Ajker Patrika

আমাজনের গহিনে অবৈধ খনিতে সোনার বিনিময়ে বিক্রি হয় যৌনতা

আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২: ২৬
নাতালিয়া কাভালকান্ত জানান তিনি যৌনকর্ম থেকে উপার্জন করা অর্থ দিয়ে একটি বাড়ি বানিয়েছেন। ছবি: বিবিসি
নাতালিয়া কাভালকান্ত জানান তিনি যৌনকর্ম থেকে উপার্জন করা অর্থ দিয়ে একটি বাড়ি বানিয়েছেন। ছবি: বিবিসি

দাইওনো লেইতো কখনো যৌনকর্মী হতে চাননি। কিন্তু ১৭ বছর বয়সে স্বামী হার্ট অ্যাটাকে যখন মারা গেলেন, তখন তাঁর শেষকৃত্য চালানোর খরচও ছিল না। ব্রাজিলের উত্তরাঞ্চলের পারা প্রদেশে অবস্থিত দাইওনোর শহর ইতাইতুবা দেশের অবৈধ সোনা খনিগুলোর কেন্দ্রবিন্দু। তাই একজন বন্ধু তাঁকে পরামর্শ দেন আমাজনের গভীরে খনি শ্রমিকদের সঙ্গে যৌন সম্পর্কের বিনিময়ে টাকা জোগাড় করতে।

‘খনিতে যাওয়া মানে একধরনের জুয়া খেলা।’ বলেন তিনি, ‘ওখানে নারীদের মারাত্মক অপমানিত হতে হয়। তাদের মুখে চড়-থাপ্পড় মারা হয় এবং গালমন্দ করা হয়।’

‘আমি আমার শোয়ার ঘরে ঘুমাচ্ছিলাম, আর একজন লোক জানালা দিয়ে লাফিয়ে এসে আমার মাথায় বন্দুক ধরল। আর যদি টাকা দেয়, তবে তারা নারীদের নিজের সম্পত্তি মনে করে।’

দাইওনো সফলভাবে শেষকৃত্যের জন্য টাকা জোগাড় করেন। ১৮ বছর বয়সে তিনি প্রথম সন্তানের মা হন। গত ১৬ বছর ধরে ইতাইতুবার অনেক নারীর মতোই তিনি মাঝে মাঝে খনিতে গিয়ে রান্না, কাপড় ধোয়া, বারের কাজের পাশাপাশি করছেন যৌনকর্মীর কাজও।

এখন তিনি সাতজনের একটি পরিবার চালাচ্ছেন।

‘আমি বলব না এই শহরের সব নারী এটা করেন, কিন্তু অনেকেই কাজটি করেন। তাই এটা কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে গেছে। আমরা এ নিয়ে খুব একটা চিন্তা করি না।’ বলেন নাতালিয়া কাভালকান্তে। তিনি ২৪ বছর বয়সে গভীর অরণ্যের একটি খনি এলাকায় যৌনকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। চার বছর পর একটি বারের মালিককে বিয়ে করে তিনি একটি পতিতালয়ের পরিচালক হয়ে ওঠেন। সম্প্রতি শহরে তাঁর ভাগনিদের দেখাশোনার জন্য তিনি এ কাজ ছেড়ে দেন।

আমাজনর জঙ্গলের আনুমানিক দুই লাখ ২০ হাজার হেক্টর এলাকা অবৈধ সোনার খনির দখলে আছে। ছবি: এএফপি
আমাজনর জঙ্গলের আনুমানিক দুই লাখ ২০ হাজার হেক্টর এলাকা অবৈধ সোনার খনির দখলে আছে। ছবি: এএফপি

এসব তথ্য জানা যায় ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে।

চিরসবুজ বা বৃষ্টি অরণ্যের খনি গ্রামগুলোতে জীবন খুবই কঠিন। বেশির ভাগ গ্রামে শুধু একটি কাঁচা রাস্তা, কিছু সেলুন, বার এবং একটি গির্জা থাকে। কিন্তু খনিশ্রমিকেরা আরও দূরে, কাঠ আর ত্রিপলের তৈরি ঘরে বাস করে। তাদের চারপাশে থাকে সাপ এবং জাগুয়ার। জেনারেটর বন্ধ হয়ে গেলে গোটা এলাকা নিমজ্জিত হয় অন্ধকারে। রান্নার কাজ করা নারীদের এই শিবিরগুলোতেই পুরুষদের সঙ্গে বসবাস করতে হয়।

যখন খনিশ্রমিকেরা সোনা খুঁজে পান এবং টাকা আসে, তখন তাঁরা গ্রামে আসেন বলে নাতালিয়া জানান। অনেক সময় তাঁদের যৌন সম্পর্ক করার আগে গোসল করানোর জন্য রাজি করাতে হয়।

ব্রাজিলিয়ান আইনে পতিতালয় চালানো অবৈধ, তবে নাতালিয়া দাবি করেন, তিনি কোনো কমিশন নেননি। শুধু বারের স্টাফ নিয়োগ করতেন এবং কক্ষ ভাড়া দিতেন।

তরুণী নারীরা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতেন কাজের জন্য। তিনি মাঝে মাঝে তাঁদের ইতাইতুবা থেকে খনিতে ভ্রমণের জন্য টাকা ধার দিতেন। পাক্কা সাত ঘণ্টার যাত্রা এটি।

দাইওনো লেইতো ১২ বছর বয়স থেকে সোনার খনিতে কাজ করছেন। ছবি: বিবিসি
দাইওনো লেইতো ১২ বছর বয়স থেকে সোনার খনিতে কাজ করছেন। ছবি: বিবিসি

ব্রাজিল সরকার জানিয়েছে, অবৈধ খনিগুলোতে কাজ করেন ৮০ হাজার থেকে ৮ লাখ মানুষ।

যখন তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হলো, অন্য নারীদের এই কাজে যুক্ত করা নিয়ে তাঁর কোনো দ্বিধা আছে কি না, তিনি জবাব দিলেন, ‘কখনো কখনো আমি ভাবি, নিজেও এই অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গেছি, এবং আমি জানি এটি খুব ভালো কিছু নয়।’ কিন্তু তারপর আবার চিন্তা করি, ‘মেয়েটির একটি পরিবার আছে, কখনো কখনো একটি সন্তান লালন-পালন করতে হয়। যারা যায় তাদের অনেকেরই এক বা দুটি সন্তান থাকে। তাই আমরা এটা মেনে নিই।’

বিয়ে করার আগেই নাতালিয়া এভাবে অনেক টাকা উপার্জন করেছিলেন।

এখন তাঁর ইতাইতুবায় নিজের একটি বাড়ি, একটি মোটরসাইকেল এবং উল্লেখযোগ্য পরিমাণ সোনা আছে। এগুলো তিনি কখনো কখনো যৌনতার বিনিময়ে পেয়েছিলেন, একবারে দুই বা তিন গ্রাম করে। এখন তার লক্ষ্য পড়াশোনা করে একজন আইনজীবী বা স্থপতি হওয়া।

ইতাইতুবাকে অনেকেই ‘গোল্ড নাগেট সিটি’ নামে ডাকেন। এখানকার কিছু নারী এই কাজ থেকে উপার্জিত অর্থ দিয়ে নিজেদের ব্যবসা দাঁড় করিয়েছেন বলে জানান তিনি।

তবে, একজন নারী হিসেবে সহিংস এবং আইনহীন খনি এলাকায় পা বাড়ানোটা নিঃসন্দেহে বড় ঝুঁকির ব্যাপার।

ব্রাজিল সরকার জানিয়েছে অবৈধ খনিগুলোতে কাজ করেন ৮০ হাজার থেকে আট লাখ মানুষ। ছবি: বিবিসি
ব্রাজিল সরকার জানিয়েছে অবৈধ খনিগুলোতে কাজ করেন ৮০ হাজার থেকে আট লাখ মানুষ। ছবি: বিবিসি

খনিগুলোর পরিবেশগত ক্ষতি সবার জানা থাকলেও, জাতিসংঘ জানিয়েছে সহিংসতা, যৌন নিপীড়ন এবং মানব পাচারের মতো বিষয়গুলো অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রতিবেদনভুক্ত হয় না।

মূল্যবান ধাতুর এক ব্যবসায়ী বিবিসিকে জানান, এই খনিগুলো থেকে আসা অবৈধ সোনা সাধারণত একটি লাইসেন্সধারী খনি সমবায়ের সোনা হিসেবে পুনরায় চিহ্নিত হয়, তারপর তা রপ্তানি করা হয় এবং গয়না, মোবাইল ফোনের অংশ বা অন্যান্য ইলেকট্রনিক পণ্য তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।

ব্রাজিলের সোনার তিনটি বৃহত্তম ক্রেতা হলো কানাডা, সুইজারল্যান্ড এবং যুক্তরাজ্য। গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউটো এসকোলহাসের মতে, ইউরোপে রপ্তানি হওয়া সোনার ৯০ শতাংশের বেশি এমন এলাকা থেকে আসে, যেখানে অবৈধ খনন কার্যক্রম ঘটে।

খনি এলাকার গ্রামগুলোতে নারীদের হত্যার ঘটনাও ঘটে। গত বছর ২৬ বছর বয়সী রায়েলে সান্তোসের মৃতদেহ কুইউ-কুইউ সোনার খনির কাছে তাঁর থাকার ঘরে পাওয়া যায়। ইতাইতুবা থেকে ১১ ঘণ্টার দূরত্ব খনিটির।

রায়েলে সান্তোসকে একটি খনি এলাকার একটি গ্রামে হত্যা করা হয়। ছবি: বিবিসি
রায়েলে সান্তোসকে একটি খনি এলাকার একটি গ্রামে হত্যা করা হয়। ছবি: বিবিসি

রায়েলের বড় বোন রাইলানে জানান, এক ব্যক্তি তাকে যৌনতার বিনিময়ে টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন, কিন্তু তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। এরপর ওই ব্যক্তি তাঁকে খুঁজে বের করে পিটিয়ে হত্যা করেন।

রাইলানে বলেন, ‘আমি খনিতে জন্মেছি, খনিতে বড় হয়েছি, আর এখন আমি খনিতে থাকতে ভয় পাই।’

রায়েলের হত্যার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সন্দেহে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তবে এখনো তাঁর বিচার হয়নি। তিনি তাঁর বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

ব্রাজিলের অবৈধ সোনার খনির দখল করে থাকা এলাকার পরিমাণ ২০১৩ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে দ্বিগুণ হয়ে ২ লাখ ২০ হাজার হেক্টরে পৌঁছেছে, যা গ্রেটার লন্ডনের চেয়েও বড়। এই এলাকায় কতজন নারী কাজ করেন, এমনকি কতজন অবৈধ খনি শ্রমিক আছেন, তা কেউ জানে না। ব্রাজিল সরকার বলছে, শ্রমিকের সংখ্যা ৮০ হাজার থেকে ৮ লাখের মধ্যে হতে পারে।

আমাজনের জঙ্গলের অবৈধ খনিগুলোতে কাজ করেন ৮০ হাজার থেকে আট লাখ মানুষ। ছবি: এএফপি
আমাজনের জঙ্গলের অবৈধ খনিগুলোতে কাজ করেন ৮০ হাজার থেকে আট লাখ মানুষ। ছবি: এএফপি

প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দে সিলভার নেতৃত্বে সরকার অবৈধ খনি বন্ধ এবং তাঁদের উৎপাদিত সোনা কেনা বন্ধের পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে সোনার উচ্চমূল্য এখনো অনেক পুরুষকে ভাগ্য পরীক্ষা করতে প্ররোচিত করছে।

দাইওনো লেইতো খনি এলাকায় কাজ করা বন্ধ করতে চান, কারণ ঝুঁকি ও কঠোর পরিশ্রম তাঁর শরীরকে বিধ্বস্ত করে তুলেছে। তবে তিনি আশা করছেন, শেষবারের মতো সেখানে যাবেন। তাঁর লক্ষ্য হলো দুই বা তিন মাসে যথেষ্ট অর্থ উপার্জন করা, যাতে ফিরে এসে একটি স্ন্যাক বার খুলতে পারেন। যদিও তিনি জানেন, সফল না-ও হতে পারেন।

যখনই তিনি একা থাকেন, অরণ্যপথে হাঁটেন, তখন তার সন্তানদের নিয়ে দুশ্চিন্তা হয় বলে জানান।

‘সহ্যসীমা অতিক্রম করে যাওয়ার আগ পর্যন্ত আমি চেষ্টা চালিয়ে যাব।’ বলেন তিনি, ‘কারণ আমি মনে করি, একদিন আমার সন্তানেরা বলবে, তাদের মা খুব পরিশ্রম করেছেন। যা সহ্য করেছেন, তাদের জন্য করেছে এবং কখনো হাল ছাড়েননি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ট্রাম্পকে তরুণদের ‘রোল মডেল’ বললেন এক সময়ের ঘোর বিরোধী নিকি মিনাজ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
‘আমেরিকাফেস্ট’ সম্মেলনের মঞ্চে নিকি মিনাজ। ছবি: সংগৃহীত
‘আমেরিকাফেস্ট’ সম্মেলনের মঞ্চে নিকি মিনাজ। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনায় রক্ষণশীল সংগঠন টার্নিং পয়েন্ট ইউএসএ আয়োজিত ‘আমেরিকাফেস্ট’ সম্মেলনে হঠাৎ উপস্থিত হয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের প্রশংসা করেছেন মার্কিন র‍্যাপ তারকা নিকি মিনাজ। রোববার (২১ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত ওই সম্মেলনে তিনি তরুণ পুরুষদের জন্য ট্রাম্প ও ভ্যান্সকে ‘রোল মডেল’ হিসেবে উল্লেখ করেন। মিনাজের এই মন্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশ চমক সৃষ্টি করেছে।

সোমবার (২২ ডিসেম্বর) ‘ফরচুন’ জানিয়েছে, এই সম্মেলনটি প্রয়াত রক্ষণশীল কর্মী চার্লি কার্কের স্মরণে আয়োজন করা হয়। মঞ্চে নিকি মিনাজের সাক্ষাৎকার নেন চার্লি কার্কের স্ত্রী ও বর্তমানে টার্নিং পয়েন্ট ইউএসএ-এর নেতৃত্বে থাকা অ্যারিকা কার্ক। আলোচনায় ট্রাম্পের প্রতি নতুন সমর্থনের কথা জানান মিনাজ—যদিও অতীতে তিনি ট্রাম্পের কঠোর সমালোচক ছিলেন। পাশাপাশি তিনি নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতারও নিন্দা জানান।

মিনাজ ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্র্যাট গভর্নর গ্যাভিন নিউসমকে কটাক্ষ করে ট্রাম্পের দেওয়া ‘নিউ-স্কাম’ নামটি ব্যবহার করেন। বর্তমান প্রশাসনের প্রশংসা করে তিনি বলেন—বর্তমান প্রশাসনে হৃদয় ও আত্মা আছে এবং ট্রাম্প ও ভ্যান্স দুজনই এমন নেতা, যাদের সঙ্গে সাধারণ মানুষ সহজে নিজেদের মিল খুঁজে পায়।

এদিকে মঞ্চে এক অস্বস্তিকর মুহূর্ত তৈরি হয়, যখন ভ্যান্সের রাজনৈতিক দক্ষতার প্রশংসা করতে গিয়ে মিনাজ তাঁকে ‘অ্যাসাসিন’ বলে ফেলেন। কথাটি বলার পরই তিনি থেমে যান এবং পরিস্থিতি কিছুটা বিব্রতকর হয়ে ওঠে। চার্লি কার্ক হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়ায় শব্দটি উপস্থিত অনেকের মনে আঘাত দেয়।

সম্প্রতি মিনাজ ট্রাম্পের ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ দেওয়া নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টান নির্যাতন সংক্রান্ত একটি পোস্ট শেয়ার করেছিলেন, যেখানে সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞার কথা বলা হয়। এ নিয়ে তিনি জাতিসংঘে মার্কিন মিশনে আয়োজিত এক প্যানেল আলোচনাতেও অংশ নেন।

নিজের পরিবর্তিত অবস্থান নিয়ে মিনাজ বলেন, ‘মত বদলানো দোষের নয়—মনের কথা বলাই এখন সবচেয়ে বড় অপরাধ হয়ে গেছে।’ বিনোদন জগৎ থেকে সমালোচনার প্রসঙ্গে জানান, তিনি এসব নিয়ে ভাবেন না। একসময় ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির তীব্র বিরোধিতা করা এই শিল্পী এখন প্রকাশ্যেই বলছেন, তাঁর মত বদলানো ঠিকই আছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যুদ্ধের মধ্যেই গাজায় দুবার সন্তান প্রসবের ভয়াবহ স্মৃতি হাদিলের

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
হাদিল আল ঘেরবাওয়ির কোলে ছেলে জাওয়াদ। ছবি: দ্য গার্ডিয়ান
হাদিল আল ঘেরবাওয়ির কোলে ছেলে জাওয়াদ। ছবি: দ্য গার্ডিয়ান

‘এই বিভীষিকা আমি কখনো ভুলতে পারব না’—বলছিলেন হাদিল আল ঘেরবাওয়ি। ২৬ বছর বয়সী এই ফিলিস্তিনি নারী গাজা যুদ্ধে চরম ক্ষুধা, ভয় আর অনিশ্চয়তার মধ্যেই দুটি গর্ভধারণ ও দুবার সন্তান জন্ম দিয়েছেন।

সোমবার (২২ ডিসেম্বর) যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান-ভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরুর সময় হাদিল সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভধারণ হওয়ায় তিনি নিয়মিত ডাক্তার দেখাতেন, আলট্রাসাউন্ড করাতেন এবং ভিটামিন নিতেন। গাজা সিটির পূর্বাংশে ইসরায়েল সীমান্তের কাছে বসবাস করায় যুদ্ধ শুরুর প্রথম দিনই তিনি গাজার পশ্চিম অংশে বসবাস করা বাবা-মায়ের বাড়িতে চলে যান। হাদিল ভেবেছিলেন, কয়েক দিনের মধ্যেই তিনি আবার স্বামীর বাড়িতে ফিরে যাবেন। কিন্তু এরপর পরিবারটি অন্তত ১৩ বার বাস্তুচ্যুত হয় এবং স্বামীর বাড়িটিও একদিন পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায়।

২০২৩ সালের অক্টোবর মাসেই গাজা সিটিতে একটি আবাসিক ভবনে বড় ধরনের হামলার কাছাকাছি অবস্থানে ছিলেন হাদিল। তাঁর কাছে এটিকে একটি ভূমিকম্প মনে হয়েছিল। পরে আশ্রয় নেন আল-শিফা হাসপাতালে। সেখানে অন্যান্য আশ্রয়প্রার্থীর ভিড় এত বেশি ছিল যে, বাথরুম ব্যবহার করাও প্রায় অসম্ভব ছিল। সেদিনের দৃশ্য আজও তাড়া করে ফেরে হাদিলকে। স্তূপ করে রাখা লাশ, ড্রামে রাখা খণ্ড-বিখণ্ড অঙ্গপ্রত্যঙ্গ আর তীব্র গন্ধ। তিনি বলেন, ‘আমি গর্ভবতী ছিলাম, সহ্য করতে পারিনি।’

অবস্থা এমন দাঁড়ায় যে—নিরাপত্তার আশায় এবার তিনি ও তাঁর স্বামী খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে যান এবং চিকিৎসকদের কাছে আগেভাগেই সন্তান প্রসবের অনুরোধ করেন। হাদিল যখন সন্তান প্রসব করছিলেন, তখন হাসপাতালটির পাশের ভবনেই হামলা হয় এবং আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বিশৃঙ্খল এই পরিস্থিতিতে সন্তান বদলে যাওয়ার আতঙ্কও গ্রাস করেছিল হাদিলকে। তবে আতঙ্কের মধ্যেই শেষ পর্যন্ত তিনি ছেলে জাওয়াদের জন্ম দেন।

নবজাতক নিয়ে হাদিলকে ৩০ জনের সঙ্গে একটি কক্ষে গাদাগাদি করে থাকতে হয়েছিল। সেই সময়টিতে সেলাইয়ের তীব্র ব্যথার মধ্যেও তিনি কোনো ওষুধ পাননি; রাতের পর রাত চুপচাপ এই ব্যথা সহ্য করেছেন। তাঁর ধারণা, প্রসবের পর তিনি বিষণ্নতায় আক্রান্ত হয়েছিলেন।

কয়েক মাস পর তাঁরা একটি তাঁবুতে ওঠেন। বালু, পোকামাকড় আর প্রচণ্ড ঠান্ডায় একের পর এক নবজাতকের মৃত্যুর খবরে সারাক্ষণ আচ্ছন্ন হয়ে থাকতেন হাদিল। রাতে ছেলেকে জড়িয়ে ধরে বারবার জেগে উঠতেন। জাওয়াদের বয়স ৯ মাস হলে আবারও গর্ভবতী হন তিনি। হাদিল বলেন, ‘তাঁবুতে থেকে আরেকটি সন্তান—ভীষণ ধাক্কা খেয়েছিলাম।’

চলতি বছরের জানুয়ারিতে সাময়িক যুদ্ধবিরতির খবর কিছুটা আশা জাগিয়েছিল তাঁদের। সেই আশা থেকেই ঝুঁকি নিয়ে তাঁরা নিজেদের বাড়িতে ফিরে যান। কিন্তু ছয় সপ্তাহ পরই ভেঙে যায় যুদ্ধবিরতি। পেটে সন্তান নিয়ে আবারও পালাতে হয় হাদিলকে। পালানোর পর তাঁদের বাড়িটিও ধ্বংস হয়ে যায়। যুদ্ধের মধ্যে দ্বিতীয় গর্ভধারণ হাদিলের জন্য ছিল সবচেয়ে কঠিন। এই সন্তান পেটে রাখার ৯ মাসই তাঁর যুদ্ধের মধ্যে কেটেছে। এমনও দিন গেছে, সারা দিন শুধু একটি শসা খেয়ে কাটিয়েছেন। আর কোথাও এক মুঠো খাবার পেলে নিজের ভাগটুকু তিনি ছেলে জাওয়াদকে দিতেন।

দ্বিতীয়বার প্রসবের সময়ও তিনি বাবা-মায়ের বাড়িতে গিয়ে ওঠেন। কারণ ওই বাড়ি থেকে কাছাকাছি একটি হাসপাতালে নবজাতক সুরক্ষার জন্য ইনকিউবেটর ছিল। এক রাতে প্রসবব্যথা শুরু হলে, লিফট না থাকায় পাঁচ তলা থেকে হেঁটেই নামতে হয় হাদিলকে। পরে তিনি অ্যাম্বুলেন্সে ওঠেন এবং ওই হাসপাতালে দ্বিতীয় ছেলে ফারেসের জন্ম দেন। জন্মের সময় ফারেসের ওজন ছিল মাত্র ২ কেজি।

এবারে অ্যানেসথেসিয়া ছাড়াই সেলাই দেওয়া হয় হাদিলকে। আর অন্যকে সুযোগ করে দিতে কিছুক্ষণের মধ্যেই বিছানা খালি করে তাঁকে চেয়ারে বসে থাকতে হয়। ফারেসের জন্মের পাঁচ ঘণ্টা পর, চরম ক্লান্তি ও ব্যথা নিয়ে তিনি আবার পাঁচ তলা সিঁড়ি বেয়ে বাবা-মায়ের ঘরে ফেরেন। এই যুদ্ধ, তাঁর শরীর ও মনে রেখে গেছে এমন ক্ষত—যা ভুলবার নয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আসাদের খালি হয়ে যাওয়া কুখ্যাত কারাগারগুলো ভরে উঠছে আবার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
বাশার আল-আসাদের পতনের পর খালি হয়ে গিয়েছিল হোমসের এই কারাগারটি। ছবি: রয়টার্স
বাশার আল-আসাদের পতনের পর খালি হয়ে গিয়েছিল হোমসের এই কারাগারটি। ছবি: রয়টার্স

বাশার আল-আসাদের পতনের পর সিরিয়ার মানুষ ভেবেছিল—দেশটির কুখ্যাত কারাগার অধ্যায়ের অবসান ঘটেছে। বিদ্রোহীরা জেলখানার দরজা ভেঙে বন্দীদের মুক্ত করেছিল, পরিবারের লোকেরা ছুটে গিয়েছিল নিখোঁজ স্বজনদের খোঁজে। কিন্তু এক বছর না পেরোতেই সেই কারাগারগুলো আবার ভরে উঠছে। এবার নতুন সরকারের অধীনেই সিরিয়ায় আবারও ফিরে এসেছে গ্রেপ্তার, নির্যাতন ও চাঁদাবাজির অভিযোগ।

রয়টার্সের এক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, সিরিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারার নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে গত এক বছরে অন্তত ৮২৯ জন নিরাপত্তাজনিত কারণে আটক হয়েছেন। প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আটক ব্যক্তিদের বড় অংশই কোনো আনুষ্ঠানিক অভিযোগ বা আদালতের আদেশ ছাড়াই বন্দী রয়েছেন।

সোমবার (২২ ডিসেম্বর) প্রকাশিত রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসাদ-পরবর্তী সিরিয়ায় প্রথম দফার গ্রেপ্তার শুরু হয়েছিল বিদ্রোহীদের বিজয়ের পরপরই। সে সময় মূলত আসাদের আমলের সেনা সদস্য ও কর্মকর্তাদের আটক করা হয়েছিল। পরে শীতের শেষ দিকে উপকূলীয় অঞ্চলে সহিংসতার জের ধরে আলাউইত সম্প্রদায়ের শত শত মানুষ গ্রেপ্তার হন। বসন্ত ও গ্রীষ্মে দ্রুজ অধ্যুষিত দক্ষিণাঞ্চলেও ব্যাপক ধরপাকড় চলে। একই সঙ্গে সুন্নি, খ্রিষ্টান ও শিয়া সম্প্রদায়ের লোকজনও ‘নিরাপত্তা ঝুঁকি’ বা আসাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অস্পষ্ট অভিযোগে আটক হন।

রয়টার্স জানিয়েছে, আসাদ আমলের অন্তত ২৮টি কারাগার ও আটক কেন্দ্র আবার সক্রিয় হয়েছে। এগুলোর অনেকগুলোই অতীতে নির্যাতনের জন্য কুখ্যাত ছিল। যদিও বর্তমান সরকার বলছে, অপরাধীদের বিচারের প্রয়োজনে এসব কেন্দ্র ব্যবহার করা হচ্ছে এবং অনেক বন্দীকে ইতিমধ্যে মুক্তি দেওয়া হয়েছে, তবে কোনো নির্দিষ্ট পরিসংখ্যান তারা প্রকাশ করেনি।

সাক্ষাৎকারে সাবেক বন্দী ও স্বজনেরা জানিয়েছেন, আটক কেন্দ্রগুলোতে ভয়াবহ মানবেতর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। গাদাগাদি করে বন্দী রাখা, খাবার ও চিকিৎসার অভাব, ত্বকের রোগ এবং নিয়মিত মারধরের অভিযোগ রয়েছে। অন্তত ১১ জন বন্দী কারা হেফাজতে মারা গেছেন বলে নথিভুক্ত করেছে রয়টার্স। এদের মধ্যে কয়েকজনের মৃত্যুর খবর পরিবার জানতই না—দাফন সম্পন্ন হওয়ার পর তারা বিষয়টি জানতে পারে।

চাঁদাবাজিও নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। ১৪টি পরিবার জানিয়েছে, স্বজনকে মুক্তির বিনিময়ে ৫০০ থেকে ১৫ হাজার ডলার পর্যন্ত দাবি করা হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে এই অঙ্ক ৯০ হাজার ডলার ছাড়িয়েছে। অর্থ পরিশোধের পরও অনেকেই মুক্তি পাননি।

এদিকে সরকার স্বীকার করেছে, প্রতিষ্ঠানগুলোর পুনর্গঠনের সময় কিছু ‘ফাঁকফোকর’ তৈরি হয়েছে এবং কিছু নিরাপত্তা সদস্য নীতিমালা লঙ্ঘন করেছে। তাদের দাবি, চাঁদাবাজি ও সহিংসতার ঘটনায় অন্তত ১৫৯ জন নিরাপত্তা সদস্যকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে।

তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, ব্যাপক আটক ও গুমের অভিযোগ নতুন সরকারের বিশ্বাসযোগ্যতাকে প্রশ্নের মুখে ফেলছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরও আসাদের পতনের পর ‘বিচারবহির্ভূত হত্যা ও নির্বিচার আটক’-এর তথ্য পাওয়ার কথা জানিয়েছে।

আসাদের শাসনামলের মতো নির্মম নির্যাতন না হলেও, পুরোনো কারাগার ব্যবস্থার পুনরুজ্জীবন সিরিয়ার নতুন ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর উদ্বেগ তৈরি করছে। মানবাধিকারকর্মীদের ভাষায়, ‘শাসক বদলেছে, কিন্তু কারাগারের ছায়া এখনো কাটেনি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মস্কোতে গাড়িবোমা হামলায় রুশ জেনারেল সারভারভ নিহত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
জেনারেল সারভারভের গাড়ির নিচে একটি শক্তিশালী বিস্ফোরক ডিভাইস পেতে রাখা হয়েছিল। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে
জেনারেল সারভারভের গাড়ির নিচে একটি শক্তিশালী বিস্ফোরক ডিভাইস পেতে রাখা হয়েছিল। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে

রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে এক ভয়াবহ গাড়িবোমা হামলায় দেশটির শীর্ষস্থানীয় এক জেনারেল নিহত হয়েছেন। আজ সোমবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে এ ঘটনা ঘটে বলে রুশ কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি রাশিয়ার ইনভেস্টিগেটিভ কমিটির বরাতে জানিয়েছে, নিহত ব্যক্তির নাম লেফটেন্যান্ট জেনারেল ফানিল সারভারভ (৫৬)। তিনি রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনীর অপারেশনাল ট্রেনিং বিভাগের প্রধান ছিলেন।

তদন্ত কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, আজ স্থানীয় সময় সকালে মস্কোর দক্ষিণাঞ্চলের একটি অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকের পার্কিং লটে এই বিস্ফোরণ ঘটে। জেনারেল সারভারভের গাড়ির নিচে একটি শক্তিশালী বিস্ফোরক ডিভাইস পেতে রাখা হয়েছিল। গাড়িটি চালু করার পরপরই সেটির বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণে গুরুতর আহত অবস্থায় সারভারভকে হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়।

ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া ছবিতে দেখা গেছে, একটি সাদা রঙের গাড়ি বিস্ফোরণে দুমড়েমুচড়ে গেছে এবং সেটির যন্ত্রাংশ উড়ে গিয়ে পাশে থাকা অন্য যানবাহনের ওপর পড়েছে।

রুশ ইনভেস্টিগেটিভ কমিটি এ ঘটনাকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ হিসেবে অভিহিত করে তদন্ত শুরু করেছে। প্রাথমিক তদন্তে রুশ কর্মকর্তাদের ধারণা, এই হামলার নেপথ্যে ইউক্রেনীয় গোয়েন্দা সংস্থার হাত থাকতে পারে। তবে ইউক্রেন এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি।

ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানিয়েছেন, জেনারেল সারভারভের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরপরই প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে তা জানানো হয়েছে।

৫৬ বছর বয়সী ফানিল সারভারভ রুশ সামরিক বাহিনীর অত্যন্ত অভিজ্ঞ কর্মকর্তা ছিলেন। রুশ গণমাধ্যমের তথ্যমতে, ফানিল সারভারভ নব্বইয়ের দশক এবং ২০০০ সালের শুরুতে তিনি ওসেটিয়ান-ইঙ্গুশ সংঘাত ও চেচেন যুদ্ধে সরাসরি অংশ নিয়েছিলেন। ২০১৫-১৬ সালে সিরিয়ায় রুশ সামরিক অভিযানেও তিনি নেতৃত্ব দেন।

২০২২ সালে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার সামরিক অভিযান শুরু করার পর থেকে মস্কোতে হাইপ্রোফাইল ব্যক্তিদের ওপর বেশ কয়েকটি বড় হামলার ঘটনা ঘটেছে। ২০২২ সালে পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র আলেকজান্ডার দুগিনের কন্যা দারিয়া দুগিনা গাড়িবোমা হামলায় নিহত হন।

চলতি বছরের এপ্রিলে জেনারেল ইয়ারোস্লাভ মোসকালিক ও ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে জেনারেল ইগর কিরিলভও একই ধরনের হামলায় প্রাণ হারান।

নীতিগত কারণে ইউক্রেন সাধারণত এ ধরনের হামলার দায় স্বীকার করে না। তবে গত বছর জেনারেল কিরিলভ নিহতের ঘটনায় ইউক্রেনীয় নিরাপত্তা সংস্থার জড়িত থাকার ইঙ্গিত দিয়েছিল বিবিসির একটি সূত্র।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত