১৫ বছর পর আবারও চীনাদের হৃদয় কাড়লেন আলোচিত ‘স্যালুট বয়’

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২৪ জুলাই ২০২৩, ১৭: ৫৮
Thumbnail image

২০০৮ সালের কথা। সে বছর চীনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় সিচুয়ান প্রদেশের ওয়েনচুয়ান অঞ্চলে এক প্রলয়ংকরী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল। ধসে পড়েছিল অসংখ্য ঘর-বাড়ি। এ ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিলেন ৮৭ হাজারেরও বেশি মানুষ। বিপুল প্রাণহানি আর ক্ষয়ক্ষতির মধ্যেও সে সময় একটি ঘটনা সমগ্র চীনবাসীকে নাড়া দিয়েছিল। 

ঘটনাটি এমন—ভূমিকম্পের দ্বিতীয় দিনে উদ্ধারকারী সেনারা রুদ্ধশ্বাস এক অভিযানে ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে বের করে আনেন তিন বছরের এক শিশুকে। তার নাম ল্যাঙ ঝেং। উদ্ধারের পর একটি স্ট্রেচারে করে ল্যাঙকে যখন নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তখনই তিনি এক অবাক কাণ্ড করে বসেন। 

অবাকই বলতে হবে—কারণ, একে তো মাত্র তিন বছর বয়স, তার ওপর ধ্বংসস্তূপের নিচে ২৪ ঘণ্টারও বেশি আটকে থাকা আহত ল্যাঙ স্ট্রেচারে শুয়ে থাকা অবস্থায়ই ডান হাতটিকে কপাল বরাবর নিয়ে সামরিক কায়দায় সেনাদের একটি স্যালুট দিয়ে বসেন। সরাসরি সম্প্রচারের মাধ্যমে ঘটনাটির প্রত্যক্ষ সাক্ষী হন কোটি কোটি চীনা। রাতারাতি ‘স্যালুট বয়’ খেতাব পেয়ে যান ল্যাঙ ঝেং। তার এমন কীর্তি উদ্ধারকারী সেনাদের মনোবল কয়েক গুন বাড়িয়ে দিয়েছিল। 

 ১৫ বছর পর সেই ‘স্যালুট বয়’ আবারও চীনা গণমাধ্যমের শিরোনাম হলেন। বহু বছরের পরিশ্রম আর মেধার প্রমাণ দিয়েই নতুন আরেক কীর্তি গড়েছেন ল্যাঙ ঝেং। 

সোমবার চায়না ডেইলির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি হওয়ার জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে যে পরীক্ষা নেওয়া হয় তাতে দারুণ সাফল্য দেখিয়েছেন ‘স্যালুট বয়’। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির যোগ্যতা প্রমাণের জন্য প্রতি বছর লাখ লাখ শিক্ষার্থী এই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। এবারের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হয়েছে গত শনিবার। 

ফলাফলে দেখা গেছে, ‘স্যালুট বয়’-এর খ্যাতি নিয়ে হারিয়ে যাননি ল্যাঙ। বরং পড়াশোনায় তিনি এত মনোযোগী ছিলেন যে, এবারের বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় সেরা ৩০ জন শিক্ষার্থীর একজন হয়েছেন। 

এমন ফলাফল নিয়ে চাইলেই চীনের যে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে পারবেন ল্যাঙ। তবে ল্যাঙ চাওয়ার আগেই তাঁকে পাওয়ার জন্য প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে চীনের প্রথম সারির ইউনিভার্সিটিগুলোর মধ্যে। ইতিমধ্যেই বিশ্বখ্যাত পিকিং ইউনিভার্সিটি এবং র‍্যানমিন ইউনিভার্সিটি নিজদের ক্যাম্পাসে পড়াশোনা করার জন্য ল্যাঙকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। ১৪০ কোটি জনসংখ্যার দেশ চীনে এ দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাওয়া লটারি জেতার মতো একটি বিষয়। 

বিরল এই কীর্তির জন্য ল্যাঙকে নিয়ে চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে শুরু হয়েছে মাতামাতি। 

নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে ল্যাঙ বলেন, ‘আমি নিজেই খুব অবাক হয়েছি। এত ভালো ফলাফল আমি নিজেই আশা করিনি।’ 

ল্যাঙ জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে পিকিং ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার পরিকল্পনা করেছেন তিনি। ইতিহাস এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নিয়ে পড়াশোনা করার ইচ্ছা তাঁর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত