ভগিনী নিবেদিতা

সম্পাদকীয়
প্রকাশ : ২৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৮: ১৯
ভগিনী নিবেদিতা

১৮৬৭ সালের ২৮ অক্টোবর উত্তর আয়ারল্যান্ডে মেরি ইসাবেল নোবেল ও স্যামুয়েল রিচমন্ড নোবেলের ঘর আলো করে জন্ম নেন মার্গারেট এলিজাবেথ নোবেল। ছোটবেলায়ই পিতার কাছে মার্গারেট এলিজাবেথ এই শিক্ষা পান যে, মানবসেবাই ঈশ্বরসেবা। পিতার কথা তাঁর জীবনে গভীর প্রভাব বিস্তার করেছিল।

১৮৯৫ খ্রিষ্টাব্দের নভেম্বর মাসে লন্ডনে এক পারিবারিক আসরে মার্গারেট স্বামী বিবেকানন্দের বেদান্ত দর্শনের ব্যাখ্যা শোনেন। বিবেকানন্দের ধর্মব্যাখ্যা ও ব্যক্তিত্বে মুগ্ধ ও অভিভূত হয়ে তাঁকেই নিজের গুরু বলে বরণ করে নেন মার্গারেট।

১৮৯৮ খ্রিষ্টাব্দের ২৮ জানুয়ারি স্বদেশ ও পরিবার-পরিজন ত্যাগ করে মার্গারেট চলে আসেন ভারতে। ভারতে আসার কয়েক দিন পর ২৫ মার্চ স্বামী বিবেকানন্দ তাঁকে ব্রহ্মাচর্য ব্রতে দীক্ষা দেন।

মার্গারেটের নতুন নাম হয় ‘নিবেদিতা’। তিনিই প্রথম পাশ্চাত্য নারী, যিনি ভারতীয় সন্ন্যাসিনীর ব্রত গ্রহণ করেছিলেন। পরে ‘ভগিনী নিবেদিতা’ নামেই তিনি পরিচিতি অর্জন করেছেন।

১৮৯৮ খ্রিষ্টাব্দের নভেম্বর মাসে তিনি কলকাতায় একটি বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন করেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি ভগিনী নিবেদিতা নানা মানবকল্যাণমূলক কাজের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, জগদীশচন্দ্র বসু ও তাঁর স্ত্রী অবলা বসু, অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ওকাকুরা কাকুজো প্রমুখ তৎকালীন সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ছিলেন নিবেদিতার বন্ধুস্থানীয়। রবীন্দ্রনাথ তাঁকে ‘লোকমাতা’ আখ্যা দেন।

জীবনের শেষ পর্বে নিবেদিতা স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। অরবিন্দের সঙ্গে তার সখ্য স্থাপিত হয়।

তিনি ধর্ম, সাহিত্য, রাজনীতি, সমাজতত্ত্ব, শিল্প ইত্যাদি বিষয়ে প্রবন্ধ লিখেছেন। তাঁর লেখা উল্লেখযোগ্য বইগুলো হলো—কালী দ্য মাদার, ওয়েব অব ইন্ডিয়ান লাইফ, ক্রেডল টেলস অব হিন্দুইজম, দ্য মাস্টার অ্যাজ আই স হিম ইত্যাদি।

১৯১১ সালের ১৩ অক্টোবর মাত্র ৪৪ বছর বয়সে তিনি দার্জিলিংয়ে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। এই পৃথিবীতে তিনি কিছু নিতে নয়, দিতে এসেছিলেন—সেবা। সংক্ষিপ্ত জীবনে শুধু নিবেদন করেই তৃপ্ত থেকেছেন ভগিনী নিবেদিতা।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত