Ajker Patrika

ট্রাম্পের নির্বাচনী ফল পাল্টে দেওয়ার মামলা বাতিল

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১৫: ৪৮
Thumbnail image
ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এএফপি

যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে থাকা ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল পরিবর্তনের প্রচেষ্টা সংক্রান্ত মামলাটি বাতিল করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের একটি ফেডারেল আদালত এই মামলা বাতিল করে গতকাল সোমবার। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০২০ সালে প্রেসিডেন্ট থাকাকালে সে বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল বদলে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন বলে অভিযোগ এনে দেশটির এক ফেডারেল আদালতে মামলা দায়ের করা হয়। তবে ট্রাম্প আবারও দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর আইনজীবীরা আদালতে মামলাটি বাতিলের আবেদন করেন।

ওয়াশিংটনের ডিস্ট্রিক্ট জাজ তানিয়া চুটকানের আদালতে ট্রাম্পের কৌঁসুলিরা মার্কিন বিচার বিভাগের একটি নীতির আলোকে এই মামলা বাতিলের আবেদন করেন। এই অনুসারে, একজন কর্মরত প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে মামলা পরিচালনা করা সাংবিধানিকভাবে বেআইনি এবং এটি প্রেসিডেন্টের কার্যক্ষমতায় বাধা সৃষ্টি করবে। পরে বিচারক তানিয়া চুটকান এই মামলা বাতিল করেন।

এই রায়ের মধ্য দিয়ে, ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ২০২০ সালের নির্বাচনের ফলাফল বদলে দেওয়ার অভিযোগ সংক্রান্ত যে মামলা ছিল, তা শেষ হয়ে গেল। এই রায়, এমন এক সময়ে এল, যখন বিশেষ কৌঁসুলি জ্যাক স্মিথ—এই মামলার প্রধান কৌঁসুলি—নির্বাচন সংক্রান্ত মামলা এবং ২০২১ সালে রাষ্ট্রীয় দলিলাদি অবৈধভাবে গোপন নথি রাখার অভিযোগের মামলা বাতিল করার উদ্যোগ নেন। ফলে এই রায়ের কারণে উভয় মামলা পুনরুজ্জীবিত করার প্রচেষ্টা বন্ধ হয়ে গেল।

এই রায়কে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্য একটি বিশাল আইনি বিজয় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। নবনির্বাচিত রিপাবলিকান এই প্রেসিডেন্টের ৫ নভেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়লাভ করেন। তিনি আগামী ২০ জানুয়ারি আবার দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।

ট্রাম্পের কৌঁসুলিরা মার্কিন বিচার বিভাগের যে নীতিটির কথা আদালতে উল্লেখ করেছেন, তা দেশটিতে ১৯৭০-এর দশক থেকে প্রচলিত। এই নীতি অনুসারে, একজন দায়িত্বরত প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা চালানো হলে তা হবে সংবিধানের পরিপন্থী এবং এর ফলে দেশের প্রধান নির্বাহীর কার্যকারিতা ব্যাহত হবে।

নির্বাচন সংক্রান্ত মামলার কৌঁসুলিরা এক নথিতে বলেছেন, এই নীতির আলোকে ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে ফিরে যাওয়ার আগেই মামলা বাতিল করা আবশ্যক। তাঁরা বলেন, ‘এই ফলাফল আসামির বিরুদ্ধে মামলার গুণগত মান বা শক্তির ওপর নির্ভরশীল নয়।’ এই মামলার রায়ের পর ট্রাম্পের মুখপাত্র স্টিভেন চুং এটিকে ‘আইনের শাসনের এক বড় বিজয়’ বলে উল্লেখ করেছেন।

তবে কৌঁসুলিরা রাষ্ট্রীয় নথি গোপন করার অভিযোগ সংক্রান্ত মামলায় ট্রাম্পের দুই সহযোগীর বিরুদ্ধে মামলা ফেডারেল আদালতে পুনরায় চালু করার অনুরোধ করবেন বলে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। এই দুই সহযোগীর বিরুদ্ধে ওই মামলায় তদন্তে বাধা দেওয়ার অভিযোগে অভিযোগ আনা হয়েছিলেন।

ডোনাল্ড ট্রাম্প মোট চারটি ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত হয়েছিলেন—এর মধ্যে দুটির প্রধান কৌঁসুলি ছিলেন জ্যাক স্মিথ এবং অন্য দুটি মামলা ছিল নিউইয়র্ক ও জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের আদালতে। নিউইয়র্কে দায়ের করা মামলায় তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করা হলেও জর্জিয়া মামলাটির—এটিও ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল পাল্টে দেওয়ার চেষ্টার সঙ্গে সম্পর্কিত—স্থগিত অবস্থায় আছে।

গত সোমবার এক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করা এক পোস্টে ট্রাম্প তাঁর বিরুদ্ধে চলমান মামলাগুলো নিয়ে মন্তব্য করে বলেছেন, ‘এটি আমাদের দেশের ইতিহাসে একটি নিম্নতম মুহূর্ত।’

জ্যাক স্মিথকে ২০২২ সালে তৎকালীন মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল মেরিক গারল্যান্ড নিয়োগ দিয়েছিলেন। জ্যাক স্মিথের এই সিদ্ধান্তকে এক অসাধারণ মোড় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। স্মিথ ট্রাম্পের বিরুদ্ধে দুইটি পৃথক মামলায় অভিযোগ গঠন করেছিলেন। এসব মামলায় মার্কিন নির্বাচনী অখণ্ডতা ও জাতীয় নিরাপত্তা ক্ষতিগ্রস্ত করার অভিযোগ আনা হয়েছিল। কৌঁসুলিরা স্বীকার করেছেন, কোনো সাবেক প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে চলমান ফৌজদারি মামলার প্রেক্ষাপটে তাঁর নতুন করে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার বিষয়টি মার্কিন বিচার বিভাগের জন্য নজিরবিহীন এক পরিস্থিতি তৈরি করেছে।

বিচারক তানিয়া চুটকান তাঁর আদেশে উল্লেখ করেছেন, ট্রাম্প হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিস ছাড়ার পর প্রসিকিউটররা আবার মামলা করতে চাইতে পারেন। তবে দীর্ঘ সময় পর মামলা পুনরুজ্জীবিত করা চ্যালেঞ্জিং হবে।

এর আগে, ২০২৩ সালের আগস্টে ট্রাম্প তাঁর বিরুদ্ধে আনা চারটি ফেডারেল অভিযোগে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছিলেন। এবারে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর, ট্রাম্প বিচার বিভাগকে এই দুই মামলাকে বন্ধ করার জন্য আদেশ দেবেন বলে অনুমান করা হচ্ছে।

ফ্লোরিডার বিচারক আইলিন ক্যানন—যাঁকে ট্রাম্পই নিজেই ফেডারেল আদালতে নিয়োগ দিয়েছিলেন—গত জুলাইয়ে গোপন নথি মামলাটি বাতিল করেন। তিনি সেসময় বলেন, স্মিথকে বিশেষ কৌঁসুলি হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়টি সঠিক ছিল না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নারী সহকর্মীর সঙ্গে রাতযাপন: হাইটেক পার্কের ডিডি আতিক বরখাস্ত

বাংলাদেশসহ ৩ দেশে উন্নয়ন সহায়তা বন্ধের সিদ্ধান্ত সুইজারল্যান্ডের

বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিনের পদত্যাগ

পদ্মা সেতু ও ড. ইউনূসকে নিয়ে ভারত থেকে শেখ হাসিনার ভাষণ! ভাইরাল ভিডিওর পেছনের ঘটনা জানুন

২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তাদের ফেসবুক প্রোফাইল পিকচার পরিবর্তন কর্মসূচি শুরু

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত