আফ্রিকার অনেক দেশের চেয়েও কম হবে মার্কিনদের গড় আয়ু: গবেষণা

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪: ৫৯
Thumbnail image
যুক্তরাষ্ট্রের মানুষদের গড় আয়ু বাড়লেও স্থূলতাসহ নানা স্বাস্থ্যগত কারণে তাদের জীবনের শেষ বছরগুলো খুব জটিলতায় কাটবে। ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মানুষের প্রত্যাশিত গড় আয়ু আগামী কয়েক দশকের মধ্যেই অনেকটাই নেমে আসবে। এমনকি ক্ষেত্র বিশেষে তা আফ্রিকার সাব-সাহারা অঞ্চলের দেশগুলো মানুষের প্রত্যাশিত গড় আয়ুর চেয়েও কমে যাবে। বিজ্ঞান বিষয়ক জার্নাল ল্যানসেটে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের মানুষের প্রত্যাশিত আয়ু ভবিষ্যতে বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে ৬৬ তম স্থানে নেমে আসবে।

বিশ্বের অন্যতম ধনী দেশ হওয়ার পরও প্রায় ৫০টি দেশের মানুষের তুলনায় অনেক কম বয়সেই মারা যায়। তবে ‘স্বাস্থ্যগত চ্যালেঞ্জের উদ্বেগজনক ধারা’—যার মধ্যে রয়েছে ব্যাপক স্থূলতা, মাদক ব্যবহার এবং আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারে আত্মহত্যা—আরও বড় ব্যবধান সৃষ্টি করবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

গবেষকেরা জানিয়েছেন, ২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের পুরুষ ও নারীদের গড় আয়ুষ্কাল ছিল ৭৮.৩ বছর। ২০৩৫ সালে এটি হবে ৭৯.৯ বছর এবং ২০৫০ সালে ৮০.৪ বছরে পৌঁছাবে। এটি হবে মূলত চিকিৎসায় অগ্রগতির কারণে। যেখানে চিকিৎসকেরা ক্যানসার এবং হৃদ্‌রোগের মতো দীর্ঘস্থায়ী রোগগুলো শনাক্ত ও চিকিৎসা করার ক্ষেত্রে আরও দক্ষ হচ্ছেন। তবে এটি অন্যান্য দেশের তুলনায় তুলনামূলকভাবে ছোট একটি বৃদ্ধি।

এই গবেষণার জন্য ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির গবেষকেরা যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যের ওপর শতাধিক রোগ এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য ঝুঁকির প্রভাব মূল্যায়ন করেছেন এবং ২০০ টিরও বেশি দেশের সঙ্গে তুলনা করেছেন। তাদের মডেলগুলো দেখাচ্ছে যে,২০৫০ সালের মধ্যে সাব-সাহারান অঞ্চলের কিছু দেশ যেমন: নাইজেরিয়া, কেনিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ যেমন: সিরিয়া, আফগানিস্তান এবং ইয়েমেনের মানুষদের গড় আয়ু যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় আরও বেশি হারে বাড়বে। এমনকি আলজেরিয়া, মরক্কো এবং তিউনিসিয়ার মতো দেশগুলোর মানুষের প্রত্যাশিত যুক্তরাষ্ট্রের মানুষের কাছাকাছি বা তার চেয়ে বেশি হবে।

গবেষণার প্রধান গবেষক ড. স্টেইন এমিল ভোলসেট বলেছেন, ‘২০২২ থেকে ২০৫০ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক র‍্যাঙ্কিংয়ে দ্রুত পতন গম্ভীর সংকেত দেয়।’ তিনি আরও বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রকে পথ পরিবর্তন করতে হবে এবং নতুন এবং আরও কার্যকর স্বাস্থ্য কৌশল এবং নীতিমালা তৈরি করতে হবে যাতে ভবিষ্যতের স্বাস্থ্য চ্যালেঞ্জগুলো দ্রুত মোকাবিলা করা যায়।

যদিও এমন পরিস্থিতিতে যেখানে সেরা স্বাস্থ্য অনুশীলনগুলি গ্রহণ করা হবে এবং যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় সব স্বাস্থ্যঝুঁকি পুরোপুরি নির্মূল হবে, তবুও এটি কানাডা, ভারত এবং চীনের মতো অন্যান্য দেশের তুলনায় পিছিয়ে থাকবে, যদিও তারা কিছুই পরিবর্তন না করলেও।

যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বে সবচেয়ে বেশি স্থূলতার দেশ। যা অনেক দীর্ঘস্থায়ী এবং মারাত্মক রোগ যেমন—হৃদ্‌রোগ, স্ট্রোক, ক্যানসার এবং কিডনি রোগের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য ঝুঁকি। স্থূলতার হার বাড়ার ফলে আগামী তিন দশক এবং তার পরেও যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাশিত আয়ুর ধারা নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিক্স অ্যান্ড ইভ্যালুয়েশনের পরিচালক ড. ক্রিস্টোফার মারে বলেছেন, ‘মোট জীবনকাল বৃদ্ধি হলেও আমাদের মডেলগুলো ভবিষ্যদ্বাণী করছে যে, স্বাস্থ্যগত উন্নতি ধীর হবে, কারণ স্থূলতার হার দ্রুত বাড়ছে। যা অনেক দীর্ঘস্থায়ী রোগের জন্য গুরুতর ঝুঁকি, এবং তা এমন স্তরে পৌঁছাবে যা আগে কখনো দেখা যায়নি।’ তিনি জানান, ২০৫০ সালের মধ্যে ২৬০ মিলিয়ন আমেরিকান স্থূল বা অতিরিক্ত ওজনের হবে, যা ‘ব্যাপক জনস্বাস্থ্য সংকটের’ সংকেত দেয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

যৌন সম্পর্কের পর বিয়েতে অস্বীকৃতি: আজিজুল হক কলেজের শিক্ষক নেতাকে বদলি

সাইফ আলী খানের পরিবারের ১৫ হাজার কোটি রুপির সম্পত্তি যাচ্ছে ভারত সরকারের নিয়ন্ত্রণে

সিএসইতে লেনদেনের সময় পরিবর্তন, শেয়ারবাজারে কারসাজির আশঙ্কা

ওবায়দুর হত্যা: গ্রেপ্তার ইউপি চেয়ারম্যানকে বিশেষ অতিথি করে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণপত্র

বাংলাদেশ প্রসঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছে ভারত

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত