মো. ইকবাল হোসেন
ঋতু গণনায় বাংলাদেশে এখন বর্ষাকাল। এই সময়ে মানুষের জ্বরের প্রকোপ যেন একটু বেশিই দেখা যায়। কারও সাধারণ জ্বর, কারও ডেঙ্গুজ্বর কারও আবার চিকুনগুনিয়া।
জ্বরের কারণ অনেক।
বর্তমানে করোনার কারণে জ্বর, ডেঙ্গুজ্বর; সেই সঙ্গে চিকুনগুনিয়ার প্রকোপও বাড়ছে। তবে সাধারণ ভাইরাস জ্বরই বেশি হয়ে থাকে এ সময়। এ ছাড়া আরও কিছু কারণে জ্বর হতে পারে। যেমন, কিছু জটিল রোগে র্যাশসহ জ্বর হতে পারে, ক্যানসার, মস্তিষ্কের প্রদাহ, টাইফয়েড, বাত, হাম, রক্তের প্রদাহ, শরীরে কোনো কাটাছেঁড়া ইত্যাদির কারণেও জ্বর হতে পারে। বিভিন্ন ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবেও
জ্বর হতে পারে।
ভাইরাস জ্বর সাধারণত ৭ থেকে ১৪ দিন স্থায়ী হতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধের পাশাপাশি পুষ্টিকর খাবার খেলে জ্বর থেকে দ্রুত সুস্থ
হওয়া যায়।
জ্বর হলে শরীরের বিপাকক্রিয়া বেড়ে যায়। শরীরের তাপমাত্রা যত বেশি হয়, বিপাকক্রিয়াও তত বেশি হয়। তাই এ সময়ে শরীরে বাড়তি ক্যালরির প্রয়োজন হয়। এ সময়ে পুষ্টিকর ও সহজপাচ্য খাবার খাওয়াটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
তরল খাবার
জ্বরের সময় তরলজাতীয় খাবার রোগীর জন্য খুব বেশি কার্যকরী। এই সময়ে তরল খাবারে কিছু বিশেষ উপকারী দিক হচ্ছে,
তবে তরলজাতীয় খাবারে ক্যালরি কিছুটা
কম থাকে। সে জন্য শুধু তরলের ওপরে নির্ভর না করে পাশাপাশি অন্যান্য খাবারও খেতে হবে।
জ্বরে তরল খাবার হিসেবে চিকেন
স্যুপ, ভেজিটেবল স্যুপ, ফলের রস, লেবুর শরবত, মাল্টা ও কমলার জুস, ডাবের পানি, মিল্কশেক, দুধ ও দই, বিভিন্ন ফল দিয়ে তৈরি স্মুদি ইত্যাদি খাওয়া শরীরের জন্য ভালো।
ফলের রস
ভিটামিন সিযুক্ত যেকোনো ফলের রস
এ সময়ে বেশি বেশি পান করতে হবে।
ঘরে তৈরি ভিটামিন সিযুক্ত তাজা ফলের
রস, যেমন লেবু, কমলা, মাল্টা, জাম্বুরা, চিনি ছাড়া আনারসের রস দ্রুত জ্বর কমাতে কার্যকরী।
চিকেন স্যুপ
ক্যালরি সরবরাহ করার ক্ষেত্রে চিকেন স্যুপের বিকল্প নেই। জ্বরের সঙ্গে যদি বমি বা ডায়ারিয়া থাকে, তাহলে চিকেন স্যুপ আপনার শরীরের ইলেকট্রোলাইট ব্যালান্স করতে সাহায্য করে। এ স্যুপের মধ্যে একটু সবজি যোগ করে দিলে তা থেকে ভিটামিন, মিনারেল ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট পাওয়া যাবে। যা আপনাকে দ্রুত আরোগ্যলাভে সাহায্য করবে এবং জ্বর-পরবর্তী দুর্বলতা কমাতেও সাহায্য করে।
মসলাযুক্ত চা
এ সময় মসলাযুক্ত চা খুবই উপকারী। মসলাযুক্ত চায়ের অ্যান্টিভাইরাল ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণাগুণ আছে। চায়ের সঙ্গে লেবু, তুলসীপাতা, পুদিনাপাতা ও লং মিশিয়ে খেলে তা বেশি উপকারী।
মিল্কশেক
অন্যান্য যেকোনো তরল খাবারের চেয়ে মিল্কশেক একটি বেশি ক্যালরিবহুল খাবার। সঙ্গে কিছু ওটস, কিশমিশ, আম, খেজুর, বাদাম, কলা ইত্যাদি যোগ করে দিলে এর পুষ্টিগুণ আরও বেড়ে যায়। ডায়রিয়ার সমস্যা থাকলে মিল্কশেক খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
ডাবের পানি
পানিশূন্যতা কমাতে, তাপমাত্রার ভারসাম্য রক্ষায় এবং ইলেকট্রোলাইটের ঘাটতি পূরণে ডাবের পানি খুবই কার্যকরী।
নরম খাবার
তরল খাবারের পাশাপাশি নরম খাবারও দিতে হবে। নরম খাবার রোগীকে বেশি চিবোতে হয় না। এ ধরনের খাবার সহজে খাওয়া যায় এবং সহজে হজম হয়। নরম পাতলা খিচুড়ি, পাতলা সুজি, জাউভাত, পুডিং, পায়েস ইত্যাদি নরম খাবার হিসেবে জ্বরের সময় খাওয়া যেতে পারে।
পাতলা খিচুড়ি
চাল, ডাল, সবজি ও মুরগি দিয়ে রান্না করা পাতলা খিচুড়ি জ্বরের রোগীর জন্য একটি আদর্শ সুষম খাবার। শর্করা, প্রোটিন, চর্বি, ভিটামিন এবং মিনারেলের চাহিদা পূরণ করে শারীরিক দুর্বলতা দূর করে।
দুধ-সাগু ও সুজি
দুধ দিয়ে তৈরি পাতলা সাগু বা সুজি বেশ পুষ্টিগুণসম্পন্ন খাবার। এটি সহজে হজম হওয়ায় দ্রুত শক্তি জোগায়। দিনে অন্তত একবার দুধ-সাগু বা সুজি খাওয়ালে রোগী যথেষ্ট শক্তি পাবে।
জাউ ভাত
জাউ ভাত জ্বরের সময় বেশ উপকারী একটি খাবার। এটিও খুব সহজপাচ্য খাবার হওয়ায় শরীরে দ্রুত শক্তি জোগান দেয়। জাউ ভাতের সঙ্গে কম মসলাযুক্ত পাতলা ঝোল করে রান্না পেঁপে, লাউ, মুরগির মাংস খুব উপকারী।
ডিম
খুব সহজেই প্রোটিনের চাহিদা পূরণে সেদ্ধ ডিম খেতে হবে। ডিমের তৈরি পুডিংও প্রোটিনের চাহিদা পূরণে সক্ষম।
টক দই
টক দই প্রোবায়োটিকসের ভালো উৎস।
টক দই দিয়ে তৈরি মাঠা, লাচ্ছি ক্যালরি সরবরাহের পাশাপাশি মুখের রুচি ফেরাতে সাহায্য করে।
খাওয়া নিষেধ
ফাস্ট ফুড, ভাজাপোড়া খাবার, অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার, অতিরিক্ত শক্ত খাবার, আধা সেদ্ধ খাবার খাবেন না। দুধ-চা ও কফি, কোমল পানীয় আপনার আরোগ্যলাভকে দীর্ঘায়িত করবে।
লেখক: পুষ্টি কর্মকর্তা
চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল
ঋতু গণনায় বাংলাদেশে এখন বর্ষাকাল। এই সময়ে মানুষের জ্বরের প্রকোপ যেন একটু বেশিই দেখা যায়। কারও সাধারণ জ্বর, কারও ডেঙ্গুজ্বর কারও আবার চিকুনগুনিয়া।
জ্বরের কারণ অনেক।
বর্তমানে করোনার কারণে জ্বর, ডেঙ্গুজ্বর; সেই সঙ্গে চিকুনগুনিয়ার প্রকোপও বাড়ছে। তবে সাধারণ ভাইরাস জ্বরই বেশি হয়ে থাকে এ সময়। এ ছাড়া আরও কিছু কারণে জ্বর হতে পারে। যেমন, কিছু জটিল রোগে র্যাশসহ জ্বর হতে পারে, ক্যানসার, মস্তিষ্কের প্রদাহ, টাইফয়েড, বাত, হাম, রক্তের প্রদাহ, শরীরে কোনো কাটাছেঁড়া ইত্যাদির কারণেও জ্বর হতে পারে। বিভিন্ন ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবেও
জ্বর হতে পারে।
ভাইরাস জ্বর সাধারণত ৭ থেকে ১৪ দিন স্থায়ী হতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধের পাশাপাশি পুষ্টিকর খাবার খেলে জ্বর থেকে দ্রুত সুস্থ
হওয়া যায়।
জ্বর হলে শরীরের বিপাকক্রিয়া বেড়ে যায়। শরীরের তাপমাত্রা যত বেশি হয়, বিপাকক্রিয়াও তত বেশি হয়। তাই এ সময়ে শরীরে বাড়তি ক্যালরির প্রয়োজন হয়। এ সময়ে পুষ্টিকর ও সহজপাচ্য খাবার খাওয়াটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
তরল খাবার
জ্বরের সময় তরলজাতীয় খাবার রোগীর জন্য খুব বেশি কার্যকরী। এই সময়ে তরল খাবারে কিছু বিশেষ উপকারী দিক হচ্ছে,
তবে তরলজাতীয় খাবারে ক্যালরি কিছুটা
কম থাকে। সে জন্য শুধু তরলের ওপরে নির্ভর না করে পাশাপাশি অন্যান্য খাবারও খেতে হবে।
জ্বরে তরল খাবার হিসেবে চিকেন
স্যুপ, ভেজিটেবল স্যুপ, ফলের রস, লেবুর শরবত, মাল্টা ও কমলার জুস, ডাবের পানি, মিল্কশেক, দুধ ও দই, বিভিন্ন ফল দিয়ে তৈরি স্মুদি ইত্যাদি খাওয়া শরীরের জন্য ভালো।
ফলের রস
ভিটামিন সিযুক্ত যেকোনো ফলের রস
এ সময়ে বেশি বেশি পান করতে হবে।
ঘরে তৈরি ভিটামিন সিযুক্ত তাজা ফলের
রস, যেমন লেবু, কমলা, মাল্টা, জাম্বুরা, চিনি ছাড়া আনারসের রস দ্রুত জ্বর কমাতে কার্যকরী।
চিকেন স্যুপ
ক্যালরি সরবরাহ করার ক্ষেত্রে চিকেন স্যুপের বিকল্প নেই। জ্বরের সঙ্গে যদি বমি বা ডায়ারিয়া থাকে, তাহলে চিকেন স্যুপ আপনার শরীরের ইলেকট্রোলাইট ব্যালান্স করতে সাহায্য করে। এ স্যুপের মধ্যে একটু সবজি যোগ করে দিলে তা থেকে ভিটামিন, মিনারেল ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট পাওয়া যাবে। যা আপনাকে দ্রুত আরোগ্যলাভে সাহায্য করবে এবং জ্বর-পরবর্তী দুর্বলতা কমাতেও সাহায্য করে।
মসলাযুক্ত চা
এ সময় মসলাযুক্ত চা খুবই উপকারী। মসলাযুক্ত চায়ের অ্যান্টিভাইরাল ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণাগুণ আছে। চায়ের সঙ্গে লেবু, তুলসীপাতা, পুদিনাপাতা ও লং মিশিয়ে খেলে তা বেশি উপকারী।
মিল্কশেক
অন্যান্য যেকোনো তরল খাবারের চেয়ে মিল্কশেক একটি বেশি ক্যালরিবহুল খাবার। সঙ্গে কিছু ওটস, কিশমিশ, আম, খেজুর, বাদাম, কলা ইত্যাদি যোগ করে দিলে এর পুষ্টিগুণ আরও বেড়ে যায়। ডায়রিয়ার সমস্যা থাকলে মিল্কশেক খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
ডাবের পানি
পানিশূন্যতা কমাতে, তাপমাত্রার ভারসাম্য রক্ষায় এবং ইলেকট্রোলাইটের ঘাটতি পূরণে ডাবের পানি খুবই কার্যকরী।
নরম খাবার
তরল খাবারের পাশাপাশি নরম খাবারও দিতে হবে। নরম খাবার রোগীকে বেশি চিবোতে হয় না। এ ধরনের খাবার সহজে খাওয়া যায় এবং সহজে হজম হয়। নরম পাতলা খিচুড়ি, পাতলা সুজি, জাউভাত, পুডিং, পায়েস ইত্যাদি নরম খাবার হিসেবে জ্বরের সময় খাওয়া যেতে পারে।
পাতলা খিচুড়ি
চাল, ডাল, সবজি ও মুরগি দিয়ে রান্না করা পাতলা খিচুড়ি জ্বরের রোগীর জন্য একটি আদর্শ সুষম খাবার। শর্করা, প্রোটিন, চর্বি, ভিটামিন এবং মিনারেলের চাহিদা পূরণ করে শারীরিক দুর্বলতা দূর করে।
দুধ-সাগু ও সুজি
দুধ দিয়ে তৈরি পাতলা সাগু বা সুজি বেশ পুষ্টিগুণসম্পন্ন খাবার। এটি সহজে হজম হওয়ায় দ্রুত শক্তি জোগায়। দিনে অন্তত একবার দুধ-সাগু বা সুজি খাওয়ালে রোগী যথেষ্ট শক্তি পাবে।
জাউ ভাত
জাউ ভাত জ্বরের সময় বেশ উপকারী একটি খাবার। এটিও খুব সহজপাচ্য খাবার হওয়ায় শরীরে দ্রুত শক্তি জোগান দেয়। জাউ ভাতের সঙ্গে কম মসলাযুক্ত পাতলা ঝোল করে রান্না পেঁপে, লাউ, মুরগির মাংস খুব উপকারী।
ডিম
খুব সহজেই প্রোটিনের চাহিদা পূরণে সেদ্ধ ডিম খেতে হবে। ডিমের তৈরি পুডিংও প্রোটিনের চাহিদা পূরণে সক্ষম।
টক দই
টক দই প্রোবায়োটিকসের ভালো উৎস।
টক দই দিয়ে তৈরি মাঠা, লাচ্ছি ক্যালরি সরবরাহের পাশাপাশি মুখের রুচি ফেরাতে সাহায্য করে।
খাওয়া নিষেধ
ফাস্ট ফুড, ভাজাপোড়া খাবার, অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার, অতিরিক্ত শক্ত খাবার, আধা সেদ্ধ খাবার খাবেন না। দুধ-চা ও কফি, কোমল পানীয় আপনার আরোগ্যলাভকে দীর্ঘায়িত করবে।
লেখক: পুষ্টি কর্মকর্তা
চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল
সুস্থভাবে জীবনযাপন করার জন্য দেহের পুষ্টির চাহিদা মেটাতে হয়। সাধারণত পুষ্টির কথা ভাবলে মনে করি সবটুকুই আমার খাদ্য থেকেই অর্জন করি। তবে এই ধারণাটি ভুল বললেন বিজ্ঞানীরা। নতুন গবেষণায় বলা যায়, মানুষ কিছু পুষ্টি বায়ু থেকেও শোষণ করতে পারে!
৩ দিন আগেবিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মানুষকে প্রভাবিত করে উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন। হৃদরোগ, স্ট্রোক, কিডনির ক্ষতি এবং দৃষ্টি শক্তিসহ বেশ কিছু গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার প্রধান ঝুঁকির কারণ এটি। এই ধরনের ঝুঁকি কমানোর জন্য স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা ও বিভিন্ন ধরনের ওষুধ সেবনের পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। তবে সম্প্রতি যুক্তরাষ
৪ দিন আগেডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ১ হাজার ৩৮৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরে আজ রোববার পর্যন্ত এ রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলো ৭৯ হাজার ৯৮৪ জন। মারা গেছে আরও আটজন।
৫ দিন আগেএমন সময়ে এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হলো, যখন ইংল্যান্ডে একটি লক্ষ্যভিত্তিক ফুসফুস স্বাস্থ্য পরীক্ষা কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। এই কর্মসূচির লক্ষ্য ২০২৫ সালের মার্চের মধ্যে সম্ভাব্য ৪০ শতাংশ ব্যক্তিকে স্ক্রিনিং করা এবং ২০৩০ সালের মধ্যে সবাইকে এর আওতায় আনা।
৬ দিন আগে