বর্ণবাদ-নারীবিদ্বেষ ও সমকাম বিদ্বেষে জর্জরিত লন্ডন পুলিশ: প্রতিবেদন

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ২১ মার্চ ২০২৩, ২০: ৫৩

প্রাতিষ্ঠানিকভাবেই বর্ণবাদ-নারীবিদ্বেষ ও সমকাম বিদ্বেষের মতো ঘটনায় জর্জরিত লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশ। সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তা লুইস কেসির স্বাধীন পর্যালোচনা প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মার্ক রাউলি প্রতিবেদনে ওঠে আসা এসব বিষয় মেনে নিলেও ‘প্রাতিষ্ঠানিক’ শব্দ ব্যবহারে তিনি আপত্তি জানান।

আজ মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।

মার্ক রাউলি বলেন, ‘প্রতিবেদনে যেসব তথ্য উঠে এসেছে এগুলো নৃশংস। আমরা লন্ডনবাসীকে হতাশ করেছি।’

লুইস কেসি তাঁর প্রতিবেদনে পরামর্শ দিয়েছেন যদি তাঁরা (লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশ) নিজেদের এসব অপরাধ থেকে মুক্ত হয়ে উন্নতি করতে না পারে তাহলে সংস্থাটিই ভেঙে দেওয়া উচিত।

প্রতিবেদনে বলা হয়, লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশ সমালোচনা গ্রহণ করতে পারে না এবং তাঁরা ব্যর্থতা স্বীকার করে না।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১২ বছরে ১২৬টি পুলিশ স্টেশন বন্ধ হয়েছে। পুলিশের ওপর থেকে মানুষের আস্থা হারিয়ে গেছে। সমকাম বিদ্বেষ এখানে জেঁকে বসেছে। বর্ণবাদের বিষয়গুলো এখানে এড়িয়ে যাওয়া হয়। পুলিশে কর্মরত নারীরাও যৌন নিপীড়ন ও বিদ্বেষের শিকার।

লুইস কেসির প্রতিবেদনে লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশের এমন চিত্র ওঠে আসার পর বিভিন্ন মহলে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এর আগে ২০২১ সালের ৩ মার্চ ব্রিটিশ তরুণী সারাহ এভারার্ডকে অপহরণ করে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনা ঘটে। অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশের কর্মকর্তা ওয়েন কুজেনসের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। সে সময় ঘটনাটি সমালোচনার জন্ম দেয়। এমন কর্মকাণ্ডে আন্দোলনে নামেন লন্ডনের সাধারণ মানুষ। 

এই ঘটনার পর লুইস কেসিকে স্বাধীন পর্যালোচনা প্রতিবেদনের দায়িত্ব দেওয়া হয়। দীর্ঘ ১ বছর অনুসন্ধানের পর স্বাধীন পর্যালোচনা প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হলো। 

লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশের বিরুদ্ধে এসব ঘটনা সামনে আসার পর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন ভুক্তভোগীরা। ১৯৯৩ সালে খুন হয়েছিলেন কৃষ্ণাঙ্গ কিশোর স্টিফেন লরেন্স। তাঁর মা ব্যারনেস ডোরেন লরেন্স বলেন, প্রতিবেদনে যেসব বিষয় উঠে এসেছে এ নিয়ে অবাক হওয়ার কিছু নেই। 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুয়েলা ব্র্যাভারম্যান বলেছেন, ‘আমাদের বাহিনীতে যারা কাজ করেন তাঁদের অধিকাংশই সৎ, ভদ্র ও সাহস। তবে এই বিষয়টি স্পষ্ট যে, অনেক দিন ধরেই কিছু নিয়মতান্ত্রিক সমস্যা রয়েছে। এসব সমস্যা পরিত্রাণে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হবে।’ 

লন্ডনের মেয়র সাদিক খান বলেছেন, লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশের জন্য এটি একটি কালো অধ্যায়। 

লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশে কাজ করা ব্যক্তিরাও পর্যালোচনা প্রতিবেদন প্রকাশের পর নানা সমালোচনা করেছেন। আলী হাসান আলী নামের এক ব্যক্তি তিন বছর কর্মরত ছিলেন লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশে। তিনি বিবিসিকে বলেন, ‘সংস্থাটি সত্যিই অনেক বিষাক্ত। আমরা যারা ভালো উদ্দেশ্য নিয়ে এখানে ছিলাম তাঁরা এক সময় ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছি।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত