Ajker Patrika

সৌদি আরবের মরুভূমি হেঁটে পাড়ি দিচ্ছেন মেয়েদের ইন্ডিয়ানা জোন্স

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২৮ জানুয়ারি ২০২৫, ২০: ২৮
Thumbnail image
সৌদি আরবের মরুভূমিতে অ্যালিস মরিসন। ছবি: সংগৃহীত

ব্রিটিশ অভিযাত্রী অ্যালিস মরিসন ‘মেয়েদের ইন্ডিয়ানা জোন্স’ নামে পরিচিত। মরক্কোর দ্রা নদী পুরোটা হেঁটে পাড়ি দেওয়ার পর এবার তিনি নতুন এক চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন। নতুন অভিযানে তিনি সৌদি আরবের মরুভূমি ও পাহাড়-পর্বত অতিক্রম করে আড়াই হাজার কিলোমিটার পথ হেঁটে পাড়ি দিচ্ছেন।

মঙ্গলবার সিএনএন জানিয়েছে, এই অভিযানে অ্যালিসের সঙ্গী হচ্ছে উট এবং স্থানীয় গাইডরা। দীর্ঘ এই যাত্রায় প্রায় পাঁচ মাস সময় লাগবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সৌদি অভিযানের বিষয়ে অ্যালিস বলেন, ‘এটি একটি বিশাল অ্যাডভেঞ্চার।’ প্রতিদিন গড়ে তিনি ২৫ কিলোমিটার পথ হেঁটে চলেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি চ্যালেঞ্জ, জ্ঞান এবং সংযোগ খুঁজি। আর আমার করা কাজগুলোতে এই তিনটি জিনিসই পাওয়া যায়।’

অ্যালিসের মতে, এই অভিযান দীর্ঘ প্রস্তুতির ফসল। ১১ বছর বয়সে তাঁর বাবা তাঁকে উইলফ্রেড থেসিজারের লেখা ‘অ্যারাবিয়ান স্যান্ডস’ বইটি দিয়েছিলেন। বইটির গল্প তাঁকে এতটাই প্রভাবিত করেছিল যে, ছোটবেলাতেই তিনি সৌদি আরবের ‘এম্পটি কোয়ার্টার’ অন্বেষণের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন।

এ অবস্থায় ২০১৯ সালে সৌদি আরব পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত হওয়ার পর অ্যালিস বুঝতে পারেন, তাঁর দীর্ঘ প্রতীক্ষিত স্বপ্ন পূরণ সম্ভব। এ জন্য তিনি স্পনসর খুঁজে অভিযানের জন্য অর্থ সংগ্রহ করেন এবং স্থানীয় বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় রুট ঠিক করেন।

অ্যালিস বলেন, ‘আমি সৌদি আরবকে অত্যন্ত আকর্ষণীয় বলে মনে করছি। এখানকার দৃশ্যপট অসাধারণ এবং বৈচিত্র্যময়।’ যাত্রাপথে তিনি দুটি নতুন পেট্রোগ্লিফ (পাথরের ভাস্কর্য) এবং প্রাচীন পাথরের হাতল যুক্ত দুটি প্রাচীন কুঠার আবিষ্কার করেছেন। এ ছাড়াও উটের তাণ্ডব, চাঁদের ক্রমাগত পরিবর্তন এবং বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থান দেখার অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন তিনি। সৌদি আরবের নারীদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করাও তাঁর অভিযানের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

সৌদি আরবের নারী অধিকার নিয়ে বহির্বিশ্বের একমাত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে অ্যালিস কাজ করছেন। তিনি বলছেন, ‘আমি একজন নারী হওয়ার কারণে সৌদি নারীদের সঙ্গে সহজেই সময় কাটাতে পারছি এবং তাঁদের গল্প শুনতে পারছি। এই অভিজ্ঞতা আমাকে অনুপ্রাণিত করছে।’

অ্যালিস মরিসন। ছবি: সিএনএন
অ্যালিস মরিসন। ছবি: সিএনএন

সম্প্রতি হাঁটতে হাঁটতে অ্যালিসের দেখা হয়ে যায় এক সৌদি তরুণীর সঙ্গে। সেই তরুণী জানিয়েছেন, সৌদি আরবে বর্তমানে যে বিপুল উন্নয়ন এবং পরিবর্তন সংঘটিত হচ্ছে, তাতে তিনিও অংশ নিতে চান।

মরিসন জানান, সৌদি আরবের তরুণীরা এখন দেশের পরিবর্তনে সক্রিয় ভূমিকা রাখছে।

অভিযানের প্রথম ধাপে মরিসন ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে মদিনায় পৌঁছাবেন। এরপর দ্বিতীয় ধাপে তিনি মদিনা থেকে জেদ্দা, রিজাল আলমা, উরুক বানি মারিদ অভয়ারণ্য পেরিয়ে ইয়েমেন সীমান্তের কাছাকাছি নাজরানে পৌঁছাবেন।

সৌদি আরবের মরুভূমিতে অ্যালিস মরিসন। ছবি: সংগৃহীত
সৌদি আরবের মরুভূমিতে অ্যালিস মরিসন। ছবি: সংগৃহীত

মরিসন তাঁর অভিজ্ঞতা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করছেন এবং মানুষকে সৌদি আরব ভ্রমণের প্রতি উৎসাহিত করছেন। তাঁর কথায়, ‘আমি চাই মানুষ সৌদি আরবের সৌন্দর্য এবং বৈচিত্র্য সম্পর্কে জানুক।’

অ্যালিস মরিসনের মতে, অ্যাডভেঞ্চার বড় হতে হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। তিনি বলেন, ‘অ্যাডভেঞ্চার খুব ছোট কিছু হতে পারে—যেমন হাইকিং বা আপনার দৈনন্দিন অভিজ্ঞতার বাইরে কিছু করা।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত