লিনা আকতার
শিশুদের সঠিকভাবে বেড়ে ওঠার জন্য পর্যাপ্ত সুষম খাবার খাওয়া জরুরি। পুষ্টির ঘাটতি হলে শিশুরা অপুষ্টিতে ভোগে। ফলে তাদের বারবার অসুস্থ হওয়ার প্রবণতা ও সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। এতে শিশুর শারীরিক বৃদ্ধি ও বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়।
রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে
বড়দের মতো শিশুদের স্বাস্থ্যকর খাবারগুলো ছয়টি গ্রুপ থেকে নিতে হবে। এগুলো হলো শস্যজাতীয় খাবার, স্বাস্থ্যকর প্রোটিন ও চর্বি, ভিটামিন, খনিজ এবং পানি। এসব খাবার শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশের পাশাপাশি বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
শিশুদের রাতকানা রোগ প্রতিরোধে
অল্প আলোতে দেখার ক্ষমতা নষ্ট হওয়াই হলো রাতকানা রোগ। এটি মূলত ভিটামিন ‘এ’র অভাবে হয়। অনেক সময় অভিভাবকেরা বুঝতে পারেন না। বিষয়টি বুঝতে দেরি হলে চোখের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। রাতকানা রোগ প্রতিরোধে শিশুদের দৈনিক খাদ্যতালিকায় রাখতে পারেন গাজর, মিষ্টি আলু, পেঁপে, আম, কুমড়া, মাছের তেল বা চর্বিযুক্ত মাছ, হলুদ ও কমলা রঙের ফলমূল, গাঢ় সবুজ রঙের শাকসবজি ইত্যাদি।
কৃমির সংক্রমণ ও খাওয়ায় অরুচি রোধে
শিশুদের প্রোটিন ও ভিটামিনের অভাব হলে কেঁচো কৃমি হতে পারে। আবার আয়রন, ভিটামিন বি১২ ও ফলিক অ্যাসিডের অভাব হলে বক্র কৃমি হতে পারে। এ ছাড়া জিংকের ঘাটতি হলে খাওয়ায় অরুচি, বিরক্তিকর আচরণ, ঘন ঘন সর্দি-কাশি, চক, মাটি, বালু ইত্যাদির মতো অস্বাভাবিক জিনিস খাবার আকাঙ্ক্ষা, যেটি পিকা বলে পরিচিত, সেটি হতে পারে। এ জন্য প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় আয়রনসমৃদ্ধ খাবার যেমন ডিম, কলিজা, পালংশাক, ডাল,মাংস, বাদাম ইত্যাদি খেতে দিতে হবে। আয়রন যাতে সহজে শোষণ হয়, সে জন্য ভিটামিন ‘সি’সমৃদ্ধ খাবার যেমন লেবু, কমলা, মাল্টা, পেয়ারা ইত্যাদি খাওয়াতে হবে। এগুলো ক্ষুধা বৃদ্ধি করতেও সাহায্য করবে। শিশুদের কৃমি প্রতিরোধে খাওয়ার আগে হাত সাবান দিয়ে ধুয়ে দিতে হবে। ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতার দিকে নজর দিতে হবে।
শিশুকে শাকসবজি, ফলমূল ও পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি পান করাতে হবে। এ ছাড়া পরিপাকতন্ত্র ভালো রাখতে প্রোবায়োটিকসমৃদ্ধ খাবার খাওয়াতে হবে।
হাড়-দাঁত মজবুতকরণ ও রিকেটস রোগ প্রতিরোধে
শিশুদের হাড় ও দাঁত মজবুতকরণ, পেশির দুর্বলতা সাধারণত ভিটামিন ‘ডি’ ও ক্যালসিয়ামের কারণে হয়ে থাকে। বিশেষ করে ভিটামিন ’ডি’র অভাবে রিকেটস রোগ হয়। সূর্যের আলো ভিটামিন ‘ডি’র ভালো উৎস। নিয়মিত সূর্যের আলো শরীরে লাগানো ছাড়া শিশুদের খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে দুধ ও দুধের তৈরি খাবার, তিলের নাড়ু, ছানা, পুডিং, ছোট মাছ, সবুজ শাকসবজি ইত্যাদি।
শিশুর মস্তিষ্ক বিকাশে
শিশুর শারীরিক বৃদ্ধির সঙ্গে মানসিক বিকাশ গুরুত্বপূর্ণ। এ জন্য আয়োডিন, কোলিন, ভিটামিন বি১২, ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডসমৃদ্ধ খাবার খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে। তৈলাক্ত ও সামুদ্রিক মাছ, ডিমের কুসুম, লাল আপেল, ডাল, আখরোট, বিভিন্ন ধরনের বাদাম, আয়োডিনযুক্ত লবণ ইত্যাদি নিয়মিত খাওয়াতে হবে।
শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে
শিশুকে শাকসবজি, ফলমূল ও পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি পান করাতে হবে। এ ছাড়া পরিপাকতন্ত্র ভালো রাখতে প্রোবায়োটিকসমৃদ্ধ খাবার খাওয়াতে হবে। এগুলোর মধ্যে আছে দই, আচার, পান্তাভাত বা গাঁজানো যেকোনো খাবার। জুস খাওয়ার পরিবর্তে আস্তা ফল খেতে দিতে হবে। শিশুদের খেলাধুলার ব্যবস্থা করতে হবে। এ ছাড়া জাঙ্ক ফুড, ফাস্ট ফুড, প্যাকেটজাত খাবার, কোমল পানীয় খাওয়ানো বাদ দিতে হবে।
শিশুর বয়স অনুযায়ী ওজন ও উচ্চতা ঠিক না থাকলে
সুষম খাবারের অভাব হলে শিশুর বয়স অনুযায়ী ওজন ও উচ্চতা ঠিক থাকে না। এ জন্য পর্যাপ্ত প্রোটিন ও ভালো চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়াতে হবে। সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন খিচুড়ি, ডিম, ডাল, বাদাম, ছোলা, মটরশুঁটি খাওয়াতে হবে।
শিশুদের খাবারে বৈচিত্র্য আনতে এক খাবার প্রতিদিন না দিয়ে একেক দিন একেক ধরনের খাবার দিতে হবে। খাবারগুলো যেন বিভিন্ন রঙের ও মুখরোচক হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। না হলে শিশু খাবারের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে।
লেখক: পুষ্টিবিদ, রায়হান হেলথকেয়ার হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার, দিনাজপুর
শিশুদের সঠিকভাবে বেড়ে ওঠার জন্য পর্যাপ্ত সুষম খাবার খাওয়া জরুরি। পুষ্টির ঘাটতি হলে শিশুরা অপুষ্টিতে ভোগে। ফলে তাদের বারবার অসুস্থ হওয়ার প্রবণতা ও সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। এতে শিশুর শারীরিক বৃদ্ধি ও বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়।
রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে
বড়দের মতো শিশুদের স্বাস্থ্যকর খাবারগুলো ছয়টি গ্রুপ থেকে নিতে হবে। এগুলো হলো শস্যজাতীয় খাবার, স্বাস্থ্যকর প্রোটিন ও চর্বি, ভিটামিন, খনিজ এবং পানি। এসব খাবার শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশের পাশাপাশি বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
শিশুদের রাতকানা রোগ প্রতিরোধে
অল্প আলোতে দেখার ক্ষমতা নষ্ট হওয়াই হলো রাতকানা রোগ। এটি মূলত ভিটামিন ‘এ’র অভাবে হয়। অনেক সময় অভিভাবকেরা বুঝতে পারেন না। বিষয়টি বুঝতে দেরি হলে চোখের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। রাতকানা রোগ প্রতিরোধে শিশুদের দৈনিক খাদ্যতালিকায় রাখতে পারেন গাজর, মিষ্টি আলু, পেঁপে, আম, কুমড়া, মাছের তেল বা চর্বিযুক্ত মাছ, হলুদ ও কমলা রঙের ফলমূল, গাঢ় সবুজ রঙের শাকসবজি ইত্যাদি।
কৃমির সংক্রমণ ও খাওয়ায় অরুচি রোধে
শিশুদের প্রোটিন ও ভিটামিনের অভাব হলে কেঁচো কৃমি হতে পারে। আবার আয়রন, ভিটামিন বি১২ ও ফলিক অ্যাসিডের অভাব হলে বক্র কৃমি হতে পারে। এ ছাড়া জিংকের ঘাটতি হলে খাওয়ায় অরুচি, বিরক্তিকর আচরণ, ঘন ঘন সর্দি-কাশি, চক, মাটি, বালু ইত্যাদির মতো অস্বাভাবিক জিনিস খাবার আকাঙ্ক্ষা, যেটি পিকা বলে পরিচিত, সেটি হতে পারে। এ জন্য প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় আয়রনসমৃদ্ধ খাবার যেমন ডিম, কলিজা, পালংশাক, ডাল,মাংস, বাদাম ইত্যাদি খেতে দিতে হবে। আয়রন যাতে সহজে শোষণ হয়, সে জন্য ভিটামিন ‘সি’সমৃদ্ধ খাবার যেমন লেবু, কমলা, মাল্টা, পেয়ারা ইত্যাদি খাওয়াতে হবে। এগুলো ক্ষুধা বৃদ্ধি করতেও সাহায্য করবে। শিশুদের কৃমি প্রতিরোধে খাওয়ার আগে হাত সাবান দিয়ে ধুয়ে দিতে হবে। ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতার দিকে নজর দিতে হবে।
শিশুকে শাকসবজি, ফলমূল ও পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি পান করাতে হবে। এ ছাড়া পরিপাকতন্ত্র ভালো রাখতে প্রোবায়োটিকসমৃদ্ধ খাবার খাওয়াতে হবে।
হাড়-দাঁত মজবুতকরণ ও রিকেটস রোগ প্রতিরোধে
শিশুদের হাড় ও দাঁত মজবুতকরণ, পেশির দুর্বলতা সাধারণত ভিটামিন ‘ডি’ ও ক্যালসিয়ামের কারণে হয়ে থাকে। বিশেষ করে ভিটামিন ’ডি’র অভাবে রিকেটস রোগ হয়। সূর্যের আলো ভিটামিন ‘ডি’র ভালো উৎস। নিয়মিত সূর্যের আলো শরীরে লাগানো ছাড়া শিশুদের খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে দুধ ও দুধের তৈরি খাবার, তিলের নাড়ু, ছানা, পুডিং, ছোট মাছ, সবুজ শাকসবজি ইত্যাদি।
শিশুর মস্তিষ্ক বিকাশে
শিশুর শারীরিক বৃদ্ধির সঙ্গে মানসিক বিকাশ গুরুত্বপূর্ণ। এ জন্য আয়োডিন, কোলিন, ভিটামিন বি১২, ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডসমৃদ্ধ খাবার খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে। তৈলাক্ত ও সামুদ্রিক মাছ, ডিমের কুসুম, লাল আপেল, ডাল, আখরোট, বিভিন্ন ধরনের বাদাম, আয়োডিনযুক্ত লবণ ইত্যাদি নিয়মিত খাওয়াতে হবে।
শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে
শিশুকে শাকসবজি, ফলমূল ও পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি পান করাতে হবে। এ ছাড়া পরিপাকতন্ত্র ভালো রাখতে প্রোবায়োটিকসমৃদ্ধ খাবার খাওয়াতে হবে। এগুলোর মধ্যে আছে দই, আচার, পান্তাভাত বা গাঁজানো যেকোনো খাবার। জুস খাওয়ার পরিবর্তে আস্তা ফল খেতে দিতে হবে। শিশুদের খেলাধুলার ব্যবস্থা করতে হবে। এ ছাড়া জাঙ্ক ফুড, ফাস্ট ফুড, প্যাকেটজাত খাবার, কোমল পানীয় খাওয়ানো বাদ দিতে হবে।
শিশুর বয়স অনুযায়ী ওজন ও উচ্চতা ঠিক না থাকলে
সুষম খাবারের অভাব হলে শিশুর বয়স অনুযায়ী ওজন ও উচ্চতা ঠিক থাকে না। এ জন্য পর্যাপ্ত প্রোটিন ও ভালো চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়াতে হবে। সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন খিচুড়ি, ডিম, ডাল, বাদাম, ছোলা, মটরশুঁটি খাওয়াতে হবে।
শিশুদের খাবারে বৈচিত্র্য আনতে এক খাবার প্রতিদিন না দিয়ে একেক দিন একেক ধরনের খাবার দিতে হবে। খাবারগুলো যেন বিভিন্ন রঙের ও মুখরোচক হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। না হলে শিশু খাবারের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে।
লেখক: পুষ্টিবিদ, রায়হান হেলথকেয়ার হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার, দিনাজপুর
দেশের ৪১ জেলায় নতুন সিভিল সার্জন নিয়োগ দিয়েছে সরকার। বদলি/পদায়নকৃত কর্মকর্তাগণ আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে বদলিকৃত কর্মস্থলে যোগাদান করবেন। অন্যথায় আগামী রোববার থেকে বর্তমান কর্মস্থল থেকে তাৎক্ষণিক অবমুক্ত মর্মে গণ্য হবেন।
৩ দিন আগেবিগত কয়েক দশক ধরেই বিশ্বে অন্যতম স্বাস্থ্য সমস্যা মুটিয়ে যাওয়া ও স্থূলতা। আগামী কয়েক দশকে এই সমস্যা আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা করছেন গবেষকেরা। তাঁরা বলছেন, বিশ্বব্যাপী ২০৫০ সালের মধ্যে অর্ধেকের বেশি প্রাপ্তবয়স্ক এবং এক-তৃতীয়াংশ শিশু ও কিশোর-কিশোরী অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতার শিকার হবে। এই বিষয়টি
৩ দিন আগে২০২৫ সালে এসেও এই চিত্র খুব একটা বদলায়নি। এখনো স্বাস্থ্যের জন্য জরুরি ৪টি উপাদান লৌহ, ভিটামিন ডি, ভিটামিন বি ১২, জিংকের ঘাটতিতে ভুগছে প্রায় ২৫ শতাংশ কিশোরী এবং স্থূলতায় আক্রান্ত কমপক্ষে ১০ শতাংশ।
৩ দিন আগেআত্মহত্যা একটি বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে বাংলাদেশে আত্মহত্যার প্রবণতা বিশেষভাবে উদ্বেগজনক। বিশ্বব্যাপী আত্মহত্যা প্রতিরোধের উদ্যোগ নেওয়া হলেও বাংলাদেশে এখনো আত্মহত্যা সংক্রান্ত পর্যাপ্ত গবেষণা ও কার্যকর নীতিমালা তৈরি হয়নি
৩ দিন আগে