ডা. ফরিদা ইয়াসমিন সুমি
গর্ভাবস্থায় শিশুর সুস্থতা নির্ভর করে মায়ের সুস্থতার ওপর। মায়ের অসুস্থতা গর্ভস্থ শিশুর বুদ্ধি ও শারীরিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত করতে পারে। ফলে জন্ম নিতে পারে শারীরিক ও বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী শিশু। মারাত্মক ক্ষেত্রে শিশুর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
কিছু কিছু রোগ আছে, যার জীবাণু গর্ভাবস্থায় গর্ভফুল বা প্লাসেন্টারের মাধ্যমে মায়ের থেকে শিশুর শরীরে প্রবেশ করে। এগুলোর মধ্যে আছে হেপাটাইটিস বি ও সি, রুবেলা, টক্সোপ্লাজমা, এইচআইভি, সিফিলিস, হারপিস সিমপ্লেক্স, গ্রুপ বি-স্ট্রেপটোকক্কাস, সাইটোমেগালো ভাইরাস, জিকা ভাইরাস, লিস্টেরিয়া, ভ্যারিসেলা, করোনাভাইরাস ইত্যাদি।
গর্ভস্থ শিশুর নিরাপত্তার জন্য মায়ের টিকা নেওয়া আবশ্যক। যেমন টিটি টিকা, হেপাটাইটিস বি, এমআর, টিড্যাপ, করোনা, ফ্লু, নিউমোকক্কাল টিকা ইত্যাদি।
টিটি টিকা
নবজাতককে টিটেনাস বা ধনুষ্টঙ্কার থেকে সুরক্ষায় গর্ভবতীকে টিটি টিকা নিতে হবে। যদি ১৫ বছর বয়সে মেয়েদের টিটি টিকার পাঁচটি ডোজ দেওয়া হয়, তাহলে গর্ভাবস্থায় আর এই টিকা নিতে হবে না। টিকা না নিলে গর্ভাবস্থায় পাঁচ মাসের পর এক মাসের ব্যবধানে (৬ ও ৭ মাসে) পরপর দুটি টিটি টিকা নিতে হবে। শেষ ডোজটি অবশ্যই সন্তান প্রসবের অন্তত এক মাস আগে নিতে হবে। গর্ভধারণের আগে দুই ডোজ টিকা নিলে গর্ভকালীন পাঁচ মাসের পর তৃতীয় ডোজ এবং সন্তান প্রসবের পর চতুর্থ ও পঞ্চম ডোজ নিতে হবে। গর্ভধারণের আগে তিন ডোজ টিকা নিলে এবং গর্ভকালীন এক বছর অতিক্রান্ত না হলে সন্তান প্রসবের পর চতুর্থ ও পঞ্চম ডোজ টিকা নিতে হবে।
এমআর টিকা
গর্ভের প্রথম তিন মাসের মধ্যে গর্ভবতী হাম ও রুবেলা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে গর্ভপাত, নবজাতকের মৃত্যু কিংবা জন্মগত জটিলতা নিয়ে জন্ম হতে পারে শিশুর। আক্রান্ত শিশুর হার্টে ছিদ্র, চোখে ছানি বা অন্ধত্ব এবং মস্তিষ্কের নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেসব মেয়ে শৈশবে বা ১৫ বছর বয়সে এমআর (হাম-রুবেলা) টিকা নেয়নি, রুবেলা প্রতিরোধে পরবর্তী সময়ে তাদের দুই ডোজ টিকা নিতে হবে। তবে গর্ভধারণের কমপক্ষে এক মাস আগে নিতে হবে এমআর টিকা।
হেপাটাইটিস বি টিকা
গর্ভধারণের আগেই মায়েদের তিন ডোজ হেপাটাইটিস বি টিকা নেওয়া জরুরি। তবে গর্ভাবস্থায় মা আক্রান্ত হলে বা আগে থেকে মায়ের শরীরে এইচবিএস পজিটিভ থাকলে, নবজাতককে জন্মের ১২ ঘণ্টার মধ্যে এক ডোজ হেপাটাইটিস বি ভাইরাস ভ্যাকসিন এবং এক ডোজ ইমিউনোগ্লোবিউলিন আলাদাভাবে দিতে হবে।
করোনার টিকা
গর্ভাবস্থার ১৪ সপ্তাহে এবং যেসব মা সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন, তাঁরা করোনার টিকা নিতে পারবেন।
টিড্যাপ টিকা
টিটেনাস, ডিপথেরিয়া, পারটুসিস বা হুপিং কাশিকে একসঙ্গে টিড্যাপ বলে। এর টিকা গর্ভাবস্থার ২৭ থেকে ৩৬ সপ্তাহের মধ্যে নিতে হবে। এই টিকা গর্ভাবস্থায় যেকোনো সময় নেওয়া নিরাপদ।
নিউমোকক্কাল টিকা
অন্তঃসত্ত্বার দীর্ঘমেয়াদি কোনো রোগ, যেমন ডায়াবেটিস অথবা কিডনি রোগ থাকলে বা রোগীর সংস্পর্শে এলে নিউমোকক্কাল টিকা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। এই টিকা নিউমোনিয়া থেকে মা ও নবজাতককে সুরক্ষা দেয়। তবে এই টিকা ১৪ সপ্তাহের পর নেওয়াই উত্তম।
ফ্লু ভ্যাকসিন
গর্ভাবস্থায় এই টিকা নিলে মা এবং শিশু জন্মের পরে ফ্লু বা ইনফ্লুয়েঞ্জা-সংক্রান্ত জটিলতা থেকে বেশ কয়েক মাস পর্যন্ত রক্ষা পায়।
গর্ভাবস্থায় যেসব টিকা নেওয়া যাবে না
হাম, রুবেলা, মাম্পস, চিকেন পক্স, বিসিজি, টাইফয়েড, হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস এবং ইয়েলো ফিভারের টিকা গর্ভাবস্থায় নেওয়া যাবে না।গর্ভকালীন মা ও শিশু যেন বিপন্মুক্ত থাকে, সে জন্য প্রত্যেক নারীকে ১৫ বছর বয়সে হাম ও রুবেলা টিকার পাশাপাশি টিটি টিকার প্রথম ডোজ, ৪ সপ্তাহ পরে দ্বিতীয় ডোজ, ৬ মাস পর তৃতীয় ডোজ, ১ বছর পর চতুর্থ ডোজ এবং চতুর্থ ডোজের ১ বছর পর পঞ্চম ডোজ নেওয়া উচিত। এ ছাড়া গর্ভাবস্থায় ভ্রমণের সময় র্যাবিস ও ম্যানিনজাইটিস—এ দুটি গুরুত্বপূর্ণ টিকা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। মনে রাখতে হবে, সময়মতো সব টিকা নেওয়ার মাধ্যমে মা, শিশু ও পরিবারের সুরক্ষা সম্ভব।
পরামর্শ দিয়েছেন: ডা. ফরিদা ইয়াসমিন সুমি,সহকারী অধ্যাপক (গাইনি) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ
গর্ভাবস্থায় শিশুর সুস্থতা নির্ভর করে মায়ের সুস্থতার ওপর। মায়ের অসুস্থতা গর্ভস্থ শিশুর বুদ্ধি ও শারীরিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত করতে পারে। ফলে জন্ম নিতে পারে শারীরিক ও বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী শিশু। মারাত্মক ক্ষেত্রে শিশুর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
কিছু কিছু রোগ আছে, যার জীবাণু গর্ভাবস্থায় গর্ভফুল বা প্লাসেন্টারের মাধ্যমে মায়ের থেকে শিশুর শরীরে প্রবেশ করে। এগুলোর মধ্যে আছে হেপাটাইটিস বি ও সি, রুবেলা, টক্সোপ্লাজমা, এইচআইভি, সিফিলিস, হারপিস সিমপ্লেক্স, গ্রুপ বি-স্ট্রেপটোকক্কাস, সাইটোমেগালো ভাইরাস, জিকা ভাইরাস, লিস্টেরিয়া, ভ্যারিসেলা, করোনাভাইরাস ইত্যাদি।
গর্ভস্থ শিশুর নিরাপত্তার জন্য মায়ের টিকা নেওয়া আবশ্যক। যেমন টিটি টিকা, হেপাটাইটিস বি, এমআর, টিড্যাপ, করোনা, ফ্লু, নিউমোকক্কাল টিকা ইত্যাদি।
টিটি টিকা
নবজাতককে টিটেনাস বা ধনুষ্টঙ্কার থেকে সুরক্ষায় গর্ভবতীকে টিটি টিকা নিতে হবে। যদি ১৫ বছর বয়সে মেয়েদের টিটি টিকার পাঁচটি ডোজ দেওয়া হয়, তাহলে গর্ভাবস্থায় আর এই টিকা নিতে হবে না। টিকা না নিলে গর্ভাবস্থায় পাঁচ মাসের পর এক মাসের ব্যবধানে (৬ ও ৭ মাসে) পরপর দুটি টিটি টিকা নিতে হবে। শেষ ডোজটি অবশ্যই সন্তান প্রসবের অন্তত এক মাস আগে নিতে হবে। গর্ভধারণের আগে দুই ডোজ টিকা নিলে গর্ভকালীন পাঁচ মাসের পর তৃতীয় ডোজ এবং সন্তান প্রসবের পর চতুর্থ ও পঞ্চম ডোজ নিতে হবে। গর্ভধারণের আগে তিন ডোজ টিকা নিলে এবং গর্ভকালীন এক বছর অতিক্রান্ত না হলে সন্তান প্রসবের পর চতুর্থ ও পঞ্চম ডোজ টিকা নিতে হবে।
এমআর টিকা
গর্ভের প্রথম তিন মাসের মধ্যে গর্ভবতী হাম ও রুবেলা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে গর্ভপাত, নবজাতকের মৃত্যু কিংবা জন্মগত জটিলতা নিয়ে জন্ম হতে পারে শিশুর। আক্রান্ত শিশুর হার্টে ছিদ্র, চোখে ছানি বা অন্ধত্ব এবং মস্তিষ্কের নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেসব মেয়ে শৈশবে বা ১৫ বছর বয়সে এমআর (হাম-রুবেলা) টিকা নেয়নি, রুবেলা প্রতিরোধে পরবর্তী সময়ে তাদের দুই ডোজ টিকা নিতে হবে। তবে গর্ভধারণের কমপক্ষে এক মাস আগে নিতে হবে এমআর টিকা।
হেপাটাইটিস বি টিকা
গর্ভধারণের আগেই মায়েদের তিন ডোজ হেপাটাইটিস বি টিকা নেওয়া জরুরি। তবে গর্ভাবস্থায় মা আক্রান্ত হলে বা আগে থেকে মায়ের শরীরে এইচবিএস পজিটিভ থাকলে, নবজাতককে জন্মের ১২ ঘণ্টার মধ্যে এক ডোজ হেপাটাইটিস বি ভাইরাস ভ্যাকসিন এবং এক ডোজ ইমিউনোগ্লোবিউলিন আলাদাভাবে দিতে হবে।
করোনার টিকা
গর্ভাবস্থার ১৪ সপ্তাহে এবং যেসব মা সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন, তাঁরা করোনার টিকা নিতে পারবেন।
টিড্যাপ টিকা
টিটেনাস, ডিপথেরিয়া, পারটুসিস বা হুপিং কাশিকে একসঙ্গে টিড্যাপ বলে। এর টিকা গর্ভাবস্থার ২৭ থেকে ৩৬ সপ্তাহের মধ্যে নিতে হবে। এই টিকা গর্ভাবস্থায় যেকোনো সময় নেওয়া নিরাপদ।
নিউমোকক্কাল টিকা
অন্তঃসত্ত্বার দীর্ঘমেয়াদি কোনো রোগ, যেমন ডায়াবেটিস অথবা কিডনি রোগ থাকলে বা রোগীর সংস্পর্শে এলে নিউমোকক্কাল টিকা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। এই টিকা নিউমোনিয়া থেকে মা ও নবজাতককে সুরক্ষা দেয়। তবে এই টিকা ১৪ সপ্তাহের পর নেওয়াই উত্তম।
ফ্লু ভ্যাকসিন
গর্ভাবস্থায় এই টিকা নিলে মা এবং শিশু জন্মের পরে ফ্লু বা ইনফ্লুয়েঞ্জা-সংক্রান্ত জটিলতা থেকে বেশ কয়েক মাস পর্যন্ত রক্ষা পায়।
গর্ভাবস্থায় যেসব টিকা নেওয়া যাবে না
হাম, রুবেলা, মাম্পস, চিকেন পক্স, বিসিজি, টাইফয়েড, হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস এবং ইয়েলো ফিভারের টিকা গর্ভাবস্থায় নেওয়া যাবে না।গর্ভকালীন মা ও শিশু যেন বিপন্মুক্ত থাকে, সে জন্য প্রত্যেক নারীকে ১৫ বছর বয়সে হাম ও রুবেলা টিকার পাশাপাশি টিটি টিকার প্রথম ডোজ, ৪ সপ্তাহ পরে দ্বিতীয় ডোজ, ৬ মাস পর তৃতীয় ডোজ, ১ বছর পর চতুর্থ ডোজ এবং চতুর্থ ডোজের ১ বছর পর পঞ্চম ডোজ নেওয়া উচিত। এ ছাড়া গর্ভাবস্থায় ভ্রমণের সময় র্যাবিস ও ম্যানিনজাইটিস—এ দুটি গুরুত্বপূর্ণ টিকা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। মনে রাখতে হবে, সময়মতো সব টিকা নেওয়ার মাধ্যমে মা, শিশু ও পরিবারের সুরক্ষা সম্ভব।
পরামর্শ দিয়েছেন: ডা. ফরিদা ইয়াসমিন সুমি,সহকারী অধ্যাপক (গাইনি) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ
সুস্থভাবে জীবনযাপন করার জন্য দেহের পুষ্টির চাহিদা মেটাতে হয়। সাধারণত পুষ্টির কথা ভাবলে মনে করি সবটুকুই আমার খাদ্য থেকেই অর্জন করি। তবে এই ধারণাটি ভুল বললেন বিজ্ঞানীরা। নতুন গবেষণায় বলা যায়, মানুষ কিছু পুষ্টি বায়ু থেকেও শোষণ করতে পারে!
২ দিন আগেবিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মানুষকে প্রভাবিত করে উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন। হৃদরোগ, স্ট্রোক, কিডনির ক্ষতি এবং দৃষ্টি শক্তিসহ বেশ কিছু গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার প্রধান ঝুঁকির কারণ এটি। এই ধরনের ঝুঁকি কমানোর জন্য স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা ও বিভিন্ন ধরনের ওষুধ সেবনের পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। তবে সম্প্রতি যুক্তরাষ
৩ দিন আগেডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ১ হাজার ৩৮৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরে আজ রোববার পর্যন্ত এ রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলো ৭৯ হাজার ৯৮৪ জন। মারা গেছে আরও আটজন।
৪ দিন আগেএমন সময়ে এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হলো, যখন ইংল্যান্ডে একটি লক্ষ্যভিত্তিক ফুসফুস স্বাস্থ্য পরীক্ষা কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। এই কর্মসূচির লক্ষ্য ২০২৫ সালের মার্চের মধ্যে সম্ভাব্য ৪০ শতাংশ ব্যক্তিকে স্ক্রিনিং করা এবং ২০৩০ সালের মধ্যে সবাইকে এর আওতায় আনা।
৫ দিন আগে