Ajker Patrika

সস্তা চীনা তৈরি পোশাকে সয়লাব, মেক্সিকোর স্থানীয় ব্যবসায় ধস

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১৯: ০৬
মেক্সিকোর ঐতিহ্যবাহী কুইনসেনিয়েরা পোশাক মেয়েদের ১৫তম জন্মদিন উদ্‌যাপনের জন্য তৈরি করা হয়। ছবি: সংগৃহীত
মেক্সিকোর ঐতিহ্যবাহী কুইনসেনিয়েরা পোশাক মেয়েদের ১৫তম জন্মদিন উদ্‌যাপনের জন্য তৈরি করা হয়। ছবি: সংগৃহীত

মেক্সিকোর ঐতিহ্যবাহী কুইনসেনিয়েরা পোশাক এখন চীন থেকে আমদানি করা পোশাকের দখলে চলে যাচ্ছে। সস্তায় আমদানি ও স্থানীয় বাজারে কম দামের কারণে মেক্সিকোর প্রায় ৫০০ কোটি ডলারের ঐতিহ্যবাহী পোশাকশিল্প ধসে পড়েছে। চাকরি হারাচ্ছেন হাজার হাজার শ্রমিক।

কুইনসেনিয়েরা বিশেষ একধরনের পোশাক। এটি সাধারণত মেয়েদের ১৫তম জন্মদিন উদ্‌যাপনের জন্য তৈরি করা হয়।

তবে চীনা পোশাকের এই দখল ঠেকাতে এবং দেশীয় শিল্প বাঁচাতে মেক্সিকো সরকার নতুন শুল্ক আরোপ করেছে। পাশাপাশি অবৈধ পণ্যের বিরুদ্ধে অভিযানে নেমেছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পদক্ষেপ যথেষ্ট নয়; কারণ, দীর্ঘদিন ধরে মেক্সিকান পোশাকের বাজারে চীনের আধিপত্য বাড়ছে।

প্রায় ৪০ বছর ধরে পোশাক ব্যবসা করছেন রামোন রদ্রিগেজ কানো নামের একজন মেক্সিকান। তিনি বলেন, ‘আগে দিনে ২৫টি পোশাক বিক্রি করতাম, এখন পুরো মাসে ২৫টি বিক্রি করতে হিমশিম খাই।’ তিনি জানান, গত সাত বছরে তিনি তাঁর সরবরাহকারী এবং কর্মীর সংখ্যা ৭০ শতাংশ কমাতে বাধ্য হয়েছেন।

মেক্সিকোতে দেশীয় কুইনসেনিয়েরা গাউন যেখানে ১৮ হাজার পেসো (৯০০ ডলার) পর্যন্ত বিক্রি হয়, চীনা কাপড় দিয়ে তৈরি এই পোশাকের দাম সেখানে মাত্র ৩ হাজার পেসো। মেক্সিকোয় যেখানে মানুষের মাসিক আয় গড়ে ৮ হাজার ২০০ পেসো, সেখানে এই আয়োজন অনেক ব্যয়বহুল। এর ওপর রয়েছে শত শত অতিথিকে খাওয়ানো ও আপ্যায়ন এবং অনুষ্ঠানের জন্য স্থান ভাড়া করার খরচ।

আলবার্তো কইনড্রাউ নামের এক ব্যক্তি এই ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকেন। তিনি জানান, একটি কুইনসেনিয়েরা অনুষ্ঠান আয়োজনের মোট খরচ প্রায় ১ লাখ পেসো। এসব ব্যয় বিবেচনা করে অনেকে অর্থ সাশ্রয়ের জন্য সস্তা চীনা পোশাক বেছে নিচ্ছেন।

মেক্সিকো সিটির পুরোনো কলোনিয়াল এলাকা রেপুবলিকা দে চিলের সড়কে দীর্ঘদিন ধরে দেশীয় পোশাক ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করে আসছেন। এখানকার বেশির ভাগ পোশাক মেক্সিকান কাপড়ে তৈরি। কিন্তু মাত্র ১৫ মিনিট দূরের লাগুনিলা মার্কেটে দেখা গেছে, বেশির ভাগ পোশাক চীনা কাপড়ে তৈরি। একাধিক বিক্রেতা জানান, তাঁরা সরাসরি চীন থেকে সম্পূর্ণ পোশাক নিয়ে আসেন। শুধু সামান্য সাজিয়ে ম্যানিকুইনে তুলে দেন।

এসব পোশাকের সঙ্গে মুকুট, গয়না, জুতা দেওয়া হয়। দাম কম হলেও স্থানীয় দোকানিরা বলেন, ‘এই দামে আমরা কোনোভাবেই মান বজায় রেখে প্রতিযোগিতা করতে পারি না।’

মেক্সিকোতেও Shein, Temu-এর মতো চীনা ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলো দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। পরিসংখ্যান বলছে, ২০১০ সালে যেখানে চীন থেকে টেক্সটাইল আমদানি ছিল ১১ শতাংশ, ২০২৩ সালে তা বেড়ে হয়েছে ৩৫ শতাংশ। আর মেক্সিকোর টেক্সটাইল রপ্তানি একই সময়ে ১ শতাংশের নিচে থেকে গেছে।

নতুন প্রেসিডেন্ট ক্লাউদিয়া শেইনবাম দেশীয় শিল্প রক্ষায় উদ্যোগ নিয়েছেন। এখন থেকে যেসব দেশে মেক্সিকোর মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নেই, তাদের থেকে আমদানি পোশাকের ওপর ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক বসানো হচ্ছে। এ ছাড়া ডাক মারফত আসা পণ্যের ওপর ১৯ শতাংশ শুল্ক ধার্য করা হয়েছে।

এ ছাড়া সরকার দেশব্যাপী বাজারগুলোতে অভিযান চালাচ্ছে। চীনা পোশাক, খেলনা, ইলেকট্রনিক পণ্যের কাগজপত্র যাচাই ও পণ্য জব্দের কাজ চলছে।

মেক্সিকোর পোশাকশিল্প, চীনের তুলনায় ছোট হলেও নাইকি, লেভি স্ট্রস অ্যান্ড কোং, হেনেজ অ্যান্ড মরিতজ এবি এবং ভিএফ করপোরেশনের মতো বহুজাতিক কোম্পানির জন্য তারা পণ্য তৈরি করে। শেইনবামের প্রশাসন জানিয়েছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশটির বস্ত্রশিল্পে প্রায় ৭৯ হাজার মানুষ চাকরি হারিয়েছে এবং শুল্ক আরোপ না করা হলে আরও ৭৫ হাজার মানুষের চাকরি ঝুঁকিতে রয়েছে।

মেক্সিকোর বস্ত্রশিল্প চেম্বারের প্রধান রাফায়েল জাগা বলেন, ‘চীনের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক সম্পূর্ণ ভারসাম্যহীন।’ তিনি আরও বলেন, চীন থেকে আসা সস্তা পণ্য, সেই সঙ্গে মেক্সিকোর বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কের হুমকি—এগুলো স্পষ্ট করে তুলেছে যে দেশটির আরও স্বনির্ভর হওয়া দরকার।

কানাইনটেক্সের (টেক্সটাইল চেম্বার) মতে, মেক্সিকোতে ৯৫ হাজার মানুষ ইতিমধ্যে তাদের কর্মসংস্থান হারিয়েছে। বাজারের ৬০ শতাংশই এখন অবৈধ আমদানি করা পণ্যে পূর্ণ। এ ছাড়া গত দুই বছর থেকে মেক্সিকান কোম্পানিগুলোর বিক্রি ও উৎপাদন কমছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চীনের সঙ্গে মেক্সিকোর বাণিজ্য সম্পর্ক একেবারেই অসম। ইলেকট্রনিকস ছাড়াও বিভিন্ন যন্ত্রপাতি চীন থেকে সস্তায় আমদানি করা হচ্ছে। ২০২৩ সালে চীন মেক্সিকোয় ১১৪ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে, ১০ বছর আগে যা ছিল ৬১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার। এই সময় মেক্সিকোর রপ্তানি বেড়েছে মাত্র ৬ দশমিক ৫ বিলিয়ন থেকে ১০ বিলিয়ন ডলারে।

মার্কেট এক্সপার্ট ডেভিড মার্কোট বলেন, ‘বিদেশ থেকে এত বেশি পরিমাণ কাপড় আসছে, অনেক সময় ঠিকমতো পরীক্ষাও করা যায় না কোনটি আসল ও নকল। কনটেইনারে সহজে চাপিয়ে আনা যায়, শুল্কও চোখ এড়িয়ে যায়।’

লাগুনিলার এক পোশাক ব্যবসায়ী বলেন, ‘মানুষের হাতে এখন টাকা কম। আমরা তাদের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে এই পোশাক দিচ্ছি।’

কুইনসেনিয়েরা অনুষ্ঠানের জন্য পোশাক কিনতে আসা মারিয়া দেল কারমেন মুনিওস বলেন, ‘আমার নাতনির জন্য পোশাক কিনতে আসছি। অনলাইনের ওপর ভরসা নেই। আমি চাইলেও রেপুবলিকা দে চিলের রাস্তায় যে দামে বিক্রি হচ্ছে, সেটা কিনতে পারব না। কারণ, এটা আমার সাধ্যের বাইরে। দুই জায়গার পোশাক দেখতে একই রকম। মানের কিছু পার্থক্য থাকলেও এগুলো দিয়েই আমাদের চলে যায়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিবিএসের জরিপ: দেশে পেঁয়াজ, ভুট্টা, সরিষা ও সবজির উৎপাদন বেড়েছে

  • ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ভুট্টার উৎপাদন বেড়েছে ৬ লাখ ২৫ হাজার টন।
  • পেঁয়াজ ৩ লাখ ৪ হাজার টন ও টমেটোর উৎপাদন বেড়েছে ৪৭ হাজার টন।
  • সরিষার উৎপাদন বেড়েছে ২৬ হাজার টন।
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০০: ৪২
তাজা সবজির পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতা। গতকাল রাজধানীর পুরান ঢাকার কাপ্তান বাজারে। ছবি: আজকের পত্রিকা
তাজা সবজির পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতা। গতকাল রাজধানীর পুরান ঢাকার কাপ্তান বাজারে। ছবি: আজকের পত্রিকা

২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশে পেঁয়াজ, ভুট্টা, সরিষা, সবজি এবং বেশ কয়েকটি ফলের উৎপাদন বেড়েছে। তবে তিল ও ডালজাতীয় ফসলের উৎপাদন কমেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) কৃষি উইংয়ের পরিসংখ্যান প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে।

বিবিএসের কৃষি উইংয়ের পরিসংখ্যান কর্মকর্তা ওয়াহিদুল ইসলাম প্রতিবেদনটি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছেন, যা এরই মধ্যে বিবিএসের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।

বিবিএসের তথ্যমতে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে শীতকালীন ভুট্টার আবাদ ও ফলন উভয়ই বেড়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে যেখানে ভুট্টার উৎপাদন ছিল প্রায় ৪২ লাখ ৪৬ হাজার টন, সেখানে গত অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪৮ লাখ ৭৩ হাজার টনে।

কৃষি অর্থনীতিবিদেরা বলেন, উন্নত জাতের বীজ ব্যবহার, সেচ সুবিধা ও বাজারমূল্য ভালো থাকায় ভুট্টা ও সবজিতে উৎপাদন বেড়েছে। তবে ডাল ও কিছু তেলবীজে উৎপাদন কমার পেছনে আবহাওয়া, জমির ব্যবহার পরিবর্তন এবং কৃষকের আগ্রহ কমে যাওয়ার বিষয়গুলো ভূমিকা রেখেছে।

জানতে চাইলে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘খাদ্যশস্য ও সবজি উৎপাদন বাড়াতে সরকার বেশ কিছু প্রকল্প নিয়েছে। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ উৎপাদন আরও বাড়াতে হবে। আমরা চেষ্টা করছি।’

সরিষা-সয়াবিনে অগ্রগতি, ডালে উদ্বেগ

বিবিএসের প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে, তেলবীজের মধ্যে সরিষার উৎপাদন বেড়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সরিষার উৎপাদন ছিল প্রায় ৬৩ লাখ ৭৮ হাজার টন, যা ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বেড়ে প্রায় ৬৪ লাখ ৪ হাজার টনে পৌঁছেছে। একই সঙ্গে একরপ্রতি ফলনও বেড়েছে। সয়াবিন ও সূর্যমুখী চাষেও উৎপাদন বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রয়েছে। একই সময়ে বিগত অর্থবছরে পেঁয়াজের উৎপাদন বেড়েছে ১০ দশমিক ৪২ শতাংশ। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশে পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়েছে ৩২ লাখ ২১ হাজার ৪৩১ টন, যা আগের বছর উৎপাদিত হয় ২৯ লাখ ১৭ হাজার ৩৫৪ টন।

ডালজাতীয় ফসলে ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। ছোলা, মসুর ও মটরশুঁটির আবাদি জমি ও মোট উৎপাদন কমেছে; বিশেষ করে মসুর ডালের উৎপাদন উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মসুর ডালের উৎপাদন ছিল প্রায় ১ লাখ ৮৪ হাজার টন, যা পরের অর্থবছরে কমে প্রায় ১ লাখ ৬৮ হাজার টনে এসেছে।

মসুর ডাল কমলেও মুগ ডালের আবাদ ও উৎপাদনে বড় ধরনের প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এক বছরে মুগ ডালের আবাদ বেড়েছে ১৫৬ শতাংশ এবং উৎপাদন বেড়েছে ২০৯ শতাংশ। সামগ্রিকভাবে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশে ডালজাতীয় শস্যের আবাদ হয়েছে ১০ লাখ ৩৪ হাজার ৪২৭ একর জমিতে, যেখানে উৎপাদন দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৬ হাজার ৬২৯ টনে।

সবজিতে উল্লম্ফন

সবজি উৎপাদনে বড় ধরনের প্রবৃদ্ধি হয়েছে। শীতকালীন ও গ্রীষ্মকালীন উভয় মৌসুমে বেগুন, ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, লাউ, শিম ও শাকজাতীয় সবজির উৎপাদন বেড়েছে। বিবিএসের তথ্যমতে, শুধু টমেটোর উৎপাদনই ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বেড়ে প্রায় ৫ লাখ ৩৯ হাজার টনে পৌঁছেছে, যা আগের বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। এর আগের বছর ছিল ৫ লাখ ৯১ হাজার ৪৮৭ টন।

ফল, আখ ও তালজাতীয় ফসল

বিগত অর্থবছরে ফলের কলা, আম, কাঁঠাল, পেয়ারা ও তরমুজের উৎপাদন বেড়েছে। চিনিজাতীয় ফসলের মধ্যে আখের উৎপাদন সামান্য কমেছে। তবে খেজুর ও তালের রস এবং ফলের উৎপাদন তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল রয়েছে। এসব ফসলের ক্ষেত্রে ফলধারী গাছপ্রতি ফলন ধরে উৎপাদন হিসাব করা হয়েছে।

তুলা চাষ

চাহিদা বাড়লেও দেশে তুলা চাষের জমি উল্টো কমছে। এক বছরের ব্যবধানে তুলা আবাদি জমি কমেছে ৯ শতাংশের বেশি। পরিসংখ্যান মতে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশে তুলা ও তুলাজাতীয় ফসলের আবাদ হয়েছিল ৩৬ হাজার ৩৮৪ একর জমিতে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৩৩ হাজার ১৩ একরে। অর্থাৎ এক বছরে তুলা চাষের জমি কমেছে প্রায় ৩ হাজার ৩৭০ একর।

সার্বিক বিষয়ে কৃষি উদ্যোক্তারা বলছেন, খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ডাল ও তেলবীজ উৎপাদনে প্রণোদনা বাড়ানো জরুরি। একই সঙ্গে বাজার ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণ সুবিধা জোরদার করলে কৃষকেরা এসব ফসল চাষে আরও আগ্রহী হবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিপিআইয়ের সভাপতি মোশারফ হোসাইন চৌধুরী, মহাসচিব সাফির রহমান

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বিপিআইয়ের সভাপতি মোশারফ হোসাইন চৌধুরী, মহাসচিব সাফির রহমান

বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিআইএ) ২০২৫-২৭ মেয়াদের দ্বিবার্ষিক নির্বাচনে পোলট্রি পেশাজীবী পরিষদ নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে। নির্বাচনে ৫৩৫ ভোট পেয়ে সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন আস্থা ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসাইন চৌধুরী। আর মহাসচিব পদে ৫০৭ ভোট পেয়ে কোয়ালিটি ব্রিডার্স লিমিটেডের পরিচালক মো. সাফির রহমান নির্বাচিত হয়েছেন।

আজ সোমবার রাজধানীর মতিঝিল কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র কাম-কমিউনিটি সেন্টারে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে ভোট গ্রহণ। মোট ৫৭৪ জন ভোট দেন।

সহসভাপতি হিসেবে ডায়মন্ড এগ লিমিটেডের সিইও মো. আসাদুজ্জামান ও খান অ্যাগ্রো ফিড প্রোডাক্টের প্রোপ্রাইটর মো. সৈয়দুল হক খান নির্বাচিত হয়েছেন।

এদিকে কোষাধ্যক্ষ হিসেবে এনার্জি টেকনোলজির প্রোপ্রাইটর মোস্তফা জাহান, যুগ্ম মহাসচিব পদে মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন ও অঞ্জন মজুমদার, প্রচার সম্পাদক পদে শফিকুল ইসলাম এবং সমাজকল্যাণ সম্পাদক পদে গাজী নূর আহাম্মাদ নির্বাচিত হয়েছেন।

নির্বাহী সদস্য হিসেবে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন শাহ ফাহাদ হাবিব, মিজানুর রহমান মিন্টু, রাশিদ আহামাদ, মোহাম্মদ জহির উদ্দিন, খায়রুল বাসার সাগর, ফয়েজ রাজা চৌধুরী, মো. সালাউদ্দিন মুন্সী, মো. সোলেমান কবীর, মো, ইমরান হোসাইন ও নাবিল আহামেদ।

নবনির্বাচিত সভাপতি মোশারফ হোসাইন চৌধুরী বলেন, ‘খামারিদের যে আকাঙ্ক্ষা রয়েছে, সেটাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আমরা কাজ করে যেতে চাই। পোলট্রি খাতকে আরও কীভাবে সমৃদ্ধ করতে পারি, সে লক্ষ্যেও আমরা কাজ করে যাব। পাশাপাশি আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে খাপ খাইয়ে কীভাবে পোলট্রি শিল্পকে সামনের দিকে নিয়ে যাওয়া যায়, সেটিও আমাদের অন্যতম লক্ষ্য থাকবে।’

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন দেশের পোলট্রি খাতের উন্নয়ন, সুরক্ষা ও টেকসই বিকাশে নিবেদিত একটি শীর্ষস্থানীয় সংগঠন। যেখানে খামারি, উদ্যোক্তা ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে প্রতিনিধিত্ব করে এবং আধুনিক প্রযুক্তি, সুষ্ঠু নীতিমালা ও মানসম্মত উৎপাদনের মাধ্যমে শিল্পের অগ্রগতিতে কাজ করে যাচ্ছে। এ নির্বাচনের মাধ্যমে সংগঠনের নতুন নেতৃত্ব নির্ধারিত হয়েছে, যা আগামী দুই বছর পোলট্রি খাতের দিকনির্দেশনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ক্যাব ও বিএসটিআইয়ের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ক্যাব ও বিএসটিআইয়ের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) ও বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর হয়েছে।

আজ সোমবার (২২ ডিসেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে ক্যাব এ তথ্য জানায়।

ক্যাব জানায়, গতকাল রোববার বিএসটিআইয়ের কাউন্সিল সভা শেষে আয়োজিত এই সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে ক্যাবের সভাপতি এ এইচ এম সফিকুজ্জামান ও বিএসটিআইয়ের মহাপরিচালক এস এম ফেরদৌস আলম নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন।

অনুষ্ঠানে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ ওবায়দুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির ভূঁইয়া ও বিএসটিআইয়ের কাউন্সিলের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এই সমঝোতা স্মারকের মাধ্যমে মানসম্মত ও নিরাপদ পণ্য নিশ্চিতকরণে জনসচেতনতা বৃদ্ধি, বিভাগীয় ও জেলাপর্যায়ে বাজার মনিটরিং ও তদারকি কার্যক্রমে সহযোগিতা, নকল ও ভেজালবিরোধী উদ্যোগ জোরদার, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা কার্যক্রম গ্রহণ এবং তথ্যভিত্তিক উদ্যোগ যৌথভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে ভোক্তা অধিকার সুরক্ষা ও ন্যায্য বাজারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় উভয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা আরও সুদৃঢ় হবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

থ্রি-হুইলারের লাইসেন্স ও রুট পারমিটের নীতিমালা বাস্তবায়ন করলে অর্থনীতির গতি বাড়বে: সিপিডি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
থ্রি-হুইলারের লাইসেন্স ও রুট পারমিটের নীতিমালা বাস্তবায়ন করলে অর্থনীতির গতি বাড়বে: সিপিডি

দেশে মূলধারার বিভিন্ন যানবাহনের পাশাপাশি থ্রি-হুইলার রিকশা ব্যাপক হারে বেড়েছে। যার নেই কোনো রেজিস্ট্রেশন বা লাইসেন্স। অথচ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখের সামনে চলাচল করছে এসব যান। ঘটছে নানা দুর্ঘটনা। এসব থ্রি-হুইলার নিয়ন্ত্রণে অনেক আওয়াজ উঠছে। কিন্তু কার্যত বন্ধ বা সামনে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা করা হবে, তা নিয়ে নীতিমালা করা জরুরি হয়ে পড়েছে। এই নীতিমালার বাস্তবায়ন হলে থ্রি-হুইলার দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এতে অর্থনীতির গতি আরও বেগবান হবে।

আজ সোমবার বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ‘স্টাডি অন ইন্টিগ্রিটিংস ইলেকট্রনিক থ্রি-হুইলার ইনটু ট্রান্সপোর্ট নেটওয়ার্ক: চ্যালেঞ্জেস অ্যান্ড ওয়েফরওয়ার্ড’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে সিপিডির প্রোগ্রাম সহযোগী মো. খালিদ মাহমুদ বলেন, দেশে লাখ লাখ যানবাহন চলে। কিন্তু নিবন্ধিত আছে মাত্র সাড়ে ২২ হাজার। এর বাইরে থ্রি-হুইলার রিকশা ৬০ লাখ ছাড়িয়েছে। সেবা নিচ্ছেন ১১২ কোটি মানুষ, যা অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এত বড়সংখ্যক যানের রেজিস্ট্রেশন নেই। যারা চালান, তাঁদের নেই কোনো প্রশিক্ষণ। এতে দক্ষতা বাড়ছে না। মুখের কথায় চলে এসব যান। যদি প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়ন করা যায়, তখন একটা আয় পাবে সরকার। আবার নীতিমালার কারণে ক্ষতি কমবে। যাঁরা এর সঙ্গে জড়িত, তাঁদের আয় বাড়বে। যার বিশাল ইতিবাচক প্রভাব পড়বে অর্থনীতিতে।

খালিদ মাহমুদ আরও বলেন, ‘নীতিমালা ছাড়া লাখ লাখ থ্রি-হুইলার চলছে। এই গণপরিবহন যেভাবে ইচ্ছা, সেভাবে চলছে। এটার সিস্টেম দাঁড় করাতে হবে। স্ট্রাকচার থাকতে হবে। ব্যাটারি ক্যাপাসিটি নির্ধারণ করতে হবে। ইলেকট্রনিক যান হওয়ায় পরিবেশে মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। কীভাবে কার অনুমোদন নিয়ে চলবে, নির্ধারণ করতে হবে। আইনের আওতায় আনা জরুরি। কেউ আইন লঙ্ঘন করলে তার শাস্তি দিতে হবে ৷ তখন এলোমেলো চলাচল নিয়ন্ত্রণ হবে। মানুষ উন্নত সেবা পাবে।

খালিদ মাহমুদ বলেন, ‘এ ধরনের যানের প্রায় ৪০ লাখ চালক, তাঁদের পরিবারসহ বিশাল জনগোষ্ঠী সুবিধাভোগী। তাঁদের রোড নেটওয়ার্ক, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, ট্রাফিক সেফটি, এয়ার কোয়ালিটির ব্যবস্থাপনার সুনির্দিষ্ট কাঠামো ও নীতিমালা জরুরি।

অনুষ্ঠানে নীতিমালা অনুযায়ী ইজিবাইক, রিকশাসহ ব্যাটারিচালিত যানবাহনের নিবন্ধন এবং চালকদের লাইসেন্স ও রুট পারমিট দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। একই সঙ্গে বলা হয়েছে কারিগরি ত্রুটি সংশোধন করে ব্যাটারিচালিত যানবাহনের আধুনিকায়ন করা এবং ব্যাটারিচালিত যানবাহন চলাচল বন্ধ না করা; বিদ্যুৎ চুরি ও অপচয় বন্ধ করতে ইলেকট্রিক বা ব্যাটারিচালিত যানবাহনের জন্য চার্জিং স্টেশন স্থাপন করা; প্রতিটি সড়ক-মহাসড়কে ইজিবাইক, রিকশাসহ ব্যাটারিচালিত, স্বল্পগতির ও লোকাল যানবাহনের জন্য সার্ভিস রোড/বাই লেন নির্মাণ করা; ঢাকাসহ সারা দেশে ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক জব্দ বন্ধ করা, জব্দ গাড়ি ও ব্যাটারি ফেরত দেওয়া; চালকসহ সংশ্লিষ্টদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা; সড়কে চাঁদাবাজি ও হয়রানি বন্ধ করা এবং চালকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত