ফ্যাক্টচেক ডেস্ক
বাংলা চলচ্চিত্রে নায়ক বা নায়িকাকে সাপে কাটার পর একটি বহুল প্রচলিত দৃশ্য, সাপে কাটা স্থান থেকে মুখ দিয়ে চুষে বিষ করে ফেলা। শুধু বাংলা চলচ্চিত্রই নয়, যুগ যুগ ধরে এমন দৃশ্যের দেখা মেলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের চলচ্চিত্র, গল্প-সাহিত্যে। আবার বিশেষজ্ঞরা এভাবে আক্রান্ত স্থানে মুখ লাগিয়ে বিষ বের করতে বারণ করেন। কিন্তু কেন? এভাবে চুষে কি বের করা সম্ভব? কেন বিশেষজ্ঞরা সাপে কাটা স্থান চুষতে বারণ করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ওরিগন হেলথ সায়েন্সেস ইউনিভার্সিটির ইমার্জেন্সি মেডিসিন ডিপার্টমেন্টের সহকারী অধ্যাপক (ক্লিনিক্যাল) ডেল গানেল ২০০৩ সালে দ্য রিসার্চ রিভিউ জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলেন, সাপে কাটা স্থান চুষে বিষ বের করার ব্যাপারটি প্রচলিত ধারণা। আক্রান্ত স্থান মুখ দিয়ে বা অন্য কোনো উপকরণ দিয়ে বিষ বের করার ধারণা কাল্পনিক। এই ধরনের চিকিৎসাপদ্ধতি বা এর কার্যকারিতার কোনো ভিত্তি নেই।
ওষুধ ও চিকিৎসাবিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাগাজিন বিএসটি (বায়ো সাপ্লাই ট্রেন্ডস) কোয়ার্টারলি। ম্যাগাজিনটিতে বিষধর সাপের কামড়সংক্রান্ত কিছু প্রচলিত ধারণা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। এখানে সাপে কাটা স্থান চোষা সম্পর্কে বলা হয়, সাপের কামড়সংক্রান্ত ভয়ংকর ধারণাগুলোর একটি হলো আক্রান্ত চুষে বিষ বের করার চেষ্টা। এ ধরনের চেষ্টা সাপের কামড়ের প্রভাব আরও মারাত্মক করে তোলে। কারণ, সাপে কাটার পর বিষ খুব দ্রুত আক্রান্ত ব্যক্তির রক্তসংবহনতন্ত্রে ছড়িয়ে পড়ে। এর মধ্যে আক্রান্ত ব্যক্তির ক্ষতস্থান থেকে বিষ চুষে বের করার চেষ্টার মাধ্যমে বিষ মুখে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
এমনকি যে ব্যক্তি বিষ চুষে বের করার চেষ্টা করে, তার ঠোঁট বা মাড়িতে কাটা থাকলে বিষ তাঁর লসিকানালিতেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। প্রসঙ্গত, মানবদেহের বিভিন্ন টিস্যুর মধ্যবর্তী ফাঁকা স্থানে যে জলীয় পদার্থ জমা হয়, তাকে লসিকা বলে। আর এগুলো যে ছোট নালির মাধ্যমে সংগৃহীত হয়, তাকে লসিকানালি বলে।
এ ছাড়া বাজারে প্রচলিত স্নেকবাইট কিটে সাকশন কাপ থাকে। এই সাকশন কাপ ব্যবহার করে বিষ বের করার চেষ্টাও অপর্যাপ্ত। কারণ, এ ধরনের যে হারে বিষ বের করে, রক্তে বিষ তার চেয়েও দ্রুত ছড়ায়।
২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় চার বছরের এক শিশুকে র্যাটল স্নেক ছোবল দেয়। এ ঘটনার পর তার ৯ মাসের গর্ভবতী মা জ্যাকলিন কারামাজ্জা ওই শিশুর সাপে কাটা স্থান চুষে বিষ বের করার চেষ্টা চালান। এই ঘটনায় জ্যাকলিন কারামাজ্জা ও তাঁর চার বছর বয়সী সন্তান বেঁচে গেলেও বিশেষজ্ঞদের সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। এ ঘটনার পর বিশেষজ্ঞরা জানান, সাপে কাটা স্থান থেকে বিষ চুষে বের করার বিভিন্ন দৃশ্য চলচ্চিত্রে দেখা গেলেও এটি পুরোপুরি ভুল ধারণা। জ্যাকলিন কারামাজ্জার সৌভাগ্য যে সাপের বিষ তাঁর শরীরে এবং একই সঙ্গে তাঁর গর্ভের সন্তানের ওপর কোনো প্রভাব ফেলেনি।
চীনের সংবাদমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টে জীবনরক্ষার প্রচলিত ১০টি প্রচলিত ভুল ধারণা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। এই ১০ ধারণার একটি, সাপে কাটা স্থান চুষে বিষ বের করে ফেলা যায়। কারণ, বিষধর সাপের কামড়ের পরপরই রক্তপ্রবাহে বিষ ছড়িয়ে পড়ে। সেই স্থানে মুখ রাখলে সেখানে মুখ থেকে অতিরিক্ত ব্যাকটেরিয়া সরবরাহ হতে পারে এবং একই সঙ্গে মুখ ও খাদ্যনালিতে বিষ ঢুকে যেতে পারে।
নিউইয়র্ক টাইমসে ২০০৪ সালে সাপে কাটা স্থানে মুখ লাগিয়ে বিষ বের করে ফেলা প্রসঙ্গে বলা হয়, এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। সাপে কাটা স্থানে মুখ লাগিয়ে বিষ বের করার চেষ্টা সংক্রমণসহ আক্রান্ত রোগীর শরীরে নানা ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
মেন্টাল ফ্লস নামে যুক্তরাষ্ট্রের একটি অনলাইন ম্যাগাজিন জানায়, গবেষণায় দেখা গেছে, সাপে কাটা স্থানে মুখ লাগিয়ে বিষ বের করার চেষ্টা অবৈজ্ঞানিক। বিষে আক্রান্ত ব্যক্তির রক্তসংবহনতন্ত্রের মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। তাই সাপে কাটা স্থানে মুখ লাগিয়ে পর্যাপ্ত বিষ বের করা সম্ভব নয়; বরং এভাবে বিষ বের করার চেষ্টা সংক্রমণসহ মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করে।
সিদ্ধান্ত
ওপরের আলোচনা থেকে স্পষ্ট, সাপে কাটা স্থানে মুখ দিয়ে চুষে বিষ বের করা সম্ভব নয়। এটি চলচ্চিত্রে দেখানো সম্পূর্ণ অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতি। এর মাধ্যমে সাপে কাটা ও মুখ লাগিয়ে বিষ বের করার চেষ্টা করা ব্যক্তি—দুজনেই বিপদের সম্মুখীন হতে পারেন। সাপে কাটা ব্যক্তির ক্ষেত্রে একমাত্র করণীয়, দ্রুত তাঁকে হাসপাতাল বা চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া।
বাংলা চলচ্চিত্রে নায়ক বা নায়িকাকে সাপে কাটার পর একটি বহুল প্রচলিত দৃশ্য, সাপে কাটা স্থান থেকে মুখ দিয়ে চুষে বিষ করে ফেলা। শুধু বাংলা চলচ্চিত্রই নয়, যুগ যুগ ধরে এমন দৃশ্যের দেখা মেলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের চলচ্চিত্র, গল্প-সাহিত্যে। আবার বিশেষজ্ঞরা এভাবে আক্রান্ত স্থানে মুখ লাগিয়ে বিষ বের করতে বারণ করেন। কিন্তু কেন? এভাবে চুষে কি বের করা সম্ভব? কেন বিশেষজ্ঞরা সাপে কাটা স্থান চুষতে বারণ করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ওরিগন হেলথ সায়েন্সেস ইউনিভার্সিটির ইমার্জেন্সি মেডিসিন ডিপার্টমেন্টের সহকারী অধ্যাপক (ক্লিনিক্যাল) ডেল গানেল ২০০৩ সালে দ্য রিসার্চ রিভিউ জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলেন, সাপে কাটা স্থান চুষে বিষ বের করার ব্যাপারটি প্রচলিত ধারণা। আক্রান্ত স্থান মুখ দিয়ে বা অন্য কোনো উপকরণ দিয়ে বিষ বের করার ধারণা কাল্পনিক। এই ধরনের চিকিৎসাপদ্ধতি বা এর কার্যকারিতার কোনো ভিত্তি নেই।
ওষুধ ও চিকিৎসাবিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাগাজিন বিএসটি (বায়ো সাপ্লাই ট্রেন্ডস) কোয়ার্টারলি। ম্যাগাজিনটিতে বিষধর সাপের কামড়সংক্রান্ত কিছু প্রচলিত ধারণা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। এখানে সাপে কাটা স্থান চোষা সম্পর্কে বলা হয়, সাপের কামড়সংক্রান্ত ভয়ংকর ধারণাগুলোর একটি হলো আক্রান্ত চুষে বিষ বের করার চেষ্টা। এ ধরনের চেষ্টা সাপের কামড়ের প্রভাব আরও মারাত্মক করে তোলে। কারণ, সাপে কাটার পর বিষ খুব দ্রুত আক্রান্ত ব্যক্তির রক্তসংবহনতন্ত্রে ছড়িয়ে পড়ে। এর মধ্যে আক্রান্ত ব্যক্তির ক্ষতস্থান থেকে বিষ চুষে বের করার চেষ্টার মাধ্যমে বিষ মুখে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
এমনকি যে ব্যক্তি বিষ চুষে বের করার চেষ্টা করে, তার ঠোঁট বা মাড়িতে কাটা থাকলে বিষ তাঁর লসিকানালিতেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। প্রসঙ্গত, মানবদেহের বিভিন্ন টিস্যুর মধ্যবর্তী ফাঁকা স্থানে যে জলীয় পদার্থ জমা হয়, তাকে লসিকা বলে। আর এগুলো যে ছোট নালির মাধ্যমে সংগৃহীত হয়, তাকে লসিকানালি বলে।
এ ছাড়া বাজারে প্রচলিত স্নেকবাইট কিটে সাকশন কাপ থাকে। এই সাকশন কাপ ব্যবহার করে বিষ বের করার চেষ্টাও অপর্যাপ্ত। কারণ, এ ধরনের যে হারে বিষ বের করে, রক্তে বিষ তার চেয়েও দ্রুত ছড়ায়।
২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় চার বছরের এক শিশুকে র্যাটল স্নেক ছোবল দেয়। এ ঘটনার পর তার ৯ মাসের গর্ভবতী মা জ্যাকলিন কারামাজ্জা ওই শিশুর সাপে কাটা স্থান চুষে বিষ বের করার চেষ্টা চালান। এই ঘটনায় জ্যাকলিন কারামাজ্জা ও তাঁর চার বছর বয়সী সন্তান বেঁচে গেলেও বিশেষজ্ঞদের সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। এ ঘটনার পর বিশেষজ্ঞরা জানান, সাপে কাটা স্থান থেকে বিষ চুষে বের করার বিভিন্ন দৃশ্য চলচ্চিত্রে দেখা গেলেও এটি পুরোপুরি ভুল ধারণা। জ্যাকলিন কারামাজ্জার সৌভাগ্য যে সাপের বিষ তাঁর শরীরে এবং একই সঙ্গে তাঁর গর্ভের সন্তানের ওপর কোনো প্রভাব ফেলেনি।
চীনের সংবাদমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টে জীবনরক্ষার প্রচলিত ১০টি প্রচলিত ভুল ধারণা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। এই ১০ ধারণার একটি, সাপে কাটা স্থান চুষে বিষ বের করে ফেলা যায়। কারণ, বিষধর সাপের কামড়ের পরপরই রক্তপ্রবাহে বিষ ছড়িয়ে পড়ে। সেই স্থানে মুখ রাখলে সেখানে মুখ থেকে অতিরিক্ত ব্যাকটেরিয়া সরবরাহ হতে পারে এবং একই সঙ্গে মুখ ও খাদ্যনালিতে বিষ ঢুকে যেতে পারে।
নিউইয়র্ক টাইমসে ২০০৪ সালে সাপে কাটা স্থানে মুখ লাগিয়ে বিষ বের করে ফেলা প্রসঙ্গে বলা হয়, এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। সাপে কাটা স্থানে মুখ লাগিয়ে বিষ বের করার চেষ্টা সংক্রমণসহ আক্রান্ত রোগীর শরীরে নানা ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
মেন্টাল ফ্লস নামে যুক্তরাষ্ট্রের একটি অনলাইন ম্যাগাজিন জানায়, গবেষণায় দেখা গেছে, সাপে কাটা স্থানে মুখ লাগিয়ে বিষ বের করার চেষ্টা অবৈজ্ঞানিক। বিষে আক্রান্ত ব্যক্তির রক্তসংবহনতন্ত্রের মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। তাই সাপে কাটা স্থানে মুখ লাগিয়ে পর্যাপ্ত বিষ বের করা সম্ভব নয়; বরং এভাবে বিষ বের করার চেষ্টা সংক্রমণসহ মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করে।
সিদ্ধান্ত
ওপরের আলোচনা থেকে স্পষ্ট, সাপে কাটা স্থানে মুখ দিয়ে চুষে বিষ বের করা সম্ভব নয়। এটি চলচ্চিত্রে দেখানো সম্পূর্ণ অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতি। এর মাধ্যমে সাপে কাটা ও মুখ লাগিয়ে বিষ বের করার চেষ্টা করা ব্যক্তি—দুজনেই বিপদের সম্মুখীন হতে পারেন। সাপে কাটা ব্যক্তির ক্ষেত্রে একমাত্র করণীয়, দ্রুত তাঁকে হাসপাতাল বা চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া।
ঝাল খাবার খেলে পাকস্থলীতে আলসার হয়— এমন ধারণা বহুদিন ধরে লোকমুখে প্রচার হয়ে আসছে। কিন্তু সত্যিই কি তাই? এই বিষয়ে চিকিৎসাবিজ্ঞান কী বলে তা জানার চেষ্টা করেছে আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগ।
১ দিন আগেবিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারব্যবস্থাকে ‘দুর্বৃত্ত-লুটেরা-মাফিয়া’ উল্লেখ করে মন্তব্য করেছেন—এই দাবিতে একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওটি ভিন্ন ভিন্ন ক্যাপশনে সম্প্রতি একাধিক ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ও ফেসবুক পেজে ছড়ানো হয়েছে।
২ দিন আগেপরিশ্রম করলে মানুষের শরীর থেকে ঘাম বের হয়। ঘামের মধ্যে পানি ও লবণ থাকে তা সাধারণভাবে সবাই জানে। কিন্তু ঘাম মানুষের শরীর থেকে টক্সিন বা বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয়—এমন একটি কথাও বহুদিন ধরে লোকমুখে প্রচার হয়ে আসছে। কিন্তু সত্যিই কি তাই? এই বিষয়ে চিকিৎসাবিজ্ঞান কী বলে তা জানার চেষ্টা করেছে আজকের পত্রিকা
৩ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কেরা রেস্তোরাঁয় ইফতারি করে বিল না দিয়ে চাঁদা চাওয়ায় দুই গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতির হয়— এমন দাবিতে একটি ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওটি বিভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ও পেজ থেকে প্রায় একই ক্যাপশনে ছড়ানো হয়েছে।
৩ দিন আগে