Ajker Patrika

ইসরায়েলি আগ্রাসনে পঙ্গু ৪০০০, মস্তিষ্ক-মেরুদণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত ২ হাজার ফিলিস্তিনির

অনলাইন ডেস্ক
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হামলায় হাত-পা হারানো ফিলিস্তিনিরা গত ৭ ডিসেম্বর গাজার খান ইউনিসে নাসের হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। তারা ইসরায়েলি হামলা বন্ধ এবং চিকিৎসা সুবিধা পাওয়ার দাবি জানান। ছবি: আনাদোলু এজেন্সি
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হামলায় হাত-পা হারানো ফিলিস্তিনিরা গত ৭ ডিসেম্বর গাজার খান ইউনিসে নাসের হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। তারা ইসরায়েলি হামলা বন্ধ এবং চিকিৎসা সুবিধা পাওয়ার দাবি জানান। ছবি: আনাদোলু এজেন্সি

গাজায় এক বছরের বেশি সময় ধরে চলা ইসরায়েলি আগ্রাসনে আহত হয়েছেন প্রায় ১ লাখ। তাদের মধ্য থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজারের বেশি মানুষ বিভিন্ন অঙ্গ হারিয়েছেন এবং ২ হাজারের বেশি মানুষ তাদের মেরুদণ্ডে এবং মস্তিষ্কে আঘাত পেয়েছেন। মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে কাজ করা লন্ডনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট মনিটরের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

গাজার আল-শিফা মেডিকেল কমপ্লেক্সের পরিচালক মোহাম্মদ আবু সালমিয়া দক্ষিণ গাজার নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সে আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক সম্মেলনে বলেন, ‘ইসরায়েলি আগ্রাসনে যারা অঙ্গ হারিয়েছেন তাদের বেশির ভাগই শিশু। গণহত্যা শুরুর পর থেকে ৪ হাজারের বেশি মানুষ তাদের হাত বা পা হারিয়েছেন।’

মোহাম্মদ আবু সালমিয়া বলেন, ‘২ হাজারের বেশি মানুষ এখন মেরুদণ্ড ও মস্তিষ্কের আঘাতে পঙ্গু হয়ে বিছানায় শুয়ে আছেন এবং তারা জরুরি পুনর্বাসন সেবার প্রয়োজন।’ তিনি আরও জানান, ইসরায়েলের নিরবচ্ছিন্ন বোমাবর্ষণের কারণে হাজার হাজার মানুষ শ্রবণ এবং দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন।

আল-শিফা মেডিকেল কমপ্লেক্সের পরিচালক আরও বলেন, ‘গাজার স্বাস্থ্যব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে; কোনো চিকিৎসা সেবা বা সুবিধা নেই। একমাত্র পুনর্বাসন হাসপাতাল হামাদ হাসপাতাল এবং গাজার প্রস্থেটিকস সেন্টার সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে।’

গত সপ্তাহের মঙ্গলবার জাতিসংঘের ত্রাণ ও শরণার্থী সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ—এর কমিশনার জেনারেল ফিলিপ লাজারিনি গাজার পরিস্থিতিকে ‘প্রতিবন্ধিতার মহামারি’ হিসেবে উল্লেখ করেন। সংস্থাটি সতর্ক করেছে যে, আহতদের মধ্যে অনেকেই দীর্ঘমেয়াদি পুনর্বাসন সেবার প্রয়োজন হবে, যার মধ্যে অঙ্গচ্ছেদ ও মেরুদণ্ডের আঘাতের চিকিৎসা অন্তর্ভুক্ত।

ইউএনআরডব্লিউএ—এর এই তথ্য গত সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের মানবিক সমন্বয়কারী সিগ্রিড কাগের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। প্রতিবেদনে কাগ উল্লেখ করেছিলেন, গাজায় ২২ হাজারের বেশি মানুষ এমনভাবে আহত হয়েছেন যাদের জীবন আর কোনো দিন স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরবে না। এর মধ্যে ১৩ থেকে ১৭ হাজার ফিলিস্তিনির অঙ্গ এমনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যা কখনোই কোনো উপায়েই আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা যাবে না।

গত বছরের অক্টোবর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি আগ্রাসনে অঞ্চলটি ৪৪ হাজার ৬০০—এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু এবং প্রায় ১ লাখ ৬ হাজার জন আহত হয়েছেন।

গাজায় এক বছরের বেশি সময় ধরে চলা এই ইসরায়েলি গণহত্যা আন্তর্জাতিক নিন্দার মুখোমুখি হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার কর্মকর্তারা এই আক্রমণ এবং ত্রাণ সরবরাহ বাধাগ্রস্ত করার ঘটনাগুলোকে একটি জনগোষ্ঠীকে নিশ্চিহ্ন করার ইচ্ছাকৃত প্রচেষ্টা হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

এর আগে, গত ২১ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং প্রাক্তন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্তের বিরুদ্ধে গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করার অপরাধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। এ ছাড়া, ইসরায়েল গাজায় তাদের বিধ্বংসী যুদ্ধের জন্য আন্তর্জাতিক আদালতে গণহত্যার মামলার মুখোমুখি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আমিনুল ইসলাম নন, শিক্ষা উপদেষ্টা হচ্ছেন অধ্যাপক আবরার

গণপিটুনিতে নিহত জামায়াত কর্মী নেজাম ও তাঁর বাহিনী গুলি ছোঁড়ে, মিলেছে বিদেশি পিস্তল: পুলিশ

বিএনপির দুই পেশাজীবী সংগঠনের কমিটি বিলুপ্ত

বসুন্ধরায় ছিনতাইকারী সন্দেহে ২ বিদেশি নাগরিককে মারধর

উপদেষ্টা হচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আমিনুল ইসলাম

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত