আমি সাধারণত পারফিউম ব্যবহার করি না, টাটাকে চিঠিতে বলেছিলেন ইন্দিরা

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ২৩ জুলাই ২০২১, ২৩: ২৩
আপডেট : ২৩ জুলাই ২০২১, ২৩: ৩৮

শিল্পপতি জাহাঙ্গীর রতনজি দাদাভাই টাটাকে (জেআরডি টাটা) লেখা ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর একটি চিঠি হঠাৎ করে টুইটারে আলোড়ন তুলেছে। গত সপ্তাহে আরপিজি গ্রুপের চেয়ারম্যান হর্ষ গোয়েঙ্কা এটি শেয়ার করেন। এই চিঠি বিনিময়ের ঘটনাটিকে ‘উচ্চ মানের ব্যাপার’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন তিনি।

১৯৭৩ সালের ৫ জুলাইয়ে এই চিঠিটি সত্যিই ভারতে ইন্দিরা গান্ধী যুগের এক অসাধারণ নিদর্শন। ইন্দিরা গান্ধী চিঠিতে সুগন্ধি উপহার দেওয়ার জন্য জেআরডি টাটাকে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন। জেআরডিকে ইন্দিরা ‘জে’ বলে সম্বোধন করতেন। চিঠিতেও সেভাবে উল্লেখ করেছেন। ইন্দিরা লিখেছেন, ‘আমি আপনার পাঠানো পারফিউম নিয়ে শিহরিত। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আমি সাধারণত পারফিউম ব্যবহার করি না। আর এই চটকদার জগত থেকে এতোটা বিচ্ছিন্ন যে আমি এগুলোর কিছুই জানি না। তবে অবশ্যই এটা পরীক্ষা করে দেখবো।’

সাবেক প্রধানমন্ত্রী আরও লিখেছেন, ‘আপনি যখন কোনো মতামত জানাতে চান– অনুগ্রহ করে আমাকে লিখতে বা দেখা করতে দ্বিধা করবেন না– সেটি সমালোচনা হোক বা প্রশংসা হোক।’ টাটা এবং তাঁর স্ত্রী থেলমা ভিকাজি টাটাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে নোটটি শেষ করেছেন ইন্দিরা।

এই চিঠি টুইটারে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। ইন্দিরা গান্ধীর স্মৃতি স্মরণে আছে এমন হাজার হাজার মানুষ টুইটটিতে লাভ রিয়েক্ট দিয়েছেন।

ড. নীলিমা শ্রীবাস্তব নামে একজন টুইটার ব্যবহারকারী টুলের ওপর বসা ইন্দিরা গান্ধীর সংবাদ সম্মেলনের একটি সাদা–কালো ছবি শেয়ার করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘খুব অল্প বয়সে আমি তাঁর সঙ্গে লক্ষ্নৌতে ভ্রমণ করেছি। একটি ছাদ খোলা জিপে, তুষার সাদা সিল্ক শাড়ির জমিনে গোলাপী ফুল আঁকা পোশাক পরে ছিলেন তিনি। আমাকে হালকা করে ধরে রেখেছিলেন যাতে পড়ে না যাই।’ এভাবেই ইন্দিরাকে স্মরণ করেছেন ড. শ্রীবাস্তব।
আরেকজন মন্তব্য করেছেন, জেআরডি টাটা ছিলেন চিঠি লিখতে সিদ্ধহস্ত। তিনি প্রচুর চিঠি লিখতেন। পরিবার, সহকর্মী, সহযোগী এবং জওহরলাল নেহেরু ও ইন্দিরা গান্ধীর মতো সমসাময়িক নেতাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করতেন চিঠিতে।
অন্য একজন টুইটার ব্যবহারকারী উল্লেখ করেছেন, জেআরডি টাটা একবার এক সাক্ষাত্কারে বলেছিলেন, গান্ধীদের সঙ্গে অর্থনৈতিক নীতি নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। কিন্তু তা বিনয়ের সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল।

১৯৮৬ সালে ইন্ডিয়া টুডের সঙ্গে এক সাক্ষাত্কারে জেআরডি টাটা বলেছিলেন, ‘ইন্দিরা গান্ধী যখন কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে চান না তখন তিনি ডুডলিং (অসতর্কভাবে লেখালেখি বা আঁকাআঁকি) শুরু করতেন। হ্যাঁ, তিনি ডুডল করতেন। আমি এতে খুব একটা কিছু মনে করতাম না। তিনি তখন খাম হাতে নিতেন, এরপর এক এক করে মুখ খুলে চিঠি বের করতেন। এটি নিজের বিরক্তি প্রকাশের একটা ভদ্র ইঙ্গিত।’ যদিও ইন্দিরার সঙ্গে সম্পর্ককে ‘খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ’ বলে সব সময় বর্ণনা করেছেন জাহাঙ্গীর রতনজি দাদাভাই টাটা।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত