Ajker Patrika

মমতাকে চাপে রাখতেই কি পশ্চিমবঙ্গ থেকেই ৪ প্রতিমন্ত্রী 

প্রতিনিধি, কলকাতা
আপডেট : ০৮ জুলাই ২০২১, ১৫: ১৬
মমতাকে চাপে রাখতেই কি পশ্চিমবঙ্গ থেকেই ৪ প্রতিমন্ত্রী 

নরেন্দ্র মোদির নতুন মন্ত্রিসভায় চার প্রতিমন্ত্রী হলেন পশ্চিমবঙ্গ থেকে। ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র, শিক্ষা, সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও নৌপরিবহনের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে যুক্ত হলেন পশ্চিমবঙ্গের চার এমপি। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ থেকে চারজন মন্ত্রী হলেও খুশি নন অনেকেই। তাঁদের আশঙ্কা, সর্বশক্তি নিয়োগ করেও পশ্চিমবঙ্গের ভোটে পরাজয়ের পর এখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চাপে রাখতেই বিজেপির এ সিদ্ধান্ত। এমনকি পশ্চিমবঙ্গকে ভাগ করার মূল দাবিদার জন বার্লাকে কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রী করে পশ্চিমবঙ্গকে ভাগ করার দাবিকেই বিজেপির কেন্দ্রীয় পরোক্ষে সমর্থন জানিয়েছে বলে অভিযোগ তৃণমূলের।

বিপুল ভোটে জিতে পশ্চিমবঙ্গে তৃতীয়বার তৃণমূলের সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সময় থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চাপে রাখার সব রকম কৌশল নেয় বিজেপি। খোদ রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর নবনির্বাচিত সরকারকে নানাভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করেন। দাবি তোলেন রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসনের। রাজ্যের দুই মন্ত্রীসহ চারজন প্রভাবশালীকে ঘুষকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা গ্রেপ্তারও করে। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় পারস্পরিক সম্পর্কে মারাত্মক অবনতি হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। কিন্তু তাতে আমল না দিয়ে বিজেপির নেতারা পশ্চিমবঙ্গকে টুকরো টুকরো করার দাবি তুলতে থাকেন। কারণ কলকাতাসহ গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি পরাস্ত হলেও তুলনামূলকভাবে উত্তরের জেলাগুলোয় ভালো ফল করেছে। আবার জঙ্গলমহল বলে পরিচিত ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ও মেদিনীপুরেও বিজেপির প্রভাব থাকায় সেখানেও উঠেছে রাজ্যের দাবি। দার্জিলিংয়ে গোর্খাল্যান্ডের দাবি তো রয়েছে, কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের সাধারণ মানুষের আবেগ রয়েছে রাজ্যভাগের বিরুদ্ধে। বিজেপি ছাড়া কোনো দলই চায় না রাজ্যভাগ। তাই রাজ্যভাগের দাবি তুলে বিজেপি পশ্চিমবঙ্গকে অস্থির করতে চাইছে।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জাতীয় রাজনীতিতে আগ্রহ প্রকাশ করতেই তাঁকে এখন থেকেই চাপে রাখতে চাইছে বিজেপি। তাই মাত্র ৫৭ ভোটে বিধানসভা নির্বাচনে জিতলেও উত্তরের তৃণমূলছুট বিজেপির নেতা নিশীথ অধিকারীকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে। রাজ্যভাগের দাবিদার উত্তরেরই জন বার্লাকে নেওয়া হয়েছে সংখ্যালঘু উন্নয়ন মন্ত্রকে। এর আগে উত্তর থেকে দুজন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী কখনো হননি। গত বিধানসভা নির্বাচনে মতুয়াদের সমর্থন অনেকটাই কম পায় বিজেপি। তাই বাংলাদেশ থেকে উদ্বাস্তু হয়ে আসা মতুয়াদের থেকেও শান্তনু ঠাকুরকে মন্ত্রী করা হয়। বাঁকুড়ার সুভাষ সরকারকে শিক্ষামন্ত্রী করে আরও চাপ বাড়াতে চাইছে বিজেপি। ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে মমতাকে তাঁর নিজের রাজ্যেই চাপে রাখার কৌশল নিয়েছে বিজেপি। সেই চাপ বাড়াতেই চারজন কেন্দ্রের মন্ত্রী হলেন বলেই মনে করেন অনেকে। তৃণমূলের মহাসচিব ও রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জি এদিন মন্তব্য করেন, রাজ্যভাগের চক্রান্তকে বাস্তবায়িত করতেই জন বার্লাকে মন্ত্রী করা হয়েছে। দলের মুখপাত্র কুনাল ঘোষ অবশ্য বিজেপির নতুন মন্ত্রীদের ‘অচল পয়সা’ বলে কটাক্ষ করেছেন। অন্যদিকে, বিজেপির নেত্রী ড.  অর্চনা মজুমদারের মতে, পশ্চিমবঙ্গের সার্বিক বিকাশের জন্যই চারজনকে প্রতিমন্ত্রী করেছেন প্রধানমন্ত্রী। আর এতেই ভয় পেয়েছে তৃণমূল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা হলেই মেয়াদ শেষ নতুন পরিচালনা কমিটির

‘মবের হাত থেকে বাঁচাতে’ পলকের বাড়ি হয়ে গেল অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প

ভ্যানিটি ব্যাগ ধরে টান, সন্তানসহ ছিটকে পড়তেই তরুণীর গালে ছুরিকাঘাত

এনসিপিকে চাঁদা দিচ্ছেন ধনীরা, ক্রাউডফান্ডিং করেও অর্থ সংগ্রহ করা হবে: নাহিদ ইসলাম

আ. লীগ নির্বাচনে অংশ নেবে কি না, তারাই সিদ্ধান্ত নেবে: বিবিসিকে প্রধান উপদেষ্টা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত