Ajker Patrika

কোরআন অবমাননা: গির্জা জ্বালানোর পর পাকিস্তানে ২ খ্রিষ্টান গ্রেপ্তার

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১৮ আগস্ট ২০২৩, ১৯: ৪৭
কোরআন অবমাননা: গির্জা জ্বালানোর পর পাকিস্তানে ২ খ্রিষ্টান গ্রেপ্তার

কোরআন অবমাননার অভিযোগ তুলে পাকিস্তানে দুই দিন আগে গির্জা ও বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়ার পর দুই খ্রিষ্টানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের ব্লাসফেমি বা ধর্ম অবমানার মামলা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। 

যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম রয়টার্স এক প্রতিবেদনে বলেছে, ওই দুই খ্রিষ্টান কোরআনের ভেতরে লাল রঙে ‘অবমাননাকর কিছু মন্তব্য’ লিখেছিল বলে পুলিশ অভিযোগ এনেছে।

গত বুধবার পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলে এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ জনতা অন্তত একটি প্রধান ও চারটি ছোট গির্জা ভাঙচুর করেছে; বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন দেয়। এরপর থেকে আধা সামরিক বাহিনী খ্রিষ্টান বসতি পাহারা দিচ্ছে। 

খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের নেতাসহ সেখানকার বাসিন্দারা বলছেন, তাদের কবরস্থানেও ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়। খ্রিষ্টানদের ঘরের জিনিসপত্র রাস্তায় ফেলে দিয়ে আগুন ধরে দেওয়া হয়। বহন করা যায় এমন সম্পদ লুট করে। 

পাকিস্তানের ব্লাসফেমি বা ধর্ম অবমাননার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। এ পর্যন্ত কাউকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া না হলেও প্রায়ই খ্রিষ্টানদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলে তাদের লাঞ্ছিত করা হয়। আইনটি সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়ায় এর আগে প্রাদেশিক গভর্নর এবং সংখ্যালঘু এক মন্ত্রীকে গুলি করে হত্যা করা হয়। 

ঘটনার বিষয়ে সদ্য গঠিত পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার উল হক বলেছেন, সংখ্যালঘুদের যেকোনো মূল্যে রক্ষা করা হবে। যারা সহিংসতার সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

মন্ত্রিসভার বৈঠকে তিনি বলেন, ‘এখানে কোনো অনুগ্রহ হবে না, এখানে কোনো ভয় থাকবে না।’ 

পুলিশ বলছে, গত বুধবার শিল্প এলাকা ফয়সালাবাদের জারানওয়ালা শহরে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের ওপর হামলায় অন্তত ১২৮ জন জড়িত ছিল। 

রয়টার্স বলছে, ১০ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে ওই হামলা চলে। ঘটনাস্থলে পুলিশ থাকলেও হস্তক্ষেপ করেনি। তবে পুলিশ এই অভিযোগ অস্বীকার করে ‘পরিস্থিতির অবনতি ঠেকাতে পদক্ষেপ’ নেওয়ার দাবি করেছে। 

ঘরে ফিরছে এলাকার মানুষ
এলাকাবাসী বলছে, এই হামলার নেতৃত্বে মুসলিম ধর্মীয় নেতাদের দেখা গেছে। মুসলিম জনতা লোহার রড, লাঠি, ছুরি ও ছোরা নিয়ে হামলায় অংশ নিয়েছে। ঘটনার পর হাজার হাজার খ্রিষ্টান ঘরবাড়ি ছেড়ে কাছের জেলায় আশ্রয় নিয়েছে।

খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের নেতা আকমল ভাট্টি রয়টার্সকে বলেন, নির্বাসিত পরিবারগুলো এরই মধ্যে ঘরে ফিরতে শুরু করেছে। 

সরকারি এক বিবৃতিতে বলা হয়, শুক্রবার জুমার নামাজের খুতবার সময় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছে। স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সবার সহযোগিতা কামনা করা হয়।

এদিকে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার পক্ষ থেকে ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফোন করে খ্রিষ্টানদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পাকিস্তান সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। 

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এক বিবৃতিতে বলেছে, ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে পাকিস্তানে যে কাউকে যেকোনো সময় ধর্মীয় চরমপন্থী জনতার হামলার শিকার হতে পারে। সর্বশেষ এই হামলা তার একটি উদাহরণ।

মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, অনেক ক্ষেত্রে প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য এ ধরনের ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে হামলা চালানো হয়। কোনো বিচার প্রক্রিয়া শুরুর আগেই অভিযুক্তরা গণপিটুনির শিকার হয়। মামলা নিষ্পত্তিতে দেরির কারণে হাজার হাজার অভিযুক্ত অনেককে দীর্ঘ সময় ধরে কারাগারে থাকতে হয়। হামলাকারীদের ভয়ে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অভিযুক্তরাও বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে সরব হতে পারেন না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আমিনুল ইসলাম নন, শিক্ষা উপদেষ্টা হচ্ছেন অধ্যাপক আবরার

গণপিটুনিতে নিহত জামায়াত কর্মী নেজাম ও তাঁর বাহিনী গুলি ছোঁড়ে, মিলেছে বিদেশি পিস্তল: পুলিশ

বিএনপির দুই পেশাজীবী সংগঠনের কমিটি বিলুপ্ত

বসুন্ধরায় ছিনতাইকারী সন্দেহে ২ বিদেশি নাগরিককে মারধর

উপদেষ্টা হচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আমিনুল ইসলাম

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত