গাজা নিয়ে ইসরায়েলকে ৩০ দিনের যে আল্টিমেটাম দিল যুক্তরাষ্ট্র

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ১০: ০৪
Thumbnail image

ফিলিস্তিনের যুদ্ধবিধ্বস্ত ভূখণ্ড গাজায় ত্রাণসহ মানবিক সহায়তা বাড়াতে ইসরায়েলকে ৩০ দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছে। ইসরায়েলকে লেখা এক চিঠিতে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন জানিয়েছে, হয় গাজায় মানবিক পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটাও নয়তো, তোমাদের সঙ্গে সামরিক সহায়তার বিষয়টি নিয়ে নতুন করে ভাবব আমরা। 

গত রোববার মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের প্রশাসন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ত ও কৌশলগত সম্পর্কবিষয়ক মন্ত্রী রন ডার্মারের কাছে লেখা চিঠিতে এই আল্টিমেটাম দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল মঙ্গলবার ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল এই চিঠির একটি অনুলিপি পেয়েছে। চিঠিটি লিখেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন। 
 
যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘ কয়েক মাস ধরেই গাজায় যুদ্ধবিরতি আনার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছে। কিন্তু ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টায় পানি ঢেলে দিয়েছে। দেশটি যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতির শর্ত নানা অজুহাতে এড়িয়ে গিয়ে গাজায় হত্যাকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলকে থামানোর সর্বশেষ মার্কিন উদ্যোগ এই আল্টিমেটাম। 

চিঠিতে মার্কিন নেতারা বলেছেন, এ ধরনের ঘটনায় (গাজায় সাহায্য না যাওয়া) ইসরায়েল যে সাহায্য আটকাচ্ছে না, সে বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশের অবকাশ রাখে। একই সঙ্গে ইসরায়েল আন্তর্জাতিক আইন মেনে মার্কিন অস্ত্র ব্যবহার করছে—এ বিষয়েও সন্দেহ প্রকাশের অবকাশ রাখে। এর আগে গত ফেব্রুয়ারি মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ন্যাশনাল সিকিউরিটি মেমোরেন্ডাম জারি করেন, যার আলোকে ইসরায়েলকে নিরবচ্ছিন্ন অস্ত্র সরবরাহে লিখিত প্রতিশ্রুতি দেয় যুক্তরাষ্ট্র। 

ব্লিঙ্কেন ও অস্টিন চিঠিতে লিখেছেন, ‘গাজায় সাহায্য সরবরাহের পরিমাণ ৫০ শতাংশের বেশি কমে গেছে।’ তাঁরা বলেছেন, সেপ্টেম্বরে গাজায় প্রবেশ করা সাহায্যের পরিমাণ গত বছরের যেকোনো মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। তাঁরা বলেন, ‘নিম্নমুখী মানবিক সহায়তার গতিপথ পাল্টাতে এবং আমাদের প্রতি ইসরায়েলের দেওয়া আশ্বাস সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে ইসরায়েলকে এখন থেকে ৩০ দিনের মধ্যে ত্রাণ সহায়তা নিশ্চিতে দৃঢ় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, এই ব্যবস্থাগুলো বাস্তবায়ন এবং সেগুলো বজায় রাখার জন্য একটি টেকসই প্রতিশ্রুতি প্রদর্শন করতে ব্যর্থ হলে ইসরায়েলকে ন্যাশনাল সিকিউরিটি মেমোরেন্ডাম-২০ এবং প্রাসঙ্গিক মার্কিন আইনের অধীনে মার্কিন নীতির জন্য প্রভাব থাকতে পারে। সোজা কথায়, ইসরায়েলে অস্ত্র সরবরাহ প্রভাবিত হবে। 

এমন এক সময়ে বাইডেন প্রশাসনের তরফ থেকে এই চিঠি পাঠানো হলো, যখন মাত্র কয়েক সপ্তাহ পরেই—৫ নভেম্বর—মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বিশ্লেষকেরা অনুমান করছেন, নির্বাচনে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতেই বাইডেন প্রশাসনের এই উদ্যোগ। আগামী ১৩ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের আল্টিমেটাম শেষ হবে। 

এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা ওয়াশিংটনের এই চিঠির টাইমস অব ইসরায়েলকে বলেছেন, জেরুজালেম চিঠি পর্যালোচনা করছে। তিনি বলেন, ‘ইসরায়েল বিষয়টিকে গুরুত্বসহকারে নিয়েছে এবং মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে এই চিঠিতে উত্থাপিত উদ্বেগগুলোর সমাধান করতে চায়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত