বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতা

সম্পাদকীয়
প্রকাশ : ১৪ জুলাই ২০২৪, ০৭: ৩৩

শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে কয়েক ঘণ্টার টানা বৃষ্টিতে রাজধানীতে দেখা দেয় মারাত্মক জলাবদ্ধতা। চরম ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে,  ৬ ঘণ্টায় ১৩০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ঢাকায়। সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় বাইরে মানুষ কম থাকলেও পানির কারণে যানজটের সৃষ্টি হয় বিভিন্ন সড়কে।

রাজধানীতে জলাবদ্ধতার সমস্যা নতুন নয়। কেউ কেউ তামাশা করে বলেন, আকাশে মেঘ জমলেও ঢাকার রাস্তার কোনো কোনো স্থানে পানি জমে। অল্প বৃষ্টিতেই কয়েকটি সড়কে পানি জমে যায় হাঁটুসমান। তবে আগে ঘণ্টার পর ঘণ্টা পানি জমে থাকলেও এখন কিছু এলাকায় কয়েক ঘণ্টা পরে পানি সরতে দেখা যায়। আবার কিছু এলাকায় পানি জমে থাকে দীর্ঘ সময়। ওয়াসা থেকে সিটি করপোরেশন খালগুলো বুঝে নেওয়ার পর কিছু এলাকায় সমস্যার সমাধান হলেও এখনো জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পায়নি মানুষ।

দুই সিটি করপোরেশনের কিছু কিছু এলাকায় এখন বিভিন্ন উন্নয়নকাজ চলমান। যার কারণে নালাগুলো দিয়ে পানি সরতে না পারায় জমে থাকছে। অন্যদিকে, স্থায়ীভাবে কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতা তৈরি হচ্ছে পরিকল্পিত সড়ক ও ড্রেনেজব্যবস্থা না থাকার কারণে।

টানা বৃষ্টিতে এখনো রাজধানীর মিরপুর, কারওয়ান বাজার, পান্থপথ, ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, আগারগাঁও, ফার্মগেট, হাতিরঝিল, শান্তিনগর, মালিবাগ, মৌচাক, গুলিস্তান, নিউমার্কেটসহ বেশ কিছু এলাকায় সড়কে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। দীর্ঘ সময় পানি জমে থাকে এসব এলাকার বিভিন্ন সড়কে।

ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ নগর কর্তৃপক্ষই এটা বলে যে রাজধানীর কোথায় কোথায় জলাবদ্ধতা হয়, সেটা তাদের জানা। এ নিয়ে বছরব্যাপী তাদের কর্মযজ্ঞও চলে। প্রশ্ন হলো, তাহলে বৃষ্টি হলেই কেন জলাবদ্ধতা তৈরি হয়, জনগণকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়?

বিশেষজ্ঞদের মতে, অপরিকল্পিত নগরায়ণ, খাল, জলাশয়ের অতিমাত্রায় দখলদারি ও দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলোর নীরবতার কারণে নগরবাসীর দুর্ভোগ লাঘব হচ্ছে না।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস কিছুদিন আগে বলেছিলেন, সরকারের অন্যান্য সংস্থার উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন চলমান থাকায় বর্তমানে কমলাপুর ও গ্রিন রোড এলাকার (মূলত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের চলমান উন্নয়নকাজ) মতো সুনির্দিষ্ট কয়েকটি স্থানে এবং নিউমার্কেট এলাকা (বিজিবি কর্তৃক ২০০৯ সালে একটি পানি নিষ্কাশন নর্দমা বন্ধ করে দেওয়ায় ও ওয়াসা কর্তৃক আরেকটি নর্দমার মধ্য দিয়ে সুপেয় পানির সরবরাহ পাইপ স্থাপন করায় পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে), পুরান ঢাকা এবং শহরের গুটিকয়েক এলাকা ছাড়া অন্য কোথাও জলাবদ্ধতা হয় না।

অন্যদিকে উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেছেন, স্থায়ীভাবে জলাবদ্ধতা নিরসনের লক্ষ্যে ড্রেন নির্মাণ করে তার পর রাস্তা নির্মাণ হবে। আগে কখনো পরিকল্পিতভাবে ড্রেন ও রাস্তা নির্মাণ হয়নি। নভেম্বরের মধ্যে নতুন ওয়ার্ডের রাস্তা ও ড্রেনেজের কাজ সম্পন্ন হবে। জলাবদ্ধতার সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে।

অতীত অভিজ্ঞতা থেকে নগরবাসীর মনে প্রশ্ন, রাজধানীর জলাবদ্ধতা সত্যি দূর হবে তো?

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আবু সাঈদকে ৪–৫ ঘণ্টা পরে হাসপাতালে নেওয়া হয়—শেখ হাসিনার দাবির সত্যতা কতটুকু

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

বিমানবন্দরে সাংবাদিক নূরুল কবীরকে হয়রানির তদন্তের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

ভারত ও তরুণ প্রজন্মের নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রসঙ্গে যা বললেন মির্জা ফখরুল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত