কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বহুল আলোচিত আলকরা ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) ভোট হচ্ছে আজ বুধবার। এ ছাড়া দেবিদ্বার উপজেলার ভানী ইউপিতে আজ ভোট গ্রহণ করা হবে।

গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকেই ভোটের নানা সরঞ্জাম পাঠানো হয়েছে কেন্দ্রে কেন্দ্রে। প্রিসাইডিং ও সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা থেকে সরঞ্জাম বুঝে নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় ভোটকেন্দ্রে নিয়ে এসেছেন।

চৌদ্দগ্রাম প্রতিনিধি জানা, আলকরা ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীতসহ ৭ জন চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ইউপির সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ৮ ও সাধারণ সদস্য পদে ৪৭ জন প্রার্থী অংশ নিচ্ছেন।

এদিকে ভোটের আগের দিনের আমেজ বৃষ্টিতে ধসিয়ে দিয়েছে। গতকাল সকাল থেকে কখনো ঘোরাঘুরি, কখনো মুষলধারে বৃষ্টি হয় ইউনিয়নে। এতে প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকেরা কেন্দ্রে এবং আশে-পাশে পোস্টার লাগাতে পারছে না। ভোটের দিন বৃষ্টি হলে কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ভোটাররা নির্বিঘ্নে কেন্দ্রে আসার লক্ষ্যে সকালে থানায় আইনশৃঙ্খলা কমিটির বৈঠক হয়। বৈঠকে জেলার সহকারী পুলিশ সুপার তানভির আহমেদ পিপিএম হুঁশিয়ারি উচ্চ করে বলেন, ‘যদি কোনো প্রার্থী বা তার কর্মী-সমর্থকেরা কেন্দ্রে ও কেন্দ্রের বাইরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করে, তাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর হস্তে দমন করবেন।’

সভায় উপস্থিত ছিলেন চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভীর হোসেন, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শুভ রঞ্জন চাকমা, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং অফিসার ফারুক হোসেন।

চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর হোসেন বলেন, ‘ভোটের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। ভোটাররা যাতে করে নির্ভয়ে কেন্দ্রে গিয়ে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে, সে জন্য পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে যাতে ইভিএম মেশিনের সমস্যা না হয়, সে জন্য সবগুলো মেশিনে চার্জ দেওয়া হয়েছে।’

এদিকে দেবিদ্বার প্রতিনিধি জানান, উপজেলার ভানী ইউপিতে আওয়ামী লীগ মনোনীতসহ মোট ১১ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন। এ ছাড়া সাধারণ ওয়ার্ডের সদস্য পদে ৪১ জন ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সদস্য পদে ১০ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

এদিকে, উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেছেন কয়েকজন চেয়ারম্যান ও সাধারণ সদস্য প্রার্থী। স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী হাজী জালাল বলেন, ‘একটি নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু ভোট চাই, আর কিছু চাই না। তবে কয়েকটি কেন্দ্রে ভোটার যেতে বাধা দেবে শোনা যাচ্ছে, এ নিয়ে আমি বেশ চিন্তিত।’

নৌকার প্রার্থীর তাহমিনা আক্তার মুকুল বলেন, ‘মানুষ ভোট দিতে যেতে পারলে নৌকার বিজয় নিশ্চিত হবে। প্রশাসন মানুষকে ভোট দিতে সহযোগিতা করবেন বলে আমি আশা করছি।’

উপজেলা রিটার্নিং ও নির্বাচন অফিসার মো. আলতাফ হোসেন বলেন,৯টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণের যাবতীয় কার্যক্রম শেষ হয়েছে। সুষ্ঠু ভোট গ্রহণের জন্য ইতিমধ্যে পর্যাপ্ত আইন শৃঙ্খলার বাহিনীর সদস্য নিযুক্ত রয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আশিক উন নবী তালুকদার জানান, তিনজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও একজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। নির্বাচনে কেউ অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলা করলে ছাড় দেওয়া হবে না।