৫০০ বছরের মধ্যে সব জাপানির নামের শেষে একই উপাধি থাকবে

অনলাইন ডেস্ক
Thumbnail image

একটি নতুন সমীক্ষা অনুসারে, জাপানে প্রত্যেকেরই একদিন একই উপাধি হয়ে যেতে পারে, যদি না এর বিবাহ আইন পরিবর্তন করা না হয়। ১৮৯৮ সালের একটি প্রাচীন নাগরিক কোড অনুসরণ করে বিশ্বের একমাত্র দেশ হিসেবে জাপানে স্বামী-স্ত্রী উভয়কে নামের শেষে একই উপাধি গ্রহণ করতে হয়। এ ক্ষেত্রে সাধারণত স্ত্রীরাই স্বামীর নামের উপাধি গ্রহণ করে থাকেন। 

এ সংক্রান্ত একটি গবেষণার নেতৃত্ব দিয়েছেন জাপানের সেন্দাইয়ে অবস্থিত তোহোকু ইউনিভার্সিটির অর্থনীতিবিদ হিরোশি ইয়োশিদা। তাঁর মতে, বিবাহ আইনটি অপরিবর্তিত থাকলে ২৫৩১ সালের মধ্যে সালের মধ্যে সব জাপানির নামের শেষ উপাধি হবে ‘সাতো’। 

উপাধি হিসেবে ব্যবহার করা জাপানি ‘সাতো’ শব্দটি অনেকটা ব্রিটিশ উপাধি স্মিথের মতো। শব্দটির অর্থ হলো সহকারী বা সাহায্যকারী। তবে সবার নামের সঙ্গে এই উপাধিটা থাকলে তা বিশৃঙ্খলার কারণ হতে পারে বলে মনে করে গবেষক দলটি। 

হিরোশি ইয়োশিদা বলেন, ‘সবার নামের শেষে যদি সাতো উপাধি হয়ে যায়, তবে সম্বোধনের ক্ষেত্রে হয়তো নামের প্রথম অংশ কিংবা কোনো সংখ্যা দ্বারা ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে হবে।’ 

জাপানিদের নামের শেষে সাধারণত যেসব উপাধি যোগ করা হয় তার সংখ্যা প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার। এর মধ্যে বর্তমানে ‘সাতো’ উপাধি রয়েছে দেশটির মোট জনসংখ্যার ১.৫৩ শতাংশ মানুষের। ইয়োশিদার গণিত অনুসারে, নামের শেষে ‘সাতো’ উপাধিটি বছরে ১.০০৮৩ শতাংশ হারে বাড়ছে। এই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে ২৪৪৬ সালের মধ্যে জাপানের অর্ধেক মানুষের উপাধি হয়ে যাবে ‘সাতো’। ইয়োশিদার গণিত আরও বলছে, বর্তমানে উল্লেখযোগ্য হারে ব্যবহৃত সুজুকি, তাকাহাশিস কিংবা তানাকাসের মতো উপাধিগুলো ২৫৩১ সালের মধ্যে পুরোপুরি বিলুপ্ত হয়ে যাবে। 

জাপানে ‘সাতো’ উপাধি রয়েছে এমন বিখ্যাত মানুষদের মধ্যে দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইসাকু সাতোর নামটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ১৯৬৪ থেকে ৭২ সাল পর্যন্ত তিনি দেশটির প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। এ ছাড়া জাপানি কুস্তিগির জ্যাকি সাতো, অভিনেতা কোইচি সাতো, রেসিং ড্রাইভার টাকুমা সাতো এবং জাপানি বংশোদ্ভূত মার্কিন অভিনেত্রী রেইকো সাতোও এই তালিকায় রয়েছেন। 

হিরোশি ইয়োশিদা মনে করেন, একটি পরিবারের উপাধির মধ্যে ওই পরিবারটির ইতিহাস জড়িয়ে থাকে। উপাধিকে কখনো কখনো সাংস্কৃতিক প্রতীক হিসেবেও বিবেচনা করা হয়। কিন্তু জাপানের বিবাহ আইনে পরিবর্তন না আনলে সেই পারিবারিক ও সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারের চিহ্ন বিলুপ্ত হয়ে যাবে। 

এ বিষয়ে সিএনএন-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাপানের সব মানুষের একই উপাধি হয়ে যাওয়ার প্রবণতাটি বাধাগ্রস্ত হতে পারে দেশটির ক্রমহ্রাসমান বিবাহের জন্য। নামের উপাধি নিয়ে দেশটির বিবাহ আইনে পরিবর্তনের জন্য একটি আন্দোলনও তৈরি হয়েছে। মূলত নারী অধিকারের প্রবক্তারাই এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত