Ajker Patrika

তিন বছরের মধ্যে দেশে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যবসা দাঁড়াবে ২১ হাজার কোটি টাকা: গবেষণা

আপডেট : ১৫ মে ২০২৪, ২৩: ৫৪
তিন বছরের মধ্যে দেশে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যবসা দাঁড়াবে ২১ হাজার কোটি টাকা: গবেষণা

দেশে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের রমরমা চলছে। এখন মফস্বল শহরগুলোতেও ছড়িয়ে পড়েছে এসব বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিক। ভারতের হরিয়ানা ভিত্তিক গবেষণা সংস্থা কেন রিসার্চের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরির বাজার ২০২৭ সালের মধ্যে ১৮০ কোটি ডলারে পৌঁছাবে। বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী বাংলাদেশি মুদ্রায় ২১ হাজার ৭৫ কোটি ৯৩ লাখ টাকা।

 এর পেছনে প্রধান চালিকাশক্তি হবে ক্রমবর্ধমান স্বাস্থ্যসেবা ব্যয় এবং প্রযুক্তিগত অগ্রগতি। এ ছাড়া গ্রাম পর্যায়েও মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির কারণে এখন প্রাথমিক রোগ শনাক্তকরণের চাহিদা বেড়েছে। 

ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরির বাজারে নেতৃত্ব দিচ্ছে মূলত বেসরকারি ল্যাবগুলো। তবে বিশেষ পরীক্ষা এবং গ্রামীণ এলাকায় সম্প্রসারণের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে বলে গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। সামনে এই সম্প্রসারণ অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় থাকবে সমন্বয় ও স্বীকৃতি প্রদানের প্রক্রিয়া। এ ছাড়া টেলিপ্যাথলজি, সরকারি–বেসরকারি অংশীদারত্ব (পিপিপি) এবং ডিজিটালাইজেশন গড়ে দেবে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের ভবিষ্যৎ। 

গবেষণা প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ডায়াগনস্টিকের ল্যান্ডস্কেপ (রোগ নির্ণয়ের চিত্র) একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ‘বাংলাদেশ ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরিজ মার্কেট আউটলুক টু ২০২৮—স্বাস্থ্যসেবা ব্যয় বৃদ্ধি এবং প্রযুক্তিগত অগ্রগতি দ্বারা চালিত’ শীর্ষক গবেষণায় এই খাতের গতিশীল বাজারের মূল প্রবণতাগুলো অন্বেষণ করা হয়েছে। পাশাপাশি গবেষণাটি ল্যাবরেটরি অপারেটর, স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী এবং বিনিয়োগকারীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অন্তর্দৃষ্টি দেয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে। 

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ল্যাবএইড এবং পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার লিমিটেড বর্তমানে এ খাতে শীর্ষস্থানীয়। এই দুই প্রতিষ্ঠান সারা দেশে দৈনিক ১০ হাজারের বেশি পরীক্ষা করে। যেখানে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে হাসপাতালের সংখ্যা ছিল ৫ হাজার ৭০৯ টি। এর মধ্যে রয়েছে বেসরকারি, সরকারি এবং অলাভজনক (পাবলিক) সংস্থাগুলোর মালিকানাধীন বা পরিচালিত হাসপাতাল। 

তবে বাংলাদেশের বাজারে অসংগঠিত পরিষেবাগুলোর আধিপত্য রয়েছে। ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মধ্যে স্বাধীন কেন্দ্রগুলো মোট কেন্দ্রের প্রায় ৪৭ শতাংশ এবং ২০২৩ সালে এগুলো ৮ কোটির বেশি ডায়াগনস্টিক পরীক্ষা পরিচালনা করেছে। 

বাংলাদেশে এই খাতে ব্যবসায়িক মডেলেও ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। নমুনা সংগ্রহ কেন্দ্র স্থাপন এবং ডিজিটাল চ্যানেলের মাধ্যমে রিপোর্ট সরবরাহ করার মাধ্যমে দূরত্ব, সময় এবং খরচ কমেছে। এই রূপান্তরটি সামগ্রিক দক্ষতাও বাড়িয়েছে। যার ফলে সবকিছু ঠিক রেখেও রিপোর্ট সরবরাহের সময় ৪৫ থেকে ৫৫ শতাংশ কমে গেছে। 

আয়ের ক্ষেত্রে স্বাধীন ল্যাবগুলোর হিস্যা মোটের ওপর প্রায় ৬০ শতাংশ বলে ধারণা করা হয়। বিশেষ করে বিশেষায়িত পরীক্ষার ক্ষেত্রে প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ বাড়ানোর কারণে বেসরকারি হাসপাতাল একটি বিশাল আয়ের হিস্যা পাচ্ছে। 

এদিকে বর্তমানে ৭০–৮০ শতাংশ বিশেষায়িত পরীক্ষা বাংলাদেশ থেকে অন্যান্য দেশে আউটসোর্স করা হয়। অর্থাৎ এসব পরীক্ষা বাইরে থেকে করিয়ে আনা হয়। তবে বেসরকারি হাসপাতালগুলো তাদের পরিষেবা প্রসারিত করতে সক্রিয়ভাবে বিনিয়োগ করছে। বিশেষায়িত চিকিৎসা ও পরীক্ষার বিকল্প খোঁজার প্রবণতা ভবিষ্যতে তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণে কাজে আসবে। 

গবেষকেরা অনুমান করছেন, ক্রমবর্ধমান ডায়াবেটিক রোগী এবং অসংক্রামক রোগ বেড়ে যাওয়ার কারণে ২০২৩–২৮ সালের মধ্যে বাংলাদেশের ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরির বাজার ৬ দশমিক ৯ শতাংশ হারে বাড়বে। এ ছাড়া স্টেন্টের জন্য স্থানীয় উৎপাদন পরিকল্পনা এবং কার্ডিয়াক ডিভাইসের স্থানীয়করণের সম্ভাবনা, আমদানির ওপর নির্ভরতা কমাবে। যেখানে বাংলাদেশে ৬৮ শতাংশ মৃত্যুর জন্য দায়ী অসংক্রামক রোগ। আর রোগীর ৬৪ শতাংশই এ ধরনের রোগে আক্রান্ত। এই পরিস্থিতির পরিবর্তনের জন্য রোগী ও চিকিৎসকের মধ্যে নিয়মিত ও গভীর যোগাযোগের প্রয়োজন রয়েছে। 

গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফলের ভিত্তিতে পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, বেশ কয়েকটি মূল চালিকাশক্তি বাংলাদেশে একটি সমৃদ্ধ ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরির বাজারের পথ তৈরি করছে: 

ক্রমবর্ধমান স্বাস্থ্যসেবা ব্যয়
মানুষের অব্যাহতভাবে ডিসপোজেবল বা ব্যয়যোগ্য আয় বৃদ্ধি এবং প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্যসেবা সম্পর্কে ক্রমবর্ধমান সচেতনতা বাংলাদেশে স্বাস্থ্যসেবায় ব্যয় বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে। ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরিগুলোর দেওয়া ডায়াগনস্টিক পরিষেবাগুলোর চাহিদা বৃদ্ধি এই আয় ও সচেতনতা বৃদ্ধির একটি প্রমাণ বলে ধরে নেওয়া যেতে পারে। 

প্রারম্ভিক রোগ শনাক্তকরণে গুরুত্ব
কার্যকর চিকিৎসা এবং রোগীর দ্রুত স্বাস্থ্যগত উন্নতির জন্য প্রাথমিক পর্যায়েই রোগ নির্ণয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ক্লিনিক্যাল ল্যাবগুলো সঠিক এবং সময়মতো ডায়াগনস্টিক পরীক্ষার মাধ্যমে প্রাথমিক শনাক্তকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। 

প্রযুক্তিগত অগ্রগতিতে দক্ষতা বৃদ্ধি
স্বয়ংক্রিয় বিশ্লেষক, আণবিক ডায়াগনস্টিক এবং পয়েন্ট–অব–কেয়ার টেস্টিং–এর মতো উন্নত প্রযুক্তি গ্রহণ বাংলাদেশে ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরি খাতে বিপ্লব ঘটাচ্ছে। এই প্রযুক্তিগুলো নির্ভুলতা, দক্ষতা এবং ডায়াগনস্টিক পরীক্ষার সময়ে বেশ পরিবর্তন এনেছে। 

বাংলাদেশ ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরির বাজার পরীক্ষাগারের ধরন, পরিষেবার ধরন এবং ভৌগোলিক অবস্থানের ভিত্তিতে কয়েকটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করেছেন গবেষকেরা। এই বিভাগগুলোর ভিত্তিতে ল্যাবরেটরিগুলো তাদের অফারগুলোকে আরও উপযোগী করতে এবং একটি বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছাতে সহায়তা করে: 

হাসপাতাল–ভিত্তিক ল্যাবগুলোই শীর্ষে
হাসপাতাল–ভিত্তিক ল্যাবগুলো রোগীদের কাছাকাছি থাকার কারণে এবং জটিল ডায়াগনস্টিক পরীক্ষাগুলো করার সক্ষমতার কারণে তারাই এই খাতে নেতৃত্ব দিচ্ছে। সামনেও এই চিত্র বজায় থাকতে পারে। 

বিশেষায়িত পরীক্ষার চাহিদা বাড়ছে
বাংলাদেশে জেনেটিক টেস্টিং এবং ইমিউনোসেসের মতো বিশেষায়িত পরীক্ষার চাহিদা বাড়ছে। এই নির্দিষ্ট চাহিদাগুলো পূরণ করার জন্য বিশেষায়িত পরীক্ষাগারগুলোর জন্য সুযোগ তৈরি হচ্ছে। 

গ্রামীণ সম্প্রসারণের সম্ভাবনা
গ্রামীণ অঞ্চলে ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরির বাজার সম্প্রসারণ সুবিধাবঞ্চিত অঞ্চলে স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তিতে উন্নতি ঘটাবে। এ লক্ষ্যে সরকারি উদ্যোগের কারণে এই সম্প্রসারণ সামনে উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে। 

বাংলাদেশ ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরির বাজারে প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠান, উদীয়মান আঞ্চলিক চেইন এবং বাজারে নতুন প্রবেশকারীদের একটা মিশ্রণ রয়েছে। গবেষকেরা ধারণা করছেন, আগামীতে প্রতিষ্ঠিত সংস্থাগুলো তাদের নাগাল এবং পরিষেবার অফারগুলো প্রসারিত করতে ছোট ল্যাবগুলো অধিগ্রহণ করতে পারে। 

তবে এখানে গুণমান এবং স্বীকৃতির ওপর নজর দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। বাংলাদেশের ক্লিনিক্যাল ল্যাবগুলোর জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর দ্বারা স্বীকৃতি পাওয়া ক্রমশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। এতে আদর্শ মান মেনে চলা নিশ্চিত হবে এবং রোগীর আত্মবিশ্বাস বাড়বে। 

এ ছাড়া কৌশলগত অংশীদারত্ব ব্যবসা সম্প্রসারণে বড় চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে। ক্লিনিক্যাল ল্যাব এবং স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের মধ্যে কৌশলগত অংশীদারত্বের ফলে উভয় পক্ষে লাভবান হতে পারে। এতে ল্যাবরেটরিগুলো আরও বৃহৎ সংখ্যক রোগীর কাছে পৌঁছাতে পারবে। কারণ তখন স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীরা (হাসপাতাল–ক্লিনিক) তাদের রোগীদের নিজেরাই ডায়াগনস্টিক পরিষেবা দিতে পারবে। 

বাংলাদেশের ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরির বাজার দারুণ অগ্রগতির দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। টেলিপ্যাথোলজি পরিষেবায় বিভিন্ন স্থানে বিশেষজ্ঞদের কাছে স্লাইডের ডিজিটাল চিত্র পাঠানোর মাধ্যমে দূরবর্তী স্থান থেকে রোগ নির্ণয়ের সুযোগ রয়েছে। এটি প্রত্যন্ত অঞ্চলের রোগীদের বিশেষ ডায়াগনস্টিক দক্ষতার সেবা পাওয়ার সুযোগ তৈরি করে দিতে পারে। 

এ ছাড়া পাবলিক–প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) ওপর গুরুত্ব দেওয়া হলে বাংলাদেশে বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায় উচ্চ–মানের ডায়াগনস্টিক পরিষেবাগুলোতে মানুষের সেবা পাওয়ার পথ প্রশস্ত হবে। 

সর্বোপরি, ডিজিটালাইজেশন ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরির চিত্রকে ব্যাপকভাবে বদলে দিচ্ছে। ইলেকট্রনিক মেডিকেল রেকর্ড (ইএমআর) এবং ল্যাবরেটরি ইনফরমেশন সিস্টেম (এলআইএস) ডেটা ম্যানেজমেন্টকে উন্নত করে, দক্ষতা উন্নয়ন করে এবং ল্যাবরেটরি ও স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের মধ্যে যোগাযোগ সহজতর করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কবিরাজিসহ প্রথাগত চিকিৎসার কার্যকারিতা খতিয়ে দেখছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৪৭
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

আফ্রিকায় ভেষজ চিকিৎসকেরা ক্ষত বা ব্যথা উপশমে গাছগাছড়া সংগ্রহ করছেন; চীনে আকুপাংচার বিশেষজ্ঞরা সুচ ব্যবহার করে মাইগ্রেন সারাচ্ছেন; আবার ভারতে যোগীরা ধ্যানচর্চা করছেন—এ ধরনের প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতিগুলো ক্রমেই কার্যকর প্রমাণিত হচ্ছে এবং এগুলো আরও বেশি মনোযোগ ও গবেষণার দাবি রাখে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) এক কর্মকর্তা।

ডব্লিউএইচওর গ্লোবাল ট্র্যাডিশনাল মেডিসিন সেন্টারের প্রধান ডা. শ্যামা কুরুবিল্লার মতে, ঐতিহাসিকভাবে পর্যাপ্ত বৈজ্ঞানিক প্রমাণের অভাবের কারণে যেসব প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতিকে অনেক সময় অবহেলা করা হয়েছে, আধুনিক প্রযুক্তি ও বিনিয়োগ বাড়লে সেই ধারণা বদলাতে পারে।

দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের শুরুতে বিভিন্ন দেশ সম্মত হয়েছে যে আগামী এক দশকের জন্য ডব্লিউএইচও একটি নতুন বৈশ্বিক প্রথাগত চিকিৎসা কৌশল গ্রহণ করবে।

এই কৌশলের লক্ষ্য—প্রমাণভিত্তিকভাবে স্বাস্থ্য ও কল্যাণে প্রথাগত, পরিপূরক ও সমন্বিত চিকিৎসার সম্ভাবনাময় অবদানকে কাজে লাগানো।

এই কৌশলের আওতায় প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতির জন্য শক্তিশালী প্রমাণভিত্তি তৈরি, চিকিৎসা ও চিকিৎসকদের নিয়ন্ত্রণ কাঠামো গড়ে তোলা এবং প্রয়োজন অনুযায়ী এসব পদ্ধতিকে আধুনিক জৈব-চিকিৎসাভিত্তিক স্বাস্থ্যব্যবস্থার সঙ্গে একীভূত করার পরিকল্পনা রয়েছে।

কুরুবিল্লা বলেন, ‘এটা ভীষণ রোমাঞ্চকর। আমি বলছি না, আমরা এখনই জানি—কোনটা কাজ করে আর কোনটা করে না। তবে এ মুহূর্তে বিষয়টি জানার বড় সুযোগ তৈরি হয়েছে।’

প্রথাগত চিকিৎসা বলতে এমন স্বাস্থ্য ও সুস্থতার ব্যবস্থাকে বোঝায়, যেগুলোর উদ্ভব আধুনিক বায়োমেডিসিনের আগেই হয়েছে। এসব চিকিৎসা পদ্ধতির ধরন নানাবিধ—ভেষজ চা থেকে শুরু করে ভারতের আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাব্যবস্থা পর্যন্ত।

কুরুবিল্লা বলেন, শত শত বছর ধরে চলে আসা এসব পদ্ধতির মধ্যে অনেকগুলোরই বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, জিনোমিক্স ও মস্তিষ্ক স্ক্যানসহ আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে এখন সেগুলো নতুনভাবে অনুসন্ধান করা সম্ভব।

তাঁর মতে, প্রথাগত চিকিৎসা গ্রহণের ক্ষেত্রে থাইল্যান্ড ভালো উদাহরণ। দেশটিতে গবেষকেরা প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতি পর্যবেক্ষণ ও নথিবদ্ধ করছেন এবং ভেষজ চিকিৎসাকে প্রয়োজনীয় ওষুধের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছেন। গত মে মাসে থাইল্যান্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পেশির ব্যথা ও কোষ্ঠকাঠিন্যসহ কিছু রোগের ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের আধুনিক ওষুধের বদলে প্রথাগত চিকিৎসা ব্যবহারের সুপারিশ করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শীতে খিচুড়ি কেন খাবেন

ফিচার ডেস্ক
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ১৮
শীতে খিচুড়ি কেন খাবেন

শীতের সকাল কিংবা সন্ধ্যায় ধোঁয়া ওঠা এক বাটি খিচুড়ির চেয়ে আরামদায়ক আর কী হতে পারে। খিচুড়ি শুধু একটি খাবার নয়। শীতকাল মানে আরাম করে হরেক রকমের সবজি দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি খাওয়া। এতে যেমন মন ভরে, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর এ খাবার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। এ ছাড়া এটি শরীরে বিভিন্ন উপাদানের ভারসাম্য বজায় রাখতেও সহায়ক। শীতকালীন ক্লান্তি দূর করতে এবং ঋতু পরিবর্তনের অসুস্থতা থেকে বাঁচতে খিচুড়ি একটি আদর্শ খাবার। এটি সহজে হজম হয়।

কেন খাবেন খিচুড়ি

পুষ্টিবিদদের পরামর্শ অনুযায়ী, খিচুড়ির প্রতিটি উপাদান আমাদের শরীরের জন্য বিশেষভাবে উপকারী। এতে থাকা চাল থেকে পাওয়া যায় পর্যাপ্ত শর্করা ও শক্তি। ডাল জোগায় প্রোটিন ও আঁশ, যা হজমে বিশেষভাবে সাহায্য করে। ঘি শরীরের তাপমাত্রা ধরে রাখতে এবং পুষ্টি শোষণে সহায়ক। হলুদে থাকা কারকিউমিন ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করে এবং আদা সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে শরীর উষ্ণ রাখে। খিচুড়িতে সবজি যোগ করলে আঁশের মাত্রা বাড়ে। গোলমরিচ ও জিরার মতো মসলা বিপাক প্রক্রিয়া উন্নত করে। এ ছাড়া সাবুদানার খিচুড়ি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। এ ছাড়া এটি তাৎক্ষণিক শক্তি জোগাতে কার্যকর।

mog-dal

মুগ ডালের খিচুড়ি

চাল ও মুগ ডালের মিশেলে তৈরি এই খিচুড়ি যেমন সহজপাচ্য, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর। এর বিশেষত্বের চাবিকাঠি লুকিয়ে রয়েছে মসলায়। একেবারে হলুদ, লবণ, জিরা অথবা ধনেগুঁড়ার মতো সাধারণ কিছু মসলা দিয়ে এটি রান্না করা হয়। এটা রান্নার সময় মুগ ডালের সঙ্গে চালও ভেজে নিতে পারেন। এতে মুগ ডালের একটা ভিন্ন গন্ধ পাওয়া যাবে। হলুদের পরিবর্তে এতে ব্যবহার করতে পারেন সবুজ মুগডাল।

উপকারিতা: শরীর উষ্ণ রাখে এবং দীর্ঘক্ষণ শক্তি জোগায়।

khichuri

সবজি খিচুড়ি

গাজর, মটরশুঁটি, ফুলকপি, আলু, টমেটো ইত্যাদি শীতের সবজি দিয়ে তৈরি রান্না করা সবজি খিচুড়ি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। এর সঙ্গে শীতে পাওয়া যায় এমন প্রায় সব শাক ও সবজি যোগ করতে হবে। সবজিগুলো ছোট টুকরা করে কেটে নিতে হবে।

যে সবজিগুলো সেদ্ধ হতে বেশি সময় নেয়, সেগুলো আগে ভেজে নিন অথবা প্রেশার কুকারে দিন। এরপর তেল বা ঘিতে জিরা, তেজপাতা ও অন্যান্য মসলা দিয়ে পেঁয়াজ, আদা, রসুন ভাজার পর সবজিগুলো হালকা ভেজে নিন। ভেজে রাখা সবজি, চাল, ডাল ও পানি দিয়ে প্রেশার কুকারে বা হাঁড়িতে রান্না করুন। নরম খিচুড়ি চাইলে পানি বেশি দিতে পারেন। শেষ মুহূর্তে পালংসহ অন্য নরম শাক এতে যোগ করতে পারেন।

উপকারিতা: এটি অন্যান্য উপকারের সঙ্গে কোষ্ঠকাঠিন্য কমায় এবং দ্রুত শক্তি পুনরুদ্ধার করে।

তিল-খিচুড়ি

তিল খিচুড়ি

ঠান্ডা পাহাড়ি অঞ্চলে শীতের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে এই খিচুড়ি অত্যন্ত জনপ্রিয়। চাল, মাষকলাইয়ের ডাল এবং তিল এর প্রধান উপকরণ। রান্নার আগে চাল ও ডাল ভিজিয়ে রাখা হয়। তিল হালকা ভেজে গুঁড়া করে নেওয়া হয়। তিল থেকে পাওয়া স্বাস্থ্যকর চর্বি ও খনিজ উপাদান শীতের দিনে শরীরের জন্য খুবই উপকারী। জিরা, হিং, হলুদ এবং লাল মরিচ গুঁড়ার সুগন্ধি মিশ্রণ এতে অনন্য স্বাদ যোগ করে। খাঁটি ঘি অথবা তেল-মসলার ফোড়ন দিয়ে এটি রান্না করা হয়। প্রোটিন, চর্বি এবং মিনারেলসমৃদ্ধ এই খাবার শীত জয়ের এক অমোঘ হাতিয়ার হতে পারে।

উপকারিতা: এটি শরীরে তাৎক্ষণিক শক্তি জোগানোর পাশাপাশি দীর্ঘক্ষণ শরীর গরম রাখতে সাহায্য করে।

আমলকীর-খিচুড়ি

আমলকী খিচুড়ি

সচরাচর খাওয়া হয় এমন কোনো খিচুড়ি খেতে না চাইলে রান্না করতে পারেন আমলকী খিচুড়ি। এটি কোনো সাধারণ খাবার নয়। এ খিচুড়ি রান্না করা হয় চাল, খোসা ছাড়ানো কালো মাষকলাইয়ের ডাল এবং তাজা আমলকী দিয়ে। নরম ধরনের এ খিচুড়ির স্বাদ ও সুগন্ধ বাড়াতে রান্নায় জিরা, হিং, হলুদ ও লাল মরিচের গুঁড়া ব্যবহার করতে পারেন। এগুলো এতে রাজকীয় স্বাদ যোগ করবে। সবশেষে ঘি বা তেলের সুগন্ধি ফোড়ন এই খিচুড়িকে করে তোলে আরও সুস্বাদু। কেউ চাইলে এই খিচুড়ির পুষ্টিমান আরও বাড়াতে বিভিন্ন ধরনের ঋতুভিত্তিক সবজি যোগ করতে পারেন। শীতের এই উৎসবের দিনগুলোতে শরীর সতেজ রাখতে এবং রসনা তৃপ্তিতে আমলকী খিচুড়ি হতে পারে আপনার সেরা পছন্দ।

উপকারিতা: এটি শরীরে শক্তি জোগানোর পাশাপাশি হজমশক্তি এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। এ ছাড়া শরীর ডিটক্সে সহায়তা করে, হজম প্রক্রিয়া উন্নত হয়, গ্যাস্ট্রিক কমায়, কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায় এবং ওজন কমাতে সহায়ক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

এই শীতে কেন খাবেন তেজপাতা ও লবঙ্গ চা

আলমগীর আলম
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ০৪
এই শীতে কেন খাবেন তেজপাতা ও লবঙ্গ চা

তেজপাতা ও লবঙ্গ—উভয়ই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এতে রয়েছে শক্তিশালী প্রদাহবিরোধী ও ব্যাকটেরিয়ারোধী গুণাবলি, যা শরীরের ভেতরে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। তবে এই চা সাধারণত সবার জন্য নিরাপদ হলেও গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের এটি পান করা থেকে বিরত থাকা উচিত।

১. হজমশক্তি বৃদ্ধিতে: বদহজমের সমস্যায় ভুগলে তেজপাতা দারুণ মুক্তি দিতে পারে। অন্যদিকে, লবঙ্গ এনজাইম নিঃসরণ বাড়িয়ে হজমপ্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত এবং পেটের অস্বস্তি দূর করে।

২. ব্যথা ও প্রদাহ উপশমে: আর্থ্রাইটিসের মতো রোগে যাঁরা ভোগেন, তাঁদের জন্য এই চা অত্যন্ত উপকারী। ইউরিক অ্যাসিডের ব্যথা কমাতে এবং শরীরের বিভিন্ন অংশের প্রদাহ বা ফোলা ভাব রোধে তেজপাতা ও লবঙ্গ লড়তে সাহায্য করে।

৩. রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে: লবঙ্গে থাকা অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া

ও ভাইরাসের বিরুদ্ধে কাজ করে। এর সঙ্গে তেজপাতা যুক্ত হলে শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বহুগুণ বেড়ে যায়, যা বিশেষ করে ঠান্ডা ও ফ্লু মৌসুমে সুরক্ষা দেয়।

৪. দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমাতে: এই চা শরীরে ক্ষতিকর ফ্রি র‍্যাডিক্যালের বিরুদ্ধে লড়াই করে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায়। ফলে হৃদ্‌রোগ এবং নির্দিষ্ট কিছু ক্যানসারের ঝুঁকি কমে পায়।

৫. দাঁত ও মাড়ির সুরক্ষায়: লবঙ্গ তেল দাঁতের জন্য উপকারী হিসেবে স্বীকৃত। নিয়মিত লবঙ্গ চা পান করলে মাড়ি ও দাঁত সুস্থ রাখা সম্ভব।

তেজপাতা ও লবঙ্গ চা তৈরি করবেন যেভাবে

উপকরণ সংগ্রহ করা এবং এই চা তৈরি করার প্রক্রিয়া অত্যন্ত সহজ—

উপকরণ: ৩-৪টি শুকনো তেজপাতা, ৫-৬টি আস্ত লবঙ্গ এবং ৪ কাপ পানি। স্বাদ বাড়াতে মধু বা লেবু ব্যবহার করতে পারেন।

প্রণালি: প্রথমে একটি পাত্রে পানি ফুটিয়ে নিতে হবে। তাতে তেজপাতা ও লবঙ্গ দিয়ে চুলার আঁচ কমিয়ে দিন। ১৫ মিনিট মিশ্রণটি সেদ্ধ করার পর চুলা নিভিয়ে আরও ৫ মিনিট পাত্রটি ঢেকে রেখে দিন। এরপর ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে তেজপাতা ও লবঙ্গ ফেলে দিয়ে পানি আলাদা করে নিন। স্বাদ অনুযায়ী মধু কিংবা লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন।

সেবনবিধি ও সতর্কতা

ভালো ফল পেতে প্রতিদিন এক কাপ এই চা-পান করা ভালো; বিশেষ করে খাবারের পর এটি পান করলে হজমশক্তি বাড়াতে সবচেয়ে ভালো কাজ করে।

লেখক: খাদ্য পথ্য ও আকুপ্রেশার বিশেষজ্ঞ, প্রধান নির্বাহী, প্রাকৃতিক নিরাময় কেন্দ্র

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঘুমের ঘোরে খাওয়া রহস্যময় ও জটিল এক স্বাস্থ্য সমস্যা

ফিচার ডেস্ক
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ২৩
ঘুমের ঘোরে খাওয়া রহস্যময় ও জটিল এক স্বাস্থ্য সমস্যা

ঘুমের ঘোরে হাঁটার কথা আমরা অনেকে শুনেছি। কিন্তু ঘুমের ঘোরে খাওয়ার কথা কি শুনেছেন? চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় স্লিপ-রিলেটেড ইটিং ডিসঅর্ডার। এই উড়িয়ে দেওয়ার মতো ছোট ঘটনা একটি জটিল স্বাস্থ্যগত সমস্যা। এটি আক্রান্ত ব্যক্তি এবং তার পরিবারের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

স্লিপ-রিলেটেড ইটিং ডিসঅর্ডার এমন এক সমস্যা, যেখানে আক্রান্ত ব্যক্তি ঘুমের মধ্যে অবচেতন অবস্থায় রান্নাঘরে চলে যায় এবং খাবার খেতে শুরু করে। আশ্চর্যের বিষয় হলো, পরদিন সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর তার এই ঘটনা সম্পর্কে বিন্দুমাত্র স্মৃতি থাকে না। সাধারণত এই সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা প্রায় প্রতি রাতেই এমনটা করে। এক রাতে একাধিকবারও ঘুমের ঘোরে খাওয়ার ঘটনা ঘটতে পারে।

খাদ্যাভ্যাসের বিচিত্র রূপ

এই অবস্থায় আক্রান্ত ব্যক্তির খাওয়ার ওপর কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকে না। গবেষণায় দেখা গেছে, সাধারণত ঘুমের ঘোরে খাওয়ার সময় তিন ধরনের ঘটনা ঘটে।

উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার খাওয়া: আক্রান্ত হওয়া মানুষ সাধারণত ক্যান্ডি, চিপস অথবা কেকের মতো প্রক্রিয়াজাত খাবারের দিকে বেশি ঝুঁকে পড়ে।

অস্বাভাবিক সংমিশ্রণের খাবার খাওয়া: অনেক সময় তারা অত্যন্ত অদ্ভুত ও অস্বাস্থ্যকর খাবারের সংমিশ্রণ তৈরি করে। যেমন সিগারেটে মাখন মাখিয়ে খাওয়া কিংবা অন্য কোনো অখাদ্য বস্তু খাওয়া।

দ্রুততম সময়ে খাবার খাওয়া: বিছানা থেকে রান্নাঘর হয়ে পুনরায় বিছানায় ফিরে আসার পুরো প্রক্রিয়াটি মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে শেষ হতে পারে। ফলে তারা খুব দ্রুত খাবার খেয়ে ফেলে।

ঝুঁকি ও স্বাস্থ্যগত প্রভাব

এসআরইডির প্রভাব কেবল ঘুমের ব্যাঘাতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এটি দীর্ঘ মেয়াদে শরীরের ওপর নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করতে পারে। এসব প্রভাবের মধ্যে আছে—

  • অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়ার ফলে স্থূলতা, ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ে।
  • না জেনে অ্যালার্জিযুক্ত খাবার খেয়ে ফেলায় মারাত্মক শারীরিক প্রতিক্রিয়া হতে পারে।
  • অবচেতন অবস্থায় গরম খাবার নাড়াচাড়া করা বা ধারালো ছুরি ব্যবহারের সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে।
  • অন্ধকারে চলাফেরা করতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
  • নিয়মিত এমন ঘটনায় ব্যক্তি লজ্জিত এবং বিষণ্ন বোধ করতে পারে।
  • শরীরের ওজন বেড়ে যাওয়ায় আত্মবিশ্বাসের অভাব এবং দুশ্চিন্তা দেখা দিতে পারে।

কেন এমন হয়

এসআরইডির নির্দিষ্ট কোনো একক কারণ না থাকলেও বেশ কিছু বিষয় লক্ষণীয়। যেমন—

ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: বিষণ্নতা বা ঘুমের সমস্যার জন্য ব্যবহৃত কিছু নির্দিষ্ট ওষুধের প্রভাবে এটি হতে পারে।

অন্যান্য রোগ: রেস্টলেস লেগ সিনড্রোম বা অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়ার মতো সমস্যা এর পেছনে থাকতে পারে।

জীবনযাত্রা: অতিরিক্ত মানসিক চাপ, অনিয়মিত ঘুম এবং অ্যালকোহল অথবা মাদক ত্যাগের পরবর্তী সময়ে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।

প্রতিকার ও ব্যবস্থাপনা

এই রহস্যময় সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সচেতনতা এবং সঠিক চিকিৎসা জরুরি। এর প্রতিকারে যা করা যেতে পারে—

  • যদি পরিবারে কেউ এই সমস্যায় আক্রান্ত থাকে, তবে রাতে রান্নাঘর তালাবদ্ধ রাখা, ধারালো সরঞ্জাম লুকিয়ে রাখা এবং বিপজ্জনক বস্তু সরিয়ে ফেলা জরুরি।
  • অন্তত দুই সপ্তাহ আক্রান্ত ব্যক্তির ঘুমের ধরন, মানসিক অবস্থা এবং পরবর্তী দিনের শক্তি বা ক্লান্তি নিয়ে একটি ডায়েরি লিখতে বলুন। এটি চিকিৎসকের রোগনির্ণয়ে সহায়তা করবে।
  • দিনের বেলা খাবার গ্রহণে অতিরিক্ত কড়াকড়ি বা ক্যালরি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করবেন না। কারণ, এটি মাঝরাতে খাবারের তীব্র আকাঙ্ক্ষা তৈরি করতে পারে।
  • পরিস্থিতি জটিল হলে চিকিৎসকের পরামর্শে পলিসমনোগ্রাফি বা স্লিপ স্টাডি করা যেতে পারে।

সূত্র: সিএনএন হেলথ, এএসএসএম

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত