হাঙ্গেরির সমর্থন ছাড়াই ইউক্রেনকে ৫০ বিলিয়ন ইউরো দিতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ইইউ

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৯: ৪৫
Thumbnail image

হাঙ্গেরির সমর্থন ছাড়াই ইউক্রেনকে ৫০ বিলিয়ন ইউরো সহায়তা দেওয়ার ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নেতারা। পাশাপাশি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টও আশা প্রকাশ করেছেন, বুদাপেস্ট সমর্থন না দিলেও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইউক্রেনকে ৫০ বিলিয়ন ইউরো সহায়তা দিতে সক্ষম হবে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম পলিটিকোর এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। 

ইউক্রেনকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্যপদ দেওয়া নিয়ে আলোচনা শুরু করার অনুমতি দিয়েছেন জোটের সদস্য দেশগুলোর নেতারা। যে বৈঠকে এই অনুমতি দেওয়া হয়েছে, সেখানে দ্বিমত পোষণ করায় বের হয়ে যেতে হয় হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অবরানকে। প্রতিক্রিয়ায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের তরফ থেকে ইউক্রেনকে দিতে যাওয়া ৫০ বিলিয়ন ইউরো সহায়তা প্রস্তাব আটকে দিয়েছেন তিনি। 

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উল্লিখিত সিদ্ধান্ত গ্রহণের দিনে বৈঠকে নাটকীয়তার সৃষ্টি হয়। ইউক্রেনের সদস্যপদ নিয়ে আলোচনার বিষয়টি প্রস্তাব আকারে উত্থাপিত হলে মস্কোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকা হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন। পরে তিনি বৈঠক ছেড়ে চলে গেলে জোটের বাকি ২৬ সদস্য দেশ প্রস্তাবটিতে সম্মতি দেয়। অরবানকে আলোচনার টেবিল ছেড়ে চলে যেতে সবচেয়ে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শুলজ। 

উক্ত বৈঠকের কয়েক ঘণ্টা পর ব্রাসেলসে ইউক্রেনকে অর্থসহায়তা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে আরেকটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেই বৈঠকে অরবান উল্লেখ করেন, আগামী চার বছর ইউক্রেনকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের তরফ থেকে এই ৫০ বিলিয়ন ইউরো সহায়তা দেওয়া যাবে না। 

বিষয়টি নিশ্চিত করেন অরবান নিজেই। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে বলেন, ‘আজ রাতের বৈঠকের সারমর্ম হলো—ইউক্রেনকে অতিরিক্ত সহায়তা দেওয়ার প্রস্তাবে ভেটো।’ তিনি আরও বলেন, ‘তবে আমরা বিষয়টি নিয়ে সামনের বছর আবারও আলোচনার জন্য ইউরোপীয় কমিশনে যাব পর্যাপ্ত প্রস্তুতিসহ।’ 

তবে অরবানের আপত্তির পরও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইউক্রেনকে সহায়তা দিতে সক্ষম হবে বলে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে ব্রাসেলসে ইউরোপীয় কাউন্সিলের বৈঠকের পর আইরিশ প্রধানমন্ত্রী লিও ভারাদকার সাংবাদিকদের বলেন, ‘২৬ সদস্য রাষ্ট্রের পক্ষে দ্বিপক্ষীয় সম্মতির ভিত্তিতে (ইউক্রেনকে) অর্থসহায়তা প্রদান করা সম্ভব। এ ক্ষেত্রে ক্রিসমাসের ছুটি আমাদের জন্য আলোচনার একটি দারুণ সুযোগ দিতে পারে।’ 

এদিকে ইউক্রেন সরকার আশা প্রকাশ করেছে, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মিত্র বলে পরিচিত হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবানের বাধা সত্ত্বেও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইউক্রেনকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে সক্ষম হবে। গতকাল শুক্রবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভিক্টর অরবানের অবস্থান নিয়ে হতাশা পোষণ করেছে। 

বিবৃতিতে ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘আমরা আশা করি, জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ইইউ সামিটেই এই অর্থসহায়তার বিষয়টি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং যত দ্রুত সম্ভব এই সহায়তা দেওয়া উচিত।’ বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘এটি একটি স্পষ্ট সংকেত যে ইইউ থেকে ইউক্রেনের আর্থিক সহায়তা অব্যাহত থাকবে এবং এই অর্থ ইউক্রেন রাষ্ট্রকে আধুনিক করতে এবং ইইউ ব্লকে এর একীকরণ ত্বরান্বিত করতে ব্যবহার করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত