অনলাইন ডেস্ক
কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে জোড়া বিস্ফোরণে কমপক্ষে ১১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ১৩ মার্কিন সেনাও রয়েছেন।
আফগানিস্তানে আল জাজিরার প্রতিনিধিদের একটি দল ঘটনাস্থলে অবস্থান করছে। তাঁরা হতাহতের এই পরিসংখ্যান দিয়েছেন।
তালেবান কাবুল দখলের পর আফগানিস্তান ছাড়তে মরিয়া মার্কিন নাগরিক ও আফগান সহযোগীদের নিরাপত্তায় বিমানবন্দর এলাকায় কাজ করছিলেন যুক্তরাষ্ট্র সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিমানবন্দরের গেটের সামনে শরণার্থীদের ভিড়ের মধ্যে এবং পার্শ্ববর্তী ব্যারন হোটেলের সামনে বিস্ফোরণ ঘটে। এ কারণে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আল জাজিরার সাংবাদিক চার্লস স্ট্র্যাটফোর্ড জানিয়েছেন, উদ্ধার তৎপরতা আবার শুরু হয়েছে। বেশ কয়েকটি উড়োজাহাজ এরই মধ্যে বিমানবন্দর ত্যাগ করেছে। গতকালের পর বিমানবন্দরে লোক সমাগম অনেক বেড়েছে। বাকি কয়েকটি বিমানে ওঠার জন্য হাজার হাজার মানুষ দেয়াল টপকে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করছেন।
গতকালের হামলার দায় স্বীকার করেছে আইএসআইএল বা আইএসআইএসের আফগানিস্তান শাখা। এরা মূলত খোরাসান প্রদেশ ভিত্তিক তৎপরতা চালাচ্ছে। মার্কিন সেনাবাহিনীর সহযোগী এবং অনুবাদক হিসেবে যারা কাজ করেছিল তাদের বিনাশ করার উদ্দেশ্যেই এই আত্মঘাতী হামলা ছিল বলে জানিয়েছে জঙ্গিগোষ্ঠীটি।
তালেবানের কেউ হতাহত হয়নি জানিয়েছেন যাবিউল্লাহ মুজাহিদ
তালেবানের কেউ হতাহত হয়নি, গোষ্ঠীর মুখপাত্র যাবিউল্লাহ মুজাহিদ বিবিসির পশতু সার্ভিসকে এ কথা বলেছেন।
মুজাহিদ বলেন, 'আমাদের (তালেবান) কেউ হতাহত হয়নি। ঘটনাটি যেখানে ঘটেছে সে এলাকা মার্কিন বাহিনী নিয়ন্ত্রিত।'
মুজাহিদের এই বক্তব্য রয়টার্সের আগের একটি প্রতিবেদনের সঙ্গে সরাসরি বিপরীত। রয়টার্স নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তালেবান কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বলেছে এই হামলায় তালেবানের ২৮ জন সদস্য নিহত হয়েছে।
বিস্ফোরণ সত্ত্বেও যুক্তরাজ্য তাদের অভিযান অব্যাহত রাখবে
প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, বৃহস্পতিবার কাবুল বিমানবন্দরে 'নিন্দনীয়' হামলা সত্ত্বেও আফগানিস্তান থেকে মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য যুক্তরাজ্য তাদের অভিযান অব্যাহত রাখবে।
বিস্ফোরণের পর প্রধানমন্ত্রী একটি জরুরি সভা করেন, এরপর তিনি প্রতিশ্রুতি দেন যে যুক্তরাজ্য শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে যাবে।
যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, বিস্ফোরণে যুক্তরাজ্যের কোনো সামরিক বা সরকারি কেউ হতাহত হননি
ফুটবলার এবং ক্রীড়াবিদদের সরিয়ে নেওয়া 'জটিল'
বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা বলেছে, আফগানিস্তান থেকে ফুটবলার এবং অন্যান্য ক্রীড়াবিদদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য তারা আলোচনা করছে। কিন্তু এটি 'অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং'।
গত সপ্তাহে আফগান জাতীয় দলের একজন খেলোয়াড় জাকি আনওয়ারি মার্কিন সামরিক বিমান থেকে পড়ে মারা যান। তালেবান দখলের পর তিনি কাবুল থেকে পালানোর চেষ্টা করছিলেন।
তালেবান শাসনের অধীনে ক্রীড়াবিদরা তাদের নিরাপত্তার আশঙ্কা প্রকাশ করার পর অস্ট্রেলিয়া সরকার মঙ্গলবার ৫০ জন নারী ক্রীড়াবিদকে সরিয়ে নেয়।
বিস্ফোরণের আগেই অস্ট্রেলিয়ার সেনাদের সরিয়ে নেওয়া হয়
গত ১৫ আগস্ট আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলে নেয় তালেবান। এরপর থেকেই দেশত্যাগ করতে কাবুল বিমানবন্দরে উপচে পরা ভিড় লক্ষ্য করা যায়। আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসে কাবুল বিমানবন্দর। বিভিন্ন দেশের পক্ষ থেকে কাবুল বিমানবন্দরে হামলার আশঙ্কা করা হয়। এরপরেও থামানো যায়নি জনস্রোত। জীবনের ঝুঁকি নিয়েই দেশত্যাগ করতে কাবুল বিমানবন্দরে ভিড় করতে থাকে মানুষ।
গতকাল বৃহস্পতিবার আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে এখনো পর্যন্ত ৯০ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে।
আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার কাবুল বিমানবন্দরে বিস্ফোরণের আগেই হামলার বিষয়ে সুস্পষ্ট তথ্য থাকায় সেনাদের সরিয়ে নিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। কাবুল থেকে সেনাদের সরিয়ে নেওয়ার কাজ শেষ করেছে দেশটি। আজ শুক্রবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন এ কথা জানান।
সংবাদ সম্মেলনে স্কট মরিসন বলেন, আমরা রাতের মধ্যেই অবশিষ্ট সেনাদের কাবুল থেকে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হই। কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে ভয়াবহ বিস্ফোরণের অনেকক্ষণ আগেই আমরা আমাদের সেনাদের সরিয়ে নেই।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, তালেবান ক্ষমতা দখলের পর কাবুল থেকে নাগরিকদের ফিরিয়ে আনতে মার্কিন এবং ব্রিটিশ সেনাবাহিনী সহযোগিতা করেছে। তাঁদের সহযোগিতায় আমরা ৪ হাজার ১০০ জনকে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হই। এর মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার ভিসাধারী ৩ হাজার ২০০ জন আফগান নাগরিকও ছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে আমরা বেশি মানুষ হারিয়েছি বলেছে তালেবান
কাবুল বিমানবন্দরে বোমা হামলায় তালেবানের কমপক্ষে ২৮ জন সদস্য নিহত হয়েছেন বলে একজন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছে।
নাম প্রকাশ না করে তালেবানের ওই কর্মকর্তা বলেন, 'আমরা যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে বেশি লোককে হারিয়েছি।'
এই পরিস্থিতিতে তিনি বলেন, সেনা প্রত্যাহার ও জনগণকে সরানো সম্পন্ন করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সময়সীমা বাড়ানোর প্রয়োজন নেই।
বৃহস্পতিবার রাতে কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে দুটি বিস্ফোরণে কমপক্ষে ১৩ মার্কিন সেনাসহ ৯০ জন নিহত হয়েছেন।
ইসলামিক স্টেট (আইএস) এই হামলার দায় শিকার করেছে।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো আফগানিস্তানের হামলার নিন্দা জানিয়েছেন
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বৃহস্পতিবার কাবুলের হামিদ কারজাই বিমানবন্দরে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন।
ট্রুডো বলেন, 'এই জঘন্য হামলায় অনেক নিরীহ মানুষের জীবন কেড়ে নিয়েছে। আমরা নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি এবং যারা আহত হয়েছেন তাদের সুস্থতা কামনা করছি।'
'সময় এসেছে ২০ বছরের যুদ্ধ শেষ করার'
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, বৃহস্পতিবারের হামলার আগে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে আফগানিস্তানে কোনো আমেরিকান যুদ্ধে হতাহত হয়নি। কারণ সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তালেবানের সঙ্গে চুক্তি করেছিল।
হামলা না হওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেছেন ১ মে আফগানিস্তান থেকে আমাদের বেরিয়ে আসার প্রতিশ্রুতি ছিল।
ওই চুক্তির কারণে আমেরিকানরা হামলার শিকার হয়নি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট তাঁর বক্তব্যের শেষে বলেন, 'সময় এসেছে ২০ বছরের যুদ্ধ শেষ করার।'
আমাদের তালেবানের 'স্বার্থের' ওপর নির্ভর করতে হবে বলেছেন বাইডেন
মার্কিন সেনাবাহিনী কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনায় তালেবানকে বিশ্বাস করে ভুল করেছে কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে বাইডেন বলেন, 'কেউ তাদের ওপর বিশ্বাস করে না। আমরা কেবল তাদের স্বার্থের ওপর নির্ভর করে কার্যক্রম তৈরি করতে থাকি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, 'হামলাকারী কারা তা জানার প্রয়োজন আছে। আমরা তাদের খুঁজে পাব।'
'আমেরিকা এই হামলা ভুলবে না'
'আমরা ক্ষমা করবো না। আমরা ভুলব না।'
হামলাকারীরা আফগানিস্তানের বিজয়ের সময় তালেবানদের দ্বারা খোলা কারাগার থেকে এসেছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন বাইডেন।
বাইডেন আইএসআইএস-কেও উল্লেখ করেছেন, যারা এই হামলার কৃতিত্ব নিয়েছে।
তিনি বলেন, 'আমরা সন্ত্রাসীদের কর্মকাণ্ডে নিরাশ হব না। আমরা মিশন বন্ধ করব না। আমরা জনগণকে সরানোর অভিযান অব্যাহত রাখব।'
আফগানদের হত্যায় ক্ষুব্ধ বাইডেন
জো বাইডেন বলেছেন, 'এই হামলায় যে আফগান পরিবারগুলো তাদের প্রিয়জনদের হারিয়েছে তাদের জন্য আমাদের হৃদয় ব্যথিত হয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, 'আমরা ক্ষুব্ধ হওয়ার পাশাপাশি ভারাক্রান্ত।'
মার্কিন ভুক্তভোগীদের প্রশংসা করেছেন জো বাইডেন
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, 'স্থল পরিস্থিতি এখনও বিকশিত হচ্ছে এবং আমি প্রতিনিয়ত খবর রাখছি।'
তিনি সৈন্যদের প্রশংসা করে বলেছেন, 'অন্যের জীবন বাঁচানোর জন্য একটি বিপজ্জনক মিশনে নিযুক্ত ছিলেন তারা।'
বিশ্ব নেতারা কাবুল হামলার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন
বিশ্বব্যাপী রাজনীতিবিদরা কাবুল বিমানবন্দরে বোমা হামলার বিরুদ্ধে কথা বলছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন শিগিগির কথা বলবেন। আমরা আপনাদের তাঁর প্রতিক্রিয়া জানাব।
ন্যাটো মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ ঘটনাটিকে 'ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা' হিসেবে বর্ণনা করেছেন এবং বলেছেন যে 'যতটা সম্ভব মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া' অগ্রাধিকার হিসাবে রয়ে গেছে।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ একটি বিবৃতি বলেন 'চরম দৃঢ়তার সঙ্গে সন্ত্রাসী হামলা' হয়েছে। সেখানে যারা মানুষের নিরাপত্তা দিতে আছেন তাদের সম্মান জানান তিনি।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাব বলেছেন 'সন্ত্রাসীদের কাপুরুষোচিত কাজ আমাদের থামতে দেবে না।'
স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ বলেছেন, তার সরকার বিস্ফোরণে নিহতদের প্রতি 'আন্তরিক সংহতি' জানিয়েছেন।
এ ঘটনায় কোনো ইতালীয় নাগরিক আহত হয়নি তা নিশ্চিত করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী লুইগি ডি মাইও বলেন, তিনি হামলার 'তীব্র নিন্দা' এবং সমবেদনা জানিয়েছেন।
আরেকটি বিস্ফোরণ, নিয়ন্ত্রণে জানাল তালেবান
কাবুলের বাসিন্দারা গেল এক ঘণ্টার মধ্যে আরও একটি বড় বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন।
বিবিসি'র আফগান প্রতিনিধি সেকান্দার কেরমানি বিস্ফোরণের কথা শুনেছেন বলে একটি টুইট করেছেন।
তালেবানের মুখপাত্র যাবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেছেন, বিস্ফোরণটি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। শহরের বাসিন্দাদের চিন্তার কোন কারণ নেই।
এক ঘণ্টার মধ্যে কথা বলবেন বাইডেন
হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এক ঘণ্টার মধ্যে কাবুলের ঘটনা নিয়ে কথা বলবেন।
'সৈন্যরা চূড়ান্ত ত্যাগ স্বীকার করেছে'
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রসচিব ডমিনিক রাব ১২ জন সেনা সদস্যের মৃত্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
এক বিবৃতিতে রাব বলেন, 'অন্যদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য তারা চূড়ান্ত ত্যাগ স্বীকার করেছে।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রসচিব বলেন, 'আমি নিহত বা আহত সকল আফগানদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাতে চাই।'
ইসলামিক স্টেট বোমা হামলার দায় স্বীকার করেছে
কাবুল বিমানবন্দরে হামলার দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেট (আইএস) ।
তাদের নিউজ আউটলেটের টেলিগ্রাম চ্যানেলে পোস্ট করা একটি বার্তায় এই দাবি উঠে এসেছে।
মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারাও বলেছেন যে তারা বিশ্বাস করেন যে বোমা হামলার পেছনে আইএস জড়িত।
বেসামরিক বিমান চলাচল বন্ধের কোন সময় নির্ধারণ করা হয়নি
যুক্তরাষ্ট্র কখন তার সেনা প্রত্যাহার ও বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়া বন্ধ করবে জানতে চাইলে জেনারেল কেনেথ ম্যাকেনজি নির্দিষ্ট কোন তারিখ জানাননি।
ম্যাকেনজি বলেন, আমাদের পরিকল্পনা হচ্ছে যে, আমরা যতজন লোককে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি, তার বেশি লোক সরিয়ে নেওয়া হোক। কিন্তু উভয়ের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে।
'এই হামলা অব্যাহত থাকতে পারে'
জেনারেল ম্যাকেনজি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র তালেবানদের সঙ্গে সমন্বয় করছে এবং এই হামলার জন্য আমরা যা যা করতে পারি তার সবই করছি।
ম্যাকেনজি এই হামলার জন্য ইসলামিক স্টেট গ্রুপকে দায়ী করেছেন।
তিনি বলেন, 'আইসিসের হুমকি সম্পূর্ণ বাস্তব, আমরা ধারণা করি এই হামলা অব্যাহত থাকবে।'
যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে 'মিশন' অব্যাহত রাখবে জানিয়েছে পেন্টাগন
কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বাইরে বৃহস্পতিবারের দুই আত্মঘাতী বোমা হামলায় ১২ জন মার্কিন সেনা সদস্যের মৃত্যুর ঘোষণা দিয়ে মার্কিন কেন্দ্রীয় কমান্ডের কমান্ডার জেনারেল কেনেথ ম্যাকেনজি জোর দিয়ে বলেন, আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্র তার ‘মিশন’ চালিয়ে যাবে।
পেন্টাগনের সংবাদ সম্মেলনে ম্যাকেনজি সাংবাদিকদের বলেন, 'আমাদের মিশন হল মার্কিন নাগরিক বা তৃতীয় দেশের নাগরিকদের, বিশেষ করে অভিবাসী ভিসাধারী, মার্কিন দূতাবাসের কর্মী এবং ঝুঁকিপূর্ণ আফগানদের সরিয়ে নেওয়া।
ম্যাকেনজি বলেন, প্রায় এক হাজার মার্কিন নাগরিক এখনো আফগানিস্তানে আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পেন্টাগনের ব্রিফিং শুরু
দিনের ঘটনা নিয়ে ব্রিফিং শুরু করেছে পেন্টাগন।
১২ মার্কিন সেনা সদস্য নিহত
কর্মকর্তারা মার্কিন গণমাধ্যমকে বলেন, বিমানবন্দর হামলায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১১ জন মেরিন ও একজন নৌবাহিনীর চিকিৎসক নিহত হয়েছেন।
২০২০ সালের ফেব্রুয়ারির পর আফগানিস্তানে এই প্রথম মার্কিন সামরিক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
'বাচ্চাটা আমার কোলেই মারা গেল'
একজন আফগান দোভাষী যিনি আমেরিকান বাহিনীর সঙ্গে কাজ করেন তিনি সিবিএস নিউজকে বলেন, আমি দেখেছি অনেক মানুষ আহত হয়ে মাটিতে পড়ে ছিল। আমি সেখানে একটি বাচ্চাকে পড়ে থাকতে দেখি। তাকে যখন আমি হাসপাতালে নিয়ে যাই তখন সেই বাচ্চা আমার হাতের ওপরই মারা যায়। তার বয়স আনুমানিক পাঁচ বছর।
সেই প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, 'এটা হৃদয় বিদারক। এখন যা চলছে তা হৃদয় বিদারক, পুরো দেশটি ভেঙে পড়েছে।'
মার্কিন নিরাপত্তারক্ষী বাহিনীর বেশ কয়েকজন সদস্য নিহত
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে বোমা হামলায় মার্কিন নিরাপত্তারক্ষী বাহিনীর বেশ কয়েকজন সদস্য নিহত হয়েছেন। মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনের পক্ষ থেকে এমনটি জানানো হয়েছে।
পেন্টাগনের পক্ষ থেকে বলা হয়, কাবুলের বিমানবন্দরের বাইরে হামলায় বেশ কয়েকজন সদস্য নিহত হয়েছেন।
মার্কিন গণমাধ্যম জানিয়েছে, মার্কিন নৌবাহিনীর চার সদস্য নিহত হয়েছেন। আরও বেশ কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছেন।
বিস্ফোরণ এলাকা যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে ছিল: তালেবান
কাবুল বিমানবন্দরের কাছে জোড়া হামলার সমালোচনা করেছে তালেবান। তারা বলেছে, বিস্ফোরণের এলাকাটি মার্কিন সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে ছিল।
তালেবান নেতা যাবিউল্লাহ মুজাহিদ এক টুইটবার্তায় বলেন, ইসলামিক এমিরেটস (তালেবান ঘোষিত আফগানিস্তান রাষ্ট্র) কাবুল বিমানবন্দরে বেসামরিক মানুষদের লক্ষ্য করে বোমা হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে।
তালেবানের এ মুখপাত্র বলেন, এই বিস্ফোরণ যে স্থানে ঘটেছে সেটি মার্কিন সেনাদের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল।
তালেবানের আরেক মুখপাত্র সুহাইল শাহীন টুইটারে এক বিবৃবিতে বলেছেন, তাঁরা নাগিরকদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার প্রতি কঠোর নজর রাখছেন।
হামলার পেছনে আইএস-খোরাসান
মার্কিন কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়েছে আল জাজিরা বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের দৃঢ় বিশ্বাস, কাবুল বিমানবন্দরের কাছে হামলার পেছনে রয়েছে আইএসআইএস (আইএস) খোরাসান গ্রুপ।
আফগানিস্তান বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে নিয়মিত ব্রিফ্রিং করা হচ্ছে। কংগ্রেসকেও এ ব্যাপারে ব্রিফ করা হয়েছে। এই ব্রিফিং সম্পর্কে ওয়াকিবহাল একটি সূত্র বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার হামলার পেছনে রয়েছে আইএসআইএস-খোরাসান গ্রুপ। মার্কিন কর্মকর্তাদের এটা দৃঢ় বিশ্বাস।
একটি গোয়েন্দা সূত্রও জানিয়েছে, কাবুল হামলার বিষয়টি এখনো যুক্তরাষ্ট্র তদন্ত করছে। তবে বিমানবন্দরের কাছে হামলার পেছনে আইএসআইএস-খোরাসানের হাত থাকার সম্ভাবনাই বেশি।
নালায় ফেলা হচ্ছে মৃতদেহ
কাবুল বিমানবন্দরের কাছে জোড়া বিস্ফোরণের পর ভয়াবহ দৃশ্য সামনে আসছে।
শুরু থেকে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মিলাদ বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন, ক্ষতবিক্ষত দেহ, বিক্ষিপ্ত মাংস এবং মৃত মানুষদের পাশের নালায় ফেলা হচ্ছে।
আরেক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, বিস্ফোরণের শব্দ শোনার সঙ্গে সঙ্গে ভীত সন্ত্রস্ত মানুষ দিগ্বিদিক ছুটতে থাকে। তালেবান যোদ্ধারা তখন বিমানবন্দরের গেটের সামনে জড়ো হওয়া মানুষদের ছত্রভঙ্গ করতে আকাশে ফাঁকাগুলি করতে থাকে। আমি এক আহত শিশুকে বুকে জড়িয়ে এক ব্যক্তিকে ছুটতে দেখেছি।
আরেক প্রত্যক্ষদর্শী এএফপিকে বলেন, তিন শিশুসন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে দেশ ছাড়ার জন্য তিনি কাগজপত্র জমা দিয়েছিলাম। তিনি বলেন, আমি আর বিমানবন্দরে কখনোই যাব না। আমেরিকা নিপাত যাক, তাদের উদ্ধার তৎপরতা, তাদের ভিসার আমি নিকুচি করি!
কেবল তো শুরু: ট্রাম্পের সাবেক উপদেষ্টা
সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেনারেল ম্যাকমাস্টার বরাবরই আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের সমালোচনা করে আসছেন। আজ কাবুলে বিস্ফোরণের প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, কেবল তো শুরু!
জেনারেল ম্যাকমাস্টার আফগানিস্তানে জ্যেষ্ঠ মার্কিন কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি বিবিসিকে বলেন, ওই নরক থেকে বেরিয়ে আসাই ছিল যুক্তরাষ্ট্রের অগ্রাধিকার। এর ফল যাই হোক না কেন যুক্তরাষ্ট্র এটা চেয়েছে। আর কাবুল বিমানবন্দরে যা ঘটলো এটা আসলে আপনি সন্ত্রাসী সংগঠনের কাছে আত্মসমর্পণ করলে যা হওয়ার কথা তাই হয়েছে।
তিনি বলেন, তাঁর সাবেক বস, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিয়ে গতবছর তালেবানের আলোচকেরা ‘খেলেছে’। ট্রাম্প ১৪ মাসের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারে রাজি হন।
ঠিক যে জায়গাটিতে হামলা হয়েছে
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে কাবুল বিমানবন্দরে অন্তত দুটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা যখন তাদের নাগরিক এবং সহযোগী আফগানদের উদ্ধারে ব্যস্ত তখন এমন হামলার ঘটনা ঘটলো।
বিস্ফোরণে বহু হতাহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তিনজন মার্কিন কর্মকর্তা এবং স্থানীয় একটি সূত্র সিএনএনকে জানিয়েছে, প্রাথমিক ভাবে জানা যাচ্ছে, হতাহতদের কয়েকজন মার্কিন নাগরিকও রয়েছেন।
সিএনএনের সৌজন্যে বিস্ফোরণস্থলের গ্রাফিকস:
হামলার ধরন গোয়েন্দাদের সতর্কবার্তার মতোই
বিবিসির নিরাপত্তা বিষয়ক সাংবাদিক ফাঙ্ক গার্ডনার বলছেন, মার্কিন গোয়েন্দারা ঠিক যে ধরনের হামলার জন্য সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন কাবুলের হামলা হুবহু সেরকমই।
এটা ছিল একসঙ্গে বিস্ফোরক এবং গুলির ব্যবহার। সন্ত্রাসী হামলার ধ্রুপদী কৌশল এটি। বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে আফগানিস্তানের শহরাঞ্চলে যে ধরনের হামলা হয়েছে এটিও তেমন। এ ধরনের হামলায় সাধারণত একটি আত্মঘাতী হামলার সঙ্গে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।
ঠিক একই ধরনের হামলার আগাম সতর্কবার্তা দিয়েছিল গোয়েন্দা সংস্থাগুলো।
সিচ্যুয়েশন রুমে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন
আফগান পরিস্থিতির সার্বক্ষণিক হালনাগাদ পেতে ও নির্দেশনা দিতে সিচ্যুয়েশন রুমে অবস্থান করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী লয়েড অস্টিন এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।
প্রেসিডেন্টকে কাবুলের পরিস্থিতি নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে বিস্তারিত ব্রিফ করা হয়েছে।
জাতীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের নিয়ে আফগানিস্তান বিষয়ক নিয়মিত ব্রিফিংয়ের জন্য সিচ্যুয়েশন রুমেই ছিলেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। এসময় তাঁর কাছে কাবুলে বিস্ফোরণের খবর আসে। প্রেসিডেন্ট এবং তাঁর শীর্ষ সহচরেরা এখনো সেখানে রয়েছেন। তাঁরা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছেন।
মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, স্থানীয় সময় আজ সকাল সাড়ে ১১টায় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেতের সঙ্গে বাইডেনের সাক্ষাৎ করার কথা ছিল। কাবুল পরিস্থিতির কারণে সাক্ষাতের সময় পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।
কাবুল বিমানবন্দরের কাছে জোড়া বিস্ফোরণ
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে পরপর দুটি ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে প্রথম বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায়। একই সঙ্গে পার্শ্ববর্তী ব্যারন হোটেলে বা হোটেল গেটের সামনে আরেকটি বিস্ফোরণ ঘটে। সেখানে ব্রিটিশ পাসপোর্টধারীদের নথিপত্র যাচাই করা হচ্ছিল। আর বিমানবন্দরের অ্যাবে গেটের কাছে বিস্ফোরণস্থলে গত কয়েক দিন ধরে আফগান শরণার্থীরা ভিড় করছেন।
দুই বিস্ফোরণে বহু হতাহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে। এক তালেবান কর্মকর্তার বরাত দিয়েছে বিবিসি জানিয়েছে, বিস্ফোরণে অন্তত ১১ জন নিহত হয়েছেন। ওই কর্মকর্তা জানান, হতাহতদের মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে। একজন তালেবান রক্ষীও আহত হয়েছেন বলে জানান তিনি।
তবে নিরপেক্ষ সূত্রে হতাহতদের তথ্য নিশ্চিত হওয়া যায়নি। পেন্টাগনের পক্ষ থেকে মার্কিন সামরিক ও বেসামরিক নাগরিক হতাহতের কথা জানানো হলেও সুনির্দিষ্ট পরিসংখ্যান জানাতে পারেননি তাঁরা। ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষও তাদের নাগরিকদের হতাহতের আশঙ্কা করছে।
এর আগে কাবুল বিমানবন্দরে আইএসআইএস বা আইএস (দায়েশ) গ্রুপ হামলা চালাতে পারে জানিয়ে অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য নাগরিকদের জন্য সতর্কতা জারি করেছিল। মার্কিন কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, এটি আত্মঘাতী হামলা। তবে কোনো গোষ্ঠী এখন পর্যন্ত এই হামলার দায় স্বীকার করেনি।
কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে জোড়া বিস্ফোরণে কমপক্ষে ১১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ১৩ মার্কিন সেনাও রয়েছেন।
আফগানিস্তানে আল জাজিরার প্রতিনিধিদের একটি দল ঘটনাস্থলে অবস্থান করছে। তাঁরা হতাহতের এই পরিসংখ্যান দিয়েছেন।
তালেবান কাবুল দখলের পর আফগানিস্তান ছাড়তে মরিয়া মার্কিন নাগরিক ও আফগান সহযোগীদের নিরাপত্তায় বিমানবন্দর এলাকায় কাজ করছিলেন যুক্তরাষ্ট্র সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিমানবন্দরের গেটের সামনে শরণার্থীদের ভিড়ের মধ্যে এবং পার্শ্ববর্তী ব্যারন হোটেলের সামনে বিস্ফোরণ ঘটে। এ কারণে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আল জাজিরার সাংবাদিক চার্লস স্ট্র্যাটফোর্ড জানিয়েছেন, উদ্ধার তৎপরতা আবার শুরু হয়েছে। বেশ কয়েকটি উড়োজাহাজ এরই মধ্যে বিমানবন্দর ত্যাগ করেছে। গতকালের পর বিমানবন্দরে লোক সমাগম অনেক বেড়েছে। বাকি কয়েকটি বিমানে ওঠার জন্য হাজার হাজার মানুষ দেয়াল টপকে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করছেন।
গতকালের হামলার দায় স্বীকার করেছে আইএসআইএল বা আইএসআইএসের আফগানিস্তান শাখা। এরা মূলত খোরাসান প্রদেশ ভিত্তিক তৎপরতা চালাচ্ছে। মার্কিন সেনাবাহিনীর সহযোগী এবং অনুবাদক হিসেবে যারা কাজ করেছিল তাদের বিনাশ করার উদ্দেশ্যেই এই আত্মঘাতী হামলা ছিল বলে জানিয়েছে জঙ্গিগোষ্ঠীটি।
তালেবানের কেউ হতাহত হয়নি জানিয়েছেন যাবিউল্লাহ মুজাহিদ
তালেবানের কেউ হতাহত হয়নি, গোষ্ঠীর মুখপাত্র যাবিউল্লাহ মুজাহিদ বিবিসির পশতু সার্ভিসকে এ কথা বলেছেন।
মুজাহিদ বলেন, 'আমাদের (তালেবান) কেউ হতাহত হয়নি। ঘটনাটি যেখানে ঘটেছে সে এলাকা মার্কিন বাহিনী নিয়ন্ত্রিত।'
মুজাহিদের এই বক্তব্য রয়টার্সের আগের একটি প্রতিবেদনের সঙ্গে সরাসরি বিপরীত। রয়টার্স নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তালেবান কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বলেছে এই হামলায় তালেবানের ২৮ জন সদস্য নিহত হয়েছে।
বিস্ফোরণ সত্ত্বেও যুক্তরাজ্য তাদের অভিযান অব্যাহত রাখবে
প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, বৃহস্পতিবার কাবুল বিমানবন্দরে 'নিন্দনীয়' হামলা সত্ত্বেও আফগানিস্তান থেকে মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য যুক্তরাজ্য তাদের অভিযান অব্যাহত রাখবে।
বিস্ফোরণের পর প্রধানমন্ত্রী একটি জরুরি সভা করেন, এরপর তিনি প্রতিশ্রুতি দেন যে যুক্তরাজ্য শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে যাবে।
যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, বিস্ফোরণে যুক্তরাজ্যের কোনো সামরিক বা সরকারি কেউ হতাহত হননি
ফুটবলার এবং ক্রীড়াবিদদের সরিয়ে নেওয়া 'জটিল'
বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা বলেছে, আফগানিস্তান থেকে ফুটবলার এবং অন্যান্য ক্রীড়াবিদদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য তারা আলোচনা করছে। কিন্তু এটি 'অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং'।
গত সপ্তাহে আফগান জাতীয় দলের একজন খেলোয়াড় জাকি আনওয়ারি মার্কিন সামরিক বিমান থেকে পড়ে মারা যান। তালেবান দখলের পর তিনি কাবুল থেকে পালানোর চেষ্টা করছিলেন।
তালেবান শাসনের অধীনে ক্রীড়াবিদরা তাদের নিরাপত্তার আশঙ্কা প্রকাশ করার পর অস্ট্রেলিয়া সরকার মঙ্গলবার ৫০ জন নারী ক্রীড়াবিদকে সরিয়ে নেয়।
বিস্ফোরণের আগেই অস্ট্রেলিয়ার সেনাদের সরিয়ে নেওয়া হয়
গত ১৫ আগস্ট আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলে নেয় তালেবান। এরপর থেকেই দেশত্যাগ করতে কাবুল বিমানবন্দরে উপচে পরা ভিড় লক্ষ্য করা যায়। আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসে কাবুল বিমানবন্দর। বিভিন্ন দেশের পক্ষ থেকে কাবুল বিমানবন্দরে হামলার আশঙ্কা করা হয়। এরপরেও থামানো যায়নি জনস্রোত। জীবনের ঝুঁকি নিয়েই দেশত্যাগ করতে কাবুল বিমানবন্দরে ভিড় করতে থাকে মানুষ।
গতকাল বৃহস্পতিবার আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে এখনো পর্যন্ত ৯০ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে।
আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার কাবুল বিমানবন্দরে বিস্ফোরণের আগেই হামলার বিষয়ে সুস্পষ্ট তথ্য থাকায় সেনাদের সরিয়ে নিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। কাবুল থেকে সেনাদের সরিয়ে নেওয়ার কাজ শেষ করেছে দেশটি। আজ শুক্রবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন এ কথা জানান।
সংবাদ সম্মেলনে স্কট মরিসন বলেন, আমরা রাতের মধ্যেই অবশিষ্ট সেনাদের কাবুল থেকে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হই। কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে ভয়াবহ বিস্ফোরণের অনেকক্ষণ আগেই আমরা আমাদের সেনাদের সরিয়ে নেই।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, তালেবান ক্ষমতা দখলের পর কাবুল থেকে নাগরিকদের ফিরিয়ে আনতে মার্কিন এবং ব্রিটিশ সেনাবাহিনী সহযোগিতা করেছে। তাঁদের সহযোগিতায় আমরা ৪ হাজার ১০০ জনকে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হই। এর মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার ভিসাধারী ৩ হাজার ২০০ জন আফগান নাগরিকও ছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে আমরা বেশি মানুষ হারিয়েছি বলেছে তালেবান
কাবুল বিমানবন্দরে বোমা হামলায় তালেবানের কমপক্ষে ২৮ জন সদস্য নিহত হয়েছেন বলে একজন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছে।
নাম প্রকাশ না করে তালেবানের ওই কর্মকর্তা বলেন, 'আমরা যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে বেশি লোককে হারিয়েছি।'
এই পরিস্থিতিতে তিনি বলেন, সেনা প্রত্যাহার ও জনগণকে সরানো সম্পন্ন করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সময়সীমা বাড়ানোর প্রয়োজন নেই।
বৃহস্পতিবার রাতে কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে দুটি বিস্ফোরণে কমপক্ষে ১৩ মার্কিন সেনাসহ ৯০ জন নিহত হয়েছেন।
ইসলামিক স্টেট (আইএস) এই হামলার দায় শিকার করেছে।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো আফগানিস্তানের হামলার নিন্দা জানিয়েছেন
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বৃহস্পতিবার কাবুলের হামিদ কারজাই বিমানবন্দরে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন।
ট্রুডো বলেন, 'এই জঘন্য হামলায় অনেক নিরীহ মানুষের জীবন কেড়ে নিয়েছে। আমরা নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি এবং যারা আহত হয়েছেন তাদের সুস্থতা কামনা করছি।'
'সময় এসেছে ২০ বছরের যুদ্ধ শেষ করার'
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, বৃহস্পতিবারের হামলার আগে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে আফগানিস্তানে কোনো আমেরিকান যুদ্ধে হতাহত হয়নি। কারণ সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তালেবানের সঙ্গে চুক্তি করেছিল।
হামলা না হওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেছেন ১ মে আফগানিস্তান থেকে আমাদের বেরিয়ে আসার প্রতিশ্রুতি ছিল।
ওই চুক্তির কারণে আমেরিকানরা হামলার শিকার হয়নি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট তাঁর বক্তব্যের শেষে বলেন, 'সময় এসেছে ২০ বছরের যুদ্ধ শেষ করার।'
আমাদের তালেবানের 'স্বার্থের' ওপর নির্ভর করতে হবে বলেছেন বাইডেন
মার্কিন সেনাবাহিনী কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনায় তালেবানকে বিশ্বাস করে ভুল করেছে কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে বাইডেন বলেন, 'কেউ তাদের ওপর বিশ্বাস করে না। আমরা কেবল তাদের স্বার্থের ওপর নির্ভর করে কার্যক্রম তৈরি করতে থাকি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, 'হামলাকারী কারা তা জানার প্রয়োজন আছে। আমরা তাদের খুঁজে পাব।'
'আমেরিকা এই হামলা ভুলবে না'
'আমরা ক্ষমা করবো না। আমরা ভুলব না।'
হামলাকারীরা আফগানিস্তানের বিজয়ের সময় তালেবানদের দ্বারা খোলা কারাগার থেকে এসেছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন বাইডেন।
বাইডেন আইএসআইএস-কেও উল্লেখ করেছেন, যারা এই হামলার কৃতিত্ব নিয়েছে।
তিনি বলেন, 'আমরা সন্ত্রাসীদের কর্মকাণ্ডে নিরাশ হব না। আমরা মিশন বন্ধ করব না। আমরা জনগণকে সরানোর অভিযান অব্যাহত রাখব।'
আফগানদের হত্যায় ক্ষুব্ধ বাইডেন
জো বাইডেন বলেছেন, 'এই হামলায় যে আফগান পরিবারগুলো তাদের প্রিয়জনদের হারিয়েছে তাদের জন্য আমাদের হৃদয় ব্যথিত হয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, 'আমরা ক্ষুব্ধ হওয়ার পাশাপাশি ভারাক্রান্ত।'
মার্কিন ভুক্তভোগীদের প্রশংসা করেছেন জো বাইডেন
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, 'স্থল পরিস্থিতি এখনও বিকশিত হচ্ছে এবং আমি প্রতিনিয়ত খবর রাখছি।'
তিনি সৈন্যদের প্রশংসা করে বলেছেন, 'অন্যের জীবন বাঁচানোর জন্য একটি বিপজ্জনক মিশনে নিযুক্ত ছিলেন তারা।'
বিশ্ব নেতারা কাবুল হামলার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন
বিশ্বব্যাপী রাজনীতিবিদরা কাবুল বিমানবন্দরে বোমা হামলার বিরুদ্ধে কথা বলছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন শিগিগির কথা বলবেন। আমরা আপনাদের তাঁর প্রতিক্রিয়া জানাব।
ন্যাটো মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ ঘটনাটিকে 'ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা' হিসেবে বর্ণনা করেছেন এবং বলেছেন যে 'যতটা সম্ভব মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া' অগ্রাধিকার হিসাবে রয়ে গেছে।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ একটি বিবৃতি বলেন 'চরম দৃঢ়তার সঙ্গে সন্ত্রাসী হামলা' হয়েছে। সেখানে যারা মানুষের নিরাপত্তা দিতে আছেন তাদের সম্মান জানান তিনি।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাব বলেছেন 'সন্ত্রাসীদের কাপুরুষোচিত কাজ আমাদের থামতে দেবে না।'
স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ বলেছেন, তার সরকার বিস্ফোরণে নিহতদের প্রতি 'আন্তরিক সংহতি' জানিয়েছেন।
এ ঘটনায় কোনো ইতালীয় নাগরিক আহত হয়নি তা নিশ্চিত করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী লুইগি ডি মাইও বলেন, তিনি হামলার 'তীব্র নিন্দা' এবং সমবেদনা জানিয়েছেন।
আরেকটি বিস্ফোরণ, নিয়ন্ত্রণে জানাল তালেবান
কাবুলের বাসিন্দারা গেল এক ঘণ্টার মধ্যে আরও একটি বড় বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন।
বিবিসি'র আফগান প্রতিনিধি সেকান্দার কেরমানি বিস্ফোরণের কথা শুনেছেন বলে একটি টুইট করেছেন।
তালেবানের মুখপাত্র যাবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেছেন, বিস্ফোরণটি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। শহরের বাসিন্দাদের চিন্তার কোন কারণ নেই।
এক ঘণ্টার মধ্যে কথা বলবেন বাইডেন
হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এক ঘণ্টার মধ্যে কাবুলের ঘটনা নিয়ে কথা বলবেন।
'সৈন্যরা চূড়ান্ত ত্যাগ স্বীকার করেছে'
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রসচিব ডমিনিক রাব ১২ জন সেনা সদস্যের মৃত্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
এক বিবৃতিতে রাব বলেন, 'অন্যদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য তারা চূড়ান্ত ত্যাগ স্বীকার করেছে।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রসচিব বলেন, 'আমি নিহত বা আহত সকল আফগানদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাতে চাই।'
ইসলামিক স্টেট বোমা হামলার দায় স্বীকার করেছে
কাবুল বিমানবন্দরে হামলার দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেট (আইএস) ।
তাদের নিউজ আউটলেটের টেলিগ্রাম চ্যানেলে পোস্ট করা একটি বার্তায় এই দাবি উঠে এসেছে।
মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারাও বলেছেন যে তারা বিশ্বাস করেন যে বোমা হামলার পেছনে আইএস জড়িত।
বেসামরিক বিমান চলাচল বন্ধের কোন সময় নির্ধারণ করা হয়নি
যুক্তরাষ্ট্র কখন তার সেনা প্রত্যাহার ও বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়া বন্ধ করবে জানতে চাইলে জেনারেল কেনেথ ম্যাকেনজি নির্দিষ্ট কোন তারিখ জানাননি।
ম্যাকেনজি বলেন, আমাদের পরিকল্পনা হচ্ছে যে, আমরা যতজন লোককে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি, তার বেশি লোক সরিয়ে নেওয়া হোক। কিন্তু উভয়ের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে।
'এই হামলা অব্যাহত থাকতে পারে'
জেনারেল ম্যাকেনজি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র তালেবানদের সঙ্গে সমন্বয় করছে এবং এই হামলার জন্য আমরা যা যা করতে পারি তার সবই করছি।
ম্যাকেনজি এই হামলার জন্য ইসলামিক স্টেট গ্রুপকে দায়ী করেছেন।
তিনি বলেন, 'আইসিসের হুমকি সম্পূর্ণ বাস্তব, আমরা ধারণা করি এই হামলা অব্যাহত থাকবে।'
যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে 'মিশন' অব্যাহত রাখবে জানিয়েছে পেন্টাগন
কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বাইরে বৃহস্পতিবারের দুই আত্মঘাতী বোমা হামলায় ১২ জন মার্কিন সেনা সদস্যের মৃত্যুর ঘোষণা দিয়ে মার্কিন কেন্দ্রীয় কমান্ডের কমান্ডার জেনারেল কেনেথ ম্যাকেনজি জোর দিয়ে বলেন, আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্র তার ‘মিশন’ চালিয়ে যাবে।
পেন্টাগনের সংবাদ সম্মেলনে ম্যাকেনজি সাংবাদিকদের বলেন, 'আমাদের মিশন হল মার্কিন নাগরিক বা তৃতীয় দেশের নাগরিকদের, বিশেষ করে অভিবাসী ভিসাধারী, মার্কিন দূতাবাসের কর্মী এবং ঝুঁকিপূর্ণ আফগানদের সরিয়ে নেওয়া।
ম্যাকেনজি বলেন, প্রায় এক হাজার মার্কিন নাগরিক এখনো আফগানিস্তানে আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পেন্টাগনের ব্রিফিং শুরু
দিনের ঘটনা নিয়ে ব্রিফিং শুরু করেছে পেন্টাগন।
১২ মার্কিন সেনা সদস্য নিহত
কর্মকর্তারা মার্কিন গণমাধ্যমকে বলেন, বিমানবন্দর হামলায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১১ জন মেরিন ও একজন নৌবাহিনীর চিকিৎসক নিহত হয়েছেন।
২০২০ সালের ফেব্রুয়ারির পর আফগানিস্তানে এই প্রথম মার্কিন সামরিক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
'বাচ্চাটা আমার কোলেই মারা গেল'
একজন আফগান দোভাষী যিনি আমেরিকান বাহিনীর সঙ্গে কাজ করেন তিনি সিবিএস নিউজকে বলেন, আমি দেখেছি অনেক মানুষ আহত হয়ে মাটিতে পড়ে ছিল। আমি সেখানে একটি বাচ্চাকে পড়ে থাকতে দেখি। তাকে যখন আমি হাসপাতালে নিয়ে যাই তখন সেই বাচ্চা আমার হাতের ওপরই মারা যায়। তার বয়স আনুমানিক পাঁচ বছর।
সেই প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, 'এটা হৃদয় বিদারক। এখন যা চলছে তা হৃদয় বিদারক, পুরো দেশটি ভেঙে পড়েছে।'
মার্কিন নিরাপত্তারক্ষী বাহিনীর বেশ কয়েকজন সদস্য নিহত
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে বোমা হামলায় মার্কিন নিরাপত্তারক্ষী বাহিনীর বেশ কয়েকজন সদস্য নিহত হয়েছেন। মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনের পক্ষ থেকে এমনটি জানানো হয়েছে।
পেন্টাগনের পক্ষ থেকে বলা হয়, কাবুলের বিমানবন্দরের বাইরে হামলায় বেশ কয়েকজন সদস্য নিহত হয়েছেন।
মার্কিন গণমাধ্যম জানিয়েছে, মার্কিন নৌবাহিনীর চার সদস্য নিহত হয়েছেন। আরও বেশ কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছেন।
বিস্ফোরণ এলাকা যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে ছিল: তালেবান
কাবুল বিমানবন্দরের কাছে জোড়া হামলার সমালোচনা করেছে তালেবান। তারা বলেছে, বিস্ফোরণের এলাকাটি মার্কিন সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে ছিল।
তালেবান নেতা যাবিউল্লাহ মুজাহিদ এক টুইটবার্তায় বলেন, ইসলামিক এমিরেটস (তালেবান ঘোষিত আফগানিস্তান রাষ্ট্র) কাবুল বিমানবন্দরে বেসামরিক মানুষদের লক্ষ্য করে বোমা হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে।
তালেবানের এ মুখপাত্র বলেন, এই বিস্ফোরণ যে স্থানে ঘটেছে সেটি মার্কিন সেনাদের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল।
তালেবানের আরেক মুখপাত্র সুহাইল শাহীন টুইটারে এক বিবৃবিতে বলেছেন, তাঁরা নাগিরকদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার প্রতি কঠোর নজর রাখছেন।
হামলার পেছনে আইএস-খোরাসান
মার্কিন কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়েছে আল জাজিরা বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের দৃঢ় বিশ্বাস, কাবুল বিমানবন্দরের কাছে হামলার পেছনে রয়েছে আইএসআইএস (আইএস) খোরাসান গ্রুপ।
আফগানিস্তান বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে নিয়মিত ব্রিফ্রিং করা হচ্ছে। কংগ্রেসকেও এ ব্যাপারে ব্রিফ করা হয়েছে। এই ব্রিফিং সম্পর্কে ওয়াকিবহাল একটি সূত্র বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার হামলার পেছনে রয়েছে আইএসআইএস-খোরাসান গ্রুপ। মার্কিন কর্মকর্তাদের এটা দৃঢ় বিশ্বাস।
একটি গোয়েন্দা সূত্রও জানিয়েছে, কাবুল হামলার বিষয়টি এখনো যুক্তরাষ্ট্র তদন্ত করছে। তবে বিমানবন্দরের কাছে হামলার পেছনে আইএসআইএস-খোরাসানের হাত থাকার সম্ভাবনাই বেশি।
নালায় ফেলা হচ্ছে মৃতদেহ
কাবুল বিমানবন্দরের কাছে জোড়া বিস্ফোরণের পর ভয়াবহ দৃশ্য সামনে আসছে।
শুরু থেকে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মিলাদ বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন, ক্ষতবিক্ষত দেহ, বিক্ষিপ্ত মাংস এবং মৃত মানুষদের পাশের নালায় ফেলা হচ্ছে।
আরেক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, বিস্ফোরণের শব্দ শোনার সঙ্গে সঙ্গে ভীত সন্ত্রস্ত মানুষ দিগ্বিদিক ছুটতে থাকে। তালেবান যোদ্ধারা তখন বিমানবন্দরের গেটের সামনে জড়ো হওয়া মানুষদের ছত্রভঙ্গ করতে আকাশে ফাঁকাগুলি করতে থাকে। আমি এক আহত শিশুকে বুকে জড়িয়ে এক ব্যক্তিকে ছুটতে দেখেছি।
আরেক প্রত্যক্ষদর্শী এএফপিকে বলেন, তিন শিশুসন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে দেশ ছাড়ার জন্য তিনি কাগজপত্র জমা দিয়েছিলাম। তিনি বলেন, আমি আর বিমানবন্দরে কখনোই যাব না। আমেরিকা নিপাত যাক, তাদের উদ্ধার তৎপরতা, তাদের ভিসার আমি নিকুচি করি!
কেবল তো শুরু: ট্রাম্পের সাবেক উপদেষ্টা
সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেনারেল ম্যাকমাস্টার বরাবরই আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের সমালোচনা করে আসছেন। আজ কাবুলে বিস্ফোরণের প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, কেবল তো শুরু!
জেনারেল ম্যাকমাস্টার আফগানিস্তানে জ্যেষ্ঠ মার্কিন কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি বিবিসিকে বলেন, ওই নরক থেকে বেরিয়ে আসাই ছিল যুক্তরাষ্ট্রের অগ্রাধিকার। এর ফল যাই হোক না কেন যুক্তরাষ্ট্র এটা চেয়েছে। আর কাবুল বিমানবন্দরে যা ঘটলো এটা আসলে আপনি সন্ত্রাসী সংগঠনের কাছে আত্মসমর্পণ করলে যা হওয়ার কথা তাই হয়েছে।
তিনি বলেন, তাঁর সাবেক বস, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিয়ে গতবছর তালেবানের আলোচকেরা ‘খেলেছে’। ট্রাম্প ১৪ মাসের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারে রাজি হন।
ঠিক যে জায়গাটিতে হামলা হয়েছে
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে কাবুল বিমানবন্দরে অন্তত দুটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা যখন তাদের নাগরিক এবং সহযোগী আফগানদের উদ্ধারে ব্যস্ত তখন এমন হামলার ঘটনা ঘটলো।
বিস্ফোরণে বহু হতাহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তিনজন মার্কিন কর্মকর্তা এবং স্থানীয় একটি সূত্র সিএনএনকে জানিয়েছে, প্রাথমিক ভাবে জানা যাচ্ছে, হতাহতদের কয়েকজন মার্কিন নাগরিকও রয়েছেন।
সিএনএনের সৌজন্যে বিস্ফোরণস্থলের গ্রাফিকস:
হামলার ধরন গোয়েন্দাদের সতর্কবার্তার মতোই
বিবিসির নিরাপত্তা বিষয়ক সাংবাদিক ফাঙ্ক গার্ডনার বলছেন, মার্কিন গোয়েন্দারা ঠিক যে ধরনের হামলার জন্য সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন কাবুলের হামলা হুবহু সেরকমই।
এটা ছিল একসঙ্গে বিস্ফোরক এবং গুলির ব্যবহার। সন্ত্রাসী হামলার ধ্রুপদী কৌশল এটি। বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে আফগানিস্তানের শহরাঞ্চলে যে ধরনের হামলা হয়েছে এটিও তেমন। এ ধরনের হামলায় সাধারণত একটি আত্মঘাতী হামলার সঙ্গে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।
ঠিক একই ধরনের হামলার আগাম সতর্কবার্তা দিয়েছিল গোয়েন্দা সংস্থাগুলো।
সিচ্যুয়েশন রুমে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন
আফগান পরিস্থিতির সার্বক্ষণিক হালনাগাদ পেতে ও নির্দেশনা দিতে সিচ্যুয়েশন রুমে অবস্থান করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী লয়েড অস্টিন এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।
প্রেসিডেন্টকে কাবুলের পরিস্থিতি নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে বিস্তারিত ব্রিফ করা হয়েছে।
জাতীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের নিয়ে আফগানিস্তান বিষয়ক নিয়মিত ব্রিফিংয়ের জন্য সিচ্যুয়েশন রুমেই ছিলেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। এসময় তাঁর কাছে কাবুলে বিস্ফোরণের খবর আসে। প্রেসিডেন্ট এবং তাঁর শীর্ষ সহচরেরা এখনো সেখানে রয়েছেন। তাঁরা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছেন।
মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, স্থানীয় সময় আজ সকাল সাড়ে ১১টায় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেতের সঙ্গে বাইডেনের সাক্ষাৎ করার কথা ছিল। কাবুল পরিস্থিতির কারণে সাক্ষাতের সময় পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।
কাবুল বিমানবন্দরের কাছে জোড়া বিস্ফোরণ
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে পরপর দুটি ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে প্রথম বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায়। একই সঙ্গে পার্শ্ববর্তী ব্যারন হোটেলে বা হোটেল গেটের সামনে আরেকটি বিস্ফোরণ ঘটে। সেখানে ব্রিটিশ পাসপোর্টধারীদের নথিপত্র যাচাই করা হচ্ছিল। আর বিমানবন্দরের অ্যাবে গেটের কাছে বিস্ফোরণস্থলে গত কয়েক দিন ধরে আফগান শরণার্থীরা ভিড় করছেন।
দুই বিস্ফোরণে বহু হতাহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে। এক তালেবান কর্মকর্তার বরাত দিয়েছে বিবিসি জানিয়েছে, বিস্ফোরণে অন্তত ১১ জন নিহত হয়েছেন। ওই কর্মকর্তা জানান, হতাহতদের মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে। একজন তালেবান রক্ষীও আহত হয়েছেন বলে জানান তিনি।
তবে নিরপেক্ষ সূত্রে হতাহতদের তথ্য নিশ্চিত হওয়া যায়নি। পেন্টাগনের পক্ষ থেকে মার্কিন সামরিক ও বেসামরিক নাগরিক হতাহতের কথা জানানো হলেও সুনির্দিষ্ট পরিসংখ্যান জানাতে পারেননি তাঁরা। ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষও তাদের নাগরিকদের হতাহতের আশঙ্কা করছে।
এর আগে কাবুল বিমানবন্দরে আইএসআইএস বা আইএস (দায়েশ) গ্রুপ হামলা চালাতে পারে জানিয়ে অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য নাগরিকদের জন্য সতর্কতা জারি করেছিল। মার্কিন কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, এটি আত্মঘাতী হামলা। তবে কোনো গোষ্ঠী এখন পর্যন্ত এই হামলার দায় স্বীকার করেনি।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, তাঁর দেশ ইউক্রেনের রণক্ষেত্রে নতুন হাইপারসনিক ওরেশনিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়ে যাবে। অর্থাৎ, রাশিয়া ইউক্রেনে এই ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়ে যাবে।
৩৬ মিনিট আগেএকজন বাক্প্রতিবন্ধী তরুণকে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু সৎকারের জন্য চিতায় ওঠানোর ঠিক আগমুহূর্তে প্রাণ ফিরে পেয়েছেন রোহিতাশ! দুপুর ২টা নাগাদ চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ফ্রিজিং করে রাখা হয়।
১০ ঘণ্টা আগেউত্তর কোরিয়াকে তেল, ক্ষেপণাস্ত্র ও আর্থিক সহায়তা দিয়ে ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য সৈন্য সহায়তা নিচ্ছে রাশিয়া। আজ শুক্রবার দক্ষিণ কোরিয়ার একজন ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।
১০ ঘণ্টা আগেইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানাকে ইসরায়েলের ‘‘শেষ এবং রাজনৈতিক মৃত্যু’ হিসাবে অভিহিত করেছে ইরান।
১১ ঘণ্টা আগে