Ajker Patrika

ঢলে ভাঙন, পানিবন্দী মানুষ

লালমনিরহাট ও রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৩ জুন ২০২২, ১৩: ৫১
ঢলে ভাঙন, পানিবন্দী মানুষ

বৃষ্টি ও উজানের ঢলে লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামের রৌমারীতে বিভিন্ন নদীর পানি বেড়েই চলেছে। রৌমারীতে ৩২টি গ্রামের ২৫ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। লালমনিরহাটে চরাঞ্চলের কৃষিজমি প্লাবিত হওয়ার পাশাপাশি ভাঙন দেখা দিয়েছে তিস্তা ও ধরলা নদীতে।

রৌমারীতে পানি ওঠায় পাঠদান বন্ধ রয়েছে ২৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। রাস্তা তলিয়ে যাওয়ায় নৌকা ও ভেলায় চলাচল করছে প্লাবিত এলাকার মানুষ। এতে বেশি বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। অনেক গ্রামে দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট।

রৌমারীর দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নে নতুন করে প্লাবিত হয়েছে চরগয়টাপাড়া, তেকানী গ্রাম, কাউয়ারচর ও চরবোয়লমারী; শৌলমারী ইউনিয়নের ওকড়াকান্দা, শৌলমারী ও মোল্লারচর; রৌমারী ইউনিয়নের কড়াইকান্দি, মির্জাপাড়া, গোয়লগ্রাম ও নতুন চুলিয়ারচর এবং যাদুরচর ইউনিয়নের বকবান্দা, বিক্রিবিল, আলগারচর ও কাশিয়াবাড়ি। এর আগে উপজেলার দাঁতভাঙ্গা, শৌলমারী, রৌমারী, বন্দবেড়, যাদুরচর ও চর শৌলমারী ইউনিয়নের প্রায় ২০টি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়।

রৌমারী সদরের মাদারটিলা গ্রামের আবু ছাইদ বলেন, ‘বোরো ধান কাটা শেষ না হতেই বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে নিম্নাঞ্চল। সরিষা তুলে যে ধান রোপণ করেছিলাম, তাতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গ্রামে বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। গরুর খাদ্য পাওয়া যাচ্ছে না।’

রৌমারী শিক্ষা কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জানান, সম্প্রতি বন্যায় উপজেলার ২৫টি বিদ্যালয় পানিবন্দী হওয়ায় সাময়িকভাবে পাঠদান বন্ধ রয়েছে।

উপজেলা প্রকৌশলী যুবায়ের হোসেন বলেন, বন্যায় শৌলমারী, রৌমারী ও যাদুরচর ইউনিয়নের ২২ কিলোমিটার রাস্তা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। বন্যা আক্রান্ত এলাকার লোকজন নৌকায় ও কলার ভেলায় করে চলাচল করছে।

রৌমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী জানান, ভারী বৃষ্টিতে উপজেলায় ২৮৩ হেক্টর জমির ফসল বন্যায় তলিয়ে গেছে।

রৌমারী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আজিজুর রহমান বলেন, বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী হয়ে হয়েছে প্রায় ২৫ হাজার মানুষ। বন্যার ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ৩ লাখ টাকায় ত্রাণসামগ্রী কিনে প্যাকেট করা হচ্ছে।

এদিকে লালমনিরহাটের তিস্তা, ধরলা, রত্নাইসহ বিভিন্ন নদীর পানি বেড়েছে। এ ছাড়া জেলার নিম্নাঞ্চল পানিতে ডুবে যাওয়ায় মানুষের চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে।

গতকাল রোববার লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে সকাল ৬টায় তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার নিচে দিয়ে প্রবাহিত হলেও দুপুর ১২টায় ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। ধরলা নদীর পানি বিপৎসীমার ১ মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

তিস্তার তীরবর্তী পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম, হাতীবান্ধার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, সিংগিমারী ও ডাউয়াবাড়ী; কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, কাকিনা ও তুষভান্ডার; আদিতমারী উপজেলার মহিষখোঁচা ও পলাশী এবং সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুন্ডা ও ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলে ধীরে ধীরে পানি ঢুকছে। এতে বন্যা পরিস্থিতি বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সদর উপজেলার চারগোকুণ্ডা গ্রামের আব্বাস আলী বলেন, ‘আমাদের গ্রামে কয়েক দিন ৮ থেকে ১০ বাড়ি তিস্তা নদীতে বিলীন হয়েছে। এর সঙ্গে আবাদি জমি প্রতিদিন বিলীন হচ্ছে।’

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান জানান, উজানের ঢল ও বৃষ্টিতে নদীর পানি বাড়ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গণপিটুনিতে নিহত জামায়াত কর্মী নেজাম ও তাঁর বাহিনী গুলি ছোড়ে, মিলেছে বিদেশি পিস্তল: পুলিশ

এক ছাতায় সব নাগরিক সেবা

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত