Ajker Patrika

জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে উন্নয়ন নয় ধর্মেই বেশি আস্থা নেতাদের

কলকাতা প্রতিনিধি
জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে উন্নয়ন নয় ধর্মেই বেশি আস্থা নেতাদের

ভারতে জাতীয় নির্বাচন যতই এগিয়ে আসছে ততই উন্নয়ন বা মানুষের রুটি-রুজির প্রশ্নের চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে ভোটারদের ধর্মীয় আবেগ। তাই রাজনৈতিক নেতারা দলমত-নির্বিশেষে মানুষের ধর্মীয় আবেগকেই কাজে লাগাতে চাইছেন।

ভারতের রাজনীতিতে ক্ষমতাসীন দল বিজেপি হিন্দুত্ববাদী হিসেবে পরিচিত হলেও সংখ্যাগুরু জনগোষ্ঠীর মন রক্ষায় অন্য দলগুলোর আগ্রহও কম নয়। তাই নির্বাচনী মৌসুম এলেই কাকতালীয়ভাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঢাক-ঢোল পিটিয়ে মন্দির দর্শনে বেড়িয়ে পড়েন। প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের নেতা রাহুল গান্ধী বা অন্যরাও নিজেদের হিন্দুত্ব প্রমাণে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।

সেই প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে আম আদমি পার্টির নেতা ও দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল ভারতীয় মুদ্রার নোটে লক্ষ্মী-গণেশের ছবি ছাপানোর দাবি তুলে হিন্দুদের ধর্মীয় আবেগকে নিজেদের দিকে আনতে চাইছেন বলে ধারণা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। বাম দলগুলো এ বিষয়ে সতর্ক হলেও পশ্চিমবঙ্গের সর্বশেষ বিধানসভা নির্বাচনে সংখ্যালঘু সংগঠনের সঙ্গে জোট গঠন করে তাঁরা বুঝিয়ে দিয়েছে, গণতন্ত্রে নির্বাচনে জয়লাভ করা কত জরুরি। আর নির্বাচনে জেতার সবচেয়ে বড় হাতিয়ার ধর্মীয় আবেগ।

২০২৪ সালে ভারতের লোকসভা নির্বাচন। এই নির্বাচনের আগে শাসক দল সাফল্যের প্রচারে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণের বিষয়টিকে। এখন থেকেই শুরু হয়েছে রামমন্দির নির্মাণের ঢালাও প্রচারণা। সাধারণ মানুষের উন্নয়ন বা অর্থনৈতিক নীতি তেমন একটা গুরুত্ব পাচ্ছে না প্রচারে।

বিরোধীরা সরকারের বিরুদ্ধে বেকারত্ব বৃদ্ধি, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি থেকে শুরু করে একগাদা অভিযোগ করলেও নির্বাচনের ক্ষেত্রে তা তেমন একটা প্রভাব ফেলছে না। তাই বিজেপির বিরুদ্ধে ‘দেশজুড়ে পদযাত্রায়’ নেমে রাহুল গান্ধীকেও মঠ-মন্দির পরিদর্শন করতে হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু অর্থাৎ মুসলিম সম্প্রদায়কে তোষণের অভিযোগ উঠলেও তাঁকে সম্প্রতি দেবী কালীর ভোগ রাঁধতে দেখা গেছে। বিরোধীদের মতে, এর পেছনেও রয়েছে নিজেকে হিন্দু প্রমাণ করার চেষ্টা।

এদিকে, ধর্মকে গুরুত্ব দেওয়ার পাশাপাশি শুরু হয়েছে ধর্মীয় বিভাজন। স্বাধীন ভারতে এই প্রথম মুসলিম প্রতিনিধি ছাড়াই চলছে মন্ত্রিসভা। শাসক দলের রাজ্যসভায়ও কোনো মুসলিম সদস্য নেই। সবচেয়ে বড় রাজ্য উত্তর প্রদেশেও বিজেপির নেতাদের মধ্যে নেই কোনো মুসলিম মুখ। তবে ইদানীং বিজেপির আদর্শগত পরিচালক আরএসএস নেতারা ঘন ঘন মসজিদ পরিদর্শনে যাচ্ছেন। মুসলিম নেতাদের সঙ্গে ঘন ঘন বৈঠক করতেও দেখা যাচ্ছে তাদের।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এর পেছনেও রয়েছে নির্বাচনের রসায়ন। সংখ্যালঘু এলাকাগুলোতেও নিজেদের আধিপত্য বাড়ানোর ক্ষেত্রে এটি একটি কৌশল বলে তাদের ধারণা। ধর্মের মোড়কে উগ্র দেশাত্মবোধের বীজ বপনেরও চেষ্টা চলছে ভারত জুড়ে। আর এর হাত ধরেই বাড়ছে বোরকা, মন্দির-মসজিদ, আমিষ-নিরামিষ প্রভৃতি বিতর্ক। জনকল্যাণে সরকারি ব্যর্থতা ঢাকার ক্ষেত্রেও ব্যবহৃত হচ্ছে ধর্মীয় আবেগ। তাই ভোট এলেই নেতাদের বাড়ছে মন্দির বা মসজিদে যাওয়ার হিড়িক। প্রকাশ্যে ধর্ম নিয়ে ভোট প্রচার নিষিদ্ধ হলেও কৌশলগত ভাবে ভোটের অঙ্ক ঠিক রাখতে নেতারা সুবিধা মতো পথ বেছে নিচ্ছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এক ছাতায় সব নাগরিক সেবা

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত