দেখা যায়, পাহাড়ি ঢলের পানি ঢুকেছে। তলিয়ে গেছে দুই গ্রামের মূল সড়ক। গ্রাম দুটির অপেক্ষাকৃত নিচু এলাকার বসতবাড়ির চারপাশ প্লাবিত হয়েছে। কিছু কিছু বাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। এসব বাড়ি থেকে মূল সড়কে যাতায়াতে নৌকা ব্যবহার করতে হচ্ছে। পানি ঢোকার শঙ্কায় রয়েছেন পাশের কুলাউড়া ও দরিয়াবাজ গ্রামের বাসিন্দারাও।

এই গ্রামগুলোর বাসিন্দারা গত বছরের বন্যার ভয়াবহ অভিজ্ঞতা এখনো ভুলতে পারেননি। গুয়ারচুরা গ্রামের বাসিন্দা ছালেহা খাতুন গতবারের বন্যা নিয়ে বলেন, ‘পানি উইট্যা তো ধান, চাইল, গরু-বাছুর—সবই ইতা রুগ বালাইয়ের বাও হইছে। গরের বিতর বউন যায় না, জুক, সাপ ইতানের লাইগা। খেতা, বালিস তো কিচ্চুই থুই নাই।’ এবারও তেমন বন্যার শঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘এহন আল্লায় যদি গজব দেয়, ইতানের কুনো তুলনা নাই।’ 

ইসলামপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল বাতেন বলেন, ‘যে আতঙ্কের মইধ্যে থাহি বাইচ্চা, কাইচ্চা নিয়া, এইতা আর বলার কিছু নাই।’ গত বছরের বন্যা পরিস্থিতির আলোকে এবার নিজেদের ও প্রশাসনের প্রস্তুতি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন একই গ্রামের উসমান আলী। তিনি বলেন, ‘গেছে বছর বইন্যা যে ক্ষতিগ্রস্ত করছে, এই বছরও তো পানি বাড়তাছে। মানে আমরার গেছে বছরের ভয়ই ছাড়ছে না। এইবার কিতা অইব কইতাম ফারি না!’

এদিকে সিলেট ও সুনামগঞ্জে সুরমা নদী ছাড়া সব নদ-নদীর পানি বাড়া অব্যাহত আছে। বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলেছে, এই পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান বলেন, ‘এই অঞ্চলের হাওর ও নদী লাগোয়া নিম্নাঞ্চলে স্বল্প মেয়াদে বন্যা দেখা দিতে পারে। বড় কোনো বন্যার শঙ্কা আপাতত নেই। যদিও পুরোটাই নির্ভর করছে বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের ওপর।’

সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এখনো তো বন্যা হয়নি। তারপরও পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে আমরা পর্যাপ্ত শুকনো খাবার, ত্রাণ, চাল-ডাল ও আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখছি। উপজেলা পর্যায়ের দায়িত্বশীলদের সঙ্গে সভা করা হচ্ছে। তাঁদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত