সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
টেকসই বেড়িবাঁধ ও কার্যকর স্লুইসগেট না থাকায় লবণাক্ততা ও জলাবদ্ধতায় অনেক ফসলই এখন ফলছে না সাতক্ষীরায়। এ ছাড়া বোঝার ওপর শাকের আঁটি হয়েছে ব্যবসায়ীদের ঘেরে নোনাপানি ঢোকানো। এতে করেও জমির লবণাক্ততা বাড়ছে। এর প্রভাব পড়ছে ধান চাষে। গত ১৩ বছরে এই জেলায় ধান চাষের জমি কমেছে ২২ হাজার হেক্টর। কর্মসংস্থান কমে যাওয়ায় এলাকা ছাড়ছেন অনেকে।
২০১০ সালে জেলায় ১ লাখ ১০ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হতো। আর ২০২৩ সালে চাষ হচ্ছে ৮৮ হাজার হেক্টর জমিতে। এই জমি কমার পেছনে অন্যতম কারণ লবণাক্ততা। এ প্রসঙ্গে সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ সাইফুল ইসলাম বলেন, এ বছর ৮৮ হাজার হেক্টর জমিতে আমনের আবাদ হয়েছে। লবণাক্ততা ও জলাবদ্ধতা কমলে আরও আবাদ বাড়ত।
দায় আছে ঘের ব্যবসায়ীদের
এদিকে সাতক্ষীরায় চিংড়ি চাষের উৎপাদন বাড়াতে একসময় বাঁধ কেটে বা ফুটো করে নোনাপানি ঢোকাতেন ব্যবসায়ীরা। ঘূর্ণিঝড়ের সময় এমন অনেক বাঁধই ভেঙে যায়। ফলে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। এখন সেই চিত্র বদলে গেছে। তবে বিপদ আরও বেড়েছে। এখন বাক্সকল বসিয়ে নোনাপানি ঢোকানো হচ্ছে। এতে সার্বিকভাবে জমির লবণাক্ততা বাড়ছে। শ্যামনগর উপজেলার কৈখালী গ্রামের আইউব আলী বলেন, কালিন্দি নদীর বাঁধে এক শ থেকে দুই শ মিটার দূরত্বে বাক্সকল বসানো হয়েছে। এই মোটর বা বাক্সকলের সংখ্যা ত্রিশের নিচে হবে না। গত সেপ্টেম্বর মাসে কালিন্দি নদীর তীরে সইলখালী পয়েন্টে ৩০ ফুট বাঁধ ভেঙে যায়। এতে কমপক্ষে ৫০টি মাছের ঘের ভেসে যায়।
শ্যামনগরের ভেটখালী এলাকার বাসিন্দা রেজাউল ইসলাম বলেন, এক যুগ আগেও এখানে লালশাক, পালংশাক, টমেটো, গাজর, ফুলকপি, বাঁধাকপিসহ বিভিন্ন প্রকার সবজির চাষ হতো। আর এখন এসবের চাষ হয় না। এর কারণ লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়া।
যেভাবে বদলে যাচ্ছে চাষের জমি
২০০৯ সালে ঘূর্ণিঝড় আইলার পর জেলার চাষাবাদের চিত্র বেশ খানিকটা বদলে গেছে। সেই সময় বেশ কিছু বাঁধ ভেঙে যায়। এতে করে নোনাপানি ঢুকে পড়ে চাষের জমিতে। এই লবণাক্ততার কারণে অনেক ফসলের চাষই এখন আর হচ্ছে না। আবার বাঁধ জরাজীর্ণ হওয়ার কারণে বিভিন্ন সময় নোনাপানি ঢোকে আবাদি জমিতে। তবে স্লুইসগেট যেহেতু কাজ করছে না, সে কারণে পানি বের হচ্ছে না। এই চিত্র আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে ২০২০ সালের ঘূর্ণিঝড় আম্পানের পরে। এই ঝড়ের পর সাতক্ষীরায় জলাবদ্ধতা যেমন বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে লবণাক্ততা। এ প্রসঙ্গে সাতক্ষীরার আশাশুনির প্রতাপনগর গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন সবুজ বলেন, উপকূলীয় এলাকা শুকনো মৌসুমে মরুভূমির মতো পড়ে থাকছে। আর বর্ষায় পানির ঢল নামে। স্লুইসগেট নষ্ট থাকার কারণে পানি সরছে না। ফলে ধান চাষ সম্ভব হচ্ছে না।
আশাশুনির কুড়িকাহুনিয়া গ্রামের আবদালুর রহমান বলেন, ‘তালতলা বাজারের পাশে আমার চার বিঘা জমি রয়েছে। আগে সেখানে সমান তিনটি ফসল হতো। আর এখন একটিও হয় না। আমন ও রোপা আমন ধানের চাষ জলাবদ্ধতার কারণে হয় না। আর বোরো ধানের চাষ লবণাক্ততার কারণে হয় না।’
আবদালুর রহমানের কথার সঙ্গে মিলে যাচ্ছে তালতলা এলাকার চিত্র। আশাশুনির কুড়িকাহুনিয়া গ্রামের তালতলা বাজারের পাশেই এমন অনাবাদি জমি রয়েছে প্রায় ৩ হাজার বিঘা। এলাকার অন্যতম বড় শস্যভান্ডার ছিল এটি।
আবদালুর রহমান বলেন, ‘আগে কৃষি ছিল আমার পেশা। উপকূলীয় অঞ্চলের এই যে অবস্থা, এটা পরিবর্তন হবে না। কারণ, আমাদের দেখার কেউ নেই। বাধ্য হয়ে পেশা পরিবর্তন করেছি। কৃষিকাজের পরিবর্তে আমি তালতলা বাজারে চায়ের দোকান দিয়েছি। এলাকার অনেকে বাধ্য হয়ে অন্যত্র চলে গেছে। কেউ শহর এলাকায় ভ্যান-রিকশা চালায়, আবার কেউ ভাটায় কাজ করে।’
এ প্রসঙ্গে সাতক্ষীরা জলবায়ু পরিষদের সদস্যসচিব অধ্যক্ষ আশেক-ই-ইলাহী বলেন, ‘উপকূলীয় অঞ্চলে অপরিকল্পিত বেড়িবাঁধ নির্মাণের ফলে ব্যাপক এলাকা জলাবদ্ধতার কবলে আটকে গেছে। এ ছাড়া ঘেরের কারণে কৃষিজমি আটকে গেছে। পানির প্রবাহ বাড়াতে অভ্যন্তরীণ খালগুলোকে উন্মুক্ত করতে হবে। বাঁধ ব্যবস্থাপনাও ভালো করতে হবে। পলি যাতে ওঠানামা করতে পারে, এর ব্যবস্থা করতে হবে।’
এদিকে যেসব কৃষকের জমি নতুন করে জলাবদ্ধ হয়েছে, সেসব জমি কাজে লাগানোর সক্ষমতাও তাঁদের নেই।
এ প্রসঙ্গে শ্যামনগরের বন্যতলা এলাকার বাসিন্দা মিজানুর রহমান বলেন, ‘লাখ লাখ টাকা খরচ করে চিংড়ি চাষ করার সামর্থ্য গরিব মানুষের নেই। আবার অতি নোনাপানিতে সাদা মাছ হয় না। সব মিলিয়ে বেকারত্ব বরণ করে বসে থাকা ছাড়া আমাদের উপায় নেই।’
টেকসই বেড়িবাঁধ ও কার্যকর স্লুইসগেট না থাকায় লবণাক্ততা ও জলাবদ্ধতায় অনেক ফসলই এখন ফলছে না সাতক্ষীরায়। এ ছাড়া বোঝার ওপর শাকের আঁটি হয়েছে ব্যবসায়ীদের ঘেরে নোনাপানি ঢোকানো। এতে করেও জমির লবণাক্ততা বাড়ছে। এর প্রভাব পড়ছে ধান চাষে। গত ১৩ বছরে এই জেলায় ধান চাষের জমি কমেছে ২২ হাজার হেক্টর। কর্মসংস্থান কমে যাওয়ায় এলাকা ছাড়ছেন অনেকে।
২০১০ সালে জেলায় ১ লাখ ১০ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হতো। আর ২০২৩ সালে চাষ হচ্ছে ৮৮ হাজার হেক্টর জমিতে। এই জমি কমার পেছনে অন্যতম কারণ লবণাক্ততা। এ প্রসঙ্গে সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ সাইফুল ইসলাম বলেন, এ বছর ৮৮ হাজার হেক্টর জমিতে আমনের আবাদ হয়েছে। লবণাক্ততা ও জলাবদ্ধতা কমলে আরও আবাদ বাড়ত।
দায় আছে ঘের ব্যবসায়ীদের
এদিকে সাতক্ষীরায় চিংড়ি চাষের উৎপাদন বাড়াতে একসময় বাঁধ কেটে বা ফুটো করে নোনাপানি ঢোকাতেন ব্যবসায়ীরা। ঘূর্ণিঝড়ের সময় এমন অনেক বাঁধই ভেঙে যায়। ফলে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। এখন সেই চিত্র বদলে গেছে। তবে বিপদ আরও বেড়েছে। এখন বাক্সকল বসিয়ে নোনাপানি ঢোকানো হচ্ছে। এতে সার্বিকভাবে জমির লবণাক্ততা বাড়ছে। শ্যামনগর উপজেলার কৈখালী গ্রামের আইউব আলী বলেন, কালিন্দি নদীর বাঁধে এক শ থেকে দুই শ মিটার দূরত্বে বাক্সকল বসানো হয়েছে। এই মোটর বা বাক্সকলের সংখ্যা ত্রিশের নিচে হবে না। গত সেপ্টেম্বর মাসে কালিন্দি নদীর তীরে সইলখালী পয়েন্টে ৩০ ফুট বাঁধ ভেঙে যায়। এতে কমপক্ষে ৫০টি মাছের ঘের ভেসে যায়।
শ্যামনগরের ভেটখালী এলাকার বাসিন্দা রেজাউল ইসলাম বলেন, এক যুগ আগেও এখানে লালশাক, পালংশাক, টমেটো, গাজর, ফুলকপি, বাঁধাকপিসহ বিভিন্ন প্রকার সবজির চাষ হতো। আর এখন এসবের চাষ হয় না। এর কারণ লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়া।
যেভাবে বদলে যাচ্ছে চাষের জমি
২০০৯ সালে ঘূর্ণিঝড় আইলার পর জেলার চাষাবাদের চিত্র বেশ খানিকটা বদলে গেছে। সেই সময় বেশ কিছু বাঁধ ভেঙে যায়। এতে করে নোনাপানি ঢুকে পড়ে চাষের জমিতে। এই লবণাক্ততার কারণে অনেক ফসলের চাষই এখন আর হচ্ছে না। আবার বাঁধ জরাজীর্ণ হওয়ার কারণে বিভিন্ন সময় নোনাপানি ঢোকে আবাদি জমিতে। তবে স্লুইসগেট যেহেতু কাজ করছে না, সে কারণে পানি বের হচ্ছে না। এই চিত্র আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে ২০২০ সালের ঘূর্ণিঝড় আম্পানের পরে। এই ঝড়ের পর সাতক্ষীরায় জলাবদ্ধতা যেমন বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে লবণাক্ততা। এ প্রসঙ্গে সাতক্ষীরার আশাশুনির প্রতাপনগর গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন সবুজ বলেন, উপকূলীয় এলাকা শুকনো মৌসুমে মরুভূমির মতো পড়ে থাকছে। আর বর্ষায় পানির ঢল নামে। স্লুইসগেট নষ্ট থাকার কারণে পানি সরছে না। ফলে ধান চাষ সম্ভব হচ্ছে না।
আশাশুনির কুড়িকাহুনিয়া গ্রামের আবদালুর রহমান বলেন, ‘তালতলা বাজারের পাশে আমার চার বিঘা জমি রয়েছে। আগে সেখানে সমান তিনটি ফসল হতো। আর এখন একটিও হয় না। আমন ও রোপা আমন ধানের চাষ জলাবদ্ধতার কারণে হয় না। আর বোরো ধানের চাষ লবণাক্ততার কারণে হয় না।’
আবদালুর রহমানের কথার সঙ্গে মিলে যাচ্ছে তালতলা এলাকার চিত্র। আশাশুনির কুড়িকাহুনিয়া গ্রামের তালতলা বাজারের পাশেই এমন অনাবাদি জমি রয়েছে প্রায় ৩ হাজার বিঘা। এলাকার অন্যতম বড় শস্যভান্ডার ছিল এটি।
আবদালুর রহমান বলেন, ‘আগে কৃষি ছিল আমার পেশা। উপকূলীয় অঞ্চলের এই যে অবস্থা, এটা পরিবর্তন হবে না। কারণ, আমাদের দেখার কেউ নেই। বাধ্য হয়ে পেশা পরিবর্তন করেছি। কৃষিকাজের পরিবর্তে আমি তালতলা বাজারে চায়ের দোকান দিয়েছি। এলাকার অনেকে বাধ্য হয়ে অন্যত্র চলে গেছে। কেউ শহর এলাকায় ভ্যান-রিকশা চালায়, আবার কেউ ভাটায় কাজ করে।’
এ প্রসঙ্গে সাতক্ষীরা জলবায়ু পরিষদের সদস্যসচিব অধ্যক্ষ আশেক-ই-ইলাহী বলেন, ‘উপকূলীয় অঞ্চলে অপরিকল্পিত বেড়িবাঁধ নির্মাণের ফলে ব্যাপক এলাকা জলাবদ্ধতার কবলে আটকে গেছে। এ ছাড়া ঘেরের কারণে কৃষিজমি আটকে গেছে। পানির প্রবাহ বাড়াতে অভ্যন্তরীণ খালগুলোকে উন্মুক্ত করতে হবে। বাঁধ ব্যবস্থাপনাও ভালো করতে হবে। পলি যাতে ওঠানামা করতে পারে, এর ব্যবস্থা করতে হবে।’
এদিকে যেসব কৃষকের জমি নতুন করে জলাবদ্ধ হয়েছে, সেসব জমি কাজে লাগানোর সক্ষমতাও তাঁদের নেই।
এ প্রসঙ্গে শ্যামনগরের বন্যতলা এলাকার বাসিন্দা মিজানুর রহমান বলেন, ‘লাখ লাখ টাকা খরচ করে চিংড়ি চাষ করার সামর্থ্য গরিব মানুষের নেই। আবার অতি নোনাপানিতে সাদা মাছ হয় না। সব মিলিয়ে বেকারত্ব বরণ করে বসে থাকা ছাড়া আমাদের উপায় নেই।’
১০ বছর ধরে নিজের আত্মজীবনী লিখেছেন বরেণ্য অভিনেতা, নাট্যকার ও নির্মাতা আবুল হায়াত। নাম দিয়েছেন ‘রবি পথ’। অবশেষে প্রকাশ হচ্ছে তাঁর আত্মজীবনী। আগামী ২ নভেম্বর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজন করা হয়েছে রবি পথের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান।
১ ঘণ্টা আগেএকদিন ভোরবেলা জাকারবার্গ লক্ষ করলেন যে পৃথিবীতে একটা ছোট্ট দেশে তাঁর সবচেয়ে বেশি ব্যবসা হচ্ছে। সামনের ফ্লোরটায় দেখলেন দেশটা ছোট বটে, কিন্তু জনসংখ্যা বেশি। আর এই দেশের জনসংখ্যার মধ্যে প্রায় অর্ধেক মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করে। ফেসবুকে দেখতে পেলেন অসংখ্য বার্তা—সবই রাজনৈতিক এবং ছবিতে এ বিষয়ে বিপুল জনগণের
২ ঘণ্টা আগেঅন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ২৩ অক্টোবর এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ওই সংগঠনের বিরুদ্ধে অভিযোগ—বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় তাদের নেতা-কর্মীরা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সশস্ত্র হামলা পরিচালনা করে অসংখ্য আন্দোলনকারীকে হত্যা ও অনেকের জীবন বি
২ ঘণ্টা আগেইংরেজি সাহিত্যের অন্যতম রোমান্টিক কবি ছিলেন জন কিটস। কবিতা ছাড়া কিটস কোনো গদ্য লেখার চেষ্টা করেননি। তাঁর কাব্যজীবন ছিল মাত্র ছয় বছরের। অর্থাৎ উনিশ থেকে চব্বিশ বছর বয়স পর্যন্ত। মৃত্যুর মাত্র চার বছর আগে তাঁর কবিতাগুলো প্রকাশিত হয়। তৎকালীন সমালোচকদের দ্বারা কিটসের কবিতা খুব একটা আলোচিত হয়নি। তবে মৃত্য
২ ঘণ্টা আগে