ভারতে বিষাক্ত মদ্যপানে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫৫, হাসপাতালে ভর্তি ৮৮

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২২ জুন ২০২৪, ১১: ০৩
Thumbnail image

ভারতে বিষাক্ত মদ্যপানে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৫। দেশটির তামিলনাড়ু রাজ্যের রাজধানী চেন্নাই থেকে ২৫০ কিলোমিটার দূরবর্তী কল্লাকুরিচি জেলায় কয়েক দিন ধরে বিষাক্ত মদ্যপানে আরও কমপক্ষে ৮৮ জন গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছেন। ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে খবরটি দিয়েছে।

বিষাক্ত মদ্যপানে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে অনেকেই করুণাপুরম এলাকার বাসিন্দা। এই মর্মান্তিক ঘটনায় তিন নাবালক শিশু তাদের বাবা-মা দুজনকেই হারিয়েছে। ভাইবোনেরা এখন তাকিয়ে আছে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে। তাদের দাদি বলেন, ‘আমি জানি না, কীভাবে ওদের দেখাশোনা করব।’

আরেক মা হারিয়েছেন তাঁর ছেলেকে। তিনি বলেন, ‘সে (তার ছেলে) বলছিল, তার প্রচণ্ড পেটব্যথা এবং চোখ খুলতে পারছিল না। আরাক খাওয়ার কথা বলেছিল সে। হাসপাতালও তাকে ভর্তি করতে চাইছিল না। বলছিল, সে মাতাল। রাজ্য সরকারের উচিত, সব মদের দোকান বন্ধ করা।’

আরেক মা বলেন, ‘আমার ছেলের পেটে প্রচণ্ড ব্যথা হচ্ছিল। সে চোখে দেখতে পাচ্ছিল না, কানেও শুনছিল না। এটা কারও সঙ্গেই হওয়া উচিত নয়। মদ বিক্রি বন্ধ করুন।’

বিষাক্ত চোলাই মদ আরাক বিক্রির অভিযোগে কে গোবিন্দরাজ ওরফে কান্নুকুট্টি নামে এক ব্যক্তিসহ সন্দেহভাজন চারজন অবৈধ মদ বিক্রেতা এবং আরও ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কান্নুকুট্টির কাছ থেকে ২০০ লিটার অবৈধ ‘প্যাকেট আরাক’ নামের ওই বিষাক্ত মদ জব্দ করা হয়েছে। মাদ্রাজ হাইকোর্ট দায়িত্বরত কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদনের শুনানি করতে চলেছে।

বিষাক্ত মদ খাওয়ার কারণে এই মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করে একজন জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা এনডিটিভিকে বলেন, ‘তারা ঠিক কী খেয়েছিল, তা আমরা তদন্ত করছি।’

রাজ্য সরকার জেলা পুলিশপ্রধান সময় সিং মীনাকে বরখাস্ত করেছে এবং তাঁর জায়গায় রজত চতুর্বেদীকে নিয়োগ করেছে। কালেক্টর শ্রাবণ কুমার জাটাবথের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন এম এস প্রশান্ত।

নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগকারী শাখার একজন উপপুলিশ সুপার পদমর্যাদার কর্মকর্তা, তিন পরিদর্শক এবং কয়েকজন উপপরিদর্শককেও বরখাস্ত করা হয়েছে। রাজ্য সরকারও বিষাক্ত মদ ট্র্যাজেডির তদন্ত সিবি-সিআইডিকে হস্তান্তর করেছে।

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন এক্সে দেওয়া পোস্টে বলেছেন, তিনি প্রাণহানির ঘটনায় মর্মাহত ও বেদনাহত। তিনি বলেন, ‘অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যারা এটি প্রতিরোধ করতে ব্যর্থ হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমরা শক্ত হাতে এই অপরাধ দমন করব। জনসাধারণ যদি এ ধরনের অপরাধীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে, তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মুখ্যমন্ত্রী মাদ্রাজ হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি বি গোকুল দাসের নেতৃত্বে তদন্তের ঘোষণা দিয়েছেন। নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে ১০ লাখ রুপি করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।

অবৈধ মদ প্রস্তুতকারী, মিথানল বিক্রেতা এবং মিথানল ধ্বংস করার নির্দেশ আগেই দিয়েছিলেন এম কে স্ট্যালিন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত