গাজা-পশ্চিম তীরে বহুজাতিক নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েনের পরিকল্পনা 

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ৩১ মার্চ ২০২৪, ২২: ৫০

গাজা ও পশ্চিম তীরে মোতায়েন করা হবে আরব দেশগুলোকে নিয়ে গঠিত একটি আন্তর্জাতিক বাহিনী। আরব বিশ্বের কয়েকটি দেশ যুক্তরাষ্ট্রকে এমন একটি প্রস্তাব দিয়েছে। এই বাহিনী গাজায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, ত্রাণ সহায়তা নিশ্চিত ও দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানের লক্ষ্যে শান্তি প্রক্রিয়ার বিষয়টি এগিয়ে নিয়ে যাওয়া পর্যন্ত কাজ করবে। 

লেবাননের সম্প্রচারমাধ্যম আল-মায়েদিন ও ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম কেএএন নিউজের পৃথক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম জেরুসালেম পোস্ট। 

আল-মায়েদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক বাহিনী গাজার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাসহ ত্রাণ সহায়তা নিশ্চিতের দায়িত্ব পালন করবে। এর আগেও এমন একটি প্রস্তাবের কথা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এসেছিল। যেখানে ইসরায়েল মানবিক ত্রাণ সহায়তার কনভয়ে লুটপাটের সমস্যা সমাধান ও গাজার দুর্ভিক্ষ প্রতিরোধে আরব দেশগুলোর একটি সম্মিলিত বাহিনীর ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। 

জেরুসালেম পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘যুক্তরাষ্ট্রসহ আরব দেশগুলো গাজার বর্তমান পরিস্থিতি পেয়েছে তা থেকে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষাবাহিনীকে উদ্ধারের চেষ্টা করছে। তারা এমন একটি ব্যবস্থা কার্যকর করতে চাইছে যাতে—ফিলিস্তিনি জনগণ তাদের নেতা ও একটি প্রতিষ্ঠা নিক কাঠামো বেছে নিতে পারে যা উপত্যকার শাসনভার সামলাবে।’ 
 
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসরায়েলি এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জেরুসালেম পোস্টকে বলেছেন, ‘এ ধরনের পদক্ষেপ হামাসকে বাদ দিয়ে অঞ্চলটি শাসনের একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলবে ও গাজায় মানবিক সংকট নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইসরায়েলের যে সমস্যা তার সমাধান করবে।’ 
 
ওই কর্মকর্তা আরও জানিয়েছেন, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ত মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ও মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভানের সঙ্গে পৃথকভাবে আলোচনার সময় গাজায় একটি বহুজাতিক বাহিনী প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছেন। 

ইসরায়েলি সেই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আরব দেশগুলোর সমন্বয়ে গঠিত সেই বহুজাতিক বাহিনী গাজায় খুব অল্প সময়ের জন্য অবস্থান করবে। এই বাহিনী মূলত গাজা উপকূলে যুক্তরাষ্ট্র যে অস্থায়ী জেটি তৈরি করতে চায় তার সুরক্ষা নিশ্চিত করবে। এ ছাড়া এই বাহিনী মানবিক সহায়তা কনভয়গুলোকেও নিরাপত্তা দেবে। 

তবে বহুজাতিক এই বাহিনীতে কোনো মার্কিন সেনা থাকবে না। ইসরায়েলি ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষাবাহিনী ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বিগত সপ্তাহগুলোতে মিসরসহ ৩টি আরব দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন। 

এদিকে, ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম কেএএন নিউজের বরাত দিয়ে জেরুসালেম পোস্ট জানিয়েছে, আরব দেশগুলোর কর্মকর্তারা কেবল গাজার জন্য বহুজাতিক বাহিনী নয়, পশ্চিম তীরের জন্যও একই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে প্রস্তাব দিয়েছে। 

গত সপ্তাহে কায়রোতে মিসর, সৌদি আরব, জর্ডান, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠকে প্রস্তাবটি উত্থাপিত হয়েছিল। এই বাহিনী গাজায় ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কর্তৃত্ব নিশ্চিত করার বিষয়টি দেখভাল করবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে সেই প্রতিবেদনে। 

সেই বৈঠকের বিষয়ে অবগত এক আরব কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে কেএএন নিউজকে জানিয়েছেন, আরব নেতারা নিজ থেকেই পশ্চিম তীরে বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েনের কথা উত্থাপন করেছিলেন। যাতে দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধান বাস্তবায়নে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে একটি শান্তি প্রক্রিয়ার শুরু করা যায়। 

সূত্রটি কেএএন জানিয়েছে, আরব রাষ্ট্রগুলোর আশঙ্কা—ইসরায়েল এই সমাধানকে কৌশলগত ও অস্থায়ী হিসেবে বিবেচনা করতে পারে। যেমন ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে মানবিক সহায়তা বিতরণ, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের একটি ব্যাপক ও কৌশলগত সমাধান হিসেবে এটিকে বিবেচনা করতে পারে। 

ওই আরব কর্মকর্তা আরও জানিয়েছেন, আরব রাষ্ট্রগুলো শান্তি প্রক্রিয়ার প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি ও স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সঙ্গে সম্পর্কিত নিরাপত্তা ব্যবস্থায় জড়িত থাকার আগ্রহ থেকেই এই প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন, আইডিএফকে গাজায় লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করতে নয়।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আবু সাঈদকে ৪–৫ ঘণ্টা পরে হাসপাতালে নেওয়া হয়—শেখ হাসিনার দাবির সত্যতা কতটুকু

মেট্রোরেল থেকে আমলাদের বিদায়, অগ্রাধিকার প্রকৌশলীদের

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

বিমানবন্দরে সাংবাদিক নূরুল কবীরকে হয়রানির তদন্তের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ৩৫ কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত