বগুড়ার নন্দীগ্রামে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী পল্লিতে চোলাই মদ উদ্ধার করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে। গত মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার বুড়ইল ইউনিয়নের দাসগ্রাম বৃন্দাবনপাড়ার ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী পল্লিতে সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে। এ সময় আট পুলিশ সদস্যসহ দুই পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হন।

এ ঘটনায় নন্দীগ্রাম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রেজাউল করিম বাদী হয়ে গতকাল বুধবার সকালে মামলা করেন।

এতে নয়জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৬৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।

সংঘর্ষে আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন নন্দীগ্রাম থানার এসআই রেজাউল করিম, রেজাউল করিম, এ টি এম রফিকুল ইসলাম, আমিনুল ইসলামসহ এএসআই আল-আমিন, আবুল কালাম, কনস্টেবল আশরাফ ও সজল।

নন্দীগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ জানান, হামলাকারীরা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী নয়; স্থানীয় সন্ত্রাসী। মাদক ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় পৃথক মামলা হয়েছে। শুধু মাদক মামলায় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের আসামি করা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, ওই পল্লিতে বিপুল পরিমাণ চোলাই মদ মজুত ও কেনাবেচা চলছিল। গোপনে এমন খবর পেয়ে সেখানে অভিযান চালানো হয়। তাঁদের হেফাজত থেকে চোলাই মদ উদ্ধার করতে গেলে সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়। এতে আট পুলিশ সদস্য আহত হন। এরপরও ১৮ লিটার চোলাই মাদক উদ্ধার করা হয়েছে।

আহত পুলিশ সদস্যদের মধ্যে গুরুতর এক এসআই রেজাউল করিমকে প্রথমে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে রাতেই তাঁকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

ওই পল্লির বাসিন্দা জাম্বু মাহাতো জানান, আগামী শনিবার তাঁর দুই মেয়ের বিবাহ। এতে তাঁদের সামাজিক রীতি অনুসারে বরপক্ষের জন্য বাড়িতে চোলাই মদ তৈরি করে রাখা হয়। সে জন্যই মদ রাখা হয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, গত মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে নন্দীগ্রাম থানা-পুলিশের একটি দল তাঁর বাড়িতে হানা দেয়। তারা ঘরে ঘরে তল্লাশির সময় নারী ও পুরুষদের লাঠিপেটা করতে থাকে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে পল্লির বাসিন্দারা সংঘবদ্ধ হয়ে পুলিশের ওপর চড়াও হন এবং তাদের ঘেরাও করেন। পুলিশের মারধরে হরিদাস মাহাতো, ভক্তি রানী মাহাতো, অন্তরা মাহাতোসহ সাত থেকে আটজন আহত হন।

ওসি আবুল কালাম আজাদ আরও আজকের পত্রিকাকে জানান, ওই পল্লিতে চোলাই মদ উদ্ধারে গেলে পুলিশের ওপর হামলা করা হয়। এতে তাঁদের আট সদস্য আহত হন। তাদের হেফাজত থেকে ১৮ লিটার চোলাই মদ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় পৃথক মামলা হলেও গতকাল দুপুর পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।