পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে আমন্ত্রণের প্রসঙ্গ

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ০৩ জানুয়ারি ২০২৫, ২০: ০৪
Thumbnail image
ছবি: আনন্দবাজার

আগামী ১৭ জানুয়ারি পালিত হবে পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও সিপিএম নেতা জ্যোতি বসুর প্রয়াণ দিবস। দলের পক্ষ থেকে এদিন কলকাতায় তাঁর নামে একটি গবেষণাকেন্দ্র উদ্বোধন করা হবে। এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন দলটির জাতীয় পলিটব্যুরোর সমন্বয়ক প্রকাশ করাত।

শুক্রবার কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, সিপিএমের গুরুত্বপূর্ণ ওই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে দুই বাংলার জনপ্রিয় রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে। তিনি ওই অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রসংগীতও গাইবেন। তবে এই আমন্ত্রণ ঘিরে পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক বিতর্ক দানা বেঁধেছে।

ভারতীয় এনডিটিভি জানিয়েছে, রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য সিপিএমের কঠোর সমালোচনা করেছেন বিজেপির সাবেক সহসভাপতি এবং পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিবিদ দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশের নাগরিকেরা ভারতের বিরোধিতা করছে, গালমন্দ করছে। ওখান থেকেই শিল্পীদের আনতে হচ্ছে কেন? এখানে কি শিল্পী নেই? জানি না কমিউনিস্টদের বুদ্ধি কবে সোজা হবে!’

রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে কলকাতায় আমন্ত্রণের যৌক্তিকতা বোঝাতে আনন্দবাজার লিখেছে—রেজওয়ানার জন্ম বাংলাদেশের রংপুরে। তিনি বাংলাদেশেরই নাগরিক। যদিও পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে তাঁর দীর্ঘ যোগ। বিশ্বভারতীর ছাত্রী ছিলেন তিনি। কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘স্নেহধন্যা’ বলে পরিচিত ছিলেন। এমনকি গত বছর এপ্রিলে তিনি ভারতের পদ্মশ্রী পুরস্কারেও ভূষিত হয়েছেন।

তবে এসব কারণ ছাড়াও সিপিএমের পক্ষ থেকে রেজওয়ানাকে আমন্ত্রণের পক্ষে অন্য যুক্তি দেওয়া হয়েছে। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের বলেছেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। দুই বাংলায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনাও বিদ্যমান। কিন্তু সাম্প্রতিক ঘটনাবলি নিয়ে ধর্মীয় মেরুকরণের চেষ্টা হচ্ছে। সেই পরিস্থিতিতে আমরা মনে করি ঐক্য বজায় থাক।’

ভারতীয় পত্রিকাগুলো আরও জানিয়েছে, রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে আমন্ত্রণ করা নিয়ে বিতর্ক এটাই প্রথম নয়। গত মাসেই উত্তর চব্বিশ পরগনার মধ্যমগ্রাম পৌরসভার একটি বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বন্যাকে অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কিন্তু পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্থানীয় একটি নাগরিক গোষ্ঠীর নেতৃত্বে এই আমন্ত্রণের বিষয়ে আপত্তি তোলা হয়। ‘মধ্যমগ্রাম নাগরিকবৃন্দ’ নামে নাগরিক গোষ্ঠীটি একটি খোলা বার্তায় লিখেছিল, ‘আমরা পরিবেশ মেলার এই অনুষ্ঠানে রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার অংশগ্রহণের বিরুদ্ধে। দেশের স্বার্থ সবার আগে। আমরা আশা করি, পৌরসভা বিষয়টি ভেবে দেখবে।’

চাপে পড়ে শেষ পর্যন্ত রেজওয়ানার নাম বাদ দেয় সেই পৌরসভা।

তবে ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিএম) মনে করছে, এই বিতর্ক সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং দেশপ্রেমের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার প্রশ্নকে সামনে নিয়ে এসেছে। সমালোচকেরা এটিকে জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী মনে করলেও সিপিএম-এর উদ্যোগকে দুই দেশের সাংস্কৃতিক সম্পর্ককে আরও মজবুত করার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত