ভাইরাসের কবলে বাগদা চিংড়ি

আবুল কাসেম, সাতক্ষীরা
আপডেট : ২৪ এপ্রিল ২০২২, ১৬: ৫৬
Thumbnail image

বছরের শুরুতে মড়ক লেগেছে বাগদা মাছে। ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মাছ মারা যাওয়ার কথা উঠলেও তা মানতে নারাজ মৎস্য বিভাগ। তাদের দাবি, দাবদাহে মরে যাচ্ছে মাছ। সাতক্ষীরা মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এবার সাতক্ষীরায় ছোট-বড় মিলিয়ে ৫৫ হাজার ঘেরে বাগদা চাষ হয়েছে। যার আয়তন ৬৭ হাজার হেক্টর। এ বছর জেলায় বাগদা চিংড়ির উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৫ হাজার মেট্রিক টন। কতটি ঘেরে মাছ মারা যাচ্ছে, এ তথ্য মৎস্য অধিদপ্তরে না থাকলেও এক-তৃতীয়াংশ ঘেরে মাছ মারা যাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সদর উপজেলার এল্লারচর ও আশাশুনির প্রতাপনগর এলাকায় মাছচাষিরা জানান, গত কয়েক মৌসুম করোনার কারণে মাছের দাম পড়ে যায়। ফলে লোকসান গুনতে হয়েছে চাষিদের। করোনা কমতেই বাগদার দাম বেড়ে যায়। তাই চাষিরা ব্যাপক উৎসাহে ঘেরে বাগদার পোনা ছাড়েন। কিন্তু বিধি বাম, ভরা মৌসুমে ঘেরে মারা যাচ্ছে চিংড়ি মাছ।

এল্লারচর এলাকার চাষি মিজানুর রহমান বলেন, ‘করোনার কারণে গত দুই বছর বাগদার উৎপাদন খরচ ওঠেনি। এবার মাছের দামও ভালো ছিল। ৩০ গ্রেডের মাছ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকার ওপরে। বৈশাখের প্রথম দিকে মাছের প্রথম চালান ওঠে। খুব ভোরে মাছ তুলতে গিয়ে দেখি, এক-তৃতীয়াংশ মাছ মারা যাচ্ছে। মরে যাওয়া মাছের দাম নেই।’

একই এলাকার চাষি হাজী আব্দুল মান্নান বলেন, ‘বাগদার রেণু আনা হয় কক্সবাজার থেকে। সাতক্ষীরার মৎস্য অফিসে ভাইরাস স্ক্যান করার দেড় কোটি টাকার ল্যাব রয়েছে বলে জানি। কিন্তু সেখান থেকে আমরা কখনো রেণুর ভাইরাস স্ক্যান করতে পারিনি। এবার দাবদাহ ও ভাইরাসে মাছ উজাড় হয়ে যাচ্ছে। লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছি।’

তবে বাগদা মরা ঠেকাতে কক্সবাজার থেকে আনা পোনা পানির সঙ্গে খাপ খাইয়ে ঘেরে ছাড়ার পরামর্শ দিয়েছেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আনিছুর রহমান। তিনি বলেন, এখন পানি কমতির দিকে। বহুদিন বৃষ্টি নেই। তাপমাত্রাও যেহেতু বৃদ্ধি হচ্ছে, সেহেতু মাছ মারা যাচ্ছে। ঘেরের গভীরতা বাড়ানোর বিকল্প নেই। ৩ থেকে ৫ ফুট পানি ঘেরে রাখতেই হবে।

বাগদা উৎপাদনের টার্গেট পূরণ হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, মৌসুমের প্রথম চালান এটি। পরে এখনো কয়েকটি চালান রয়েছে। সেগুলোর ওপর নির্ভর করছে বাগদা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে কি না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত