আসামে দ্বিতীয় বিয়ে করতে লাগবে সরকারের অনুমতি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ২৭ অক্টোবর ২০২৩, ১৮: ৪৯

রাজ্য সরকারের অনুমতি ছাড়া ভারতের আসামে কোনো সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারী এখন থেকে দ্বিতীয় বিয়ে করতে পারবেন না। গত ২০ অক্টোবর এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশ জারি করেছেন আসাম সরকারের মুখ্যসচিব নীরাজ ভার্মা। আর বিষয়টি সামনে এসেছে গতকাল বৃহস্পতিবার। খবর এনডিটিভির। 

সরকারি ওই নির্দেশনায় বলা হয়, কোনো কর্মী সরকার প্রণীত এ বিধি অমান্য করে পুনরায় বিয়ে করলে মোটা অঙ্কের জরিমানা দিতে হবে। পাশাপাশি অভিযুক্ত ব্যক্তিকে বিভাগীয় তদন্তের মুখোমুখিও হতে হবে। প্রয়োজনে ওই কর্মীকে অবসরে পাঠিয়ে দেওয়া হতে পারে। 

আরও বলা হয়েছে, স্ত্রী জীবিত আছেন এমন কোনো সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারী সরকারের অনুমতি ছাড়া দ্বিতীয় বিয়ে করতে পারবেন না। এমনকি, কারও ধর্মীয় বা ব্যক্তিগত আইনে দ্বিতীয় বিয়ে বৈধ হলেও রাজ্য সরকারের অনুমতি ছাড়া ওই সম্প্রদায়ের কেউ বিয়ে করতে পারবে না। 

নীরাজ ভার্মা ওই নির্দেশে জানিয়েছেন, আসাম সিভিল সার্ভিস কনডাক্ট রুলস ১৯৬৫ অনুসারে যার একজন স্ত্রী রয়েছে, তিনি সরকারের কাছ থেকে অনুমতি ছাড়া দ্বিতীয় বিয়ে করতে পারেন না। এই আইনকেই মূলত কার্যকর করা হচ্ছে। 

এদিকে নারীদের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, সরকারি কোনো নারী কর্মকর্তা বিনা অনুমতিতে স্বামী জীবিত থাকাবস্থায় অন্য কাউকে বিয়ে করতে পারবেন না। 

যদিও আসামের একাধিক আইনজীবীর দাবি, এটা নতুন কিছু নয়। এই নিয়ম আসামে আগে থেকেই ছিল। কারণ সরকারি কর্মীদের চাকরিতে যোগদান করার আগে এ সংক্রান্ত হলফনামা জমা দিতে হয়। 

তবে ধর্মেন্দ্র দেব নামে আসামের এক জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জানিয়েছেন, প্রথম স্ত্রীকে তালাক না দিয়ে হিন্দুরা দ্বিতীয় বিয়ে করতে পারেন না। আর অন্য সম্প্রদায়ের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা ‘ব্যক্তিগত আইনের’ বিষয়। এ ধরনের বিয়ে আটকাতে গেলে রাজ্য সরকারকে ব্যক্তিগত আইন সংশোধন করতে হবে। 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হিমন্ত বিশ্ব শর্মা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে বহুবিবাহ ও বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে ব্যাপক পদক্ষেপ নিয়েছেন। তবে আসাম বিধানসভায় কংগ্রেসের বিরোধী দলনেতা দেবব্রত সাইকিয়া রাজ্য সরকারের এই পদক্ষেপের সমালোচনা করেছেন। 

হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, ‘সরকারি কর্মকর্তাদের দুই স্ত্রী থাকলে সম্পত্তি ও পেনশন নিয়ে অসংখ্য মামলা-মোকাদ্দমা হচ্ছে। ফলে তাঁদের অনেক বিধবা স্ত্রীরা পেনশন পাচ্ছেন না। এসব বিরোধ নিষ্পত্তি করা খুব কঠিন। হিন্দু বা মুসলিম নির্বিশেষে সবার জন্য এই নিয়ম কার্যকর করা হবে। আর এই নিয়ম আগেই ছিল, আমরা এখন কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। 

এদিকে এটি নরেন্দ্র মোদির বিজেপি সরকারের হিন্দুত্ববাদী অ্যাজেন্ডা বলে গুঞ্জন উঠেছে। এই দাবিকে নাকচ করে দিয়ে হিমন্ত শর্মা বলেছেন, এই নিয়মটি বিজেপি-নেতৃত্বাধীন সরকার করেনি, এটি আগে কংগ্রেস সরকার প্রথম প্রণয়ন করেছিল।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত