Ajker Patrika

সেনাপ্রধানের কার্যালয় থেকে পাকিস্তানের আত্মসমর্পণের ছবি সরিয়ে যেখানে রাখল ভারত

আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১: ১৯
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ভারতীয় বাহিনীর কাছে পাকবাহিনীর আত্মসমর্পণের ছবিটি ভারতীয় সেনাপ্রধানের কার্যালয়ে আর নেই। ছবি: সংগৃহীত
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ভারতীয় বাহিনীর কাছে পাকবাহিনীর আত্মসমর্পণের ছবিটি ভারতীয় সেনাপ্রধানের কার্যালয়ে আর নেই। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় যৌথ বাহিনীর কাছে পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের একটি স্থিরচিত্র এত দিন টাঙানো ছিল ভারতের সেনাপ্রধানের কার্যালয়ের লাউঞ্জে। সম্প্রতি সেই ছবি সরিয়ে ফেলা হলে বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। সেই বিতর্কের মুখে ছবিটি সরিয়ে মানেকশ কনভেনশন সেন্টারে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুর প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি সেনাপ্রধানের লাউঞ্জ থেকে সরিয়ে নেওয়া ১৯৭১ সালের পাকিস্তানের আত্মসমর্পণের ঐতিহাসিক চিত্রটি ভারতীয় সেনাবাহিনী গতকাল সোমবার মানেকশ কনভেনশন সেন্টারে পুনঃস্থাপন করেছে।

ভারতীয় সেনাবাহিনীর অফিশিয়াল এক্স হ্যান্ডেলের শেয়ার করা এক পোস্টে বলা হয়েছে, ‘বিজয় দিবসের দিনে সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী এবং আর্মি ওয়াইভস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মিসেস সুনীতা দ্বিবেদী ১৯৭১ সালের ঐতিহাসিক আত্মসমর্পণের চিত্রটি মানে কশ সেন্টারে পুনঃস্থাপন করেছেন। এই কেন্দ্রটির নামকরণ করা হয়েছে ১৯৭১ সালের যুদ্ধের প্রধান স্থপতি এবং বীর ফিল্ড মার্শাল স্যাম মানেকশর নামে।’ এ সময় অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনীর শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা ও প্রবীণ সেনাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

চিত্রটিকে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর অন্যতম বড় সামরিক বিজয় এবং ন্যায়বিচার ও মানবিকতার প্রতি ভারতের অঙ্গীকারের স্মারক হিসেবে তুলে ধরে সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ‘মানেকশ সেন্টারে এটি স্থাপন করার ফলে এই স্থানে ভারত এবং বিদেশ থেকে আগত বিভিন্ন দর্শক ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জন্য এর তাৎপর্য আরও প্রসারিত হবে।’

অর্ধশতাব্দী ধরে ভারতীয়দের কাছে ‘সবচেয়ে বড় সামরিক বিজয়ের’ প্রাণবন্ত প্রতীক ছিল ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ঢাকায় যৌথ বাহিনীর কাছে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণের নথিতে স্বাক্ষরের একটি ছবি। সম্প্রতি ছবিটি সেনাপ্রধানের কার্যালয় থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। ছবিটি পাঁচ দশক ধরে সেনাপ্রধানের কার্যালয়ে ঝুলে ছিল এবং প্রায়ই বিদেশি জেনারেল ও অন্য বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে তোলা ছবির পটভূমি হিসেবে ব্যবহৃত হতো।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়া ও দ্য হিন্দুর খবরে বলা হয়েছে, সেনাপ্রধানের লাউঞ্জে নতুন একটি চিত্রকর্ম স্থাপন করা হয়েছে। এই নতুন চিত্রকর্ম ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে যৌথ বাহিনীর কাছে পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের দৃশ্য তুলে ধরা ঐতিহাসিক চিত্রকর্মের জায়গায় প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।

সেনাবাহিনীর একটি সূত্র দ্য হিন্দুকে জানায়, নতুন চিত্রকর্মটির নাম হিন্দি ও ইংরেজিতে ‘করম ক্ষেত্র—ফিল্ড অব ডিডস’। এই চিত্রকর্ম ভারতীয় সেনাবাহিনীর ২৮ মাদ্রাজ রেজিমেন্টের কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল থমাস জ্যাকব এঁকেছেন। এতে সেনাবাহিনীকে ‘কেবল জাতির প্রতিরক্ষা নয়, এর পাশাপাশি ধর্মের রক্ষক, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং জাতীয় মূল্যবোধের সংরক্ষক’ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। এটি সেনাবাহিনীর প্রযুক্তিগত উন্নতি এবং একীভূত শক্তি হিসেবে রূপান্তরকেও তুলে ধরেছে।

ঢাকায় যৌথবাহিনীর কাছে পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের সেই ঐতিহাসিক ছবি। ছবি: উইকিপিডিয়ার সৌজন্যে
ঢাকায় যৌথবাহিনীর কাছে পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের সেই ঐতিহাসিক ছবি। ছবি: উইকিপিডিয়ার সৌজন্যে

নতুন চিত্রটির ব্যাকগ্রাউন্ডে তুষারঢাকা পাহাড়, ডান দিকে লাদাখের প্যাংগং লেক এবং বাঁদিকে গরুড় (হিন্দু পুরাণে উল্লেখিত পক্ষীশ্রেষ্ঠ ও বিষ্ণুর বাহন) ও কৃষ্ণের রথ এবং চাণক্যের (রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও অর্থনীতি বিষয়ে প্রাচীন ভারতের এক দিকপাল) উপস্থিতি রয়েছে। পাশাপাশি, আধুনিক সামরিক সরঞ্জাম যেমন ট্যাংক, অল-টেরেইন যান, পেট্রল বোট, দেশীয় লাইট কমব্যাট হেলিকপ্টার এবং অ্যাপাচি অ্যাটাক হেলিকপ্টারের চিত্রও প্রদর্শিত হয়েছে।

সেনাবাহিনীর এক সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে দ্য হিন্দুকে বলেছেন, ‘এই চিত্রকর্ম এমন একটি দেশকে উপস্থাপন করে, যার সমৃদ্ধ সভ্যতা রয়েছে, যা বরাবরই ন্যায়পরায়ণ এবং প্রয়োজনমতো বলপ্রয়োগে বিশ্বাস করে। এটি সাহসী, আধুনিক ও দক্ষ একটি সেনাবাহিনীকে তুলে ধরে, যারা সব সময় নিজেদের সীমান্ত ও স্বার্থ রক্ষায় প্রস্তুত।’

সূত্রটি আরও জানিয়েছে, এটি মহাভারতের শিক্ষার ভিত্তিতে সেনাবাহিনীর ন্যায়পরায়ণতার প্রতি চিরস্থায়ী অঙ্গীকারকে প্রতিফলিত করে। চাণক্যের কৌশলগত ও দার্শনিক প্রজ্ঞাও এতে অন্তর্ভুক্ত, যা নেতৃত্ব, কূটনীতি এবং যুদ্ধে সেনাবাহিনীর দৃষ্টিভঙ্গি গঠনে সহায়ক। সাম্প্রতিক সময়ে প্রাচীন ভারতীয় গ্রন্থ অধ্যয়ন এবং ভারতীয় দর্শন ও সংস্কৃতির ভিত্তিতে একটি ‘দেশজ কৌশলগত শব্দভান্ডার গড়ে তোলার প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে।

সূত্র আরও জানিয়েছে, এই নতুন চিত্রকর্মটি আধুনিক ভারতীয় সেনাবাহিনীর উন্নত প্রযুক্তি, স্থল, বায়ু ও সাগরের মধ্যে সমন্বয় এবং প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে দ্রুত ও কার্যকর হামলার প্রস্তুতিকে তুলে ধরে। এর মূল বার্তা হলো—সেনাবাহিনীর আত্মত্যাগ, শৃঙ্খলা এবং বীরত্বের ঐতিহ্যকে সম্মান জানানো, পাশাপাশি ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তাদের অটুট সংকল্প প্রদর্শন করা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

আন্দোলনের মুখে রাবিতে আওয়ামীপন্থী ছয় ডিনের পদত্যাগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জাপানের পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের চেষ্টাকে প্রতিহতের ঘোষণা উত্তর কোরিয়ার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন। ছবি: এএফপি
উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন। ছবি: এএফপি

জাপানের পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের যে কোনো প্রচেষ্টা কঠোরভাবে প্রতিহত করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে উত্তর কোরিয়া। দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কেসিএনএ রোববার (২১ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, জাপানের পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা যে কোনো মূল্যে রোধ করা উচিত, কারণ এটি মানবজাতির জন্য ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন ‘ইনস্টিটিউট ফর জাপান স্টাডিজ’-এর পরিচালক এক বিবৃতিতে বলেন, জাপানের পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের চেষ্টা শুধু এশিয়া নয়, পুরো বিশ্বের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করবে। তাঁর ভাষায়, ‘জাপানের পারমাণবিক হওয়ার প্রচেষ্টা মানবজাতির জন্য এক মহাবিপর্যয় বয়ে আনবে।’

যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়ার এই প্রতিক্রিয়ার পেছনে রয়েছে জাপানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক কর্মকর্তার সাম্প্রতিক মন্তব্য। জাপানের বার্তা সংস্থা কিয়োদো নিউজের খবরে বলা হয়, ওই কর্মকর্তা প্রকাশ্যে বলেছেন, টোকিওর পারমাণবিক অস্ত্র রাখা উচিত।

এই প্রেক্ষাপটে উত্তর কোরিয়া দাবি করেছে, এটি কোনো বিচ্ছিন্ন বা বেপরোয়া মন্তব্য নয়; বরং জাপানের বহুদিনের পারমাণবিক অস্ত্রায়নের আকাঙ্ক্ষারই প্রতিফলন।

উত্তর কোরিয়ার মতে, জাপান তাদের তথাকথিত ‘অ-পারমাণবিক নীতি’ পুনর্বিবেচনার কথা বলে কার্যত একটি ‘লাল রেখা’ অতিক্রম করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়, জাপানের কর্মকর্তাদের মন্তব্যগুলোই বলে দিচ্ছে, টোকিও এখন প্রকাশ্যেই পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের বাসনা জানাচ্ছে।

উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম আরও দাবি করেছে, যুক্তরাষ্ট্র যখন গত অক্টোবরে দক্ষিণ কোরিয়াকে একটি পারমাণবিক সাবমেরিন নির্মাণের অনুমোদন দেয়, তার পরপরই জাপানে এই ধরনের বক্তব্য জোরালো হতে শুরু করে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে মিয়ংয়ের সঙ্গে বাণিজ্য ও নিরাপত্তা ইস্যুতে শীর্ষ বৈঠকের পর ওই অনুমোদন দিয়েছিলেন।

উত্তর কোরিয়ার ওই কর্মকর্তা সতর্ক করে বলেন—জাপান যদি পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করে, তবে এশিয়া ভয়াবহ পারমাণবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। তবে তিনি পিয়ংইয়ংয়ের নিজস্ব পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।

ধারণা করা হয়, উত্তর কোরিয়া নিজেই একটি ক্রমবর্ধমান পারমাণবিক অস্ত্রভান্ডারের অধিকারী। আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা ও নিরস্ত্রীকরণের আহ্বান থাকার পরও দেশটি তার পারমাণবিক সক্ষমতা বজায় রাখা ও সম্প্রসারণের ঘোষণা দিয়ে আসছে। গত সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘে দেওয়া ভাষণে উত্তর কোরিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী কিম সন গিয়ং বলেন—পারমাণবিক অস্ত্র তাদের রাষ্ট্রীয় আইন, জাতীয় নীতি এবং সার্বভৌম অধিকারের অংশ, যা তারা কোনো পরিস্থিতিতেই ত্যাগ করবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

আন্দোলনের মুখে রাবিতে আওয়ামীপন্থী ছয় ডিনের পদত্যাগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভেনেজুয়েলার আরও একটি তেলের ট্যাংকার ধাওয়া করছে মার্কিন বাহিনী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩: ১৪
ক্যারিবিয়ান সাগরে পানামা পতাকাবাহী সেঞ্চুরি নামের একটি তেলবাহী জাহাজের ওপর মার্কিন সামরিক বাহিনীর টহল। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে
ক্যারিবিয়ান সাগরে পানামা পতাকাবাহী সেঞ্চুরি নামের একটি তেলবাহী জাহাজের ওপর মার্কিন সামরিক বাহিনীর টহল। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে

ভেনেজুয়েলা উপকূলে আন্তর্জাতিক জলসীমায় আরও একটি তেলের ট্যাংকার ধাওয়া করছে মার্কিন কোস্ট গার্ড। আজ রোববার (২১ ডিসেম্বর) তিনজন মার্কিন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এটি সফল হলে এক সপ্তাহের মধ্যে ভেনেজুয়েলাসংশ্লিষ্ট তিনটি তেলবাহী জাহাজ জব্দ করার ঘটনা ঘটবে।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত সপ্তাহে ভেনেজুয়েলার ওপর ‘সর্বাত্মক নৌ অবরোধ’ ঘোষণার পর থেকে এই চিরুনি অভিযান শুরু হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মার্কিন কোস্ট গার্ড বর্তমানে একটি তেল ট্যাংকারকে ধাওয়া করছে। তবে অভিযানের সুনির্দিষ্ট অবস্থান বা জাহাজটির পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।

এই অভিযান নিয়ে হোয়াইট হাউস বা পেন্টাগন থেকে তাৎক্ষণিক কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

হোয়াইট হাউসের ন্যাশনাল ইকোনমিক কাউন্সিলের ডিরেক্টর কেভিন হ্যাসেট আজ জানিয়েছেন, এর আগে জব্দ করা দুটি ট্যাংকার ‘ব্ল্যাক মার্কেট’ বা কালোবাজারের মাধ্যমে বিভিন্ন নিষিদ্ধ দেশে তেল সরবরাহ করছিল।

কেভিন হ্যাসেট দাবি করেছেন, এই আটকের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রে তেলের দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই। তাঁর মতে, এগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা এবং কেবল কালোবাজারি জাহাজগুলোকেই লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে।

তবে বাজার বিশ্লেষক ও তেল ব্যবসায়ীরা ভিন্নমত পোষণ করছেন। একজন তেল ব্যবসায়ী রয়টার্সকে বলেন, এই ধরনের পদক্ষেপ ভূরাজনৈতিক ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। আগামীকাল সোমবার এশিয়ার বাজারে তেলের দাম বাড়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ হওয়ার সম্ভাবনা তেলের দামের এই ঊর্ধ্বগতিকে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে।

গত সেপ্টেম্বর থেকে প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর ওপর চাপ বাড়াতে ট্রাম্প প্রশাসন এই অঞ্চলে সামরিক উপস্থিতি কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। গত কয়েক মাসে প্রশান্ত মহাসাগর ও ক্যারিবিয়ান সাগরে ভেনেজুয়েলাসংশ্লিষ্ট ভেসেলগুলোর ওপর অন্তত দুই ডজন সামরিক হামলা চালানো হয়েছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, এসব সামরিক অভিযানে এখন পর্যন্ত অন্তত ১০০ জন নিহত হয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

আন্দোলনের মুখে রাবিতে আওয়ামীপন্থী ছয় ডিনের পদত্যাগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভেনেজুয়েলায় মার্কিন হস্তক্ষেপ নিয়ে সতর্ক করলেন লুলা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা। ছবি: সংগৃহীত
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা। ছবি: সংগৃহীত

ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমবর্ধমান চাপ ও সম্ভাব্য সামরিক পদক্ষেপ ‘ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়’ ডেকে আনবে বলে সতর্ক করেছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা। তিনি মত দিয়েছেন, ভেনেজুয়েলায় কোনো ধরনের সশস্ত্র হস্তক্ষেপ শুধু ওই দেশের জন্য নয়, বরং পুরো পৃথিবীর জন্যই এক বিপজ্জনক দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।

ব্রাজিলের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর ফোজ দো ইগুয়াসুতে দক্ষিণ আমেরিকার আঞ্চলিক জোট ‘মারকোসুর’-এর শীর্ষ সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে লুলা এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘ভেনেজুয়েলায় সশস্ত্র হস্তক্ষেপ একটি মানবিক বিপর্যয়ে রূপ নেবে। এটি এমন একটি নজির সৃষ্টি করবে, যা বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার জন্য মারাত্মক হুমকি।’

এ বিষয়ে এক প্রতিবেদনে রোববার (২১ ডিসেম্বর) রয়টার্স জানিয়েছে, ভেনেজুয়েলা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তেজনা সম্প্রতি আরও বেড়েছে। গত মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভেনেজুয়েলায় যাতায়াতকারী সব নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেলবাহী জাহাজের ওপর ‘অবরোধ’ আরোপের নির্দেশ দেন। ওয়াশিংটনের এই পদক্ষেপকে নিকোলাস মাদুরো সরকারের ওপর চাপ বাড়ানোর নতুন কৌশল হিসেবে দেখা হচ্ছে। ভেনেজুয়েলার অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি তেল খাতকে লক্ষ্য করেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

লুলা স্মরণ করিয়ে দেন, ফকল্যান্ডস যুদ্ধের চার দশকেরও বেশি সময় পর দক্ষিণ আমেরিকা আবারও অন্য মহাদেশীয় কোনো শক্তির সামরিক উপস্থিতির আশঙ্কায় ভুগছে। তিনি বলেন, ‘দক্ষিণ আমেরিকা আবার এমন এক ভূতের ছায়ায় পড়ছে, যেখানে এই অঞ্চলের বাইরে থেকে আসা সামরিক শক্তি আমাদের শান্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।’

চলতি সপ্তাহের শুরুতেই লাতিন আমেরিকার দুই বৃহত্তম অর্থনীতির শীর্ষ নেতা ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দ্য সিলভা এবং মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউদিয়া শেইনবাউম ভেনেজুয়েলা পরিস্থিতিতে সংযম দেখানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন। তবে গত শনিবারের বক্তব্যে লুলা আরও কঠোর দেখিয়েছেন।

‘মারকোসুর’ সম্মেলন শেষে দেওয়া এক যৌথ ঘোষণায় লাতিন আমেরিকার নেতারা ভেনেজুয়েলায় গণতান্ত্রিক নীতি ও মানবাধিকার রক্ষায় শান্তিপূর্ণ পথেই অগ্রসর হওয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। এই ঘোষণায় আর্জেন্টিনা, প্যারাগুয়ে ও পানামার প্রেসিডেন্টদের পাশাপাশি বলিভিয়া, ইকুয়েডর ও পেরুর শীর্ষ কর্মকর্তারাও সমর্থন জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

আন্দোলনের মুখে রাবিতে আওয়ামীপন্থী ছয় ডিনের পদত্যাগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ট্রেনের ভাড়া বাড়ছে ভারতেও

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
২৬ ডিসেম্বর থেকে ট্রেনের ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ছবি: সংগৃহীত
২৬ ডিসেম্বর থেকে ট্রেনের ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ছবি: সংগৃহীত

ভারতেও ট্রেনের ভাড়া বাড়ছে। পকেটে টান পড়তে যাচ্ছে সাধারণ যাত্রীদের। ২৬ ডিসেম্বর থেকে ট্রেনের ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। তবে স্বস্তির খবর হলো, লোকাল ট্রেনের ভাড়া অপরিবর্তিত থাকছে। মূলত দূরপাল্লার যাত্রীদের জন্যই এই বাড়তি ভাড়া কার্যকর হবে।

ভারতের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের ঘোষণা অনুযায়ী, ভ্রমণের দূরত্ব ও কোচের ধরনভেদে নতুন ভাড়ার হার নির্ধারিত হবে। ২১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত সাধারণ শ্রেণিতে ভাড়ায় কোনো পরিবর্তন নেই। তবে ২১৫ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বের ক্ষেত্রে প্রতি কিলোমিটারে এক পয়সা করে ভাড়া বাড়বে।

মেল বা এক্সপ্রেস ট্রেনের (নন-এসি) যাত্রীদের জন্য প্রতি কিলোমিটারে ভাড়া বাড়বে দুই পয়সা। এসি কোচ বা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কোচের ক্ষেত্রেও কিলোমিটার প্রতি দুই পয়সা ভাড়া বাড়ানো হয়েছে।

তবে যদি কোনো যাত্রী নন-এসি কোচে ৫০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেন, নতুন নিয়ম অনুযায়ী তাঁকে আগের চেয়ে ১০ রুপি বেশি ভাড়া দিতে হবে।

কেন এই ভাড়া বৃদ্ধি

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত এক দশকে রেলপথ সম্প্রসারণের ফলে জনবল এবং অন্যান্য ব্যয় বহুগুণ বেড়েছে। রেলওয়ের বর্তমান জনবল ব্যয় দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৫ হাজার কোটি রুপিতে এবং পেনশনের পেছনে খরচ হচ্ছে ৬০ হাজার কোটি রুপি। সব মিলিয়ে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মোট পরিচালনা ব্যয় বেড়ে হয়েছে ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি রুপি।

যাত্রীদের ভাড়া ও পণ্য পরিবহনের মাধ্যমে খরচ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে রেলওয়ে। এর আগে গত জুলাই মাসেও ভাড়া বাড়ানো হয়েছিল (নন-এসিতে এক পয়সা ও এসিতে দুই পয়সা)। তারও আগে ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি বড় ধরনের ভাড়া বৃদ্ধি কার্যকর করা হয়েছিল, যেখানে এসি কোচে ভাড়া বেড়েছিল কিলোমিটার প্রতি চার পয়সা পর্যন্ত।

রেলওয়ে কর্মকর্তাদের মতে, উন্নত সেবা এবং ক্রমবর্ধমান ব্যয় মেটাতে এই সামান্য ভাড়া বৃদ্ধি অপরিহার্য হয়ে পড়েছিল। কর্তৃপক্ষ আশা করছে, এই ভাড়া বৃদ্ধির ফলে রেলওয়ের বার্ষিক আয় প্রায় ৬০০ কোটি রুপি বাড়বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

আন্দোলনের মুখে রাবিতে আওয়ামীপন্থী ছয় ডিনের পদত্যাগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত