‘সম্মতি ছাড়া’ সব যৌন সম্পর্ক ধর্ষণ, আইন হচ্ছে সুইজারল্যান্ডে

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ০৬ ডিসেম্বর ২০২২, ১৪: ৩২
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২২, ১৫: ১৫

সম্মতি ছাড়া যৌন সম্পর্ককে ধর্ষণ বলে সংজ্ঞায়িত করতে প্রস্তাব উত্থাপিত হয়েছে সুইজারল্যান্ডের পার্লামেন্টে। দেশটির পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে গতকাল সোমবার এ বিষয়ে ভোটাভুটি হয়েছে এবং প্রস্তাবটি পাস হয়েছে। তবে সুইজারল্যান্ডের আইনে ধর্ষণের যে সংজ্ঞাটি বিদ্যমান রয়েছে, তা এখনই পরিবর্তন হচ্ছে না। আইন পরিবর্তন করতে হলে আরও কিছু ধাপ পেরোতে হবে। নিম্নকক্ষ বলেছে, বিদ্যমান আইনে ধর্ষণের যে সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, তা সমন্বয় করা প্রয়োজন। 

বার্তা সংস্থা এএফপি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সুইজারল্যান্ডে বর্তমানে যে আইন প্রচলিত রয়েছে, তাতে জোরপূর্বক কোনো নারীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপিত হলে তা ধর্ষণ বলে বিবেচিত হবে। এই আইন সংশোধন করার ব্যাপারে সবাই একমত হয়েছেন। তাঁরা মনে করেন, ধর্ষণের সংজ্ঞা আরও বিস্তৃত করা উচিত এবং এর সঙ্গে জোরপূর্বক যৌন সম্পর্কের সংজ্ঞাকে আরও বিস্তৃত করা উচিত। 

তবে কতটুকু জোর করা হয়েছে তা কীভাবে নির্ধারণ করা হবে—এ নিয়ে পার্লামেন্টে বিতর্ক হয়েছে। অনেকেই ‘না মানে না’ পদ্ধতির পক্ষে যুক্ত দিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, কেউ যদি অস্পষ্টভাবেও ‘না’ বলেন, তা ধর্ষণ বলে বিবেচিত হবে। এ বছরের শুরুর দিকে এই পদ্ধতির পক্ষে ভোট দিয়েছিল পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ ও কাউন্সিল অব স্টেটস। গতকাল নিম্নকক্ষ ন্যাশনাল কাউন্সিলে ভোটাভুটি হলো। এদিন আরও সুনির্দিষ্ট করে বলা হয়েছে, ‘শুধু হ্যাঁ মানে হ্যাঁ’। অর্থাৎ যৌন সম্পর্ক স্থাপনে সুস্পষ্ট সম্মতি থাকতে হবে। 

গতকাল হ্যাঁ মানে হ্যাঁ পদ্ধতির পক্ষে ৯৯টি ভোট পড়েছে। এই পদ্ধতির বিরোধিতা করে ভোট পড়েছে ৮৮টি। এ ছাড়া তিনজন ভোটার ভোটদানে বিরত ছিলেন। 

স্থানীয় গণমাধ্যম এটিএস জানিয়েছে, গতকালের ভোটাভুটি বেশ আবেগপূর্ণ ছিল। সমাজতান্ত্রিক দলের সদস্য তামারা ফুনিসিলো হাউসকে বলেন, ‘এটা সুস্পষ্ট যে আপনি আপনার প্রতিবেশীর মানিব্যাগ থেকে বিনা অনুমতিতে টাকা নেন না। আপনি নিশ্চয় ঘণ্টা না বাজিয়ে কারও বাড়িতে প্রবেশ করবেন না। তাহলে মানিব্যাগ ও ঘরের চেয়ে নিজের শরীরকে আরও বেশি সুরক্ষিত করা উচিত নয় কি?’ 

তবে পার্লামেন্টের অনেক ডানপন্থী সদস্য এই পদ্ধতির বিরোধিতা করেছেন। তাঁরা জোর দিয়ে বলেছেন, এটি বিভ্রান্তি তৈরি করবে এবং এ আইনের প্রয়োগ করা কঠিন হবে। 

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এই ভোটাভুটিকে স্বাগত জানিয়েছে। সংস্থাটি বলেছে, যৌন নির্যাতনের শিকার নারীদের অধিকার নিয়ে বছরের পর বছর ধরে কাজ করার পর একটি বড় ধরনের সাফল্য পাওয়া গেল। 

এএফপি বলেছে, শুধু সুইজারল্যান্ড নয়, স্পেন, সুইডেন, ডেনমার্ক, বেলজিয়ামসহ আরও বেশ কয়েকটি দেশ ধর্ষণের সংজ্ঞাকে বিস্তৃত করার উদ্যোগ নিচ্ছে। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত