নিজের চোখকে ভালোবাসুন

ডা. মনোজ দাশ
প্রকাশ : ১৪ অক্টোবর ২০২১, ০৮: ৩০

প্রতি বছর অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় বৃহস্পতিবার বিশ্ব দৃষ্টি দিবস পালন করা হয়। সেই হিসেবে আজ ১৪ অক্টোবর এ বছরের বিশ্ব দৃষ্টি দিবস। ২০০০ সালে লায়নস ক্লাব ইন্টারন্যাশনাল কর্তৃক অনুষ্ঠিত ‘সাইট ফার্স্ট’ প্রচারের ফলে এই দিবস পালন শুরু হয়।

এ বছর করোনা মহামারির বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে অন্ধত্ব এবং চোখের বিকলতা সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং বৈশ্বিক মনোযোগ আকর্ষণের লক্ষ্যে বিশ্বজুড়ে বিশ্ব দৃষ্টি দিবস পালন করা হচ্ছে।

প্রতিবছর এই দিবসের একটা প্রতিপাদ্য থাকে। এ বছর বিশ্ব দৃষ্টি দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে—‘আপনার চোখকে ভালোবাসুন।’ সারা পৃথিবীর ৩০০ মিলিয়ন (৩০ কোটি) মানুষের দৃষ্টিশক্তির স্বল্পতা আছে। কোটি কোটি মানুষের চোখের চিকিৎসা নেওয়ার কোনো সামর্থ্য নেই। ৩২ মিলিয়ন মানুষ অন্ধ। এর মধ্যে প্রায় ১৯ মিলিয়ন শিশু। ১২ মিলিয়ন মানুষ চশমাজনিত কারণে অন্ধ। সারা বিশ্বের এই বিশাল জনসমষ্টির ৯০ শতাংশ বাংলাদেশের মতো তৃতীয় বিশ্বে বাস করে।

বাংলাদেশের নিবন্ধিত অন্ধ জনগোষ্ঠী ৭ লাখ। অন্ধত্ব দূর করার কর্মযজ্ঞে গতি আনতে না পারলে অন্ধত্ব দূর করতে ২০৫০ সাল পর্যন্ত লেগে যেতে পারে। 

অন্ধত্বের প্রধান কারণগুলো হচ্ছে—
১. বয়সজনিত ম্যাকুলার ডিজেনারেশন
২. গ্লকোমা
৩. ছানি
৪. আঘাতজনিত
৫. চশমাজনিত
৬. ভিটামিন সি-এর অভাব
৭. ডায়াবেটিসজনিত এবং
৮. ট্রাকোমা নামক রোগ (আমাদের সৌভাগ্য এই রোগটি আমাদের দেশে নেই)। 

আমাদের সবাইকে নিজের চোখকে ভালোবাসতে হবে এবং অন্ধত্ব প্রতিরোধে কয়েকটি বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে—
১. ছোট মাছ, শাকসবজি, হলুদ ফলমূল খেতে হবে।
৩. পুষ্টিকর খাদ্য খেতে হবে। 
৪. নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে এবং ডায়াবেটিস ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। 
৫. চল্লিশের বেশি বয়সীদের গ্লকোমা পরীক্ষা করতে হবে। 
৬. ধূমপান করা যাবে না। 
৭. কম্পিউটার ব্যবহার কমাতে হবে এবং চিকিৎসকদের পরামর্শ মানতে হবে। 

প্রতিটি দেশের সরকারকে চোখের চিকিৎসা পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। চক্ষু সেবাপ্রতিষ্ঠান বাড়াতে হবে এবং এর মানোন্নয়ন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে উপযুক্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে চক্ষু সেবায় দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে হবে। এই বিষয়ে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগকে সমন্বিত করতে হবে। 

লেখক: চক্ষু বিশেষজ্ঞ, সিএসএস চক্ষু হাসপাতাল, খুলনা

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত