গাজায় ত্রাণ সরবরাহের পথ সংকুচিত হয়ে আসছে: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ১০ জানুয়ারি ২০২৪, ০০: ১৯

যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় ত্রাণ সরবরাহের পরিমাণ বাড়ানোর জন্য চাপ দিচ্ছে আন্তর্জাতিক বিশ্ব। তবে মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) হুঁশিয়ারি দিয়েছে, গাজায় ত্রাণ সরবরাহ ও হাসপাতালে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেওয়ার জন্য প্রবেশের সুযোগ দিনদিন সংকুচিত হয়ে আসছে।

বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ডব্লিউএইচও কর্মীরা হাসপাতালে খাবারের জন্য হাত পেতে থাকা শিশু থেকে শুরু করে গুরুতর আহতদের মর্মান্তিক দৃশ্য বর্ণনা করেছেন। গাজার অবশিষ্ট হাসপাতালগুলোর বেশির ভাগ স্বাস্থ্যকর্মী প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে যাচ্ছেন।

গাজা উপত্যকা থেকে এক ভিডিও বার্তায় ডব্লিউএইচও–এর জরুরি মেডিকেল টিমের সমন্বয়কারী শান ক্যাসি জেনেভায় অবস্থানরত সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা চোখের সামনে এই মানবিক বিপর্যয় দেখছি। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা দ্রুত গতিতে ভেঙে পড়তে দেখছি।’ 

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলছে, গাজায় চলমান যুদ্ধ নতুন একপর্যায়ে প্রবেশ করেছে। এ পর্যায়ে ইসরায়েল সেনা প্রত্যাহার করছে এবং গাজার মধ্যবর্তী অঞ্চল ও দক্ষিণে আরও অভিযান পরিচালনা করছে।

তবে ক্যাসি বলছেন, তিনি স্থল অভিযানের তীব্রতা কমার কোনো লক্ষণ দেখছেন না। তিনি বলেন, ‘আমরা এখনো যা দেখছি তা হলো...সংঘর্ষের কারণে বিপুলসংখ্যক হতাহত, ছুরির আঘাত, গুলিবিদ্ধ, ভবনের নিচে চাপা পড়ার আঘাত। এখনো প্রত্যেকদিন এসব ঘটছে।’ 

ফিলিস্তিনের হামাস বাহিনী গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালানোর পর এ যুদ্ধের শুরু। ইসরায়েল সরকারের হিসাব অনুসারে, হামাসের হামলায় ইসরায়েলের ১ হাজার ১৪০ জন নিহত হয়েছে। সেদিন হামাস ২৫০ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যায়। তাদের মধ্যে ১৩২ জন এখনো আটক আছে এবং অন্তত ২৫ জন নিহত হয়েছে। 

হামাসের হামলার জবাবে ৭ অক্টোবর থেকেই গাজায় অবিরত বোমা বর্ষণ করে চলেছে ইসরায়েল। তিন মাস ধরে চলমান এ যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ২৩ হাজার ২০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, এর বেশির ভাগই নারী ও শিশু। 

জাতিসংঘ বলছে, এ যুদ্ধের কারণে গাজার ২৪ লাখ জনগোষ্ঠীর ৮৫ শতাংশই বাস্তুচ্যুত হয়েছে। অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনের বেসামরিক নাগরিকেরা দুর্ভিক্ষ ও ভয়াবহ সব রোগের ঝুঁকিতে রয়েছে।

গত মাসে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের একটি প্রস্তাবে গাজায় আরও বেশি পরিমাণে ত্রাণ সরবরাহ প্রবেশের দাবি জানানো হয়। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গাজায় ত্রাণ নিয়ে প্রবেশ আরও দুরূহ হয়ে উঠছে।

তবে ইসরায়েলের দাবি, গাজায় প্রয়োজনীয় ত্রাণ না পৌঁছানোর জন্য জাতিসংঘই মূলত দায়ী।

ক্যাসি বলেন, ‘ডব্লিউএইচও ও জাতিসংঘের অন্যান্য অঙ্গ সংগঠনগুলো সবচেয়ে বেশি প্রয়োজনের এলাকায় পৌঁছানোর জন্য প্রতিনিয়ত চেষ্টা করে যাচ্ছে। আমরা প্রতিদিন সারিবদ্ধভাবে ত্রাণের গাড়িবহরে দাঁড়াই এবং ছাড়পত্রের জন্য অপেক্ষা করি (যুদ্ধরত দলগুলোর কাছ থেকে)। কিন্তু আমরা তা পাই না। এরপর আমরা ফিরে আসি এবং পরের দিন আবার একই কাজ করি।’ 

দুই সপ্তাহ ধরে গাজার উত্তরাঞ্চলে পৌঁছাতে পারছে না ডব্লিউএইচও। সেখানে ছয়টি পরিকল্পিত মিশন বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে তারা। সংস্থাটি বলছে, গাজার ৩৬টি হাসপাতালের মধ্যে মাত্র ১৫টি আংশিকভাবে কার্যকর আছে এবং এর বেশির ভাগই দক্ষিণ গাজায় অবস্থিত।

সংস্থাটি দীর্ঘদিন ধরেই উত্তর গাজার কয়েকটি হাসপাতালের মর্মান্তিক দৃশ্যের কথা বলে আসছে এবং সেখানে খাদ্য, খাওয়ার পানি, ওষুধ এবং জ্বালানির তীব্র সংকটের কথা বলছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত