বাসব রায়
বাসব রায়রাজনীতি আর অপরাজনীতি মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে, যেটা উপলব্ধি করে প্রকাশ করলেই বিপদ আছে নির্ঘাত! সাম্প্রদায়িক আর অসাম্প্রদায়িক মিলেমিশে এক জগাখিচুড়ি কারবার শুরু হয়েছে, যা ক্রমেই দৃশ্যমান এবং চিত্রমানও বটে। এ উপমহাদেশে বাঙালিরা পারে না এমন কাজ নেই; এরা সব পারে, স-ব! এরা হাসতে পারে আবার কাঁদতেও জুড়ি মেলা শক্ত। এরা প্রেমিক বটে, তবে কখনো কখনো নিষ্ঠুর খুনিও এরাই। এরা বসন্ত গান গায় অথচ প্রকাশ্যে দিনদুপুরে মানুষও খুন করে! বলিহারি বলিহারি!
এরা অনৈতিক কাজকর্মে ভয়ানক পারদর্শী, আবার নৈতিকতার দৃষ্টান্তও কম কিছু নেই। ভালো আর মন্দে মিশ্রিত বাঙালিরা জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত উপলব্ধিহীন আবেগময় জীবনযাপনে অভ্যস্ত এবং পরশ্রীকাতরতা বা প্রতিহিংসাপরায়ণতা কিংবা পরনিন্দা চর্চা—এসব উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত এরা। মুখে মধু এবং বিশ্বমধুর সংমিশ্রণ কিন্তু অন্তর জ্বলে প্রচণ্ড জিঘাংসায়। এমন অদ্ভুত কিসিমের বৈপরীত্য কেবল বাঙালির ক্ষেত্রেই শোভনীয় এবং প্রযোজ্য বা সম্ভব।
পাড়ার কারও ছেলেমেয়ে পড়ালেখায় ভালো করছে এটা অনেকেরই সইবে না; কেউ নিজস্ব উপার্জনে একটু ভালোমন্দ দুই বেলা খায়, কিন্তু অসহ্যে ঠাসা লোকেরা এটাকে একেবারেই মেনে নিতে পারে না। কারও ভালো চাকরি, ভালো ব্যবসা এগুলো যেন সবার না হয়ে শুধু ওদেরই হোক। আহা, এমন নিষ্কাম ভাবনার মনুষ্য আজও কি রয়েছে ধরাধামে? তাহলে স্বস্তি পাই কিছুটা হলেও। আমরা প্রত্যেকেই কোনো না কোনো কারণে একে অপরের প্রতি প্রকৃত সহানুভূতিশীল নই।
অশিক্ষা আর অ-জাতের কারণে জ্ঞান শব্দটি লজ্জাভরা মুখ নিয়ে অনেক দূরে সরে গেছে। এখন অজ্ঞানীদের ধারালো জ্ঞানে সাধারণেরা অতিষ্ঠ; সমাজে অপেক্ষাকৃত দুর্বলেরা শিক্ষক হন এবং এটি সংবিধিবদ্ধ একটি চুক্তিনামা। তাই শিক্ষকদের সবাই লাথি-ঝাঁটা দিতেই পারে। শিক্ষকদের যেন এটি পাওনা! অনেক শিক্ষক রাজনীতিজ্ঞ হয়ে কোটি কোটি টাকা মেরে দিয়েছেন অবলীলায়। নিয়োগবাণিজ্যের নামে সম্পূর্ণ শিক্ষাকাঠামো এখন ভেঙে পড়েছে। নিবন্ধন পাস ছাড়া সাধারণ শিক্ষকেরা শিক্ষাদানের পদ্ধতিই ভুলে যেতে বাধ্য হয়েছেন। অথচ সনাতনী পদ্ধতি বা প্রথাই ছিল প্রকৃত শিক্ষালাভের আঁতুড়াশ্রম। বাঙালি ভুলে যায়, মিছেমিছি ভুলে গিয়ে আউলবাউলও করে। তবে ফিরে আসতে হবে বৎস এবং অবশ্যই তাই।
বর্তমান সমাজব্যবস্থায় কারোই যেন দায় নেই। ভাবখানা এমন যে এ রকম সমাজব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণকর্তা তো এমনই হয়। মব ভায়োলেন্স এসে সবকিছুই নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে। মব জাস্টিসের অনিয়ন্ত্রিত কারবার ও ব্যাপারস্যাপারগুলো জনগণ মনে রাখবে বহুদিন। এদের কাজ-কারবারের সুনির্দিষ্ট কোনো প্রকার তালিকা নেই; নেই কোনো সঠিক নির্দেশনা। কোনোভাবে জোড়াতালি দিয়ে দেশের সাড়ে চৌদ্দ বাজায়ে সাধু সাজলে হয় না! সাধু হতে হলে আত্মস্থ হতে হয়; লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে উঠে শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দেওয়াই এদের কাজ। এমন সব ধোয়া তুলসী পাতাও কাজে লাগছে না এখন! কিন্তু কেন? কারণ দুদিন পর এদেরও জনগণ রামধোলাই দেবে, এরাও সকল প্রকার অপকর্মের রাজাবাদশা হবেন!
বাঙালির স্বভাব নিয়ে লিখতে বসলে রাজনীতি আসবেই। কারণ, বাঙালি গণতন্ত্রের ‘গ’-ও জানে না, শুধু ‘গণতন্ত্র গণতন্ত্র’ বলে মুখে ফেনা তোলে, যা কিনা পার্শ্ববর্তী কোনো ভদ্রলোকের সফেদ পাঞ্জাবিতে দাগ লেগে যায়, অযথা! বাঙালির আর ভালো হওয়া হলো না। এত বয়সে কি আর বাঙালি মানুষ হতে পারে? নাহ্, তাই কি কখনো হয় নাকি? বাঙালির স্বভাব সহজাত তো বটেই, আবার অভাবও জন্মসূত্রে পাওয়া।
ভিক্ষাবৃত্তি একটি সম্মানজনক পেশা। মানুষ ঈশ্বরের করুণা লাভের প্রত্যাশায় দান-খয়রাত করে থাকে। ভিক্ষাবৃত্তি পেশাটাকে মানুষ ঘৃণা করলেও জাতিগতভাবে পেশাদার খয়রাতি মাল বাঙালিরা। এরা বিদেশে গিয়ে হাত পাতে, অনুনয়-বিনয় করে রাষ্ট্রের জন্য টাকা ভিক্ষা করে নিজেদের মধ্যেই বাঁটোয়ারা করে।
একটা অচেনা নৈরাজ্য-ভাবনা বুকে বাজছে সব সময়। চতুর্মুখী অনিরাপত্তা একটা। সুনসান নীরবতার পর ভয়ংকর কিছু অপেক্ষা করছে যেন; ঝড়ের পূর্বাভাসের মতোই কেমন যেন সবই ঘোলাটে আর গুমোট। বাঙালি সব পারে এবং দক্ষতার সঙ্গেই পারে। আবার পক্ষান্তরে সব অর্জন নিমিষেই তছরুপ করতেও পারে; জানি না এসব কীসের আলামত। তবে বিশ্ব ধ্বংসের আলামত হোক আর না হোক, অন্তত বাঙালি ধ্বংসের আলামত যথেষ্ট। তাই সহনশীল বাঙালিকে দেখতে চাই; মানবিক বাঙালি আসুক ফিরে; ভালোবাসার বাঙালি আসুক বারবার।
লেখক: কবি
বাসব রায়রাজনীতি আর অপরাজনীতি মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে, যেটা উপলব্ধি করে প্রকাশ করলেই বিপদ আছে নির্ঘাত! সাম্প্রদায়িক আর অসাম্প্রদায়িক মিলেমিশে এক জগাখিচুড়ি কারবার শুরু হয়েছে, যা ক্রমেই দৃশ্যমান এবং চিত্রমানও বটে। এ উপমহাদেশে বাঙালিরা পারে না এমন কাজ নেই; এরা সব পারে, স-ব! এরা হাসতে পারে আবার কাঁদতেও জুড়ি মেলা শক্ত। এরা প্রেমিক বটে, তবে কখনো কখনো নিষ্ঠুর খুনিও এরাই। এরা বসন্ত গান গায় অথচ প্রকাশ্যে দিনদুপুরে মানুষও খুন করে! বলিহারি বলিহারি!
এরা অনৈতিক কাজকর্মে ভয়ানক পারদর্শী, আবার নৈতিকতার দৃষ্টান্তও কম কিছু নেই। ভালো আর মন্দে মিশ্রিত বাঙালিরা জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত উপলব্ধিহীন আবেগময় জীবনযাপনে অভ্যস্ত এবং পরশ্রীকাতরতা বা প্রতিহিংসাপরায়ণতা কিংবা পরনিন্দা চর্চা—এসব উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত এরা। মুখে মধু এবং বিশ্বমধুর সংমিশ্রণ কিন্তু অন্তর জ্বলে প্রচণ্ড জিঘাংসায়। এমন অদ্ভুত কিসিমের বৈপরীত্য কেবল বাঙালির ক্ষেত্রেই শোভনীয় এবং প্রযোজ্য বা সম্ভব।
পাড়ার কারও ছেলেমেয়ে পড়ালেখায় ভালো করছে এটা অনেকেরই সইবে না; কেউ নিজস্ব উপার্জনে একটু ভালোমন্দ দুই বেলা খায়, কিন্তু অসহ্যে ঠাসা লোকেরা এটাকে একেবারেই মেনে নিতে পারে না। কারও ভালো চাকরি, ভালো ব্যবসা এগুলো যেন সবার না হয়ে শুধু ওদেরই হোক। আহা, এমন নিষ্কাম ভাবনার মনুষ্য আজও কি রয়েছে ধরাধামে? তাহলে স্বস্তি পাই কিছুটা হলেও। আমরা প্রত্যেকেই কোনো না কোনো কারণে একে অপরের প্রতি প্রকৃত সহানুভূতিশীল নই।
অশিক্ষা আর অ-জাতের কারণে জ্ঞান শব্দটি লজ্জাভরা মুখ নিয়ে অনেক দূরে সরে গেছে। এখন অজ্ঞানীদের ধারালো জ্ঞানে সাধারণেরা অতিষ্ঠ; সমাজে অপেক্ষাকৃত দুর্বলেরা শিক্ষক হন এবং এটি সংবিধিবদ্ধ একটি চুক্তিনামা। তাই শিক্ষকদের সবাই লাথি-ঝাঁটা দিতেই পারে। শিক্ষকদের যেন এটি পাওনা! অনেক শিক্ষক রাজনীতিজ্ঞ হয়ে কোটি কোটি টাকা মেরে দিয়েছেন অবলীলায়। নিয়োগবাণিজ্যের নামে সম্পূর্ণ শিক্ষাকাঠামো এখন ভেঙে পড়েছে। নিবন্ধন পাস ছাড়া সাধারণ শিক্ষকেরা শিক্ষাদানের পদ্ধতিই ভুলে যেতে বাধ্য হয়েছেন। অথচ সনাতনী পদ্ধতি বা প্রথাই ছিল প্রকৃত শিক্ষালাভের আঁতুড়াশ্রম। বাঙালি ভুলে যায়, মিছেমিছি ভুলে গিয়ে আউলবাউলও করে। তবে ফিরে আসতে হবে বৎস এবং অবশ্যই তাই।
বর্তমান সমাজব্যবস্থায় কারোই যেন দায় নেই। ভাবখানা এমন যে এ রকম সমাজব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণকর্তা তো এমনই হয়। মব ভায়োলেন্স এসে সবকিছুই নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে। মব জাস্টিসের অনিয়ন্ত্রিত কারবার ও ব্যাপারস্যাপারগুলো জনগণ মনে রাখবে বহুদিন। এদের কাজ-কারবারের সুনির্দিষ্ট কোনো প্রকার তালিকা নেই; নেই কোনো সঠিক নির্দেশনা। কোনোভাবে জোড়াতালি দিয়ে দেশের সাড়ে চৌদ্দ বাজায়ে সাধু সাজলে হয় না! সাধু হতে হলে আত্মস্থ হতে হয়; লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে উঠে শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দেওয়াই এদের কাজ। এমন সব ধোয়া তুলসী পাতাও কাজে লাগছে না এখন! কিন্তু কেন? কারণ দুদিন পর এদেরও জনগণ রামধোলাই দেবে, এরাও সকল প্রকার অপকর্মের রাজাবাদশা হবেন!
বাঙালির স্বভাব নিয়ে লিখতে বসলে রাজনীতি আসবেই। কারণ, বাঙালি গণতন্ত্রের ‘গ’-ও জানে না, শুধু ‘গণতন্ত্র গণতন্ত্র’ বলে মুখে ফেনা তোলে, যা কিনা পার্শ্ববর্তী কোনো ভদ্রলোকের সফেদ পাঞ্জাবিতে দাগ লেগে যায়, অযথা! বাঙালির আর ভালো হওয়া হলো না। এত বয়সে কি আর বাঙালি মানুষ হতে পারে? নাহ্, তাই কি কখনো হয় নাকি? বাঙালির স্বভাব সহজাত তো বটেই, আবার অভাবও জন্মসূত্রে পাওয়া।
ভিক্ষাবৃত্তি একটি সম্মানজনক পেশা। মানুষ ঈশ্বরের করুণা লাভের প্রত্যাশায় দান-খয়রাত করে থাকে। ভিক্ষাবৃত্তি পেশাটাকে মানুষ ঘৃণা করলেও জাতিগতভাবে পেশাদার খয়রাতি মাল বাঙালিরা। এরা বিদেশে গিয়ে হাত পাতে, অনুনয়-বিনয় করে রাষ্ট্রের জন্য টাকা ভিক্ষা করে নিজেদের মধ্যেই বাঁটোয়ারা করে।
একটা অচেনা নৈরাজ্য-ভাবনা বুকে বাজছে সব সময়। চতুর্মুখী অনিরাপত্তা একটা। সুনসান নীরবতার পর ভয়ংকর কিছু অপেক্ষা করছে যেন; ঝড়ের পূর্বাভাসের মতোই কেমন যেন সবই ঘোলাটে আর গুমোট। বাঙালি সব পারে এবং দক্ষতার সঙ্গেই পারে। আবার পক্ষান্তরে সব অর্জন নিমিষেই তছরুপ করতেও পারে; জানি না এসব কীসের আলামত। তবে বিশ্ব ধ্বংসের আলামত হোক আর না হোক, অন্তত বাঙালি ধ্বংসের আলামত যথেষ্ট। তাই সহনশীল বাঙালিকে দেখতে চাই; মানবিক বাঙালি আসুক ফিরে; ভালোবাসার বাঙালি আসুক বারবার।
লেখক: কবি
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৪ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৪ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৪ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
৪ দিন আগে