সাময়িকভাবে গর্ভপাত নিষিদ্ধ করল টেক্সাস সুপ্রিম কোর্ট

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ০৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৮: ২৮
আপডেট : ০৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৮: ৩৯

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস সুপ্রিম কোর্ট নারীদের জরুরি পরিস্থিতিতে গর্ভপাতকে সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করেছে। অঙ্গরাজ্যটির অ্যাটর্নি জেনারেলের অনুরোধের পর গতকাল শুক্রবার আদালত এ আদেশ দেয়।

মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট গত বছর গর্ভপাতের সাংবিধানিক অধিকার বাতিল করার পর থেকে এই আইনি লড়াই দেশটিতে মূখ্য বিষয় হয়ে উঠেছে। এতে টেক্সাসের মতো অঙ্গরাজ্যগুলো নারীর স্বেচ্ছা গর্ভপাতকে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করছে।

টেক্সাসের সুপ্রিম কোর্ট দিনের শুরুতে অঙ্গরাজ্যর অ্যাটর্নি জেনারেল কেন প্যাক্সটনের একটি পিটিশনের প্রেক্ষিতে নিম্ন আদালতের দেওয়া জরুরি গর্ভপাতের অনুমতির রায় স্থগিত করেছে।

শুক্রবারের রায়ে বলা হয়েছে, ‘যোগ্যতা বিবেচনা ছাড়াই উচ্চ আদালত প্রশাসনিকভাবে জেলা আদালতের গত ৭ ডিসেম্বরের আদেশ স্থগিত করছে।’

এদিকে টেক্সাসের ডালাস-ফোর্ট ওয়ার্থ এলাকার কেট কক্স (৩১) নামের এক নারী গর্ভপাতের জন্য আদালতের অনুমোদন চান। তাঁর ভ্রূণে গত ২৭ নভেম্বর ট্রাইসোমি-১৮ ধরা পড়ে, এটি একটি জেনেটিক ত্রুটি, এর ফলে সাধারণত গর্ভপাত, মৃত সন্তান প্রসব বা জন্মের পরপরই মৃত্যু ঘটায়।

প্রায় ২০ সপ্তাহের গর্ভবতী কক্স মামলার এজাহারে উল্লেখ বলেন, যদি তিনি এই সন্তান গর্ভে ধারণ করেন, তবে তাঁকে তৃতীয়বারের মতো সিজারিয়ান অপারেশন করতে হবে। এটি তাঁর আরও সন্তান নেওয়ার ক্ষমতাকে বিপন্ন করতে পারে। তিনি এবং তাঁর স্বামী ভবিষ্যৎে আরও সন্তান নিতে চান বলেও উল্লেক করেন নথিতে।

সেন্টার ফর রিপ্রোডাক্টিভ রাইটসের সিনিয়র স্টাফ অ্যাটর্নি মলি ডুয়ান বলেছেন, ‘আমরা এখনও আশা করি যে আদালত শেষ পর্যন্ত রাষ্ট্রের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করবে এবং তা দ্রুতই করবে। এই ক্ষেত্রে আমরা আশঙ্কা করি যে বিচার বিলম্বিত হলে ন্যায়বিচার আসবে না।’

জেলা আদালতের বিচারক মায়া গুয়েরার গ্যাম্বল গত বৃহস্পতিবার কক্সের পক্ষে ছিলেন। তিনি একটি আদেশ জারি করেছেন, যা শুধুমাত্র কক্সের জন্য প্রযোজ্য এবং গর্ভপাতের অধিকার সবার জন্য বিস্তৃত করে না।

তবে প্যাক্সটন পূর্বে সতর্ক করে জানান, জরুরি গর্ভপাতের সঙ্গে জড়িত যেকোনো ডাক্তার মামলা-মোকাদ্দমা থেকে নিরাপদ থাকবেন না। ফলে তিনি অঙ্গরাজ্যের সর্বোচ্চ আদালতকে এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে অনুরোধ করেন।

অ্যাটর্নি জেনারেলের ফাইলে আরও বলা হয়, কোনো কিছুই অনাগত সন্তানের জীবনকে ফিরিয়ে দিতে পারে না।

অঙ্গরাজ্যের গর্ভপাতের নিষেধাজ্ঞার মধ্যে শুধুমাত্র একটি ব্যতিক্রম ধারা রয়েছে। তা হলো, যদি মায়ের জীবন বাঁচানো যায় বা বড় কোনো শারীরিক ক্ষতি রোধ করা যায়—সেক্ষেত্রে গর্ভপাত করা যেতে পারে।

কক্স মামলায় আরও বলেন, ডাক্তারেরা তাঁর গর্ভপাত চিকিৎসার জন্যই প্রয়োজনীয় বলে মনে করলেও তাঁরা আদালতের আদেশ ছাড়া গর্ভপাত করতে ইচ্ছুক নয়। কারণ তাঁরা নিজেরাই লাইসেন্স হারাতে পারেন বা কারাগারে যাওয়ার মতো শাস্তির মুখে পড়তে পারেন।

গুয়েররা গ্যাম্বল বৃহস্পতিবার একটি অস্টিন আদালতে শুনানির সময় বলেন, ‘কক্স মা হতে খুবই আগ্রহী কিন্তু এই রায় তাঁর আবারো মা হওয়ার ইচ্ছাকে অপূর্ণ রেখে দিতে পারে। বিষয়টি খুবই মর্মান্তিক এবং ন্যায়বিচারের প্রকৃত গর্ভপাত।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত