স্লামডগ মিলিয়নিয়ার খ্যাত সেই বস্তি হয়ে গেল আদানির

অনলাইন ডেস্ক
Thumbnail image

ভারতের মুম্বাই শহরে অবস্থিত ধারাবি বস্তিকে বলা হয়—এশিয়ার সবচেয়ে বড় বস্তি। হলিউডের আলোচিত ‘স্লামডগ মিলিয়নিয়ার’ সিনেমাটি এই বস্তিতেই চিত্রায়ণ করা হয়েছিল। 

সিনেমার সূত্র ধরে বিশ্বজুড়ে পরিচিতি পাওয়া সেই বস্তি আর বস্তি থাকছে না। ভারতের বিলিয়নিয়ার ব্যবসায়ী গৌতম আদানি এখানে নির্মাণ করতে যাচ্ছেন তাঁর স্বপ্নের ‘শান্তি শহর’। তবে বস্তি থেকে উচ্ছেদের মুখে থাকা অসংখ্য মানুষ এর প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। 

রোববার ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বস্তিটিকে অধিগ্রহণ করতে কর্তৃপক্ষের চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে আদানির মালিকানাধীন রিয়েল এস্টেট কোম্পানি। 

 ৬২০ একরেরও বেশি এলাকা জুড়ে বিস্তৃত ওই বস্তিটি। ধারণা করা হয়, ছোট্ট এই স্থানটিতেই গাদাগাদি করে প্রায় ১০ লাখ মানুষ বসবাস করেন। 

মুম্বাই মেট্রোপলিটন এলাকার এক উন্নয়ন প্রতিনিধি জানান, মহারাষ্ট্র সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে এই বস্তির দায়-দায়িত্ব আদানি গ্রুপের হাতে তুলে দিয়েছে। এর আওতায় ওই বস্তি এলাকাটিতে ২৫ হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থ ব্যয় করে নতুন শহর গড়ে তোলা হবে। 

তবে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে বস্তিটিকে সরাসরি আদানি গ্রুপের হাতে তুলে দেওয়া হয়নি। এর জন্য বিডিং আহ্বান করা হয়েছিল। ৫ হাজার ৭০ কোটি রুপি বিড করে সবাইকে টেক্কা দিয়ে দায়িত্ব পেয়েছে আদানি গ্রুপ। রাজ্য মন্ত্রিসভা ২০২২ সালের ২২ ডিসেম্বরই এই বিডিং প্রক্রিয়ার ফল অনুমোদন করেছিল। 

স্লামডগ মিলিয়নিয়ার সিনেমায় দেখা যায়-মুম্বাইয়ের ঝাঁ চকচকে বান্দ্রা-কারলা কমপ্লেক্সের পাশেই ধারাবি বস্তিটির অবস্থান। ১৫০ বছরেরও বেশি পুরোনো এই বস্তিতে প্রায় দেড় লাখ ঝুপড়ি বাড়ি এবং ১৫ হাজার কুটির শিল্প রয়েছে। বস্তির খুব কাছাকাছি এলাকাতেই সুবিশাল অসংখ্য শপিং কমপ্লেক্স থেকে শুরু করে বিভিন্ন দেশের দূতাবাস, ব্যাংক ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। আদানি গোষ্ঠীর পরিচালিত ছত্রপতি শিবাজি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরও এখান থেকে মাত্র ১২ কিলোমিটার দূরে। বস্তিটি অধিগ্রহণ করার মধ্য দিয়ে আদানি গোষ্ঠী মুম্বাইয়ের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক জমির মালিকে পরিণত হবে। 

এই বস্তিকে কেন্দ্র করেই নির্মিত হয়েছিল হলিউডের স্লামডগ সিনেমাটি। ছবি: সংগৃহীতপ্রতিবেদন বলছে, বহু বছর ধরেই মুম্বাইয়ের কর্তৃপক্ষ বস্তি এলাকাটির উন্নয়নের জন্য চেষ্টা সংগ্রাম করে আসছে। তবে এলাকাটি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে বেশ কিছু জটিলতার সম্মুখ হয়েছেন তাঁরা। 

বলা হচ্ছে, ধারাবি বস্তিকে বদলে দেওয়ার এই প্রকল্পটি এখন পর্যন্ত আদানি গোষ্ঠীর সবচেয়ে বড় আবাসন উদ্যোগ। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ১৭ বছর পর এই প্রকল্প থেকে আদানি গোষ্ঠী যে পরিমাণ লাভ করবে, তা বিনিয়োগের চেয়ে বহুগুণ বেশি হবে। ধারণা করা হচ্ছে, প্রকল্পটির নির্মাণকাজ শেষ হলে ৬ লাখ কোটি টাকা উপার্জন করবে আদানি গ্রুপ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত