তুরস্কের কৃষকদের অবস্থা শোচনীয় 

ডয়চে ভেলে
আপডেট : ১১ মার্চ ২০২৪, ২১: ৪২
Thumbnail image

দীর্ঘদিন ধরে চলমান মুদ্রাস্ফীতি ও অপর্যাপ্ত রাষ্ট্রীয় সহযোগিতায় তুরস্কে কৃষকদের অবস্থা বেশ শোচনীয় হয়ে পড়েছে। রাষ্ট্রীয় সহযোগিতার অভাবে টিকে থাকতে অধিকাংশ কৃষক ঋণ করতে বাধ্য হচ্ছেন।

সম্প্রতি তুর্কির প্রতিবেশী ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলোতে কৃষকেরা রাস্তায় নেমে ট্রাক্টর দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে প্রতিবাদ করেছে। তুরস্কের কৃষকেরা এখনো রাস্তায় না নামলেও রাষ্ট্রীয় ভর্তুকি নিয়ে চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তুর্কির কৃষি খাতের প্রতিনিধিরা বলছেন, পোল্যান্ড, জার্মানি ও অন্যান্য দেশের তুলনায় তাঁরা অনেক খারাপ অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন।

তুরস্কের চেম্বার অব অ্যাগ্রিকালচারাল ইঞ্জিনিয়ার্সের সভাপতি বাকি রেমজি সুইচমেজ বলেন, ‌‌‘ইউরোপে কৃষকদের বিক্ষোভের অন্যতম কারণ ছিল ডিজেলের জন্য ভর্তুকি কমানো। কিন্তু তুরস্কে ডিজেলের জন্য আলাদা কোনো কর সুবিধাই নেই। মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে এখন প্রায় ৭০ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছেছে। এই মুহূর্তে শুধু আর্থিক সহায়তাই কৃষকদের জন্য যথেষ্ট নয়।’

চলমান সংকট কাটাতে কৃষকদের সহায়তার জন্য দেশটির কৃষি মন্ত্রণালয় ২০২৪ সালে তাঁদের বাজেট  ৪৪ দশমিক ৫ শতাংশ বৃদ্ধি করেছে। তুরস্কের চেম্বার অব অ্যাগ্রিকালচারাল ইঞ্জিনিয়ার্সের তথ্য অনুযায়ী, তুরস্কে কৃষিপণ্য সরবরাহের খরচও দিন দিন বাড়ছে। উদাহরণস্বরূপ কৃষিতে ব্যবহৃত ডিজেলের দাম গত বছর ৭৬ শতাংশ ও সারের দাম ২৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে।

তুরস্কের আর্থিক সংকট ইউরোপের বর্তমান মুদ্রাস্ফীতির সমস্যার চেয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলছে। গত কয়েক বছরে তুর্কি লিরার মূল্য নাটকীয়ভাবে কমে গেছে। তুরস্কের সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছর তুরস্কে বার্ষিক মুদ্রাস্ফীতি ছিল ৬৪ শতাংশ, যা জার্মানিতে ছিল প্রায় ৫ দশমিক ৯ শতাংশ। ২০১৪ সালে যেখানে ১ ইউরোর বিপরীতে ২ দশমিক ৯৩ লিরা ছিল, বর্তমানে তা ৩৪ লিরা পর্যন্ত পৌঁছেছে।

গত বছর কৃষকদের ৮০ শতাংশ ব্যাংক ঋণ বেড়েছে। দেশটির সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, কৃষকদের কাছে ব্যাংকগুলোর পাওনা ১৯ বছর আগের চেয়ে ১১৮ গুণ বেশি। অপর দিকে একই সময়ের মধ্যে আর্থিক সহায়তার পরিমাণ তেমন বাড়েনি।

তুরস্কের প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টির (সিএইচপি) সংসদ সদস্য ওরহান সারিবাল বলেন, ‘২০০৪ সালে কৃষি, বন ও প্রাণিসম্পদ উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত ঋণের পরিমাণ রাষ্ট্রীয় প্রণোদনার চেয়ে ১ দশমিক ৭ গুণ বেশি। যা ২০২৩ সালে এসে ৯ দশমিক ৬ গুণ বেশি হয়েছে।’

সরকারের কাছ থেকে কৃষকেরা পর্যাপ্ত সহায়তা পাচ্ছেন না বলেই তারা ঋণ নিতে বেসরকারি ব্যাংকের দিকে ঝুঁকছেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত