Ajker Patrika

জনগণের টাকায় আবিষ্কৃত একমাত্র ভ্যাকসিনটি যেভাবে গেল কোম্পানির হাতে

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১৬ এপ্রিল ২০২১, ১৩: ১৩
জনগণের টাকায় আবিষ্কৃত একমাত্র ভ্যাকসিনটি যেভাবে গেল কোম্পানির হাতে

যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় উদ্ভাবিত করোনার টিকা উৎপাদন ও বিপণনের লাইসেন্স পেয়েছে বহুজাতিক ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান অ্যাস্ট্রাজেনেকা। এই ভ্যাকসিনটির গবেষণার ৯৭ শতাংশ টাকাই এসেছে জনগণের দেওয়া ট্যাক্স অথবা দান থেকে। যুক্তরাজ্যের অ্যাডভোকেসি গ্রুপ ইউনিভার্সিটিজ অ্যালায়েড ফর এসেনশিয়াল মেডিসিনস-এর একটি গবেষণায় এমন তথ্য বেরিয়ে এসেছে।

গবেষণায় বলা হয়, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনের প্রাথমিক গবেষণার টাকা যুক্তরাজ্যের সরকার, ব্রিটিশ এবং আমেরিকান সায়েন্টিফিক ইনস্টিটিউট, দ্য ইউরোপিয়ান কমিশন এবং বিভিন্ন দাতব্য সংস্থা থেকে এসেছে। এই ভ্যাকসিনের গবেষণায় ২ শতাংশেরও কম অর্থ এসেছে বেসরকারি শিল্প থেকে।

সম্প্রতি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন একটি বৈঠকে বলেন, পুঁজিবাদ আর লোভের কারণেই অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনটি এতো দ্রুত তৈরি করা হয়। এই গবেষণার তথ্যটি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে মিথ্যা প্রমাণ করবে বলেই মনে করছেন গবেষকরা।

উল্লেখ্য, কোভিডের প্রথম কার্যকর ভ্যাকসিনটিই হলো অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের তৈরি কোভিশিল্ড।

গবেণায় বলা হচ্ছে, ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানি জনসন বেসরকারিভাবে ভ্যাকসিনের গবেষণা চালিয়েছে। একই রকম ঘটনা ঘটেছে বিশ্বের বড় বড় ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলোর ক্ষেত্রেও। এই কোম্পানিগুলো করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের পেটেন্ট উন্মুক্তকরণের বিরোধিতা করে আসছে। কোম্পানিগুলো দাবি করছে, ভ্যাকসিন উদ্ভাবনের মূল চালিকাশক্তি হলো মালিকানা স্বত্ব এবং মুনাফা।

এ নিয়ে অ্যাডভোকেসি গ্রুপ ইউনিভার্সিটিজ অ্যালাইড ফর এসেনশিয়াল মেডিসিনস ইউকে-এর পক্ষ থেকে বলা হয়, আমাদের গবেষণা থেকে দেখা যায় জনগণে টাকা এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা আমাদের করোনার ভ্যাকসিন দিয়েছে।  

তবে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন তৈরি করতে কত টাকা খরচ হয়েছে সে বিষয়ে গবেষণায় কিছু বলা হয়নি। 

গবেষণাটির এখনও পিয়ার রিভিউ হয়নি। তবে এর প্রিপ্রিন্ট সংস্করণ অনলাইনে প্রকাশিত হয়েছে। সেটি নিয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন করেছে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।

২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর চীনের উহানে কর্তৃপক্ষ করোনাভাইরাসের বিষয়ে প্রথম মুখ খোলে। তখন থেকে শিল্পকারখানা থেকে ২ দশমিক ৮ শতাংশ তহবিল পেয়েছে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি।  যুক্তরাজ্যে গত বছরের জানুয়ারিতে করোনার সংক্রমণ শুরু হলে যুক্তরাজ্যে সরকার ভ্যাকসিন তৈরির জন্য ৩ কোটি ৩০ লাখ পাউন্ডের বেশি তহবিল দেয়। অবশ্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন, বিভিন্ন দাতব্য সংস্থা মিলিয়ে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় মোট অনুদান পেয়েছে ২২ কোটি ৮০ লাখ পাউন্ডের বেশি। দেশের বাইরে থেকে এতো বেশি অনুদান আর কখনো পায়নি অক্সফোর্ড।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে প্রথমে বলা হয়েছিল যে, কোনো ধরনের রয়্যালটি ছাড়াই উপযুক্ত সংস্থাগুলো এই ভ্যাকসিন উৎপাদন করতে পারবে। এটির দাম হবে খুবই কম অথবা নগণ্য পরিমান মুনাফা করার সুযোগ থাকবে। তবে ২০২০ সালের আগস্টে বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের আহ্বানে ব্রিটিশ-সুইডিশ কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকার সঙ্গে এক্সক্লুসিভ লাইসেন্সিং চুক্তিতে যায় অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি।

অ্যাস্ট্রাজেনেকা তখন মহামারিকালে কোনো মুনাফা ছাড়াই ভ্যাকসিন বিক্রির প্রতিশ্রুতি দেয়। সেই সঙ্গে তারা ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটসহ বেশ কয়েকটি বৃহৎ ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়।

তবে কোম্পানিটি টিকার মূল্য বৃদ্ধির অধিকার সংরক্ষিত রেখেছে। মহামারি শেষে যদি নিয়মিত বুস্টার ডোজ নেওয়ার দরকার পড়ে তখন তারা এই টিকার দাম ইচ্ছেমতো বাড়াতে পারবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জাতীয় নির্বাচন: ভোট কমিটির নেতৃত্বে ডিসি–ইউএনওকে না রাখার চিন্তা

মাগুরার শিশুটি এখনো অচেতন, চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন তারেক রহমান

ঈদে পুলিশের সহযোগী ফোর্স হবে বেসরকারি নিরাপত্তাকর্মী, পাবে গ্রেপ্তারের ক্ষমতা

তিন নারী আমার জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ: তারেক রহমান

গত দশ বছর ভিসা না পাওয়ার কারণে বাংলাদেশে আসতে পারিনি: মাইলাম

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত