বাল্টিমোর সেতু ধস: ইতিহাসে সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণ গুনতে হচ্ছে বিমা কোম্পানিগুলোকে

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৯: ৪৪
আপডেট : ২৯ মার্চ ২০২৪, ২০: ২৬

বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ম্যারিল্যান্ডে বাল্টিমোর সেতু ধসের ঘটনায় এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ সমুদ্র–বিমা পরিশোধের মুখোমুখি হতে পারে বিমা কোম্পানিগুলো। জাহাজের ধাক্কায় সেতুটি ধসে পড়ায় অন্তত ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে দুজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে ডুবুরিরা। 

আজ শুক্রবার এ বিষয়ে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাল্টিমোর সেতু ধসের এই ঘটনায় বিমা কোম্পানিগুলোকে কয়েকশ কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ গুনতে হবে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা। 

এ বিষয়ে লন্ডনভিত্তিক ব্রিটিশ ইনস্যুরেন্স মার্কেটপ্লেস লিওডসের সিইও জন নিল বলেছেন, ‘এই ঘটনাটি এখন পর্যন্ত ইতিহাসের সর্বোচ্চ সামুদ্রিক ক্ষতির ঘটনা হতে যাচ্ছে।’ 

নিল জানান—বাল্টিমোর বন্দর থেকে শুরু করে যে জাহাজটি সেতুটিকে ধাক্কা দিয়েছে সবগুলোরই বিমা করা আছে। তাই আর্থিক দিক বিবেচনা করলে, এমন একটি প্রক্রিয়া রয়েছে যা ক্ষতিপূরণ এবং দাবি নিষ্পত্তি করার অনুমতি দেবে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ম্যারিল্যান্ডের পরিবহন বিভাগ এখন পর্যন্ত বাইডেন প্রশাসনের কাছে ৬ কোটি ডলারের জরুরি অর্থায়ন চেয়েছে। মূলত ধসে পড়া সেতুটির জঞ্জাল সরিয়ে নেওয়া এবং দুর্ঘটনার জায়গাটিকে পরিষ্কার করতেই এই অর্থ খরচ হবে। 

তবে ‘সেতু ধসে পড়া’ এই দুর্ঘটনার একমাত্র ক্ষতি নয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জাহাজ চলাচল স্বাভাবিক হওয়ার আগে পর্যন্ত দেড় কোটি ডলারের ক্ষতির মুখে পড়বে বাল্টিমোর বন্দর। কারণ এই বন্দরটি বিশ্ব–বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। 

এই দুর্ঘটনায় ঠিক কতগুলো বিমা কোম্পানি ক্ষতিপূরণ বহন করবে সেই সংখ্যা না জানা গেলেও বার্কলের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরিশোধের জন্য বিমার অঙ্কটি হতে পারে ৩ বিলিয়ন বা ৩০০ কোটি ডলার পর্যন্ত। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৩৩ হাজার কোটি টাকা। 

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, শুধু সেতু ধসের জন্যই ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ গুনবে বিমা কোম্পানিগুলো। আর নিহতদের জন্য সাড়ে তিন শ থেকে সাত শ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ গুনতে হতে পারে। 

সেতুটি যখন আবার নির্মাণ করা হবে, সেই সময়ও যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বৃহৎ বাল্টিমোর বন্দর কিছু সময়ের জন্য বন্ধ রাখতে হবে। এর ফলেও বন্দরটি কোটি কোটি ডলার ক্ষতির মুখোমুখি হবে। বাল্টিমোর বন্দর যুক্তরাষ্ট্রের ১৪ তম বৃহৎ বন্দর। ২০২৩ সালে এই বন্দর দিয়ে ৮০ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার মূল্যমানের ৫ কোটি ২৩ লাখ টন পণ্য পরিবহন করেছে বিদেশি কার্গোগুলো। তাই বন্দরটি সাময়িকভাবে বন্ধ থাকলে তা বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থায়ও প্রভাব ফেলে। 

ম্যারিল্যান্ড পরিবহন বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সেতু ব্যবস্থা পুনরায় সচল করার প্রক্রিয়াটি সহসাই হয়ে যাবে—এমন নয়। তবে যত দ্রুত সম্ভব সেতুটির প্রতিস্থাপনের জন্য একটি নকশা তৈরির কাজ চলছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত