সেনেগালে বিরোধী দলের নেতার সাজা, বিক্ষোভে নিহত ৯ 

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ০২ জুন ২০২৩, ১১: ৪৫
আপডেট : ০২ জুন ২০২৩, ১১: ৫৮

সেনেগালের ডাকারে তরুণদের বিপথে নেওয়ার অপরাধে বিরোধীদলীয় নেতা উসমানে সোনকোর দুই বছরের কারাদণ্ড ঘোষিত হওয়ার পর শুরু হওয়া বিক্ষোভে ৯ জন নিহত হয়েছেন। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তোইন ফেলিক্স আবদৌলায়ে ডিওমের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে বার্তা সংস্থা ডয়েচে ভেলে।

সেনেগালের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তোইন ফেলিক্স আবদৌলায়ে ডিওমে আজ শুক্রবার সকালে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে জানিয়েছেন, রায় ঘোষণার পর রাজধানী ডাকার ও জিগুইঞ্চরে এলাকায় বিরোধীদলীয় নেতা উসমানে সোনকোর সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে ৯ জন মারা গেছেন।

ডয়েচে ভেলে জানিয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার দেশটির আদালত উসমানে সোনকোকে দুই বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেন। তবে তাঁকে ধর্ষণের অভিযোগ থেকে খালাস দেওয়া হয়েছে। আদালতে ৪৮ বছর বয়সী সোনোকোর বিরুদ্ধে একটি বিউটি পার্লারে কর্মরত এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। প্রসিকিউটরদের দাবি, ধর্ষণের পর ওই নারীকে হত্যার হুমকিও দিয়েছিলেন সোনোকো। এই অপরাধে তাঁর ১০ বছরের জেল হওয়া উচিত।

অন্যদিকে সোনকোর দাবি, দীর্ঘদিন ধরে তিনি পিঠের ব্যথায় ভুগছেন। সেই ব্যথা সারাতে ম্যাসাজ করতে রাজধানী ডাকারের সুইট বিউটি নামের সেলুনে গিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি কাউকে ধর্ষণ বা হামলা করেননি। আগামী বছর অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে রাষ্ট্রপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা থেকে বিরত রাখতেই তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনা হয়েছে। তাই তিনি বিচারের কার্যক্রম বর্জন করেছিলেন। কিন্তু রায়ের আগে পুলিশ তাকে জোর করে ডাকারে ফেরত আনে।

এই রায়ের কারণে আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তাঁর অংশ নেওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। কারণ ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিরা রাজনৈতিক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ নেই দেশটির নির্বাচনি আইনে। ২০১৯ সালের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট ম্যাকি সাল ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইদ্রিসা সেকের পর তৃতীয় হয়েছিলেন উসমানে সোনোকো।

সেনেগালের বিচার মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যেকোনো সময় ওসমানে সোনোকেকে কারাগারে নেওয়া হতে পারে। তাই ডাকারে তাঁর বাড়ির আশপাশে পুলিশ মোতায়েন ছিল।

উসমানে সোনকোর রাজনৈতিক দল পাস্টেফ এই রায়কে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র আখ্যা দিয়ে নাগরিকদের সব কাজ বন্ধ করে রাস্তায় নামতে আহ্বান জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে। দলটির দাবি, তাদের দলীয় প্রধানকে রাষ্ট্রপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা থেকে বিরত রাখতেই মিথ্যে অভিযোগ আনা হয়েছে।

এদিকে রায় ঘোষণার পর রাজধানী ডাকারসহ দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে। রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ শুরু করে তাঁর সমর্থকেরা এবং দাঙ্গা পুলিশকে লক্ষ্য করে ঢিল ছুড়তে শুরু করে। ডাকারের কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভকারীরা একাধিক বাসে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং দাঙ্গা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।

অন্যদিকে নিরাপত্তা বাহিনী রাজধানীতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখেছে বলে জনগণকে আশ্বস্ত করেছেন সরকারের মুখপাত্র আবদু করিম ফোফানা।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত