ধর্মনিরপেক্ষ থাকতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বাংলা: অমর্ত্য সেন

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১৭ এপ্রিল ২০২১, ১৪: ১১
Thumbnail image

ঢাকা: ভারতে চলমান নির্বাচন নিয়ে তোলপাড়ের শেষ নেই। মোট আট ধাপের এই নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যেও বর্তমান ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) জয় পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এ নিয়ে নানা মহলে নানা কথা শুরু হয়েছে এরই মধ্যে। আগামীকাল শনিবার পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চম ধাপের ভোটগ্রহণ হবে। তবে নোবেলবিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন বলছেন, ভারতের নির্বাচনে যা হচ্ছে, তা শুধু একটি অঞ্চলের অতীত পরিস্থিতির সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। এর অনেকটাই নির্ভর করে সাংগঠনিক সুবিধাদির ওপর। আজ শুক্রবার ভারতের সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসে তাঁর একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়েছে। আজকের পত্রিকার পাঠকদের জন্য সুনেত্রা চৌধুরীর নেওয়া এ সাক্ষাৎকারের বাংলা অনুবাদ প্রকাশিত হলো।

পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচন কতটা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন?
অমর্ত্য সেন: আমি এখন যেখানে (হার্ভার্ড) থাকি, তার থেকে কলকাতার সময়ের বিস্তর ফারাক। তাই যতটা সম্ভব, এই নির্বাচনগুলোর দিকে নজর রাখছি।

এ নির্বাচনে বাংলার আত্মা নিয়ে লড়াই হচ্ছে। প্রতিটি দল নিজেদের বাংলার প্রকৃত প্রতিনিধি বলে দাবি করছে। এই নির্বাচনী লড়াইকে আপনি কীভাবে দেখছেন?
অমর্ত্য সেন: হ্যাঁ, এক ভীষণ লড়াই চলছে। কেন্দ্র সরকার যখন কোনো একটি রাজ্যের নির্বাচনের ওপর এত অস্বাভাবিক মাত্রার গুরুত্বারোপ করে, তখন এ নিয়ে ব্যাপক মাত্রার আগ্রহ তৈরি হওয়াটাই স্বাভাবিক। এর জন্য বাড়তি উপলক্ষের আর প্রয়োজন পড়ে না। অন্যদিকে, এও অস্বাভাবিক নয় যে, স্থানীয় বাঙালিরা এই নির্বাচনকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করবে। এই দুটি বিষয় একসঙ্গে একে যুদ্ধের রূপ দিয়েছে, যা বিশ্বের ইতিহাসেই বিরল।

বাংলার নির্বাচনে সহিংসতা ঘটে কেন? নির্বাচন কমিশনও (ইসি) আট ধাপেই সহিংসতা ঘটতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছে।
অমর্ত্য সেন: বাংলা বেশি সহিংস—এমন কিছু এর পেছনে নেই বলেই মনে হয়। আমার মনে হয়, ইসি বিভাজন টানতে চাইছে। নির্বাচনের ঘটনাগুলোর দিকে যদি তাকান, তবে দেখবেন প্রধানমন্ত্রী নিজের দায়িত্ব খুব অল্পই পালন করছেন এবং নির্বাচনের কাজে আবার ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন। এর মাধ্যমে কেন্দ্র সরকার সুস্পষ্টভাবে সব ধরনের কাজে অংশ নেওয়ার সক্ষমতা অর্জন করছে, যা এক বা দুদিনে নির্বাচন হলে সম্ভব হতো না। এখন ইসি এই কারণেই এভাবে (নির্বাচন) করছে কিনা, তা আমি জানি না। আইন–শৃঙ্খলা পরিস্থিতি যা, তাতে বাংলার বহু মানুষ নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করছেন। এমনকি (চতুর্থ ধাপে ভোট গ্রহণের সময়) গোলাগুলিতেও চার বাঙালি নিহত হলো, যাদের সবাই মুসলমান। আমি সে গল্পের ভেতরে যাচ্ছি না। কিন্তু একে শুধু বাংলার শান্তির ইস্যু হিসেবে বিবেচনা করা যাবে না বা এর অনুপস্থিতি হিসেবেও নয়, যা আট ধাপের নির্বাচনে বাংলায় ঝুঁকি তৈরি করেছে। বরং প্রায় একই বিস্তৃতির অঞ্চলে এক বা দুদিনের মধ্যে এটি (গোলাগুলি) ঘটেছে। এর সঙ্গে কিছু রাজনৈতিক কারণ রয়েছে, যা আমাদের আলোচনা করা দরকার।

আমি জানি না, বাংলায় নির্বাচনের সময় এর চেয়ে বেশি রক্ত ঝরার ঐতিহ্য রয়েছে কিনা। যদি ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সময়ের কথা ভাবেন, তবে বাংলায় বহু বছর ধরে বহু লড়াই হয়েছে। পলাশির যুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলায় ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের পত্তন হয়েছিল। সেখানে বাংলার শেষ নবাব সিরাজ–উদ–দৌলার সঙ্গে ব্রিটিশের যুদ্ধ হয়েছিল। এর পর ভারতের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে ব্রিটিশদের তাড়ানোর চেষ্টা থেকে বহু লড়াই হয়েছে, যার মূল ছিল বাংলায়। ফলে ঐতিহাসিক একটা প্রবণতা অবশ্যই আছে।

বাংলা ভাগ হয়েছিল হিন্দু ও মুসলিম বিবেচনায়, যা ঐতিহ্যগতভাবে খুব বড় বিভাজন ছিল না। বিপরীত দিক থেকে, যদি দশম শতকে বাংলা সাহিত্য সংস্কৃতির গোড়ার দিকে তাকানো যায়, তবে হিন্দু–মুসলিমের ঐক্যের দেখাই মিলবে। মূল দুই মহাকাব্য রামায়ন ও মহাভারত অনুবাদের মূল উদ্যোগটি এসেছিল মুসলমান রাজার দিক থেকে, যিনি মহাকাব্যের খুব ভক্ত ছিলেন। সময়ে সময়ে হিন্দু–মুসলিম ঐক্যের ঐতিহ্যের দেখাই মিলবে। ব্রিটিশরা হিন্দু–মুসলিমদের বিভাজিত করতে উদ্‌গ্রিব ছিল। একে মোটাদাগে ভাগ করে শাসন করার নীতি হিসেবে উল্লেখ করা হয়। নতুন নাগরিকত্ব আইনের দিকে তাকালে সেই নীতিরই নবরূপায়ণ চোখে পড়বে। এই আইন মুসলিমদের মধ্যে জনপ্রিয় নয়। কারণ, এতে হিন্দুদের যে অধিকার দেওয়া হয়েছে, তা তাদের দেওয়া হয়নি। এটি শুধু মুসলিমদেরই নয়, অনেক হিন্দুর মধ্যেও অসন্তোষের জন্ম দিয়েছে, যারা ধর্মনিরপেক্ষতার নীতির ওপর দৃঢ়ভাবে আস্থা রাখে।

শেষব্দি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর বাংলা ধর্মনিরপেক্ষতার নীতির প্রতি উল্লেখযোগ্যভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তাই এর যেকোনো ব্যাত্যয়ের বিরোধিতা আসে, যেখানে পুলিশ সংশ্লিষ্ট যেকোনো ঘটনায় যখন শুধু মুসলিমই গুলিবিদ্ধ হয়, বা নির্বাচনে বিজয়ী হতে চাওয়া কোনো বড় দলের নেতা যখন বলেন, ‘আমরা চাই না মুসলিমরা আমাদের ভোট দিক।’

কেন নয়? এটি সব ধরনের প্রশ্নকে সামনে নিয়ে আসে। তাই উত্তেজনার পেছনে অনেক কারণ আছে, যা নিয়ে আমাদের ভাবা উচিত। এই ভাবনা বাংলার সভ্যতার জন্য ক্ষতিকর নয়। বাংলায় ধর্মনিরপেক্ষতা অনেক বড় বিষয়। আমাদের সবচেয়ে জনপ্রিয় কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। কিন্তু তারপরই তো কাজী নজরুল ইসলাম। তিনি (নজরুল) যে ম্যাগাজিনে লিখতেন, তার মাস্টহেডে (পত্রিকার প্রথম পাতায় নাম যেখানে লেখা থাকে) ১৫ শতকের যে কবিতার পঙ্‌ক্তি লেখা থাকত, তা হচ্ছে—সবার ওপরে মানুষ সত্য, তাহার ওপরে নাই। ধর্মনিরপেক্ষতার ইস্যুটি বরাবরই এখানে গুরুত্বপূর্ণ, ঠিক যেমন এই নির্বাচনগুলোর লড়াইয়ের ময়দানে হাজির রয়েছে।

কোনো সন্দেহ নেই বিজেপি মেরুকরণকে ব্যবহার করছে। কিন্তু নির্বাচন কৌশলি প্রশান্ত কিশোর বলছেন, তৃণমূল কংগ্রেস ও কংগ্রেস মুসলিমদের সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করেছে। আর এখন হিন্দুরা এমন এক দলকে ভোট দিতে চাইছে, যারা তাদের স্বার্থের দিকে তাকাবে। এর সঙ্গে কি আপনি একমত?
অমর্ত্য সেন: একে অনুমাননির্ভর ইতিহাস বলা যায়। বাংলা দীর্ঘদিন ধরেই বিভাজিত ময়দান। ব্রিটিশরা ২০ শতকের শুরুর দিকে যখন একে ভাগ করল এবং চাইল যে, মুসলিমরা আলাদা হোক, তখন তাদের প্রত্যাশা ছিল—বাংলার মুসলিমরা একে সমর্থন করবে, যেহেতু তারা এমন একটি অংশ পাবে, যেখানে তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ হবে। কিন্তু বাঙালিরা কী করল? বাঙালিরা, হিন্দু, মুসলিম—দুই–ই এর বিরোধিতা করল। বাংলার ঐক্য সম্পর্কিত একটি কবিতা—আমার সোনার বাংলা, পরে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত হলো। বিভিন্ন গবেষণায় উঠে আসা তথ্যকে সত্য মেনে যদি ধরা হয়, বাংলায় দরিদ্র হিন্দুর তুলনায় দরিদ্র মুসলিমের সংখ্যা বেশি ছিল, তবে ন্যায্যতার প্রশ্নে বিষয়টি নিয়ে কাজ করা জরুরি। ন্যায্যতার বিবেচনায় পিরামিডের প্রান্তে থাকা মানুষদের জন্য কিছু করাটা জরুরি। নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু বরাবরই এই প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন। একটি অঞ্চলে কারা দরিদ্র এবং তাদের জন্য কী করা প্রয়োজন, সেদিকে নজর রাখাটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন মতুয়া, নমশূদ্র, নিম্ন শ্রেণির হিন্দু বা বাংলায় হিন্দু ধর্মাবলম্বী আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মতো করেই মুসলিমদের প্রতিও বিশেষ দৃষ্টি দেওয়ার প্রয়োজন পড়েছে। এ ক্ষেত্রে একই কারণ কাজ করেছে।

তাই আমার মনে হয়, এই মুসলিম বিষয়ক আলোচনা অনেক হয়েছে। এবার হিন্দুদের উচিত এটা উপলব্ধি করা যে, এটি হিন্দুত্ববাদী ধারণায় উজ্জীবিত একটি দলের প্রচারকৌশল ছাড়া আর কিছুই নয়। এখন যে–ই এ কথা বলুক, তিনি ভুল করছেন। কারণ, আপনাকে মানুষের দিকে তাকাতে হবে সুবিধাপ্রাপ্ত ও সুবিধাহীন শ্রেণি হিসেবে। ভারত সরকার নিজেই মুসলিমদের সুবিধাবঞ্চিত করেছে, যাতে ভারতের বাইরে আপনি নির্যাতিত হলেও একজন হিন্দুর মতো করে ভারতে আপনি আশ্রয় চাইতে পারেন না। এই পরিস্থিতিতে আপনাকে পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকাতে হবে।

আপনি নিম্নবর্গ ও নিম্ন শ্রেণির হিন্দুদের কথা বললেন। তাদের বিজেপি নিজেদের ভোটার বলে মনে করে। ২০১৯ সালে উত্তর প্রদেশে নির্বাচনে তারা তাদেরই ভোট দিয়েছে। এর ব্যাখ্যা কী?
অমর্ত্য সেন: এটা খুবই মজার প্রশ্ন। একটি অঞ্চলের ন্যায্যতার ইতিহাস একটি নির্বাচনে কী ঘটবে তা নির্ধারণ করে না। এটি সাংগঠনিক সুবিধার ওপর অনেকখানি নির্ভর করে। বাংলা বা উত্তর প্রদেশের বদলে কেরালার দিকে তাকালে মজার বিষয় পাওয়া যাবে। ভারতের যেকোনো জায়গার তুলনায় কেরালায় অস্পৃষ্যতার সংকট, জাত বিচার অনেক বেশি। তারপরও শক্ত সংগঠনের কারণে (এ ক্ষেত্রে বামদের) এই পরিস্থিতি সময়ের সঙ্গে রাতারাতি বদলে গেল। কমিউনিস্ট পার্টি বলেই এটি সম্ভব হয়েছিল, যারা সব জাতির কাছ থেকে ভোট পাওয়ার লক্ষ্যে এই জাতি সমস্যাকে এড়িয়ে গিয়েছিল। রাজনৈতিক সংগঠনগুলো যে ভূমিকা নিতে পারে, তাকে আমাদের অবজ্ঞা করা উচিত নয়।

হিন্দুত্ববাদ খুবই গতিশীল একটি রাজনৈতিক আন্দোলন। আমি তাদের সঙ্গে একমত না হতেই পারি। কিন্তু তাদের সাংগঠনিক অনেক কিছুকে আমার সম্মান জানাতেই হবে। সব নির্বাচনে না হলেও তারা সফল। কিছু আদিবাসী অধ্যূষিত এলাকায়, বিশেষত ত্রিপুরার মতো এলাকায় বিজেপি আধিপত্য বিরাজ করতে পারত। আমাদের এই সাংগঠনিক দিকটির দিকে তাকাতে হবে। এই কারণে আপনার প্রশ্ন করা উচিত যে, বাংলা যদি এতটাই ধর্মনিরপেক্ষ হয়, তবে একটি হিন্দু দল জিতুক বা না জিতুক কী করে এতটা সম্ভাবনা তৈরি করল? সংগঠনের কারণেই। আমার মনে হয় না এমন আর কোনো নির্বাচন আমরা দেখেছি, যেখানে কেন্দ্র থেকে এতটা মনোযোগ দেওয়া হয়েছে। শুধু প্রধানমন্ত্রীই নন, কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, সবচেয়ে বড় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ঘুরে ঘুরে আসছেন এখানে। শুধু তাই নয়, বিপুল অর্থ ব্যয় করা হচ্ছে। বিজেপির হাতে খরচা করার মতো বিস্তর অর্থ আছে, আর তারা এর ভালো ব্যবহারও করছে। ফলে আমার মনে হয় এর দিকে এভাবেই তাকানো উচিত। আমাদের কিছুই করার নেই—এমন আশাহত কথা বলবার কিছু নেই। আপনি যদি ধর্মনিরপেক্ষতা ও সম–ন্যায্যতার নীতিতে অটল থাকেন, তবে আপনার এর জন্য কাজ করা উচিত। এমনভাবে কাজ করা উচিত, যাতে এর দ্বারা হিন্দু, মুসলিম, দলিত বা যারা দলিত নয়, সবাই উদ্বেলিত হয়।

রাজ্য সরকার কোনো গুরুতর ভূল করেছে বলে মনে করেন কি?
অমর্ত্য সেন: হতে পারে অনেক আছে। আমি আলাদা করে গবেষণা করিনি। অনেক অর্জনও আছে। দরিদ্র হলেও গুজরাটের কৃষকদের চেয়ে বাংলার কৃষকদের স্বাস্থ্যগত অবস্থা এখনো অনেক ভালো। সরবরাহ সম্পর্কিত কিছু বিষয় থাকলেও বণ্টনের বিষয়টি বেশ ভালো। এমন অনেক কিছু আছে। অনেক ভুলও হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে ভারতে যেভাবে কৃষকদের সঙ্গে আচরণ করা হয়, তার কথা বলা যায়। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, কেন্দ্র সরকারের বিবেচনা থেকে কৃষকেরা একেবারে হারিয়ে গেছে। কেন্দ্রে সরকার গঠনের জন্য এখনো তাদের দরকার। ফলে এটি এতটা সরল নয়। কারণ ভুল শনাক্ত করা খুব সহজ। কিন্তু যখন আমরা রাজনৈতিক বিশ্লেষণ করতে বসি, তখন আমাদের সত্যের অনুসন্ধান করার সঙ্গে সঙ্গে মানবিক বোধও থাকতে হবে। যাকে এই মুহূর্তে একটি উত্তর বলে মনে হচ্ছে, তা উত্তর নাও হতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত